নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিবিবির মাজার এবং এর ইতিহাস

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৮


পরিবিবির মাজার ঢাকার লালবাগে এ অবস্থিত লালবাগ কেল্লার অবশিষ্ট তিনটি স্থাপনার মধ্যে অন্যতম একটি। এখানে পরিবিবি সমাহিত আছেন। শায়েস্তা খান তার কন্যার স্মরণে এই মনমুগ্ধকর মাজারটি নির্মাণ করেন।পরিবিবি যার অন্য নাম ইরান দুখত রাহমাত বানু ছিলেন বাংলার মুঘল শায়েস্তা খানের কন্যা। মুঘল সম্রাট আওরংগজেবের পুত্র শাহজাদা আজম এর সাথে ১৬৬৮ ইং সালের ৩ মে পরিবিবির বিয়ে হয়। ১৯৮৪ সালে পরিবিবির অকাল মৃত্যুর পর তাকে নির্মানাধীন লালবাগ কেল্লার অভ্যন্তরে সমাহিত করা হয়। তার সমাধীস্থলকে চিনহিত করে পরিবিবির মাজার নির্মিত হয়।পরিবিবির মাজার এর স্থাপনাটি চতুষ্কোন। মাঝের একটি ঘরে পরিবিবির সমাধিস্থল এবং এই ঘরটি ঘিরে আটটি ঘর আছে। স্থাপনাটির ছাদ পাথরের তৈরী এবং চারকোণে চারটি অষ্টকোণ মিনার এবং মাঝে একটি অষ্টকোণ গম্বুজ আছে। গম্বুজটির উপরে পিতলের আচ্ছাদন দেওয়া আছে।স্থাপনাটির অভ্যন্তর ভাগ সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে আচ্ছাদিত।

বিবি পরী বাংলার মুগল সুবাহদার শায়েস্তা খান এর কন্যা ও বাদশাহ আওরঙ্গজেব এর পুত্র মুহম্মদ আজম এর স্ত্রী। বাংলাদেশ সরকারের কাটরার ওয়াকফ পরিদপ্তরে সংরক্ষিত শায়েস্তা খানের নিজস্ব অছিয়তনামা থেকেই শায়েস্তা খানের কন্যা হিসেবে বিবি পরীকে (ইরান দুখ্ত্ রহমত বানু) চিহ্নিত করা যায়। এক লক্ষ আশি হাজার টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ১৬৬৮ সালের ৩রা মে শাহজাদা আজমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার পর বিবি পরী আজমের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন। অহমবুরুঞ্জীতে লিপিবদ্ধ একটি পত্র থেকে শাহজাদার সঙ্গে ইরান দুখত রহমত বানুর সুখি দাম্পত্য জীবন, অন্তঃপুরে তার প্রভাব এবং সর্বোপরি রাজনীতিতে তার বিচক্ষণ কর্মতৎপরতার প্রমাণ পাওয়া যায়। শাহজাদা আজম কর্তৃক ১৬৭৮ সালে আরম্ভ করা লালবাগ দুর্গএর নির্মাণ কাজ শায়েস্তা খান তার দ্বিতীয় দফা সুবাহদারির সময়ে (১৬৭৯-৮৮ সাল) চালিয়ে যান। কিন্তু ১৬৮৪ সালে কন্যা বিবি পরীর অকাল মুত্যৃতে তিনি দুর্গ নির্মাণ একটি অশুভ লক্ষণ ভেবে বন্ধ করে দেন।

দুর্গের অভ্যন্তরে মসজিদের পূর্ব দিকে বিবি পরীকে সমাহিত করা হয়। শায়েস্তা খান কন্যার সমাধির উপর একটি সুদৃশ্য সৌধ নির্মাণ করেন।বিবি পরীর সমাধিসৌধ লালবাগ দুর্গ অভ্যন্তরে ভবন তিনটির মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বর্গাকার ভবন। ভবনের কেন্দ্রের বর্গাকার কক্ষটিতে রয়েছে বিবি পরীর সমাধি। সমাধিকক্ষটিকে ঘিরে রয়েছে আরও আটটি কক্ষ ।দক্ষিণ ও পূর্ব দিকের কক্ষটিতে আরেকটি ছোট সমাধি আছে। বলা হয়ে থাকে সেটি বিবি পরীর কন্যা সামসাদ বেগমের সমাধি। ভবনের চারকোণে রয়েছে চারটি কর্নার টাওয়ার। সেগুলির শীর্ষে রয়েছে ছত্রী। একটির উপরে আর একটি পাথরের ব্লক বসিয়ে সমাধির উপর ছাদটি নির্মিত হয়েছে। এই পদ্ধতিটি হিন্দু স্থাপত্যে মন্দিরের ছাদ নির্মাণে ব্যবহূত হয়।

কেন্দ্রীয় কক্ষের উপর অষ্টভুজাকার গম্বুজটি পেতলের পাত দ্বারা মোড়ানো।আদিতে এটি সোনার পাত দ্বারা মোড়ানো ছিল। সুস্পষ্ট একটি আয়তাকার ফ্রন্টনের মাঝে ন্যস্ত সুউচ্চ অ্যালকোভের (alcove) ভেতর দিয়ে একটি খিলানপথ রয়েছে। ফ্রন্টনের কেন্দ্রে রয়েছে প্যানেল। কেন্দ্রীয় অ্যালকোভের দুইপাশে রয়েছে ছোট খিলানবিশিষ্ট অ্যালকোভ যেগুলির মাঝে রয়েছে লিন্টেলসহ দরজা। ঢাকার অন্যান্য মুগল ভবনের মতো এটিরও বাইরের দিক প্লাস্টার করা।

কেন্দ্রীয় কক্ষের চার পাশের কক্ষগুলির দেয়ালের নিচের এক মিটার অংশ মার্বেল পাথর দিয়ে মোড়া। কিন্তু কোণের চারটি কক্ষ সাধারণ প্লাস্টার করা। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আবিষ্কৃত হয়েছে যে এই কক্ষগুলির অভ্যন্তরে দেয়ালের নিচের অংশ চকচকে ফুলেল টাইলস দ্বারা সজ্জিত ছিল। উত্তর ও পূর্ব কোণের কক্ষটিতে টিকে থাকা আদি দুইটি টাইলসের অনুকরণে বর্তমানে নতুনভাবে টাইলস লাগানো হয়েছে। উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম মুখী ভূগর্ভস্থ দুটি পানির লাইন সম্ভবত একে অপরকে ছেদ করেছে। সম্ভবত ইমারতের সামনে প্রতি পার্শ্বে স্থাপিত ঝর্ণার সাথে এ লাইন যুক্ত ছিল। নতুন তিনটি সমাধির জায়গা সঙ্কুলানের জন্য পরবর্তীকালে দক্ষিণদিকের ঝর্ণাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্যা ডেইলি সান ( http://www.daily-sun.com )

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:২৭

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার ইতিহাস।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৪২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই মামুন।

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:২৪

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: ভালা লাগল ইতিহাস।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই হাসু মামা ।

৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:০৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ভাল লেগেছে।
একবার ১৬৮৪ এর জায়গায় ১৯৮৪ হয়ে আছে। ওটা ঠিক করে দিলে ভাল দেখাবে।

১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আনু মোল্লাহ ।ঠিক করে দিচ্ছি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.