নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুজায়েত শামীম

শামীম সুজায়েত

ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার হাতেখড়ি।শুরু করা শখের বসে। একসময় তা নেশা থেকে পেশা।ব্যবস্থাপনায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে পছন্দের এ পেশায় কেটে গেলো অনেকটা সময়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা পড়েছে পেশাগত জীবনে চলার পথে পাওয়া নানা অসঙ্গতির চিত্র।এখন লেখালেখি করি নিজের আনন্দে, ক্লান্তিহীন ভাবে যা ভালো লাগে।আমার জন্ম ১৯৭৭ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি যশোর উপশহর আবাসিক এলাকায়। আমার শৈশব ও কলেজ জীবন কেটেছে এখানেই।জীবন জীবিকার তাগিদে এখন গঙ্গাবুড়ির আলোঝলমল শহরে্ কাটছে সারাবেলা। যোগাযোগ:ই মেইল : [email protected]হটলাইন : +ফেসবুক : https://www.facebook.com/sumon.sujayet জন্মদিন : 02.02.1977

শামীম সুজায়েত › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনৈতিক ক্যাডার : শেষ পরিণতি অশুভ চিরকাল

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:১৮



রাজনৈতিক ক্যাডার। দুর্দান্ত সাহসী। দুর্ধর্ষ। অপ্রতিরোধ্য। মাঠ দখলের রাজনীতির হাতিয়ার। পেশীশক্তি হিসাবে দলের অভ্যান্তরে বিশেষ ভাবে সমাদৃত। এদের অধিকাংশজনই শুরুর দিকে একসময় ছিল পাড়া মহল্লার উঠতি মাস্তান, পরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়। আশীর্বাদপুষ্ট হয় প্রভাবশালী নেতার। এদের চলনে বলনে মানুষ ভয় পায়, আবার সমীহ করে কখনও কখনও। নিতান্তই বাধ্য হয়ে। মানুষ এদের জবরদোস্তি সহ্য করে চুপচাপ। কেউ কেউ আবার এদেরকে ভালবাসেন। পছন্দ করেন। পাশে রাখেন। তবে তা সময়ের প্রয়োজনে।

বাংলাদেশের বড় দুই রাজনৈকি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে অজস্র রাজনৈতিক ক্যাডার রয়েছে। জামাত শিবিরেও ক্যাডারের সংখ্যা কম নয়। তবে হিসাব করলে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ভেতরে ক্যাডারের সংখ্যা অন্যান্যদের তুলনায় কম করে হলেও বিশ গুণ বেশি। নানা বিষয় পর্যালোচনা করে এমনটি অনুমান করা গেছে। অর্থাৎ বিএনপিত, জামাতের ৫ হাজার ক্যাডার থাকলে আওয়ামী লীগে তা আছে এক লাখ। কেননা যখন যারা ক্ষমতায় থাকে, তাদের দলের দুর্ধর্ষ যুবকরা পেশীশক্তি খাটাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। পেশাদার সন্ত্রাসীরা ছাড়াও ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলের ক্যাডাররাও বাঁচার তাগিদে দল বদল করে বা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় চলে আসে। আওয়ামী লীগ যেহেতু সেই ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে, সেহিসাবে তাদের দলে ক্যাডারের সংখ্যা যে বেশি হবে, তা কোন প্রকার পরিসংখ্যান না চালিয়ে বলা যায়। তাছাড়া বিরোধী দলের জেলা থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের পদধারী নেতা-কর্মীদের ওপর বিগত দশ এগারো বছর ধরে যে পরিমান জুলুম নির্যাতন চলেছে, বিশেষ করে গায়েবি মামলা দায়ের ও বারবার আটকের ঘটনায় তারা এতবেশি ক্লান্ত এবং সর্বশান্ত যে, দলের ক্যাডারদের অনেকেই ভয়ে দলছুট হয়ে গেছে, নতুবা কথিত ক্রসফায়ারে যবনিকা ঘটে গেছে জীবনের। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা যে সাহসীকতার সাথে এবং খুব স্বস্তিতে থাকতে পারছে তা নয়। সেই নিশ্চয়তা যে নেই, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। প্রসঙ্গক্রমে নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে।

