নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি লেখক নই, মাঝে মাঝে নিজের মনের ভাবনাগুলো লিখতে ভাল লাগে। যা মনে আসে তাই লিখি,নিজের ভাললাগার জন্য লিখি। বর্তমানের এই ভাবনাগুলোর সাথে ভবিষ্যতের আমাকে মেলানোর জন্যই এই টুকটাক লেখালেখি।

তারেক_মাহমুদ

পৃথিবীর সব ভাল টিকে থাকুক শেষ দিন পর্যন্ত

তারেক_মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাঁস ও কোকিলের ছানা

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৫১



গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ির মত আমাদের বাড়িতেও উঠানের এককোনায় বড় একটা মুরগীর ঘর ছিল। ঘরের একটি অংশে রাখা হতো মুরগী অন্য অংশে হাঁস। বেশ কয়েকটি মুরগী একসাথে ডিম পাড়তো। এই মুরগীগুলো প্রতিদিন আমাদের পরিবারের ডিমের চাহিদা পুরণ করতো। কিছু ভাল ডিম বাছাই করে আম্মা আলাদা করে রাখতেন বাচ্চা ফুটানোর জন্য। সাইনপেন দিয়ে ডিমে নম্বর লিখে রাখতেন যাতে বোঝা যায় কোন ডিমটা কবে পাড়া। ১০/১২ টা ডিম জমে গেলে একটা মুরগীকে বসিয়ে দেওয়া হতো ডিমে তা দেওয়ার জন্য। মুরগিটি ৩/৪ সপ্তাহ নিরালসভাবে ডিমে তা দিতো, এসময় মুরগীর শারিরীক ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যেতো।আসলে যেকোনো ছানা জন্ম দেওয়াই মায়ের জন্য অনেক কষ্টের। আমরা মাঝে মাঝে মুরগীকে সরিয়ে দেখতে চেষ্টা করতাম ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়েছে কিনা,মুরগী তখন রেগে ভয়ংকরভাবে তেড়ে আসতো।

মুরগির ডিমের পাশাপাশি আম্মা কিছু হাসের ডিমও আলাদা করতেন বাচ্চা ফুটানোর জন্য। তবে সেই ডিমগুলো হাঁস তা দিতো না, তা দিতো মুরগী। মুরগীটা জানতোই না যে সে কিসের ডিমে তা দিচ্ছে? যখন ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতো তখন দেখা যেতো বেরিয়েছে ফুটফুটে হাঁসের ছানা। বিষয়টি মুরগীর জন্য তেমন আনন্দদায়ক ঘটনা হওয়ার কথা নয় কিন্তু আমরা ছোটরা দারুণ আনন্দ পেতাম ফুটফুটে হাসের ছানা দেখে। হাঁস সম্প্রদায়ও হয়তো এতে আনন্দিত হতো তাদের বংশবিস্তার ঘটছে দেখে। প্রথম প্রথম হাঁসের ছানা মুরগীর ছানাদের সঙ্গে ঘুরাঘুরি করলেও একসময় ঠিকই তাদের স্বজাতী চিনতে পারতো, হাঁসেদের সঙ্গে মিশতে শুরু করতো এবং মুরগী মাকে ভুলে যেতো। শুনেছি একইভাবে কোকিলও কাকেদের বাসায় ডিম পেড়ে রেখে যায় বোকা কাক বুঝতেও পারেনা যে এটা তার ডিম নয়। বাচ্চা ফোটার পর চতুর কোকিল ঠিকই তার বাচ্চা নিয়ে সরে পড়ে।

সাম্প্রতি ইন্ডিয়ান একজন সেলিব্রিটি মা হয়েছেন। জেনে ভালই লেগেছিল কিন্তু যখন জানলাম তিনি নিজ গর্ভে সন্তান জন্ম দেননি গর্ভ ভাড়া নিয়ে সারোগেসির মাধ্যমে মা হয়েছেন তখন হাঁস কিংবা চতুর কোকিলের সঙ্গে ঘটনার সাদৃশ্য পেলাম। প্রানীকুল নির্বোধ হওয়ায় তাদের বোঝার বা প্রতিবাদ করার সাধ্য নেই। যে দরিদ্র মা অর্থের বিনিময়ে এইসব সেলিব্রিটিদের সন্তানদের জন্ম দিচ্ছেন তিনি কোনদিনই এই সন্তানের অধিকার পাবেন না। শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে দশ মাস দশ দিন তীব্র কষ্টের যন্ত্রণা সহ্য করে সন্তানের জন্ম দেবেন, একসময় সুবিধাবাদী ধনীরা নিয়ে যাবে মায়ের নাড়িছেঁড়া ধন। এই সন্তান বড় হবে, হয়তো একদিন সেও সেলিব্রিটি হবে কিন্তু গর্ভধারিনী মায়ের কথা সে জানতেও পারবে না কোনদিন।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: যার যা ভালো লাগে করতে দিন। তাতে অন্যের কোনো ক্ষতি না হলেই হলো।

মূরগী লালন পালন বিষয়টা আমার ভালো লাগে। আমার বাসায় জায়গা থাকলে আমি নিজেই মূরগী পালতাম।

২| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২৪

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: সন্তান জন্মদান যদিও খুবই কষ্টকর এক প্রক্রিয়া তবে এত কষ্টের মাঝেও যুগ যুগ ধরে বেশীরভাগ নারীরা তা হাসিমুখে মেনে নিয়ে সন্তান জন্মদান করেছে মাতৃত্বের স্বাদ তথা মা নামক মহান নারী ও নারী জন্মের স্বার্থকতার জন্য। এর মাধ্যমে নারী হয়েছে মা , পেয়েছে অপত্য স্নেহের ও ভালবাসার নারী ছেড়া ধন সন্তান ।

তবে বিজ্ঞানের বিকাশে এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় এখন মানুষ চাইলেই কষ্টকর এ প্রক্রিয়া অনুসরন না করেও মা হতে পারে , যেমন হয় মুরগীর তায়ে হাসের ছা কিংবা কাকের বাসায় কোকিলের ছানা। এর মাধ্যমে যেমন কর্মজীবি ও অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন নারী তার কাজের ধারাবাহিকতা ক্ষুন্ন এবং শারীরিক কষ্ট ও সৌন্দর্যের ব্যাপারে কোন সমঝোতা না করেই কিছু টাকার বিনিময়ে মা হতে পারেন তেমনি অর্থনৈতিক ভাবে দূর্বল তথা কিছু গরীব নারী তার গর্ভ ভাড়া (সারগোসী) দিয়ে কিছু টাকা কামাতে পারেন।

তবে , এতে উভয়ের জন্যই কিছু সুবিধা-অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়ে অভাব- অর্থের মাঝে সেই সব সুবিধা-অসুবিধা হারিয়া যায়।

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৩৯

জটিল ভাই বলেছেন:
এসব বলতে মানা.....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.