নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একটা নির্দিষ্ট গন্ডীর মাঝেইথাকতে চাই।।

সচেতনহ্যাপী

সচেতনহ্যাপী › বিস্তারিত পোস্টঃ

---------------ছুটি------------------

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:০৪

ছুটি খুবইছোট একটি বাক্য । কিন্তু এর প্রভাব সেই শিশুকাল থেকে মৃত্যু অবধি আমাদের জীবনে প্রচন্ডভাবে প্রভব বিস্তার করে আছে। না এটা লিখতে আমি বহুবচন ব্যাবহার করবো না।কারন আর সবার উপরে এর প্রভাব এতো ব্যাপক না ও হতে পারে। তাই শুধু নিজের কথাটা লেখাই সবচেয়ে ভাল।।

মনে পড়ছে সেই ছোটবেলার যখন প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি হবার কথা। কারন ছুটি কথাটার মাহাত্য এর আগে কখনো বুঝি নি বা দরকারও পরে নি।স্কুলে ভর্তি হবার পরই বুঝলাম এটা নিত্যদিনের গতবাধা সাময়িক এক মুক্তির নাম। এইদিনগুলিতে নেই সময়মত স্কুলে যাওয়া, পড়ার তেমন ঝামেলা নেই। নেই মাষ্টারদের চোখ রাঙ্গানীও। শুধু খেলা আর বেড়ানো।।

সবাই ঢাকা থাকতাম বলে এই দিনগুলিতে বিশেষ করে জৈষ্ঠ-বৈশাখ মাসে ছোটমামাকে মেঝমামা পাঠাতেন আমাদের নানাবাড়ীতে নেওয়ার জন্য। তখন লঞ্চে ছিল প্রায় ২ঘন্টার পথ।লঞ্চের একটানা কান ফাটানো আওয়াজও তখন সুরেলা লাগতো।উপরে বসে দেখতাম লঞ্চটা কিভাবে নৌকা এবং পাশের গাছপালায় ছাওয়া ঘরগুলিকে কি সুন্দর পিছনে ফেলে যাচ্ছে।মাঝে মাঝে ভোউউ ডাক।আর আব্বা দাদার একমাত্র সন্তান বিধায় দাদাবাড়ি শুধু ঠিকানাতেই সীমাবদ্ধ। তাই সেই বাল্য এবং কৈশরের সব আনন্দ ভীড় করে থকতো নানাবাড়িতে। মামাতো আর বেড়াতে আসা অন্যান্য খালাতো ভাইবোন মিলে যেন হৈচৈ,খেলা আর হুটোপুটির হাট বসতো। আর মামা-খালাদের দেখতাম গোল হয়ে বসে কি যেন গল্পপ করছে আর মাঝে মাঝেই হেসে উঠছে। তখন ভাবতাম খেলা আর হৈচৈ ফেলে কি এমন আনন্দ থাকতে পারে?আমগাছ গুলি দুদিনেই ন্যাড়া হয়ে যেত।কাঠাল পাকে নি কি হয়েছে?মুচি ভর্তা করে খাবো।(কাঠলের কঁচি রোয়া পেড়ে তাতে শুকনো মরিচ পুড়ে মাখানো)। ফলাফল কয়েকদিনের মাঝেই কাঠাল গাের অবস্থাও আমের মতই হতো। মাঝে মাঝে দেখতাম মামা হাট থেকে টুকরী ভরে আম র কাঠল নিয়ে এসেছে।এতো কি আর খাওয়া যায়? খাওয়ার চেয়ে নষ্ট হতোই বেশী। আর কাঠালের কষ আর আমের রসে পুরো চেহারা যা হতো না, তা সেসময় না বুঝলেও আজ বড়দের সেসময়ের মুচকি হাসি মনে করিয়ে দেয়।রাতে উঠানে মাদুর-খ্যাতা বিছিয়ে নানা-নানী সম্পর্কের কারো চারপাশে গোল হয়ে শুয়ে-বসে ভুত-রাক্ষস-পরী-আর রাজকন্যাদের গল্প শুনতে শুনতে সেখানেই ঘুমে ঢলে পড়া।

তারপর ধীরে ধীরে মামাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছোট খাল দিয়ে অনেক পানি বয়ে গেল। আমরাও বড় হলাম। কলেজে ভর্তি হলাম।ভাইবোনরা কেউ ভার্সিটিতে,কারো বিয়ে হয়ে গেল।ছোটরা কেই প্রাইমারী কেউ বা হাইস্কলে।কোন মাই তার একজন সন্তনকে রেখে বেড়াতে চায় না।স্বভাবতইঃ আমাদের কারোরই আর দেশের বাড়ী যাওয়ার সময় হয়ে উঠে না।আর বড় হওয়ার পরে সবার ইচ্ছে-বদলও একটা কারন। এই দিনগুলিতে কখনো বড়বোনদের বাড়ীতে যাওয়া বা তাদের নিয়ে আসা । কখনো বা বাড়ির অনুমতি নিয়ে কোন বন্ধুর বাড়িতে যাওয়া।সোজা কথায় পরিবেশ পরিস্থিতির কারনে রুচি বদল হওয়া।কিন্তু ছুটির সেই আমেজ আগের মতই রইলো। এই আনন্দের মাঝে কিছু এলো না বাধ সাধতে। শুধু বদলে গেল সময় আর পছন্দ।