যশোরে এমনই একজন রাজনৈতিক ক্যাডার দুর্ধর্ষ মেহবুব রহমান ম্যানসেল ২৭ জানুয়ারি গভীর রাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি শহর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় হত্যাসহ ১৩টি মামলা রয়েছে। তাকে সোমবার গভীর রাতে ঘুম থেকে তুলে পায়ে গুলি চালানো হয় বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। তবে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। পুলিশ দাবি করছে ক্ষমতাসীন দলের বিবদমান দু’পক্ষের গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা ম্যানসেলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় খুঁজে পায়।

ম্যানসেল সদ্য শেষ হওয়া বিতর্কিত নির্বাচনের বিজয়ী সংসদ সদস্য নাবিল আহমেদের ক্যাডার হিসাবে বিশেষ পরিচিত। নির্বাচনকালীন সময়ে তিনি যশোর সদর ৩ আসনের ঐক্যজোটের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের প্রচারণায় বাধা প্রদান, ভোটার ও সমর্থকদের ঘরবাড়ি ভাঙচুরসহ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের এলাকা ছাড়া করার বিশেষ মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। তার অনুচরেরা দাপিয়ে বেড়িয়েছিল গোটা শহর। এক প্রকার প্রকাশ্যে অস্ত্রহাতে মহড়া, নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর, হুমকি ধামকি, হামলাসহ জঘন্যতম নানা কর্মকান্ডে তার লোকজনের সরব উপস্থিতি বিশেষ ভাবে পরিলক্ষিত হলেও পুলিশ ছিল নীরব।

সময় খুব বেশি দিন অতিবাহিত হয়নি। সবেমাত্র একমাস। বিএনপি করা সাধারণ নেতা সমর্থকদের ওপর চালানো নির্যাতন ও জুলুমের নির্মম প্রতিদান যেন প্রাকৃতিক নিয়মে অতি দ্রুত ফিরে এলো ম্যানসেলের জীবনে। এটাই নিয়ম। ইতিহাস তাই বলে। সময় এবং ক্ষমতা কখনও চিরটাকাল কারোর পক্ষে থাকে না। আর এখানে তো ম্যানসেলের নিজের দল ক্ষমতায় রয়েছে। তার চেয়েও বড় বিষয় হলো যশোর সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য নাবিল আহমেদের আস্থাভাজন, প্রভাবশালী আওয়ামী নেতার প্রধানতম ক্যাডার। তবুও রক্ষা হলো না। পুলিশ যতই দাবি করুক না কেনো যে দু পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে ম্যানসেল গুলিবিদ্ধ হয়েছিল, কিন্তু তার পরিবার ও আশেপাশের মানুষের অভিযোগ বা দাবিটিও অমূলক নয়। তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বাড়ির ছাদে তুলে ঠান্ডা মাথায় পায়ে গুলি করেছে পুলিশ। এবং এই ঘটনাটি থেকে আমরা যে মেসেজ পেলাম, তা হলো অপরাধ করলে ভুগতে হবেই।

যদিও যশোরের আলোচিত সন্ত্রাসী ম্যানসেলের কাছে এ ধরণের জখম হওয়ার অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টম্বর শহরের ষষ্টিতলা পাড়ায় তার প্রতিপক্ষ রেলগেট এলাকার টুটুল বাহিনীর হামলায় একবার গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। ২০০৭ সালে ডাকাতি প্রস্তুতীকালে যশোর বেনাপোল সড়কের মালঞ্চিতে পুলিশের সাথে পাল্টাপাল্টি হামলায় ম্যানসেল পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়।

