নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুপারনোভা

আহেমদ ইউসুফ

I am a introverts person would like to hide myself.

আহেমদ ইউসুফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মনিরপেক্ষতা ও নাস্তিকতাঃ একই মুদ্রার দুইপিঠ

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৩২



----আহমাদ ইউসুফ----

# ইদানীং কালের কিছু মডারেট ব্যক্তিবর্গ কিংবা প্রথিতযশা সাহিত্যিক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব প্রায়শই নিজেকে সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবী করেন। বিভিন্ন সভা-সেমিনারে Secular এবং Secularism শব্দদ্বয় দুচার বার উচ্চারন করতে পারলেই উতরে যান। উঠতি কবি ও সাংবাদিকরাও নিজেকে প্রগতিশীল ও সেক্যুলার প্রমানে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ওই পরিচয়টাই যেন উপরে ওঠার একমাত্র সিড়ি। আমি ওইসব সুশীল ও প্রগতিশীলদের বলব সেক্যুলার হওয়ার আগে সেক্যুলারিজম এর উৎপত্তি সম্পর্কে একটু জেনে নিতে। সেক্যুলারিজম একটি ভ্রান্ত মতবাদ। নতুন বোতলে পুরাতন মদ আরকি। আর অবাক ব্যাপার নামকা ওয়াস্তে মুসলমানরাও সে মদ গিলছে দেদারসে। সেক্যুলারিজম বলতে আমাদেরকে বুঝানো হয় ধর্মনিরপেক্ষতা। আচ্ছা ধরা যাক, ধর্মনিরপেক্ষ আর দলনিরপেক্ষ দুই ভাই। দলনিরপেক্ষ বলতে কি বুঝায়? এ প্রশ্নের উত্তর ক্লাস ফাইভ পড়ুয়া বাচ্চাও বলে দিতে পারবে। দলনিরপেক্ষ মানে হলো কোন দলের সমর্থন না করা। অর্থাৎ সহজ কথায় রেফারি বনে যাওয়া। হ্যা ঠিক ধরেছেন। এবার আসুন তাহলে ধর্মনিরপেক্ষ বলতে কি বোঝাতে চাইছেন আপনি? দলনিরপেক্ষ রেফারির মতো ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে আপনি কোন খেলার রেফারি হতে চাইছেন হে মুসলমান? আপনার তো একখানা পূর্নাঙ্গ জীবনবিধান রয়েছে জনাব। আপনার রয়েছে সুস্পষ্ট বার্তা (আল কোরআন) ও নির্দিষ্ট কর্মপন্থা। সেক্ষেত্রে আপনার তো ধর্মহীন রেফারি তথা ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার কোন সুযোগ দেখছি না আমি।

## এবার আসুন দেখা যাক, গুগল ডিকশনারি কি ফলাফল দেয় আমাদের। google search দিয়ে পেলাম সেক্যুলার মানে rejection all religious values. অর্থাৎ সকল ধর্মীয় মূল্যবোধ পরিহার করা।
‘সেক্যুলারিজম’ বা তথাকথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ মতবাদের জন্ম, সে পাশ্চাত্য দেশসমূহে লিখিত ইংরেজি অভিধানে Secularism শব্দের নিম্নরূপ অর্থ এসেছে:
ক। পার্থিববাদী অথবা বস্তুবাদী।
খ। ধর্মভিত্তিক বা আধ্যাত্মিক নয়।
গ। দ্বীনপালনকারী নয়, দুনিয়াবিমুখ নয়।
একই অভিধানে Secularism শব্দের সংজ্ঞায় এসেছে: Secularism এমন একটি দর্শন, যার বক্তব্য হচ্ছে, চরিত্র-নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্মীয় নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না”।
‘ব্রিটিশ বিশ্বকোষ’-এ আমরা দেখি, সেখানে সেক্যুলারিজম সম্পর্কে বলা হয়েছে: “সেক্যুলারিজম একটি সামাজিক আন্দোলন, যার একমাত্র লক্ষ্য মানুষদেরকে পরকালমুখী থেকে ফিরিয়ে এনে দুনিয়ামুখী করা”।
Encyclopedia Britannica নামীয় ব্রিটিশ বিশ্বকোষে Atheism বা ‘নাস্তিকতা’ শিরোনামের অধীন secularism এর আলোচনা এসেছে। তাতে Atheism তথা নাস্তিকতাকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে: ক। তাত্ত্বিক নাস্তিকতা
খ। ব্যবহারিক নাস্তিকতা
Encyclopedia Britannica ‘বিশ্বকোষ’ সেক্যুলারিজমকে দ্বিতীয় প্রকার নাস্তিকতার অন্তর্ভুক্ত করেছে।
Oxford dictionary অনুসারে secularism অর্থ belief that religion should not be involved in the organization of society, education ect. একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো should not be involved মানে কি বাদ দেওয়া নয় ? অথ্যাৎ রাষ্ট্র থেকে ধর্ম বাদ দেওয়া। sentence টিতে আমি কোথাও নিরপেক্ষ শব্দ দেখছি না । তার মানে পরিষ্কার ধর্ম অসহ্য কিছু একটা। রাষ্ট্রের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার মাথা না ঘামালেও চলবে।

