নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নভেলার মাঝি...

সুপান্থ সুরাহী

কবিতার প্রেমে অক্ষরের সঙ্গে শুরু হয়েছিল ঘরবসতি। এখন আমি কবিতার; কবিতা আমার। শব্দচাষে সময় কাটাই...

সুপান্থ সুরাহী › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'রুবাইয়্যাত-ই-মাশরিক\' আমার ড্রিম প্রজেক্ট

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১১:৪১



পাগলামী উইদ 'রুবাইয়্যাত-ই-মাশরিক'

ক.
হাহোয়্যারইন ব্লগে যখন ব্লগিং শুরু করি; তখন ব্লগের দুইটা জিনিস আমাকে বেশি আকৃষ্ট করে। একটা, কবিতা নিয়ে বহুবিধ এক্সপেরিমেন্ট। আরেকটা তর্ক বিতর্কের অধ্যবসায়। ধীরে ধীরে কমেন্টে কমেন্টে তর্ক চলতে থাকে। কিন্তু নিজের ব্লগ বলতে কবিতাই লিখতে থাকি।

ইতোমধ্যেই এটিএম মোস্তফা কামালের রুবাই-এর সঙ্গে পরিচিত হই। আগেই ফারসি সাহিত্য পড়ার সুবাদে রুবাইয়্যাত বিষয়ে একটা স্পষ্ট ধারণা ছিল।

ধীরে ধীরে নিজেই রুবাই লিখতে শুরু করি। তবে আমার রুবাইয়ে 'ভাব' বা অন্তর্গত ভাবে এই অঞ্চলের মানুষের আধ্যাত্মিকতা, প্রেম ও নিজস্বতাকে ধারণ করার চেষ্টা করি। সেই সঙ্গে সচেষ্ট থাকি বলা ও উপস্থাপনার কোথাও যেনো শরীয়তের সীমানা অতিক্রম না করি।

খ.
লিখতে লিখতে একদিন দেখি প্রায় এক শো পঞ্চাশের মতো রুবাই লেখা হয়ে গেছে। এক ঈদ সংখ্যায় পঞ্চাশটি রুবাই প্রকাশ করে ফাতেহ২৪। এরপর থেকেই মনে মনে একটা বই করার প্ল্যান করি। প্রিয় আর্টিস্ট তানযিফ রুমি কে কভার ও ইলাস্ট্রেশন করতে বলি। কিন্তু কিছুদিন পরেই করোনা এসে সব প্ল্যান এলোমেলো করে দেয়।

ইতোমধ্যেই আমার মনে হয়, বইটা করি হাতের লেখায়। কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ ভাই, হিজল জোবায়ের ও শিবলী আহমেদ সঙ্গে কথা বলি। তারা খুব এপ্রিশিয়েট করেন। করোনার সময়ে লিখতে শুরু করি। কয়েকটা লেখার পরে মনে হলো, কাজটাকে আরেকটু গুরুত্ব দিতে হয়। প্ল্যান চলে যেতে থাকে ভিন্ন দিকে।

এর মধ্যেই প্রুফজনিত সমস্যা নিয়ে কথা বলেন কবি আহমেদ তানভীর। অবশেষে নিজেই এগিয়ে এসে প্রুফ দেখেন এবং টুকটাক পরামর্শ দিয়ে ও এডিট করে পাণ্ডুলিপিটাকে সমৃদ্ধ করেন।

গ.
রুবাইয়্যাতের কাজ শুরুর আগে বন্ধু নুরুল কবির আজাদ রাসেল বললো, স্পেশাল কাজের জন্য একটা স্পেশাল টেবিল তো দরকার। যেই কথা সেই কাজ। টেবিল বানাতে নিয়ে গেল রাসেন। কওমী মাদ্রাসার তে-পায়ার আদলে চমৎকার একটা টেবিল বানালাম।

এইবার আমার চিরাচরিত আলস্য আমাকে ঘিরে ধরে। সব থমকে যায়। ভুলে যাই সবকিছুই।

বদলি, বাসা বদল, পুনরায় বদলি। সব মিলিয়ে একুশের শেষ ও বাইশ সালের অনেকটা এলোমেলো হয়ে যায়।

ঘ.
জেল পেন বাদ দিই। ফাউন্টেনপেন কিনতে শুরু করি। আব্বার পুরনো ফাউন্টেনপেন আর আমার কেনাগুলো কোনটাই ভালো পারফরম্যান্স করতে পারছিলো না। লেখাও সুন্দর হচ্ছিল না। ইতোমধ্যেই লেখিকা
গল্পকার আফিফা মারজানা আপত্তি জানালেন লেখার লাইনের জিগজ্যাগ মাত্রা নিয়ে। মাত্রা সোজা করতে করতে চলে গেল কয়েক মাস। পুরনো লেখা বিশটা রুবাইয়্যাত আবার বাদ দিই।

পাইলট মেট্রোপলিটান কিনি। তখন বিডি পেনের আতিক ভাই বললেন, যদি ডকুমেন্টাল ইঙ্ক দিয়ে লিখি তাহলে পাণ্ডুলিপিটার একটা আলাদা ভ্যালু ক্রিয়েট হবে। হাতের লেখা, ফাউন্টেনপেন, কালি ইত্যাদি নিয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যেতে থাকি।

