নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“There is a pleasure sure in being mad which none but madmen know.”― John Dryden
সময় যে খুব একটা ভালো যাচ্ছে তা না। সব কিছু এলো মেলো ভাবে যাচ্ছে, যে কোন সময় মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে পারে। একটা ঘটনা বললে সব কিছু পরিস্কার হবে। এক দিন সন্ধায় ইলেকট্রিসিটি নেই গরমে জানালার পাশে বসে আছি, হটাৎ খাটের নিচে কে যেন খুক খুক কাশি দিলো। এমনিতেই আমি ভিতু মানুষ । চিৎকার দিতে গিয়েও দিলাম না, অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিলাম।
-কে খাটের নিচে?
-বাবা আমি জীবনানন্দ দাশ।
-মানে? কোন জীবনানন্দ দাশ? সামনের বাড়ির জীবন বাবু নাকি? আপনি আমার খাটের নিচে কি করেন?
-বাবা আমি জীবন বাবু না, আমি কবি জীবনানন্দ দাশ। খাটের নিচে এতো সিগারেটের শেষ অংশ পড়ে, গন্ধে থাকা যাচ্ছে না। কাল থেকে পরিস্কার করবে, আমার থাকতে কষ্ট হয়।
কথা শেষ হওয়ার আগেই ইলেকট্রিসিটি চলে আসলো। আমি খাটের নিচে উকি দিলাম, মানুষ থাকার কোন চিহ্ন খুজে পেলাম না।
পেটে গন্ডগোল তাই মাথাটাও মনে হয় ভূল কাজ করা শুরু করেছে, আগের আমলের লোকেরা বলতো পেটে আম্বল হলে মাথা কাজ করেনা । আমি আর ঝিম মারে বসে না থেকে প্রাইভেট পড়াতে বের হলাম।
আমার ছাত্র ক্লাস থ্রি তে পড়ে। তাকে পড়াতে যে পরিমার শক্তি খরচ হয় সেই পরিমান শক্তি দিয়ে ভর দুপুরে চার ঘন্টা ফুটবল খেলা যাবে।
আজ বেচারা চুপ চাপ পড়তেছে। অন্য দিনের চেয়ে তাড়া তাড়ি পড়া শেষ করল। আমি একটু অবাক হলাম।
-মন খারাপ? মা বকছে?
-না স্যার। আপনাকে একটা কথা বলব যদি আপনি আব্বু আম্মুকে না বলেন।
-হুম বলো
পেন্সিল বক্স থেকে একটা হোমিওপ্যথি ঔষধ এর একটা ছোট বোতল বের করল। ভিতরে ধোয়াটে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে।
-তুমি কি হুমায়ুন আহমেদের “বোতল ভূত ” বইটা পড়েছ?
-জী স্যার।
আমি মনে মনে যা ভাবছিলাম তাই। বাচ্ছা ছেলে, নিজের জন্য নিজেই ভূত তৈরী করেছে, ভেতরের ধোয়া নিশ্চয় মশা তাড়ানো কয়েলের ।
-তোমার এই বোতলে ভূত নেই, সব মনের কল্পনা।
-না স্যার সত্যি ভূত আছে। আমি কথাও বলেছি।
-ও, তাই নাকি ঠিক আছে প্রমান দাও। জানালা দিয়ে বোতল টা তুমি রাস্তায় ছুড়ে মারো, যদি সকালে দেখো ওই বোতল পেন্সিল বক্স এ তাহলে বুঝব সত্যি ভূত আছে ওই বোতলে।
আমি কিছু বোঝার আগেই আমার ছাত্র বোতলটা জানালা দিয়ে বাহিরে ছুড়ে মারলো।
মেসে ফিরতে আমার রাত এগারোটা বাজে গেলো। আবার সেই ইলেকট্রিসিটি নেই। তার উপর ভ্যপসা গরম। ঘরে ঢুকে জানালাটা খুলতেই আবার সেই খুক খুক কাশি। সন্ধার মতো আর ভয় পেলাম না।
-আপনি এখনো আছেন?
-বাবা কই আর যাবো। আমি তো এখানেই থাকি গত দশ বছর।
-কি বলেন!! এখানে এতো দিন, আগে তো আপনাকে দেখিনি।
-বাবা প্রয়জন পড়েনি তাই। বাবা খুদা লেগেছে তোমার বিস্কিট গুলো দাও একটু খাই।
-আমার ঘরে বিস্কিট আছে আপনি কি ভাবে জানেন?
-তোমার সবকিছুই জানি। তোমার একটা জিনিস আছে আমার কাছে নাও।
আমি হাত বাড়ালাম তখুনি ইলেকট্রিসিটি চলে আসলো। আমি বোকার মতো হাত বাড়ায় বসে আছি। নিজেকে অনেক গাধা মনে হচ্ছে। হটাৎ বিছানায় তাকায় দেখি আমার ছাত্রের সেই ভূত বোতল।
সেদিন রাতে আর ভালো ঘুম হলোনা ছাড় ছাড়া স্বপ্ন দেখে রাত পার হয়ে গেলো। বিকেলে বোতলটা পকেটে নিয়ে প্রাইভেট পড়াতে গেলাম। প্রতিদিন সন্ধার পরেই পড়াই আজ একটু আগেই গেলাম।
আমাকে দেখে ছাত্র এবং ছাত্রের মা দুজনেই চিৎকার করে উঠলো। স্যার আপনি গত দুদিন পড়াইতে আসেননি কেনো? আপনাকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। কোন এক বুড়া ফোন ধরে বলে জীবনানন্দ বলছি। আপনার নাম বললে বলে রং নম্বর।
-স্যর আপনার ফোন কই?
আমি ফোন খোজার আশায় পকেটে হাত দিলাম। পকেটে ফোন নেই আছে শুধু একটা বোতল।
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:০৩
স্বরব্যঞ্জ বলেছেন: ধন্যবাদ অমিত ভাই
২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৯
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: জীবনানন্দের মুখে এমন ভাষা! ঐ অংশটুকু খুব খারাপ লেগেছে।
তবে পড়ে মজা পেয়েছি। (ঐ অংশটা ছাড়া)
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
স্বরব্যঞ্জ বলেছেন: জীবনানন্দ এখানে কল্পনা, সে কল্পনা দেখেছে।সে যে ভাষায় কথা বলে জীবনানন্দকে সে সেই ভাবেই কল্পনা করেছে ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫৭
অমিত অমি বলেছেন: ভালো লেগেছে ++