নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নগুলো নিয়েছে পিছু, হেটে চলেছি আমি

নিজের জন্য একটু সময় আর একটু ভালোবাসা, হয়তো দুরুহ নয়, তবুও যেন এতোটা সহজও নয় ।

একজন সময় জ্ঞানহীন

সময় জ্ঞানহীন , অতীব অলস প্রকৃতির মানুষ ।

একজন সময় জ্ঞানহীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি বড়ভাই

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:২৭

আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। আমার বাবা থাকেন দেশের বাইরে। বাবাকে খুব দেখতে ইচ্ছে হতো। তখনো মোবাইল ফোন আমাদের মতো সাধারন মানুষের হাতের নাগালে আসে নি। এমনকি টেলিফোন লাইনও ধনীদের বিলাসিতার বস্তু হিসেবেই গণ্য হত। আমার বাবা চিঠি লিখতেন, আর কেউ যদি সেদেশ হতে দেশে আসতো বাবা আমার আর আমার বড় বোনের জন্য খেলনা পাঠাতেন। আমিও বাবাকে চিঠি পাঠাতাম, বাবা আমার এই টা সেইটা লাগবে, সত্যিই বাবা আমার জন্য সেগুলে পাঠাতেন। ছোট বেলা থেকেই আমি কোন খেলনা গাড়ি বা রেডিও এগুলো নষ্ট হলে খুলে ঠিক করার চেষ্টা করতাম। পারতাম না যদিও, তবুও চেষ্টা চালিয়ে যেতাম। আমার বাড়ির সবাই আমাকে ইঞ্জিনিয়ার বলতো, মানে ভালো জিনিশ নষ্ট করার ইঞ্জিনিয়ার। সে সময়ের বাবা'র পাঠানো দুইটা খেলনা উড়োজাহাজ যা এখনো যত্ন সহকারে সাজানো আছে। মাঝে মাঝে আমার ছোট ভাই নাহিদ ওগুলো নিয়ে খেলে। আমার ছোট ভাই নাহিদ ওর ছোটবেলার চেহারার সাথে আমার ছোটবেলার চেহারার অনেক মিল। যদিও ও আমার চেয়ে বেশি ফর্সা। সারাদিন ভাইয়া এইটা হইছে, ভাইয়া ওইটা হইছে কানের কাছে ভ্যান ভ্যান করতেই থাকে। কিন্তু কোনদিন, যদি চুপচাপ হয়ে যায়, মনে হয় আজ কি যেন নাই । আমি ওকে একটু শাসন করি ঠিক তবে ভালোবাসা এর চেয়ে অনেক গুন বেশি, মাঝে মাঝে আমাকে অনেক হাঁসায় ওর অবুঝ কথাগুলো। সত্যিই আজো মনে পড়ে যখন ও জন্ম নিলো, আমি ঘুমাচ্ছিলাম, রাত দুইটার দিকে, আমাকে আমার নানী ডেকে তুললেন, বললেন তোর ভাই হয়েছে। আমি ওকে প্রথম কোলে নিয়েছিলাম। ওকে কোলে নিয়ে ভাবছি, আমি এখন বড় ভাই হলাম, আমারো ছোট ভাই, আছে। যে আমাকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকবে। আমি ওকে বুকে জড়িয়ে নেব, আর ওর বায়না পুরন করার চেষ্টা করবো। একদিন আমার ছোট ভাইয়ের অনেক জ্বর আমরা সবাই অনেক টেনশনে আছি, আমার রুমে মন খারাপ করে বসে আছি। এমন সময় মা চিৎকার করে কেঁদে উঠলেন, আমার ভাই বেহুঁশ হয়ে গেছে। তখন ওর বয়স ৬মাস। মা তাড়াতাড়ি করে মাথায় পানি ঢালার পর ওর জ্ঞান ফিরে এলো। এরপর কেমন করে যেন ও এতো বড় হয়ে গেলো, আমার মনে হয় কয়েকদিন আগেই ও হাটা শিখলো, আমার ভাই সবার আগে আমাকে ডেখেছে, কারন আমি ওর কানের কাছে সবসময় ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকতাম। একদিন ও বাই বলে ডেকে উঠলো, সেইদিন যেন আমার জিবনের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন ছিলো। আমার ভাইটা আমাকে অনুসরণ করা চেষ্টা করে, আমার খুদা লাগলে ওর খুদা লাগে, আমি খেলতে গেলে আমার পিছনে পিছনে আসবে। আর এখন যা হয় , আমরা দুই ভাই মিলে টিভিতে কার্টুন দেখি । মাঝে মাঝে অনেক বোকা টাইপ কথা বার্তা বলে, আর অনেক হাঁসে। ওর কথা সুনে বাকি সবাই হাঁসে। মাঝে মাঝে আমি বিরক্ত হয়ে যাই, আমি বলি, এতো হাঁসি ভালো না, এইবার চুপ থাক।

আমি সহজে কারো সাথে মিশি না, কিন্তু আমার ছোট'টাকে মোটামুটি এলাকার সবাই কম বেশি চিনে। এখন ক্লাস ফাইভে পড়ে। আমি যখন ফাইভে ছিলাম, আমার কোন প্রাইবভেট টিচার ছিলো না। অথচ ওর তিন জন টিচার, এই নিয়ে মাঝে মাঝে বাবা মাকে বলি। তারা বলেন, এখন পরালেখা নাকি আগের থেকে অনেক কঠিন, আমাদের সময়ে নাকি আরো সহজ ছিলো। আমার ছোট ভাই, সে স্কুলে গেলে প্রতিদিন ৫০ টাঁকা করে পায়, আর আমকে ১০ টাকাও দেয় না, বলে আমার নাকি উল্টো দেয়ার কথা তাদের। মাঝে মাঝে মা টিভি দেখে, ছোট ভাইটি বায়না করে কার্টুন দেখবে, আমি অনলাইনে ইউটিউবে কার্টুন চালু করে দেই। এভাবেই চলছে আমার ছোট ভাই আর আমার লাইফ সার্কেল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.