নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুপারনোভা

আহেমদ ইউসুফ

I am a introverts person would like to hide myself.

আহেমদ ইউসুফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি শোক সংবাদ এবং অতঃপর

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৪





শুক্রবার সকাল সাতটা। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন নুহাশ। চিরাচরিত নিয়মের আজ ব্যতিক্রম। তাই একটু বেলা করেই ঘুম থেকে ওঠার সিদ্ধান্ত নিল ও। কিন্তু বাধ সাধল মোবাইল ফোন। সাময়িক বিরক্তি কাটিয়ে শান্ত মেজাজেই ফোন রিসিভ করল। হ্যালো। উঃ। ঘুমাচ্ছেন? হু। এই জানেন কি হইছে? কি হইছে? হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছে। সর্বনাশ বল কি? কখন মারা গেলেন? নুহাশের কন্ঠে উদ্বেগ। গতরাতে। ওহ তাই! সরি আমি জানিনা। জানেন! অনেক খারাপ লাগছে। আমারও, স্বগোক্তি নুহাশের। তবে জম্নেলে মরতেই হবে। নুহাশ স্বান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে। আচ্ছা ওনার জন্য তো অনেক মানুষই কান্না করবে, মন খারাপ করবে তাই না? হ্যা তাতো অবশ্যই। তবুও কত নিঃসঙ্গভাবে চলে যাওয়া। উনার না জ্যোন্সা রাতে মারা যাওয়ার খুব শখ ছিল। হু। আমিও চলে যাব কোন একদিন। মিলিয়ে যাব গোধুলীর শেষ সীমায় নুহাশের স্বগত উচ্চারন।



আপনি তো বিখ্যাত না, আপনার জন্য কে কাদবে? কেউ কাদুক বা না কাঁদুক অন্তত তুমি তো কাঁদবে? তা অবশ্য ঠিক। আপনার সাথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আপনি আমার এত ভালো বন্ধু। আপনাকে ভুলব কি করে বলে পদ্ম। আর ভুলতে হবে না? বাড়িতে মেয়ে দেখা হচ্ছে। তাই নাকি? পদ্মর হার্টবিট বাড়তে থাকে। তবুও চেপে যায়। আচ্ছা মেয়ে কি করে? অনার্স ফার্স্ট ইয়ার। বাবা স্কুলের টিচার। টিচারের মেয়ে মনে হয় খারাপ হবে না? তাই না? হু ভালোই হবে। আপনার বিয়েতে আমাকে দাওয়াত দিয়েন, হ্যা! জ্বি না, তোমাকে দাওয়াত দেয়া যাবেনা। তুমি আবার কি প্যাঁচ লাগাও কে জানে? ঘরে আগুন লাগাতে চাইনা বাপু। এটা কি বললেন বস? আপনার ঘরে আগুন দিয়ে লাভ কি? লাভ কিছু না হোক আমি তো কষ্টে থাকলাম। সংসার জীবনে জ্বলে পুড়ে মরলাম আর তোমার করুনাপ্রার্থী হয়ে থাকলাম। এটাই তোমার লাভ। হ কইছে আপনারে? আচ্ছা বিয়ের পরে কি আমাকে ফোন করবেন? আশ্চর্য! তোমাকে ফোন করব কেন। তুমি আমার কে? না। না। এসব হবে না। আমি আমার বউয়ের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে চাই। বউকে ঠকাতে চাইনা নুহাশের স্পষ্ট জবাব। বন্ধুকে ফোন করলেই কি বউকে ঠকানো হয়? হয় না আবার! কোন স্ত্রীই চায়না স্বামীর আগের বান্ধবীর সাথে যোগাযোগ থাকুক। বিয়ের পর বউ কি বলবে জান? কি? সাগ্রহে জানতে চায় পদ্মœ। বলবে, দেখি তোমার মোবাইলটা দেখি। সারাক্ষন কার সাথে এত কথা বল? ওমা! তোমার মোবাইলে এত মেয়েদের নাম্বার কেন? এক্ষুনি ডিলিট কর। নুহাশের বলার ঢঙে হাসি পায় পদ্মর। বারে হাসছ কেন? না এমনি। হঠাৎ গম্ভীর হয়ে যায় পদ্ম। আচ্ছা আমি যদি আপনার কাছে ফিরে আসি। আপনাকে বিয়ে করতে চাই। আমাকে রিসিভ করতে পারবেন? পারব না কেন? সত্যি পারবেন পদ্মর চোখেমুখে বিস্ময়। আপনার কি একটুও মনে হবে না যে এই মেয়েটা কত ছেলেরে ঘুরাইছে। না মনে হবে না। সব ভুলে যাব বলে নুহাশ। সত্যি ভুলে যাবেন? হ্যা। ভালোবাসার জন্য মানুষ কত কি করে? আর আমি এ সামান্য স্যাক্রিফাইস করতে পারব না। এক ঠান্ডা আবেগ স্পর্শ করে নুহাশের কন্ঠ।



হ্যালো পদ্ম? হু। কেমন আছ? ভালো। আপনি? হু ভালো। শোন, তুমি আমার সাথে শপিং এ যাবে? তুমি না অনেক ভালো শপিং করতে পার? কি কিনবেন? বেশি কিছু না। বেনারসি শাড়ী আর ডায়মন্ডের রিং। হঠাৎ বেনারসি শাড়ী আর ডায়মন্ড কেন? বারে তুমি তো দেখছি সব ভুলে বসে আছ। আমার না বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে? বউয়ের জন্য কিনতে হবে না? ভাবছি তোমার পছন্দেই কিনব। কালকে রেডি থেকো। আমি ফোন দিলে এস হ্যা। কালই? কাল তো যেতে পারব না। আ্যাসাইমেন্ট জমা দিতে হবে। কালই লাস্ট ডেট। নুহাশকে এড়ানোর চেষ্টা



করে পদ্ম। না না ওসব হবে না। চুলোয় যাক তোমার অ্যাসাইনমেন্ট। আমার সাথে তোমার যেতেই হবে।



সারারাত ঘুম হয়নি পদ্মর। আশ্চর্য মানুষ রে বাবা! কেমন নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলে ফেলল বিয়ের কথা। একসময় কত পাগলামীই না করত নুহাশ। এত দ্রুত নিজেকে সামলে নিল কিভাবে? ভারী অবাক হল পদ্ম। প্রথম পরিচয় থেকে শুরু করে গতকাল পর্যন্ত আবারও ভাবল পদ্ম। নুুহাশের আচারনে কোথাও কোন খুত ধরা পড়ল না। নিজেকে ধিক্কার দিল পদ্ম। জীবনের চরম ভুলটা হতে যাচ্ছে ভেবে শোকে আচ্ছন্ন হল ও। কিন্তু সময়টা বড় অসময় হয়ে এল পদ্মর কাছে।



আহমাদ ইউসুফ



পাঁচপাড়া বাজার, পিরোজপুর সদর থেকে



০১৭৩৬-৪৫২১৬৭



ংসশংধনঁল@মসধরষ.পড়স

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.