বাস্তবতা হলো ভয়ভীতি ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে মাঠ দখলে রাখার এক ধরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে আমাদের রাজনীতিতে। তাই সন্ত্রাসীর প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে অত্যাধিক। রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার পালাবদল কিংবা অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে দলের ভেতরে সন্ত্রাসীদের প্রবেশাধিকার বেড়ে গেছে বহুগুণ। কিন্তু এতে করে দলের ভেতরে অভ্যন্তরীণ ক্রন্দল এবং দলীয় ক্যাডারদের হাতে রাজনীতিকদের খুন হওয়ার ঘটনা বেড়েছে অধিকমাত্রায়।

প্রসঙ্গক্রমে যশোর জেলাকে উদাহরণ হিসাবে যদি তুলে ধরি, তাহলে যে চিত্র পাওয়া যায়, তা হলো ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নের্তৃত্বে মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদের অন্তত ৫০ নেতা খুন হয়েছেন। এবং অধিকাংশ হত্যাকান্ডের সাথে দলীয় সন্ত্রাসীদের সর্ম্পৃক্ততার প্রমান মিলেছে। ওই বছরের ২৫ মে রাজারহাট চামড়ার বাজারে গুলি ও বোমা হামলায় খুন হন যশোর সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ দিন পর তিনি মারা যান। হামলার দিন রাতেই তিনি তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিছুর রহমানের উপস্থিতিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিয়াকত আলী শেখের কাছে জবানবন্দি দেন।

২০১০ সালের ১৪ মার্চ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিপন হোসেন দাদা রিপন খুন হন। তার বাবার দায়ের করা মামলায় আসামি হয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। ২০১০ সালের ১৬ মে শার্শা উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজসেবা সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন খুন হলে ডিহি ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল খালেককে এক নম্বর আসামি করে ৮ জনের নামে মামলা হয়। চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান ইমামুল হাসান টুটুল হত্যায় উপজেলা যুবলীগ নেতা দেবাশীষ মিশ্র জয়সহ দলীয় নেতাকর্মীরা আসামি হয়েছেন। ২০১১ সালের ২৯ আগস্ট মনিরামপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আবু আবদুল্লাহ খুনের ঘটনায় পাঁচ আসামির চারজনই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর খুন হন গদখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম। ওই হত্যা মামলার ৭ আসামির সবাই আওয়ামী লীগের। ওই বছরের ২৪ মার্চ ছেলের সামনে খুন হন বেনাপোলের আওয়ামী লীগ নেতা ও পুটখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক। যে ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল গফফারসহ ১০ জন নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়।

২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি ঘোপ বেলতলা এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলি ও বোমা হামলায় নিহত হন শহর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শিপন। সে নিজেও ছিল একজন ভয়ংকর সন্ত্রাসী। এ মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফয়সাল খানসহ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িতরা আসামি হয়েছেন। এছাড়াও হত্যার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা প্রকাশ দত্ত, অভয়নগরের রাজু আহমদ, পুলেরহাট বাজারের বাছের, জেলা তরুণ লীগের কামরুজ্জামান রিপন, যুবলীগ নেতা মজু, আবদুল খালেক, নজরুল ইসলাম বাবু, আরব আলী, সাংবাদিক জামাল হোসেন, জাফর, তরিকুল ইসলাম, রুহুল আমীন, মনিরুল, আবদুল্লাহ ওরফে বাবু, কর্মী শফিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান পিকুল।

যশোরে সংসদ সদস্য নাবিল আহমেদ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারের দ্বন্দের কারণে মূলত এই লাশের মিছিল। এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ পড়তে পারেন প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় যশোরের ৩৩ সন্ত্রাসী শিরোনামের একটি সংবাদ।

কেবল যশোরে নয়, সারাদেশে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে খুন ও হানাহানি ঘটে আসছে বহু বছর। এতে করে দলের অনেক ত্যাগী ও মূল্যবান নেতা কর্মীর প্রাণ বিসর্জন ঘটলেও আওয়ামী লীগ যে নিজেদের প্রয়োজনে পেশীশক্তিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্রশ্রয় দেয়, তাও নানা ভাবে প্রমানিত। তাইতো আমরা পত্রপত্রিকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ এখন মুক্ত’ শিরোনামে সংবাদ দেখতে পায়।