তারপর এলো চাকুরী জীবন। বিশেষ করে আমাদের মত প্রবাসীদের। আমাদের কাছে তো ছুটি একটা বরাট ব্যাপার। বিয়ের মতই পাত্র-পাত্রী দেখা মানে সিদ্ধান্ত নেয়া,কবে যাব। তারপর শুরু হয় টিকেট কাটা থেকে শুরু করে প্রিয়জনদের চাহিদা মাফিক কেনা-কাটা। যে যতই কৃপন হোক না কেন এইসময়ে সেও চেষ্টা করে সবার জন্য কছু না কিছু কেনার জন্য।বন্ধু-বান্ধবদের চাহিদাকেও সন্মান দেখায়।আমি এমন অনেককে দেখেছি যারা কিনতে কিনতে প্রায় খালি হাতেই দেশে যায়। কিন্তু মুখে থাকে সবার চাহিদা মেটানোর পরিতৃপ্তির অনাবিল হাসি।বোকা না হয়েও বোকর মত সুন্দর ভাবে হেসে বলে ভাই কিনতে যেয়ে হাত খালি হয়ে গেল।কি করবো,সবাইকেতো কিছু না কিছু দিতে হবে-তাই না।

নিজেরা ব্যাবহার না করলেও স্ত্রী বা সন্তান,ক্ষেত্রবিশেষে ভাইবোনদের জন্য আইফোন,স্যামসুং এস সিরিজ বা হুয়াই,কিনে ফেলে দরাজ হাতে। কেউ কেউ কম্পিউটারও।খোজ নিলে দেখা যাবে এসবের বেশীর ভাগই হবে অপচয়। কিন্তু প্রবাসী,এতো কিছু ভাবে না আর ভাবতেও চায় না।

বলাই বাহুল্য আমিও যে এর ব্যতিক্রম নই।ঘুম,নির্ঘুম হয়ে যায় কয়েকদিন আগের রাত থেকে।কিভাবে পৌছুবো?মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখি ট্রেন মিস করার মত প্লেনটাও আমাকে ফেলেই চলে যাচ্ছে। :P কিন্তু এটা সুধুই স্বপ্ন,বাস্তব নয়।

আর একটা ছুটির কথা এখন বেশ মাঝে মাঝেই মনে পড়ে।তা হলো সব কিছু ছেড়ে একেবারেই ছুটি। থাকবে না কোন মায়া,থাবে পিছুটান। ছুটি শেষ হলে কাজে যোগ দেয়ারও প্রয়োজন হবে না।একা, একেবারে একা ঘুমিয়ে থাকবো অনন্তের মাঝে।। :((

বিঃদ্রঃ ঈদের ছুটি শুরু হলো আজ থেকে। একটানা নয় দিন।সবাইকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।। =p~ =p~

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:০৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: সুন্দর।
ঈদের শুভেচ্ছা।।

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৩:২৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আমার বাড়ীতে আসার জন্য।আর প্রশংসার জন্য আবারও।।
আপনিও শুভেচ্ছা নেবেন।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৫৪

লেখোয়াড় বলেছেন:
"ছুটি খুবইছোট একটি বাক্য"

আচ্ছা, 'ছুটি' এটা কি একটি বাক্য হবে? এটি একটি শব্দ হবে না?

কি জানি আপনি কি মনে করে বাক্য বললেন!!

যাহোক, ঈদের শুভেচ্ছা।
ভাল থাকবেন।

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:০৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ঠিক বলেছেন এটা শব্দই হবে তবে আমি বাক্য ব্যাবহার করেছি এর পুরব এবং পরের প্রভাব চিন্তা করে।
ধন্যবাদ এবং আপনার জন্যও রইলো ঈদ শুভেচ্ছা।।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:০৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: সচেতনহ্যাপী ,




ছুটি খুবই ছোট একটি বাক্য ।

এই ছুটি শব্দটি আর আপনার এই লেখার একদম শেষ প‌্যারাটি পড়ে রবীন্দ্রনাথের "ছুটি" গল্পটির কথাই মনে পড়ে গেলো ।

গল্পের বালক নায়ক ফটিক সেই ছুটিই তো পেলো...চিরজনমের ..... " মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ী যাচ্ছি ।"


কারো জীবনে এই ছুটি যেন অসময়ে না আসে ।

আপনাকে সহ সব প্রবাসী বন্ধুদের সর্বপ্রকার মঙ্গল কামনায় । সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা ........