### বাংলা একাডেমীর অভিধান মতে সেক্যুলার শব্দের অর্থ পার্থিব, ইহজাগতিক, জড়-জাগতিক। নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্মকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয় এই মতবাদই হলো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ। --অর্থাৎ যে মতবাদে নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্মকেন্দ্রিক হবে না সেই মতবাদই সেক্যুলারিজম। তার মানে ধর্মকে আস্তাকুড়ে ফেলে দিয়ে আপনাকে নৈতিকতা শিখতে হবে। ধর্ম ও নৈতিকতা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আমার মতো সকলেই স্বীকার করবেন যে, পৃথিবীর সকল ধর্মই নৈতিকতার আধার। সুতরাং ধর্মকে বাদ দিয়ে নৈতিকতা অর্জন কেবল ফাকিরই নামান্তর। অতএব আপনি ধর্মনিরপেক্ষ হবেন তো জড়বাদী/ইহবাদী হবেন, ধর্ম থেকে অনেক দুরে সরে যাবেন। এটা ধর্মহীনতার দিকে যাত্রার প্রথম পদচারনা। এটা আপনাকে বুঝতে হবে। একজন মুসলমান হিসাবে আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে মৃত্যুর পড়ে আর একটি জগত আছে। পার্থিব ও ইহজাগতিক জীবন শেষে আপনাকে হাজির হতে হবে অনন্তকালের পথে। আর যদি আপনি তা বিশ্বাস না করতে চান তো আপনি মুসলমান হতে পারেন না। সুতরাং আপনি মুসলমান হয়ে একই সাথে সেক্যুলার হতে পারেন না। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় এই যে, আমাদের দেশের মুসলিম জনগণ কে ধোকা দেবার জন্য নাস্তিকরা সুকৌশলে Atheism কে Secularism বা ধর্মনিরপেক্ষতা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। কারন ধর্মহীন বলা হলে এই দেশের মুসলিম জনগণ গ্রহণ করবে না। আর আমরা প্রগতিশীল মুসলিমরা একে সাদরে গ্রহণ করছি। তাই আসুন আমরা সেক্যুলার না হয়ে ধার্মিক হওয়ার চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমিন...।


আহমাদ ইউসুফ
২১/১০/২০১৪ খ্রিঃ।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৩৫

আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: নিজস্ব চিন্তা ও গবেষণামূলক পোষ্ট। যুক্তি ও বুদ্ধির মাপকাঠিতে। নিজস্ব ভঙ্গিমায় বিষয়টা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি। কতটা সফল হয়েছি তা পাঠকই বলতে পারবেন। ধন্যবাদ সবাইকে......।

২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:৪৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল। আপনার চিন্তা ও ভঙ্গিমা দুটাই আমার মতে সঠিক।আমি মুসলমান তার বাহিরে আমার অন্য পরিচয় থাকতে পারে, বাঙ্গালী, কালো, ড়া: , ব্যারিষ্টার আর যাই বলি না কেন।
প্রথম পরিচয় মুসলমান। যে যার বিশ্সাস নিয়ে থাকুক।
ভাল থাকবেন।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৩

আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: অামার লেখা ভালো লেগেছে শুনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ।

৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:০৮

ইমরান আশফাক বলেছেন: ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা, আরেক কথায় নাস্তিকতা।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:০২

আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.