গেল বছর মানবজমিন পত্রিকায় শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কে কোথায়
শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা যায়, ২০০১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর নামের তালিকা প্রকাশ করে। এরা হলো সুবু্রুত বাইন, মোল্লা মাসুদ, কালা জাহাঙ্গির, খন্দকার তানভীরুল ইসলাম জয়, সোহেল রানা চৌধুরী ওরফে ফ্রিডম সোহেল, খন্দকার নাঈম আহমেদ ওরফে টিটন, খোরশেদ আলম রাসু, ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, আব্দুল জব্বার মুন্না, আব্বাস ওরফে কিলার আব্বাস, আরমান, হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল, শামীম আহম্মেদ ওরফে আগা শামীম, জাফর আহম্মেদ মানিক ওরফে মানিক, সাগর ওরফে টোকাই সাগর, মশিউর রহমান কচি, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান, সানজিদুল ইসলাম ইমন, জিসান ওরফে মন্টি কচি ও মশিউর রহমান।

এ সকল সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। এদের মধ্যে ১ জন বন্দুক যুদ্ধে নিহত ও একজন গণপিটুনিতে মারা গেছে। ৮ জন বাংলাদেশের কারাগারে রয়েছে। বাকি ১৩ জন ভারত, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও দুবাইয়ে পলাতক রয়েছে।

১৯৯৭ সালে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে বিকাশ কুমার বিশ্বাস ২০১২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পায়। এরপর যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে জানা গেছে। বিকাশের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতা জরিফ, আগারগাঁওয়ে জোড়া খুনসহ পাঁচটি হত্যা মামলাসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। এর আগে বিকাশ ২০০৯ সালের জুনে কাশিমপুর কারাগার-২ থেকে জামিনে মুক্তি পায়। ওই সময় জেলগেটের সামনেই গাজীপুর জয়দেবপুর থানা পুলিশ তাকে আবার গ্রেপ্তার করে। বিকাশের ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ কুমার বিশ্বাস দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে পরিবার নিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বসবাস করছে। ২০০১ সালের ২৬শে ডিসেম্বর ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা প্রকাশ করে।

এই তালিকায় বিকাশের ছোট ভাই প্রকাশ কুমার বিশ্বাসের নাম ৮ নম্বরে রয়েছে। আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান বর্তমানে দুবাইয়ে আত্মগোপনে আছে। জিসান সেখানে হোটেল ব্যবসা করছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী তানভীরুল ইসলাম জয় বহুদিন থেকেই প্রতিবেশী দেশ ভারতের কলকাতায় অবস্থান করছে। কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু, পরে জয় জামিনে ছাড়া পায়। সানজিদুল ইসলাম ইমন রয়েছে কানাডায়। সেখানে সে মোবাইলের ব্যবসা করে বলে জানা গেছে।

মিরপুর এলাকার আরেক সন্ত্রাসী শাহাদাত হোসেনও এখন ভারতে অবস্থান করছে। ২০১৬ সালের ২৭শে অক্টোবর তানভীর মুক্তি পায় বাংলাদেশের কারাগার থেকে। এরপর থেকে তানভীরুল ইসলাম জয়ও থাকেন কলকাতার বনগাঁও এলাকায়। সেখানে তার একটি হোটেল আছে বলে জানা গেছে। শাহদাতের সাঙ্গ-পাঙ্গরা এখনো মিরপুর এলাকায় সক্রিয়। সন্ত্রাসী হারিস আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রে আছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও হারিস ছিল দুই বন্ধু। বৃহত্তর মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকার আন্ডার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতো। জিসান বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করায় হারিস সেখানে চলে গেছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে।

