নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুজায়েত শামীম

শামীম সুজায়েত

ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতার হাতেখড়ি।শুরু করা শখের বসে। একসময় তা নেশা থেকে পেশা।ব্যবস্থাপনায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে পছন্দের এ পেশায় কেটে গেলো অনেকটা সময়। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা পড়েছে পেশাগত জীবনে চলার পথে পাওয়া নানা অসঙ্গতির চিত্র।এখন লেখালেখি করি নিজের আনন্দে, ক্লান্তিহীন ভাবে যা ভালো লাগে।আমার জন্ম ১৯৭৭ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি যশোর উপশহর আবাসিক এলাকায়। আমার শৈশব ও কলেজ জীবন কেটেছে এখানেই।জীবন জীবিকার তাগিদে এখন গঙ্গাবুড়ির আলোঝলমল শহরে্ কাটছে সারাবেলা। যোগাযোগ:ই মেইল : [email protected]হটলাইন : +ফেসবুক : https://www.facebook.com/sumon.sujayet জন্মদিন : 02.02.1977

শামীম সুজায়েত › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রসঙ্গ: দায় স্বীকারের সংস্কৃতি নেই প্রতিকারও নেই, পুনরাবৃত্তি ঘটছে তাই পোড়া লাশের মিছিল

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:১৮



দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতা। দুটি পৃথক শব্দ। তবে এদের পারস্পরিক সম্পর্ক হচ্ছে ‘শর্তযুক্ত।’ শব্দ দুটির অর্থগত এবং ভাবগত বিশ্লেষণ হলো দায়বদ্ধতা ব্যতীত দায়িত্ব শব্দটি গুরুত্বহীন বা অমূলক। এক কথায় ‘দায়িত্ব’ থাকলে ‘দায়বদ্ধতা’ থাকতে হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা ব্যক্তিকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সবকিছুর দায়ভার বহনে সম্মত হতে হবে বা দায় স্বীকার করে নিতে হবে। অথচ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই স্বীকার্য বিষয়টি সবসময় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার পবিত্র দায়িত্ব পালনে ব্রতী হন, তারা তাদের অসতর্কতা, অবহেলা ও ব্যর্থতাকে স্বীকার করেছেন এমনটি সাধারণত কখনও ঘটতে দেখা যায়নি। কেবলমাত্র দুঃখ প্রকাশ, শোক পালন ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের মধ্য দিয়ে সীমাবদ্ধ থেকেছে আমাদের রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ‘দায়বোধ’। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় নেই দায় স্বীকারের সংস্কৃতি। তাই হয় না কোন প্রতিকার, বরং ফিরে আসে বারবার পোড়া লাশের মিছিল।

নিমতলি থেকে চকবাজার। এর মধ্যে তাজরিন গার্মেন্টস, রানা প্লাজা, গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের অগ্নিকান্ডসহ কত কিছু না ঘটে গেলো গত কয়েক বছরে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অসতর্কতা এবং অব্যবস্থপনার কারণে এসব দুর্ঘটনায় শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও কারোর কোন দায়বদ্ধতা নেই। শুধু কি দুর্ঘটনা! মানুষের রক্ত ঘামে উপার্জিত টাকা লুটপাট, দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির নানা ঘটনায় রাষ্ট্র জুড়ে সমালোচনা ঝড় বয়ে গেলেও দায় স্বীকার করে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াননি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়। প্রসঙ্গক্রমে শেয়ার কেলেঙ্কারিকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে। পরিকল্পিতভাবে দরপতন ঘটিয়ে শেয়ার বাজার থেকে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা গায়েব করে ফেলা হচ্ছে। সম্প্রতি ‘বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে আমরা কি করবো’ শীর্ষক সিপিডির সংলাপে উঠে এসেছে গত দশ বছরে ব্যাংক খাতের দশটি বড় কেলেঙ্কারিতে ২২ হাজার ৫০২ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য এ দেশের সাধারণ ব্যবসায়ী ও শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা ঢাকার মতিঝিলে লুট হয়ে যায়, পুরানো ঢাকা থেকে বারবার পোড়া লাশের মিছিল বেরোয়, তবুও লজ্জিত হন না কেউ। লজ্জাহীনভাবে চেয়ার আঁকড়ে বসে থাকেন চুপচাপ। যদিও চকবাজারের ঘটনায় সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী ওবায়দুল কাদের অবশ্য বলেছেন এ ধটনার দায় সরকার এড়াতে পারে না।

