নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কার্ণিশ ভাঙ্গা জানালার ফাঁক দিয়ে রাতের আকাশের যেটুকু অংশ দেখা যায়, অইটাই আমার পৃথিবী।
যেদিন এই শহর ছেঁড়ে যাবো, এক জোড়া চমকিত চোখে
শহরের কানাগলি ঘুরে ঘুরে বিদ্ধ হবে না একটি ছায়া
যেদিন এই তল্লাট আমার পদচিহ্নে আর সরগরম হয়ে উঠবে না
উত্তরণে এসে কেঁপে কেঁপে উঠবে না সেদিন একটি সচকিত হৃদয়
ক্ষীণ থেকে ক্ষীণকায় হয়ে আসা একটি ছায়া মাড়ানোর অবকাশে
যেদিন এই শহরে আমি থাকব না
সেদিনের পর থেকে একটি লাজুক মেয়ে বেনেকাব
প্রেমিকের হাত ধরে শহরের সমস্ত গলি-ঘুঁপছি, সমস্ত গণজমায়েত
প্রকম্পিত করবে নির্ভয়ে, জলজ্যান্ত দুপুরে
যেদিন অনঃস্বত্তা চুম্বনের সমস্ত চিহ্ন উবে যাবে
হাত ধরাধরির সমস্ত স্মৃতি গন্ধহীন হয়ে যাবে
সেদিন দ্বিতীয় সঙ্গমে যাবে প্রেমান্ধ শরীর উন্মাতাল শাড়ীর ভাঁজ
প্রথম প্রেমের ক্ষতচিহ্ন মুছে ফেলার মৌলিক বিলাসে
আমি হয়তো কোনদিন ভালোবাসিনি তোমাকে; তবুও
করতোয়ার জলে তেষ্ঠা মেটানোর দায়ে নাদুস নুদুস শুকর ছানাটির
যেদিন মৃত্যু হয়েছিল; সেদিন আমি কেঁপে উঠেছিলাম
যেদিন সারিয়াকান্দির উন্মত্ত বুকের জমিন ধূ ধূ চর হয়ে উঠেছিল, সেদিন
আমার ভেতরটা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল
আমি হয়ত ভালবাসিনি তোমাকে, কোনদিন। তবুও
ক্রমশঃ বাড়তে থাকা ইট পাথরের সুরকির স্তূপ যেদিন
তোমার জানালার শেষ বিকেলগুলো চিবিয়ে খেয়েছিলো ক্ষুধার্ত হায়েনার মতন
যেদিন তোমার নীলাকাশ ভারী হয়ে উঠেছিলো কলকারখানায় কালো ধোঁয়ায়
সেদিন; আমি, বিশ্বেস কোরো, আমার প্রতি তোমার ভালোবাসার শপথ
আমিও কেঁদেছিলাম তোমার জন্যে
যেদিন রাষ্ট্রকে কতকগুলো ষণ্ডালের মান ভাঙ্গাতে
প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করবার সবিনয় নিবেদনসহ একটি অনির্ধারিত
আলোচনাসভার আয়োজন করতে হয়েছিল
সেদিন আমি ব্যথাতুর হয়ে উঠেছিলাম
আমি যেদিন এই শহর ছেঁড়ে চলে যাবো
এই শহরের সমস্ত পার্কের নির্জন দুপুর আর রেঁস্তরার নিয়ন আলো
তোমাকে, উজ্জ্বল তারুণ্যে ভরপুর তোমার সুদর্শন প্রেমিককে স্বগত জানাবে, নির্ভয়ে।
যেদিন এই শহরকে বলবো- বিদায়
জেনে রেখো- সেটা পালিয়ে বাঁচার ভিন্ন প্রচেষ্টা, তোমাকে ধরে রাখার দৃঢ় প্রত্যাশায়।
নারুলী কৃষি ফার্ম, বগুড়া। ১০০৫২০১৫। ০০০২১০।
©somewhere in net ltd.