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:১৩

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আপনার সহমর্মিতার জন্য ধন্যবাদ।আর ফটিকের ছুটর সাথে আমার মত বয়ষ্কদের ছুটির প্রভাবও কিন্তু বিস্তর।(বিশেষ করে নিঃসঙ্গদের)তাই আমার লেখায় এবং চিন্তায় তার প্রভাব থকবে,এটাই তো স্বাভাবিক-তাই না??
ভাল থাকুন,সবাইকে নিয়ে ঈদ পালন করুন এই কামনায়....।

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: সচেতনহ্যাপী ,




সম্ভবত আপনার বুঝতে ভুল হয়েছে । ছুটি গল্পের দুষ্ট ফটিককে ভালো বানাতে মায়ের থেকে সরিয়ে নিয়ে অনেক দুরে মামার বাসায় দেয়া হয়েছে । মায়ের কাছে যাবার বাসনা তার খুব । কিন্তু শহরের বিদ্যালয় ছুটি হয়না । মাকে দেখার র্বাসনা ফটিকের আর হয়ে ওঠেনা । গল্পের শেষে ফটিকের ভিষন জ্বর হয় । সেই জ্বরে তার চিরজনমের ছুটি হয়ে যায় । মৃত্যুর পথে যেতে যেতে ফটিক জ্বরের ঘোরে এটাই বলছিলো -
" মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ী যাচ্ছি ।"

আপনার .....সব কিছু ছেড়ে একেবারেই ছুটি। থাকবে না কোন মায়া,থাবে পিছুটান। এই টুকু পড়ে আমার সেই ছুটির কথাই মনে পড়ে গিয়েছিলো ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৫৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: না, ভাই বুঝি নি। যে এভাবে সহমর্মিতা প্রকাশ করতে পারে,তাকে ভুল বোঝার অবকাশ কোথায়?? আপনি শুধু শুধু ভাবছেন। তবে লেখার সময় ছুটি গল্পটার কথা আমর মাথায়ই ছিল না। আমি শুধু আমার মনের ভাবটা,আমার করেই লিখতে চেয়েছিলাম। আর
কে বলতে পারে যে,আমাকেও ভাল বানানোর জন্যই পাঠানো হয় নি?:-P :-P

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৪৮

আবু শাকিল বলেছেন: শৈশবের ছুটি আর এখনকার ব্যাস্ত জীবনের ছুটি বিশাল ফারাক।
গত ঈঁদে দেশে ছিলাম,এইবার যেতে পারলাম না।পিছুটান সব সময় লেগেই থাকে।

ছুটি পেয়েছি তবে মন খারাপ নিয়ে সময় কাটানো র জন্য ।

অগ্রিম ঈঁদ মোবারাক।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৫৯

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: একদম ঠিক।। আমার বৎসর পুরো হয় নি,তাই আমিও যেতে পারলাম না। সেপ্টেম্বরে বছর পুরো হলেই ৪৫দিনের ছুটিতে যেতে পারবো। এখন হলে এই দশদিন বেশী থাকা যেত সবার সাথে।।
আপনাকেও ঈদ-মোবারক।।

৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:২৭

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: ওদেশে ছুটির সময় কি করেন?

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ২:৩৫

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ব্যাস এমনি ঘরে বসে থাকি। সময় কাটে কম্পিউটার,গেম আর রান্না করে।। শুনে হয়তো হাসছেন, কিন্তু সত্যি কথা বেশী খারাপ লাগলে যা মন চায় রান্না করি।
কোথায় ডুব দিয়েছিলেন এতদিন?ভাল থাকবেন। ঈদ-শুভেচ্ছা রইলো।।

৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:২৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

ঈদের শুভেচ্ছা রইল ভ্রাতা।

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনাকেও জানাই ঈদ-শুভেচ্ছা। ভাল থাকবেন সততঃ এই কামনায়।।

৮| ৩১ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩৬

অবচেতনমন বলেছেন: আর একটা ছুটির কথা এখন বেশ মাঝে মাঝেই মনে পড়ে।তা হলো সব কিছু ছেড়ে একেবারেই ছুটি। থাকবে না কোন মায়া,থাবে পিছুটান। ছুটি শেষ হলে কাজে যোগ দেয়ারও প্রয়োজন হবে না।একা, একেবারে একা ঘুমিয়ে থাকবো অনন্তের মাঝে।।

অসাধারন, বাস্তব চিরন্তন সত্য প্রলাপ, বেশ লাগল।।
ভাল থাকবেন সর্বদা এই প্রত্যাশা রইল।

৩১ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৫:০৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: বোঝনইতো নিঃসঙ্গ জীবনে অনেক ভাবনাই মনে দোলা দিয়ে যায়। আর বয়স হলে এই চিন্তাটা। আসলে সেদিন যাই মনে এসেছে, তাই লিখেছি।।
ধন্যবাদ এবং ঈদ মুবারক।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.