এইবার ওয়াটারপ্রুফ কালির জন্য অপেক্ষা, পাইলট রেজিস্ট্রারার তখন কারো কাছেই নেই। নুডলারস বুলেটের দাম অনেক। আতিক ভাই ভরসা দেন, ত্রিশ গ্রামের কৌটা আসবে। আসে না। তখন আমার এক ছাত্র জামিল আমেরিকা থেকে আসবে। সে জানতে চায় আমার কিছু লাগবে কি না। আমি তাকে কালির কথা বলি। সে Monteverde Documental Ink-এর একটা ত্রিশ গ্রামের কৌটা নাগালে পায়। বলি নিয়ে আসো। কিন্তু হঠাৎ করেই তার দেশে আসা পজ হয়।

কালি হাতে আসতে আসতে চলে যায় চার মাস। ফাইনালি কালি আসে বাইশের জুনে। লেখা শুরু হয়।

কালি আসার আগে কাগজ নির্বাচন নিয়ে শুরু হয় সমস্যা। যেইটেতেই লিখি ক'দিন পরে দেখি কালি একটু একটু করে ছড়িয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে উদ্ধার করলো প্রিয় ওয়ালিউল ইসলাম।এক শো বিশ গ্রামের গ্লোসি পেপার কিনে দিলো ময়মনসিংহ থেকে।

ঙ.
এইবার মাথায় আসে কভার ও ইলাস্ট্রেশন নিজেই করব। আবার কলম কালির প্রতি দৌড় শুরু হয়। মিটসুবিসি উনিবেলের ওয়াটারপ্রুফ কালার কলম কিনি। ডিজাইন চলতে থাকে।

নতুন প্ল্যান আসে মাথায়। যেহেতু আমার বইয়ের পাঁচটা পর্ব।
১. জাল্লাজালালুহু
২. তাজদারে হারাম
৩. এশকের আতর
৪. মুহাব্বানামা
৫. নফসানিয়্যাত
তখন প্রতিটা পর্বের শুরুর জন্য পাঁচজন কবিকে অনুরোধ করি একটা করে কাপলেট লিখে দিতে। দেখতে মনে হয় দুই লাইনের কাপলেট। কিন্তু এইটা লিখতেও বহু সময় চলে যায় প্রিয় কবিদের। শেষ পর্যন্ত সরোজ ভাই চার লাইন লিখেন। ইমতিয়াজ মাহমুদ, সরোজ মোস্তফা, সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর ও হিজল জোবায়ের লিখেন। একজন অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন ইমতিয়াজ ভাই, রুমির একটা কাপলেট দেন।

চ.
ফকির তানভীর আহমেদ উপকথা থেকে বইটি প্রকাশ করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেন।

অবশেষে তেইশ সালের আট জানুয়ারি ফাইনাল প্রচ্ছদ করে শেষ করি। যদিও এর আগে একাধিক প্রচ্ছদ করেছি। রিজেক্ট করেছি। যেইটে পছন্দ হয়েছিল সেইটে পছন্দের মানুষ সাইয়েদ জামিলকে দিয়ে দিই। যেহেতু আমার বইটি করতে আরও বেশ সময় লাগবে মনে হয়েছিল।

এইবার আমার পাঠক, বন্ধু, সুহৃদ এবং আপনজনদের হাতে। আমি তো উনিশ সাল থেকে তেইশ সাল পর্যন্ত লেগে থেকে কাজ শেষ করেছি।

এখন আপনারা যদি রেসপন্স করেন তাহলেই এই পরিশ্রম আর পাগলামি একটা সার্থকতা পাবে।




মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:০৪

সোনাগাজী বলেছেন:



অভিনন্দন, প্রজেক্ট শেষ হয়েছে!

আপনার প্রফেশান কি?

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:৪৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: সুপান্থ সুরাহী,




একটি বই জন্ম দেয়ার আদ্যপান্ত সুচারু কালিতে লিখে গেলেন।
আপনার "ড্রিম প্রজেক্ট" স্বপ্ন থেকে আপনজনদের কাছে বাস্তব হয়ে উঠুক।

সফলতা কামনায়। শুভেচ্ছান্তে.............

৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ২:৫৯

জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: নতুন বইয়ের জন্য অভিনন্দন ও শুভকামনা।কলম ও কালির বিষয়টা মাথার উপর দিয়ে গেল।বই হাতে লিখবেন মানে কি হাতের লেখাটাই ছাপা হবে?

৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:১২

শায়মা বলেছেন: ভালোই পাগলামী করেছো ভাইয়া। তবে এই কথা সত্যি এই রকম ক্রিয়েটিভ ভাবনা চিন্তা আর নিজের আনন্দের কাছে কোনো কষ্টই কষ্ট না। বই এর প্রচ্ছদ একদম পারস্য বা এরাবিয়ান লুকে হয়েছে।
হাতের লেখায় বই প্রকাশ। খুবই সুন্দর আইডিয়া!
তবে ক্যালিগ্রাফী পেন আর পেপার ইউজ করলে মনে হয় এত ঝামেলা পোহাতে হত না।
হয়ত তুমি যত রকম পেনের কথা লিখেছো তার মাঝে ক্যালিগ্রাফী পেনই আছে শেষ মেশ!

যাইহোক অনেক ভালোবাসা আর অভিনন্দন! :)

৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:০৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আপনার প্রজেক্টের সফলতা কামনা করি।

৬| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।

৭| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

বিজন রয় বলেছেন: অভিনন্দন। গ্রেট কাজ।
আমরা আছি।

তবে এটাতেই থেমে থাকলে চলবে না।
নতুন কিছু চাই পরবর্তীতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.