প্রসঙ্গক্রমে স্বাভাবিকভাবে মনে হতে পারে সংশ্লিষ্ট প্রধানের পদত্যাগ বা দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে কি প্রতিকার মিলবে! উত্তর হলো অবশ্যই মিলবে। সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তির ‘পদত্যাগ’ এর মধ্য দিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘটনাটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে, যা সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর স্ব স্ব দায়িত্ব পালনের প্রতি আরও বেশি যত্নশীল ও দায়িত্ববান হয়ে ওঠার মানসিকতা গঠন এবং দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতনতা জাগ্রত করবে। পাশাপাশি অবহেলা ও ব্যর্থতার ফলাফল অনুধাবন করা সহজ হবে এবং নতুন হিসেবে যিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন, তিনি তার পূর্বসূরির দায়িত্বহীনতার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে বিষয়ে প্রথম থেকেই সতর্ক থাকবেন। সকলের কাজ কর্ম নজরদারিতে রাখবেন। সারা বিশ্ব জুড়ে এ ধরণের পদত্যাগের সংস্কৃতি বা ধারা চালু আছে বলেই একই দুর্ঘটনা বা ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তি সচরাচর ওই সকল দেশে ঘটে না।
গেল বছর এক সড়ক দুর্ঘটনায় বুলগেরিয়ায় ১৭ জন নিহত হলে সে দেশের পরিবহনমন্ত্রী ইভালো মস্কোস্কি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্যালেন্টিন রাডভের এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী নিকোলয় নানকভ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। দেশটির রাজধানী সোফিয়া থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তরে সভজে শহরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ১৭ জন নিহতের ঘটনায় সেই শহরের শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করলে বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ তিনজন মন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেন। এটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের চর্চা। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। এমন অসংখ্য ঘটনার নজির রয়েছে সর্বত্র। বছর কয়েক আগে দক্ষিণ কোরিয়ার কলেজ স্কলাস্টিক অ্যাবিলিটি টেস্ট (সিএসএটি) পরীক্ষায় ইংরেজি ও জীববিজ্ঞানের দুটি প্রশ্নে ভুল থাকায় দেশটির ইনস্টিটিউট ফর কারিকুলাম অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশনের (কেআইসিই) পরীা প্রধান কিম সাং হুন দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান এবং ভুলের জন্য পুরো জাতির কাছে মা প্রার্থনা করেছিলেন শিামন্ত্রী হাওয়াং উ ইয়া। প্রসঙ্গক্রমে পশ্চিম জার্মানির এক সময়ের অসাধারণ চ্যান্সেলর উইলি ব্রান্ডের কথা বলা যায়। তাঁর এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী বিদেশি গুপ্তচর হিসেবে ধরা পড়লেন এবং তিনি জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা সত্বেও পদত্যাগ করেছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, ‘১০ বছর ধরে আমার খুবই কাছে থাকা মানুষকে যখন আমি একেবারেই চিনতে পারিনি, তখন আমার ওপর দেশ পরিচালনার ভার রাখা ঠিক নয়’। উন্নত বিশ্বের দায়িত্ববানেরা পদত্যাগ করেন বিবেকের তাড়নায়, আমাদের দেশের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ক্ষমতা ধরে রাখেন লোভ ও ভোগের বাসনায়।

প্রসঙ্গ : পোড়া লাশের মিছিল

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০৬

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: পড়লাম।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০৮

শামীম সুজায়েত বলেছেন: কষ্টের কথা! কি আর বলবো ভাই!
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
খুব সুন্দর সাজানো গোছানো লেখা। কিন্তু আমাদের দেশটা সাজানো গোছানো না।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৭

শামীম সুজায়েত বলেছেন: দারুণ লাগলো আপনার কথা। আসলেই আমাদের দেশটা সাজানো গোছানো না।
ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.