নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তৌফিক জোয়ার্দার

তৌফিক জোয়ার্দার

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরেট শেষ করে দেশে ফিরেছি ২০১৫ সালের শেষ দিকে। যারা ফলো করতো, তাদের কাছে বারবারই বলেছি দেশে ফিরবো। সামুতে লিখেওছিলাম এ নিয়ে। অনেকেই সাধুবাদ দিয়েছিলেন, আবার অনেকে প্রকাশ করেছিলেন সন্দেহ ও অনাস্থা। এ ক’টা বছর কেটে গেল ফিরে আসার ধাক্কাটা সামলাতে। অনেক দিন পর আবার এলাম সামুতে। আবারো লেখালেখির দুর্মর আকাঙ্ক্ষা বুকে নিয়ে। আবার ঘন ঘন দেখা হবে বন্ধুরা।

তৌফিক জোয়ার্দার › বিস্তারিত পোস্টঃ

জুম্মাবারের জবানী ও আমার ভাবনা

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১০

ভূমিকা:

আম্মু বলল আমাদের একজন পরিচিত ডাক্তার নতুন বাড়িতে উঠছেন, মিলাদ দিয়েছেন। ওখানে দোয়া খায়েরে শরীক হতে হবে। আমি বললাম, খাবার দাবার দেবে তো? :D

যে ব্যক্তিটি মিলাদ পড়াচ্ছেন তিনি বেশ সুদর্শন, সুকন্ঠী (পুরুষদের ক্ষেত্রে 'সুকন্ঠী' শব্দটি ব্যবহার হয় কিনা নিশ্চিত নই, আবার বিকল্প শব্দও মনে করতে পারছিনা), এবং কিঞ্চিৎ সুরেলা ('বালাগাল ঊলা বি কামালিহি' পাঠন থেকে বুঝেছি)। বয়স পঁচিশ থেকে ত্রিশের মধ্যে; দেখে অনেকটা হিজবুত তাহরিরের ছেলেদের কথা মনে পড়ে (টিভিতে দেখেছি)। দিনটি জুম্মাবার, দুপুরে খুতবায় শোনা কিছু কথা, এবং বিকেলে তরুণ হুজুরটির কথা বেশকিছু চিন্তার বুদ্বুদ মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটারে অশ্বস্তি উষ্কে দিয়েছে। আমাদের ধর্মীয় মাহফিলগুলোতে কখনো উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর, জিজ্ঞাসা, বা বিতর্ককে উৎসাহিত করা হয়না। বরং বেশকিছু মজমায় দেখেছি, কৌতূহলী প্রশ্নোত্থাপনকারীকে বেয়াদব এবং ক্ষেত্রবিশেষে 'শয়তান' দ্বারা প্ররোচিত আখ্যা দিয়ে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু মাথায় যখন প্রশ্ন আসে তখন দীর্ঘদিনের অভ্যাস বশত মস্তিষ্ককে বিরাম দেয়না। ব্লগের শরণাপন্ন হওয়া তাই স্বাভাবিক পরিণতি হয়ে উঠল।

বয়ান এক:

কেয়ামতের সময় বাসাবাড়ি তার অধিবাসীদের সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে- তারা ভাল কাজ করেছে, না মন্দ পথে চলেছে। তারা আল্লাহর ইবাদত করেছে কিনা। প্রশ্ন উঠতে পারে বাসাবাড়ি তো জড় বস্তু, সে সাক্ষ্য কি করে দেবে। আল্লাহর ইচ্ছায় জড় বস্তুও সাক্ষ্য দেবার মত ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। যেমন আগে মনে করা হত গাছপালা জড় বস্তু। আল্লাহর রসুল (সা: ) ১৪০০ বছর আগেই বলে গিয়েছেন গাছেরাও আল্লাহর ইবাদত করে। হাজার বছর পরে বাঙ্গালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু আবিষ্কার করেছেন গাছেরও প্রাণ আছে। তবে উদ্ভিদের প্রাণ এবং প্রাণীর প্রাণের মধ্যে পার্থক্য আছে। একইভাবে একসময় হয়ত আবিষ্কার হবে জড় বস্তুরও প্রাণ আছে :-*। হয়ত জীবের প্রাণ এবং জড়ের প্রাণের মধ্যে পার্থক্য থাকবে।

কমেন্ট:

নো কমেন্টস। [আমার জীববিজ্ঞানের সুদীর্ঘ পড়াশুনা সব তালগোল পাকিয়ে গেল :|।]

