নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

web design and development, Graphics Designer, Digital marketer.। whatsapp +8801929766847। https://www.kulauranews.com/ , https://www.webbespace.com/

ওবায়দুল হক

আমি ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করি না, আমি শুধু সৎ থাকতে চেষ্টা করি। মোবাইল: ০১৭১৮০২৩৭৫৯

ওবায়দুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যদিও পা ফেটে রক্ত ঝরছিল,কিন্তু হাটতে ব্যাথা লাগছিল না -উঠে দাড়ানোর গল্প

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬



(১) প্রাকৃতিকভাবেই আমার গায়ের চামড়া একটু নরম। ছোটবেলা কঠোর পরিশ্রম করে বড় হই নি তাই হয়ত এমন হয়েছে। তেমনী পায়ের গুড়ালীও একটু নরম হয়েছে। বেশী হাটার অভ্যাসও ছিল না। একটু হাটতে গেলেই পায়ে ব্যাথা করত। শীতের সময় একটু বেশী হাটাহাটি করলেই পা ফেটে রক্ত ঝরে। অবশ্য সমস্যা আমাদের ডিএনএ তেও থাকতে পারে। বড় ভাইয়ের একটি মেয়েরও একই সমস্যা। অন্যদের আবার সে সমস্যা নেই। হঠাৎ করেই জীবনে আসল পরিবর্তন। দামী লাইফস্টাইলে যে ছেলেটা ছিল অভ্যস্ত সে খুজে নিল টিউশনি। একটা সাইকেলও একসময় জোগাড় করে ফেললাম নিজেরই টিউশনির টাকায়। লক্ষ্য তবুও অনেক দূর যাওয়ার। এখনো অনেক দূরের পথ পাড়ি দিতে হবে। অনেকটা যাওয়া এখনো বাকি।

(২) খরচ বাচাতে কলনীর মতো একটা বাসায় উঠলাম। টিনের চাল। মনের মধ্যে হয়ত একটু কষ্ট ছিল। ভাল বাসায় থাকার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। টাইলস ছাড়া ছোট বাসায় থাকতে কেমন যেন লাগত। এরই মাঝে পাশের এক মাজারে এক সন্ধ্যায় নামাজ পড়ে কবর জিয়ারত করে ফিরছিলাম। এমন সময় শুরু হল বৃষ্টি। সবাই যে যেদিকে পারে গিযে আশ্রয় নিল। আমিও একটি বড় গাছের নিচে আশ্রয় নিলাম। এমন সময় খুব করুন সুরে আল্লাহ আল্লাহ ধ্বনি শুনে পাশ ফিরে দেখলাম এক ভিক্ষুক। যার দুই হাত আর পা নেই। হামাগড়ী দিয়ে যে গাছের নিচে আশ্রয় নিবে সে শক্তিও নেই। আল্লাহ আল্লাহ ধ্বনি এখনো আমার কানে বাজে। আমি এখনো শুনতে পাই। সে ধ্বনি যেন আমার হৃদয় ছিড়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। শুধু মনে করতে চেষ্টা করছিলাম, আমি কি কখনো এমন সুরে আল্লাহকে কখনো ডেকেছি? মনে পড়ল না। জানি ডাকি নি। তার হাত আর পা নেই। সে কিভাবে এতো দরদ কষ্ঠে আল্লাহ ডাকে? আমি তো এখনো দুই পায়ে দাড়াতে পারি। ছোট হলেও মাথার উপর টিনের ছাল আছে। কাজ করার শক্তি আছে।

(৩) এরই মধ্যে সাইকেলটা চুরি হয়ে গেল। স্রষ্টাকে বললাম, তুমি পরীক্ষা নিচ্ছ? দেখ আমি শোকরগোজারই আছি। সাইকেল চুরি হয়েছে তো কী হল পা দুখান তোমারই দেয়া। সেই পায়ের জন্যই শোকরীয়া জানাই। টিউশনির দীর্ঘ পথ পায়ে হেটে আসা যাওয়া শুরু করি। এক শীতের সকালে তেমনী হাটছিলাম। পায়ের জুতা জোড়াও একটু বেশী পাতলা হয়ে গিয়েছিল। পা ফেটে রক্ত ঝরতে শুরু করে। কেন জানি আমার কোন ব্যাথা করছিল না। চোখের কোণে পানি জমেছিল সত্যি। তবুও আমি ব্যাথা পাচ্ছিলাম না। নিজেকে ঠিকিয়ে রাখতে একটা ফার্মেসীতে চাকুরী নিলাম। তারপর একটা কম্পিউটারের দোকানে টাইপিংয়ের কাজ নিলাম। যেহেতু আমার স্বপ্ন ছিল আইটি সেক্টরে তাই এই কাজটি আমি আরো বেশী ভালোবেসে করতে লাগলাম। ডিউটি টাইমের আগে এসে কম্পিউটার সম্পর্কে জানার জন্য নেটে সার্চ করতাম। ডিউটি টাইম শেষেও অনেকক্ষণ বসে থাকতাম দোকানে নতুন আরো কিছু শেখার চেষ্টায়। জানলাম ইন্টারনেট ফ্রিলেন্সিং সম্পর্কে। দোকানে কাজের ফাকে ফাকে ইন্টারনেটে ফ্রিলেন্সিং শুরু হল। যে দোকানের কর্মচারী ছিলাম তারই পাশে নিজেই একটি দোকান খুললাম। আমার ঠিকে থাকার এই গল্পে আরো অনেক ছোট ছোট গল্প আছে যা বলতে হলে দীর্ঘ সময় লাগবে। কত বাধার যে সম্মুখীন হয়েছি তার কি হিসেব আছে। সব থেকে বেশী ভেঙ্গে পড়েছিলাম নাহিদ মারা যাওয়ার পর। সেখান থেকেও উঠে দাড়িয়েছি। শুনেছি, এই উঠে দাড়ানোই না কি স্রষ্টা খুব পছন্দ করেন।

