নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শাকরানের রাফখাতা

ছবিকর

Doctor, Photo-enthusiast, Movie-buff, Music-addict, Pluviophile, Poetry-lover, Cat-Person, Nyctophile, Traveloholic

ছবিকর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গঃ মাওয়া ট্র্যাজেডি, পদ্মা পারাপার, খুঁজে না পাওয়া লাশ, পদ্মাসেতুর আকাশকুসুম কল্পনা ও অন্যান্য...

০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭

এতদিন জানতাম, বাঙ্গালি নাকি পায়খানা চাপলে বদনা নিয়ে দৌড়ায়।

ভুল কথা।

বাঙ্গালি যখন প্যান্টে দুর্ঘটনা ঘটাইয়া ফেলে, তখন বদনা নিয়ে দৌড়ায়।

আজ শুনলাম, এতদিন পর নাকি মাওয়া ঘাটে পুলিশ বসাইছে। উনাদের তদারকিতে গুণে গূনে মানুষ নিচ্ছে লঞ্চগুলোতে।

এতদিন এইসব উদ্যোগ নেয়ার খেয়াল ছিল না বাবারা??

নাকি এসব বুদ্ধি আনাতে এভাবে প্রতি বছর আর মানুষের শহীদ হতে হবে??



গত কয়েকদিন আগে মাওয়ায় যে লঞ্চ ট্র্যাজেডি ঘটল, তা নিয়ে অনেক কথা বলবার ছিল। কিন্তু বলিনাই। বলিনাই কারণ, আমি কিছু বললে ওটা নিউট্র্যাল হবে না। হবে ভুক্তভোগীর আজাইড়া চেঁচামেচি।



লেখাপড়ার কারণে, ঢাকা বাসা হওয়া সত্ত্বেও আমাকে থাকতে হয় বরিশালে। কিন্তু, অন্যদের মত ঢাকা ছাড়া, ঢাকার মানুষ ছাড়া বেশিদিন থাকতে পারিনা বলেই খুব ঘন ঘন আমি ঢাকা আসি। বন্ধুমহলে অনেকে দেখা হলে মজা করে বলে, আমি নাকি ঢাকায়ই থাকি, মাঝেমধ্যে বরিশাল যাই।



বেশিরভাগ সময় আমি লঞ্চেই যাওয়া-আসা করি। আশার কথা হল, ঢাকা-বরিশাল রুটের যে বড় লঞ্চ, সেগুলা আল্লাহর রহমতে কখনো বড় কোন দুর্ঘটনায় পড়েনাই। কিন্তু দিনের বেলা তো আর এসব লঞ্চ ছাড়ে না, এজন্য দিনের বেলা কোন কাজে একটু তাড়াতাড়ি বরিশাল থেকে আসতে গেলে আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে আসি। বরিশাল থেকে কাওড়াকান্দি পর্যন্ত বাসে, এরপর পদ্মা পার হই ছোট লঞ্চে বা স্পিডবোটে, এরপর মাওয়া থেকে ঢাকা বাসে। সব মিলিয়ে ৫-৬ ঘন্টার মধ্যেই ইনশাআল্লাহ চলে আসা যায়।



সমস্যা হল, এই রুটের ছোট লঞ্চগুলো নিয়ে। একেকটা তো মাশাআল্লাহ সেই মুঘল বাদশাহ আকবরের আমলের। নাই ফিটনেস, নাই ইঞ্জিন। তার উপর দশ কেজি চালের বস্তায় ঠাসাইয়া একশ কেজি চাল আটানোর মত করে মানুষ ওঠায়। ফলশ্রুতিতে, পদ্মার ঢেউয়ে এই ডিঙি লঞ্চগুলা সরল ছন্দিত স্পন্দনে দুলতে থাকে। কিছুক্ষণ কাপাকাপি করে আল্লাহর নাম জপাজপি করে কোন মতে এই পাড়ে আসলে নাকে খত দেই, যে, ইহ জিন্দেগীতে আর এসবে উঠব না। কিন্তু, পরের বার আর খেয়াল থাকে না। ঠিকই আবার এসবে উঠি। এভাবেই চলতেছে।

একবার তো প্রায় কান্নাকাটির অবস্থাই হয়ে গেসিল।



মৃত্যু সামনে থাকলে ভাই, সত্যিই ভয় হয়! অনেক!! ভয়ে কান্নাও আসে।



প্রতিবার এজন্য ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় আম্মা-আব্বা, ভাই-বেরাদারদের কাছে দেখা-টেখা করে নেই। কোন সময় এভাবে খবরের শিরোনাম হই, কে জানে!! এক ফ্রেন্ড অবশ্য এবার লাইফ জ্যাকেট কিনতে বলসিল। টাইমের অভাবে কেনা হয়নাই। সাথে রাখতে হবে দেখতেসি।



এই পদ্মার উপরে নাকি এক সেতু করার কথা ছিল। এটার কথা তো বাদই দিলাম। আর কিছুদিন পর মনে হয় ‘পদ্মা সেতু’ কথাটা ‘আকাশকুসুম কল্পনা’ অর্থে বাগধারায় ব্যবহৃত হবে। এই সেতুটা বাস্তবায়ন করা দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য কতটা প্রয়োজন বলে বুঝানো যাবে না। কিন্তু, হইতেছে টা কই?? এখনো তো আমাদের নীতি নির্ধারকরা বরফ-পানি, সাপ-লুডু খেলতেই ব্যস্ত। মানুষ মরলেই কী? তাদের পকেটে কিছু টাকা আসলেই লাভ!!



বেশি কথা বলব না। আজ রাতে আবার ব্যাক করতেছি বরিশালে। অন্যবার তো এসব কথা বলার হেতু পাই না। এবার পেয়ে বললাম। আরো বলার ছিল। কিন্তু, সময়াভাবে বলতে পারছি না। পথ-ঘাটের পরিস্থিতি ঠিক নাই। কখনো যদি বলার সুযোগ নাই পাই, এজন্য বলে দিলাম। কোন ভুল টুল হলে মাফ করে দিয়েন। কখনো আমার অনিচ্ছাকৃত কোন ব্যবহারে কষ্ট পেলেও মাফ করে দিয়েন। কোন দিন মেধাবী হয়ে যাই আল্লাহয় জানে!

পানিতে ডুবলে তো আবার মাঝেমধ্যে লাশও পাওয়া যায় না। গায়েবী জানাযা হলে আইসেন কাইন্ডলি।



আস সালাম।

‘বিসমিল্লাহি মাজরেহা ওয়া মুরসাহা ইন্না রাব্বি লা গাফুরুর রাহিম।’



#mawa_tragedy

#নিরাপদ_লঞ্চ_পারাপার_চাই #মরার_পর_মানুষ_যাতে_অন্তত_লাশটা_পায়

#পদ্মাসেতু_চাই



ফেসবুক লিঙ্কঃ Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.