বয়ান দুই:

ডাক্তার সাহেবরা রোগী দেখেন, পয়সা নেন। কিন্তু তাদের নিয়ত যদি এমন হয় যে আমি রোগী দেখছি মানুষের সেবার জন্য, আল্লাহর মাখলুকের মঙ্গলের জন্য- তাহলে এই নিয়তের জন্যই টাকা পয়সার সাথে সাথে অনেক সোয়াবও অর্জিত হয়ে যাবে। আর মানব সেবার আদর্শ নিয়ে কাজ করতে গেলে অর্থ উপার্জন একটু কমবেশি হতে পারে, কিন্তু এর দরুণ যে মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায় তার মূল্য অসীম।

কমেন্ট:

ভাল লেগেছে। কথাটি যদিও বহুল চর্চিত, কিন্তু এর অন্তর্নিহীত সত্যটি ফেলনা নয়। কথাটির খুব সুন্দর সেক্যুলার ইন্টারপ্রিটেশনও হতে পারে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান মানুষের কোন না কোন প্রয়োজন মেটানোর জন্য সৃষ্টি হয়েছে। সেটিই প্রতিষ্ঠানটির মৌল লক্ষ্য বা অবজেক্টিভ হওয়া উচিত। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি যে সেবা কিম্বা পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে মানুষের প্রয়োজন মেটাল- সেটি তার প্রোডাক্ট। আর প্রতিষ্ঠানটি কাজ করতে গিয়ে যে অর্থ উপার্জন করল সেটি তার বাইপ্রোডাক্ট। এ অর্থ প্রতিষ্ঠানটির প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করতে এবং দীর্ঘ মেয়াদে সাসটেইনিবিলিটি অর্জন করতেই কেবল কাজে লাগবে। কিন্তু তার কাজের কাজটি মোটেও অর্থ উপার্জন নয়, সেবা প্রদান। যেমন ধরুন: মিডিয়া। এর কাজ নির্মোহ ভাবে তথ্য ও সংবাদ সরবরাহ করা; এটিই তার প্রাতিষ্ঠানিক ম্যান্ডেট। আইডিয়ালি তার নিয়ত হতে হবে মানুষের কাছে তথ্য সেবা পৌঁছে দেয়া। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি যদি অর্থ উপার্জনকে কিম্বা ক্ষমতার স্বাদ আস্বাদনকে তার লক্ষ্য বানিয়ে তোলে তাহলে প্রতিষ্ঠানটি যে উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে সেই মৌল উদ্দেশ্যই ব্যহত হয়ে পড়বে। আরেকটি উদাহরণ দেয়া যায়, চিকিৎসা সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান (হাসপাতাল, ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানি, কিম্বা ব্যক্তি চিকিৎসক), যার মৌল উদ্দেশ্য মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা দেয়া। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি যদি অর্থ উপার্জনকে তার মৌল লক্ষ্য বানিয়ে ফেলে তখন সে মানুষকে অযথা ডায়াগনস্টিক টেস্ট দেবে, অপ্রয়োজনীয় অষুধ কিম্বা সার্জারি প্রেসক্রাইব করবে ইত্যাদি। এভাবে রাজনৈতিক সংগঠন থেকে শুরু করে যে কোন পেশাদার সংগঠনের কথাই চিন্তা করা যায়। আমাদের হুজুরটি তার কথার মাধ্যমে পক্ষান্তরে এই বার্তাটিই দিয়েছেন যে ঈশ্বরের সৃষ্টির সেবা করার নিয়ত নিয়ে প্রত্যেকের কাজ করা উচিত, আর তা করলেই প্রকৃত মোক্ষলাভ হবে। সে মোক্ষ অদৃষ্টবাদীদের কাছে পারলৌকিক মোক্ষ প্রতিপন্ন হতে পারে, আর সেকুলার ব্যক্তির কাছে তা একটি প্রাতিষ্ঠানিক ইন্টেগ্রিটি নিশ্চিত করার মোক্ষ। যেভাবেই দেখিনা কেন- পরামর্শটি সৎ ও যুগোপযোগী।

বয়ান তিন:

বাসাবাড়িতে 'অপ্রয়োজনীয়' কুকুর পালন, মনুষ্য প্রতিকৃতি ইত্যাদি রাখলে রহমতের ফেরেশতা আসবেনা। হুজুর 'প্রয়োজনীয়' কুকুরের উদাহরণ দিয়েছেন, যেমন পাহাড়া দেয়ার জন্য, শিকারের জন্য, প্রতিবন্ধীর সহায়তায় ইত্যাদি প্রয়োজনে যে কুকুর ঘরে রাখা হয়। কিন্তু কেবল বিলাসিতা করে কিম্বা শখ করে যে কুকুর পালন করা হয় তা অনুচিত।

কমেন্ট:

কুকুর আমার অন্যতম প্রিয় একটি প্রাণী (দ্বিতীয় প্রিয়, হাতির পরে :))। কিন্তু এর লালন পালনের ঝামেলার কথা চিন্তা করে এবং আম্মুর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার কথা চিন্তা করে প্রাণীটিকে গৃহে অভ্যর্থনা করার কথা কখনো ভাবিনি। 'রহমতের ফেরেশতা' সম্পর্কেও আমার ধারণা স্বচ্ছ নয়। তবে ইসলামের নানা অনুশাসনে ভোগবাদী আচরণের বিপক্ষে এর সুস্পষ্ট এবং অনমনীয় অবস্থান আমার ভাল লাগে। পুঁজিবাদের সবচেয়ে বড় বাহণ আমার কাছে মনে হয় মানুষের ভোগবাদিতা। মানুষ ভোগ করতে চা্ইলেই, কিম্বা অন্য ভাবে বলতে গেলে মানুষের ভেতরে ভোগের আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলতে পারলেই সে নিত্য নতুন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জীবনধারণের জন্য অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে লালায়ীত হবে। মানুষ যত পণ্য কিনবে পণ্যের উৎপাদনও বাড়বে, পুঁজির বিকাশ ঘটবে, পুঁজিপতির পকেট ভারী থেকে আরো ভারী হবে। পুঁজির এই দুষ্টচক্রে পড়ে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বৃদ্ধি, সামাজিক ন্যয়বিচার ব্যহত হওয়া সহ যে বিভিষীকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সে বিষয়ে সোশ্যালিস্টরাই শুধু নয়, আজকালকার লিবারেল এনভাইরনমেন্টালিস্টরাও সোচ্চার হয়েছেন।

গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে একটি গড়পরতা মার্কিন পরিবারে প্রতি মাসে যে পরিমাণ এনার্জি ব্যয় হয় তা ১১৪০ পাউন্ড বা ৫১৭ কিলোগ্রাম কয়লার সমতূল্য।







আপনি যখন টিভির সামনে বসে রিমোট টিপছেন, ভেবে দেখুন আপনি আপনার পেছনে নিজের অজান্তেই জমা করে তুলছেন পরিবেশবিনাশী কয়লার স্তূপ । এভাবে প্রতিটি ভোগের উপকরণই আমাদের এবং আমাদের উত্তরসূরীদের জন্য পৃথিবীকে বসবাসের অনুপযোগী করে তুলছে। আমি নিশ্চিত আমাদের তরুণ হুজুর এতকিছু ভেবে কুকুর পুষতে নিষেধ করছেন না। কিম্বা কুকুর পোষার সাথে ভোগবাদের সম্পর্ক কি এমন প্রশ্নও উঠতে পারে। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখবেন ইসলামে যে কোন ভোগবাদী এ্যাপ্রোচকেই নানাভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কোথাও পড়েছিলাম বাড়িতে চাকচিক্যময় পর্দা (প্রাণীর ছবি সম্বলিত) বা সরঞ্জামের উপস্থিতি (হযরত আয়েশাকে এজাতীয় পর্দার কাপড় ব্যবহারের জন্য মোহাম্মদ (সা: ) ভর্ৎসনা করেছিলেন), শুধু শখ পুরণের জন্য কুকুর পালন পক্ষান্তরে ভোগবাদেরই সাক্ষ্য দেয়- যার বিরুদ্ধে ইসলামের এই প্রতীকি অবস্থান। আমার সেকুলার ব্যাখ্যা অন্তত তাই বলে।

বয়ান চার:

তরুণ হুজুর থেকে এবার আমার পাড়ার মসজিদের খুতবায় যাই (জুম্মার নামাযের আগে আরবিতে যা পাঠ করা হয় তাকে খুতবা বলে জানি, কিন্তু তার আগে বাংলায় যে বক্তব্য ইমাম সাহেব দেন তাকে কি বলে নিশ্চিত নই। এখানে খুতবা বলতে বাংলা বক্তব্যটিকেই বোঝানো হচ্ছে)। এ খুতবাটি আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই এড়িয়ে চলি, কারণ এমন কিছু কথা শুনতে হয় যে নামাযে ভক্তির বদলে বিরক্তিই প্রকট হয়ে ওঠে। মনে পড়ে হারিকেন ক্যাটরিনার পরপর এক ইমাম একে ইহুদি নাসারাদের ওপর আল্লাহর গযব বলে উল্লেখ করছিলেন। এর কিছুদিন পর বাংলাদেশে যখন ঘূর্ণীঝড় হল, একই ইমাম একে আখ্যায়ীত করলেন বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঈমানের পরীক্ষা হিসেবে :|। মসজিদে ওই সময় না গেলেও আমার বাসা থেকে মসজিদ কাছে হওয়ায় খুতবা বাসা থেকেই শোনা যায়। তো ইমাম বলছেন বাবা আদম এবং বিবি হাওয়ার কথা। প্রসঙ্গটি সম্ভবত এসেছে হেফাজতে ইসলাম কর্তৃক নারীদের কাজকর্ম ও মুক্তবিচরণের বিরুদ্ধে আনিত প্রস্তাব এবং তার বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজের উষ্মা ও অসম্মতির আলোচনা থেকে। আদম (আ: ) কে শয়তান নানা প্ররোচনাতেও যখন গন্দম ফল খাওয়াতে পারলনা, তখনই সে প্রয়োগ করল তার মোক্ষম অস্ত্র। সে বিবি হাওয়া তথা একজন নারীর প্ররোচনায় ঠিকই আদম (আ: ) কে নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ করাতে সক্ষম হল। কাজে কাজেই সৃষ্টির আদি থেকেই নারীরা হল মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করার অব্যর্থ মাধ্যম। তাই নারীর সাথে পরামর্শ করে কখনোই রাষ্ট্র চলতে পারেনা, আর চালাতে গেলে সেখানে অনর্থ ঘটতে বাধ্য। তিনি আরো জানালেন, নারীদের সৎপথে পরিচালিত করণে অক্ষমতার কারণেই যুগে যুগে এত পথপ্রদর্শক নবি-রসুল এসেছেন, যাঁদের মাঝে একজনও নারী নন /:)

কমেন্ট:

ইউ কমেন্ট। [আমার কমেন্ট লেখার মানসিকতাই নষ্ট হয়ে গেল]

উপসংহার:

আমি আগেই বলেছি আমি তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং মুক্ত ও তুমুল তর্ক বিতর্কে বিশ্বাসী। আমাদের ধর্মীয় মজলিসে এ সংস্কৃতিটি শুধু অনুপস্থিতই নয়, পরিত্যাজ্য এবং নিন্দনীয় হিসেবেও গন্য। ব্যক্তিগত ভাবে আমি মৌলবাদকে অপছন্দ করি। আমার মতে আমরা যখন একটি বিষয়ের নানা দিক দেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি, এবং যে কোন একটি পক্ষের কাছে নিজের আত্মাকে বন্ধক রাখি- তখনই আমরা মৌলবাদী। আমরা মৌলবাদ শব্দটি কেবল ধর্মে বিশ্বাসী মানুষদের ওপরই প্রযুক্ত হতে দেখে অভ্যস্ত, কিন্তু আমার সংজ্ঞায়নে যে কেউই মৌলবাদী হয়ে উঠতে পারে যদি সে ধর্ম কিম্বা অধর্মের ভাল-মন্দ নানা দিক নিয়ে তর্ক বিতর্ক না করে নিজের আঁকড়ে ধরা মতটিকেই সকল বিতর্কের উর্ধ্বে জ্ঞান করে।

লেখাটি পড়ে, কিম্বা অর্ধেকটা পড়ে যাদের মধ্যে "ব্যাটা ছলছুতায় ইসলামের সবক দিতে চায়, আসলে একটা....." অথবা "এহ্; আইছে আল্লাহর দীন নিয়া তর্ক বিতর্ক বাঁধাইতে, ভিতরে ভিতরে একটা....." এ জাতীয় প্রতিক্রিয়ার বুদ্বুদ ফেনিয়ে উঠছে, এ লেখাটি সেসব প্রতিক্রিয়াশীলদের জন্য নয়। যারা এরকম ভালমন্দ নানা কথা শুনেছেন ধর্মীয় জলসায়, যাদের মনে প্রশ্ন বা ভাবের উদয় হয়েছে সেসব দেখে বা শুনে, নিচের মন্তব্যের ঘরটি তাদের রিফ্লেকশন জানার অপেক্ষায় তৃষ্ণার্ত।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