আমরা অনেক সময় হুটহাট করে অনেক কিছু পেয়ে যাই। যে জিনিসটা হুট করে পাই সেটা সেভাবেই হারাই। স্বপ্নজয়ের পেছনে সব থেকে বড় অনন্দ হচ্ছে বাঁধাগুলোকে অতিক্রম করা। লক্ষ্যে কখনো সন্দিহান হতে নেই। হতাশ হতে নেই। তা না হলে বাঁধাগুলো পাহাড় সমান মনে হবে। ঢেউয়ের মতো লক্ষ্য পূরণের পথে আসে বাধা। আমার এই পথ অতিক্রম করে যারা এগিয়ে যাই তারা বিজয়কে স্বায়ী করতে পারি। সবার জীবন হোক সুন্দর।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে স্যলুট।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৯

ওবায়দুল হক বলেছেন: আপনাকেও

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংলার ভয়ংকর প্রতিযোগীতায় আপনি টিকে আছেন, ভালো করছেন, এবং তাতে খুশী থাকাটা সবার জন্য ভালো খবর।

আপনার সাইকেল চুরিটাকে "আল্লাহের পক্ষ থেকে আপনাকে পরীক্ষা" করা হচ্ছে বলাটা লজিক্যাল মনে হচ্ছে না; বুঝা যাচ্ছে যে, আপনি পরীক্ষায় পাশ করেছেন; কিন্তু চোরটার কথা ভাবেন, আপনার লজিকে সাইকেল চুরি করাটাও নিশ্চয় তার জন্য একটা পরীক্ষা?

ভালো করছেন, সেটা ভালো; ভালো করার জন্য আপনি আল্লাহ'কে ধন্যবাদ দেন, সেটা লজিক্যাল; চুরুধারী ইত্যাদি আসলেই চুরিধারী মাত্র, ওখানে পরীক্ষা চলছে ইত্যাদি বলে জীবনটাকে বেশী রহস্যময় করে ফেলছেন; কারণ, সবাই পরীক্ষায় ভালো করতে চায়।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৭

ওবায়দুল হক বলেছেন: আপনার লজ্যিক বুঝতে পারছি। আসলে আমি সে দৃষ্টিতে বলি নি। বিপদে ভেঙ্গে পড়ি নি। বসে থাকি নি। যা আছে স্রষ্ট্রার দেয়া তাই দিয়েই এগিয়ে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিয়েছি। এটাই বুঝাতে চেয়েছি। তাছাড়া একঅর্থে সবকিছুই মহান স্রষ্টার পরীক্ষা। তিনি কোন কিছুই এমনী এমনী সৃষ্টি করেন নি। সব কিছুই তার মহা পরিকল্পনা। তিনিই তো সব থেকে বড় প্রোগ্রামার। তার প্রোগ্রামিংয়ে স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি রয়েছে। ধনি আর গরীব সৃষ্টি করে তিনি ধনিদের পরীক্ষা করছেন তারা গরীবদের হক ঠিকমত আদায় করে কি না। আবার গরীবদেরও তিনি পরীক্ষা করছেন যে, স্ববস্থায় তারা তাদের মালিকের প্রতি কতটা শোকরগোজার। চুরের সামনে অন্যের হক ছিল। সে তা অন্যায় ভাবে গ্রহণ করেছে। সেই অর্থে চুরের জন্য এটাও পরীক্ষা হতে পারে। তবে এসব বিষয় আমি জটিলভাবে ভাবতে চাই না। মতামতের জন্য ধন্যবাদ

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:১৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এ উদাহরণগুলো অনুপ্রেরণাদায়ক। যদিও একটু পরেই ভুলে যাব...

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:৩৫

ওবায়দুল হক বলেছেন: কোন এক জ্ঞানী বলেছেন, মনে রাখার জন্য কোন কিছু পড় না। পড়তে থাক আর ভুলতে থাক। একদিন প্রয়োজনের সময় দেখবে ভুলে যাওয়া বিষয়গুলো মনে পড়ছে। যেন তুমি কিছুই ভুল নি।

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৩:৩৬

কেএসরথি বলেছেন: নাহিদ কে ভাইয়া?

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৩৩

ওবায়দুল হক বলেছেন: কিছু কথা শেয়ার করার শক্তি আমার নেই। এখনো সঞ্চয় করতে পারি নি।

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৮:০৪

জগতারন বলেছেন:
জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলি;
মনোযোগ দিয়ে শুনুনঃ
আজে-বাজে জায়গায় গিয়ে এত চেষ্টা করবেন না।
জীবনি শক্তির একটা সিমা বা লিমিট আছে।
নিজের ভালো ও নিজের প্রকৃত মঙ্গল কি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করুন।
জীবনি শক্তি শেষ হয়ে গেলে তা আর ফেরত পাওয়া যায় না।

১৬ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৩৪

ওবায়দুল হক বলেছেন: আপনার কথাগুলো মাথার উপর দিয়ে গেল। একটাও ধরতে পারলাম না। দয়া করে আমাকে মাফ করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.