আগা শামীম ভারতের মেঘালয়ে অবস্থান করছে। শামীম সেখানকার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। সুব্রত বাইন ভারতে পলাতক রয়েছে। ২০০৮ সালের ১১ই অক্টোবর কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সুব্রত বাইন। পরে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে নেপালে পালায়। পুরস্কার ঘোষিত আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ওরফে টোকাই সাগর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। জাফর আহমেদ ওরফে মানিক ও ইমাম হোসেন কলকাতায় অবস্থান করছে দীর্ঘদিন ধরে। আব্দুল জব্বার মুন্না জার্মানিতে অবস্থান করছে।

মানবজমিন পত্রিকার তথ্য মতে ভারতে পলাতক রয়েছে মোল্লা মাসুদ। মাসুদ কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে মুক্ত হয়ে কলকতায় পলাতক জীবন যাপন করছে। কয়েক মাস আগে তোফায়েল আহমেদ ওরফে যোশেফ জামিনে মুক্ত হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছে। পুরস্কার ঘোষিত আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। শামীম আহমেদ কানাডায় আছে কয়েক বছর ধরে। শীর্ষ সন্ত্রাসী জাফর আহমেদ ওরফে মানিক ও ইমাম হোসেন কলকাতায় অবস্থান করছে দীর্ঘদিন ধরে। আব্দুল জব্বার মুন্না জার্মানিতে অবস্থান করছে। টোকাই সাগর বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করছে।

, ২০০৪ সালের ২৬শে জুন বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ সন্ত্রাসী পিচ্চি হান্নান মারা যায়। ২০০৩ সালের মার্চে হাতিরঝিল এলাকায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যার পর পালাতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হয় সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন। শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকার পর কালা জাহাঙ্গিরের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে খবর রয়েছে কালা জাহাঙ্গির ভারতে পলাতক অথবা মারা গেছে। জব্বার মুন্নাও ভারতে পালিয়ে আছে। কামরুল হাসান হান্নান জার্মানিতে অবস্থান করছে। তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। জাফর আহম্মেদ মানিক ওরফে মানিক ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী টিটনকে ঢাকা মহানগর পুলিশ ২০০৪ সালে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। একই বছরের ১৫ই ফেব্রয়ারি অ্যাডভোকেট বাবর এলাহী হত্যা মামলায় তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। ২০০৪ সালের টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকা থেকে ফ্রিডম সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে সে কারাগারে রয়েছে।

২০০৪ সালে ফ্রিডম রাসুকে ধানমণ্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৫ সালের ৩রা জুন ধানমণ্ডি এলাকা থেকে আরমানকে গ্রেপ্তার করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তালিকা প্রকাশের আগেই পিচ্চি হেলালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়া সুইডেন আসলামও জেলে রয়েছে। ২০০৩ সালে ৩রা জুন মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

বাস্তবতা হলো পাড়া মহল্লার মাস্তান থেকে শুরু করে জেলা পর্যায়ের এবং রাষ্ট্রের শীর্ষ সন্ত্রাসী হয়ে ওঠা প্রত্যেকেই কোন না কোন রাজনৈতিক দলের আশ্রয় প্রশ্রয় পেয়েছে তাদরে অপকর্মের দিনগুলোতে কোন না কোন সময়ে। দলীয় এসব ক্যাডার বা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়াই থাকা সন্ত্রাসীরা ব্যক্তি জীবনে আকাশচুম্বী অর্থ বিত্ত ও প্রাচুর্যতা পেলেও অধিকাংশর ক্ষেত্রে শেষ পরিণতি হয়েছে ভয়ংকর। অশুভ। এক কথায় নির্মম মৃত্যু।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: এই সব ক্যাডাররা আল্লাহর কাছে কি জবাব দিবেন?

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫১

শামীম সুজায়েত বলেছেন: এদের তো আল্লাহর ভয় নাই।
প্রশ্রয়দাতারা এদরে হর্তাকর্তা ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.