আতা2010 বলেছেন: নকশাদার পর্দা না প্রাণীর ছবিযুক্ত কাপড় ছিল সেটা।

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: যেটাই হয়ে থাকুক আমার ইন্টারপ্রিটেশন হচ্ছে, ওটাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে অযথা চাকচিক্যের বিরুদ্ধে মোহাম্মদ (সা: ) এর নীতিগত অবস্থানের কারণে। নকশাদার পর্দা কিম্বা প্রাণী- কোনটিই যুক্তির মূলসুরকে খন্ডিত করছেনা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২১

মদন বলেছেন: :P

বেততমিজ পুলাপান X(

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: :|

৩| ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

আতা2010 বলেছেন: নকশাদার পর্দা হারাম নয়। বরং জায়েজ। কিন্তু প্রাণীর ছবি হারাম। যেখানে প্রাণীর/ মানুষের ছবি থাকে সেখানে নামাজ পড়া যাবে না।

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: ওকে, কনফিউশন এড়াতে সংশোধন করে দিচ্ছি। ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৪

উড়োজাহাজ বলেছেন: বেশী জটিল হয়ে গেল।

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৭

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: :(
ঠিকাছে, পরেরবার সহজ করে লিখব। ধন্যবাদ।

৫| ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

উড়োজাহাজ বলেছেন: আচ্ছা ভাইয়া! আমি বঝিনা, প্রাণীর ছবি তোলা, প্রাণীর মুর্তি বানানোতে আল্লা্হ রসুল এবং ইসলামের কি আসে যায় কিংবা এটা হারাম কেন- সেকুলার এবং ধর্মীয় এই উভয় দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা দিতে পারবেন? আলেম সাহেবরাও জবাব দিতে পারেন।

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৯

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: আমি ধর্মীয় টেক্সটে যেটা পেয়েছি তা হল: অতীতে একজন ভাল মানুষ বা অলি আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য মানুষ সরল বিশ্বাসে হয়ত মূর্তি তৈরি করেছিল। কিন্তু প্রজন্মান্তরে সেটিই মূর্তী পূজায় পর্যবসিত হয়েছে। এ সম্ভাবনা থেকেই প্রাণীর ছবি বা মূর্তির ব্যাপারে ইসলামের রিজার্ভেশন সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমি পৃথিবীর নানা দেশে (বিশেষ করে ইউরোপীয় শহর গুলোতে) প্রচুর মূর্তী দেখেছি। আমার কাছে মনে হয়নি শত বছর ধরে প্রতিষ্ঠিত মূর্তিগুলোকে কেউ পূজা করে। তবে এগুলো যে একপ্রকার grandeur এর প্রতীক হয়ে, গৌরবের উপজীব্য হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে তাতে সন্দেহ কি? সেকুলার ব্যাখ্যা হতে পারে এটাই।

তবে যিশুর মূর্তীকে পূজা করতে দেখেছি স্বচক্ষে। জনস হপকিন্স হাসপাতালের পুরনো প্রবেশ পথের ওপরই রয়েছে যিশু খ্রিষ্টের বিশাল এক মূর্তি। প্রতিদিন ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি একেশ্বর বাদের অন্যতম পুরোধা, মূর্তিপূজার বিরুদ্ধাচরণকারী যিশুর পায়ের কাছে ফুল, মোমবাতি, খাবার ইত্যাদি উপাচার সাজিয়ে রেখেছে ভক্তরা। মূর্তীর সামনে দাঁড়িয়ে নানা ভঙ্গিমায় প্রার্থনা করতেও দেখি অহরহ। ইসলাম ধর্মেও এ প্রবণতা আছে, যেমন কবর পূজা।

আমার সীমিত জ্ঞানে উত্তর দেবার চেষ্টা করলাম; প্রামাণ্য ধরে নেবার কারণ নেই।

৬| ০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০০

~মাইনাচ~ বলেছেন: একটা চমৎকার ব্যাপার বলি

এই মাত্র যখন আপনার পোষ্ট পড়া শুরু করছিলাম, তখনি আমার বস কাকে জানি কল করলেন। আমি পড়তে পড়তে যেইনা ('বালাগাল ঊলা বি কামালিহি' নাইনটি পড়া শুরু করলাম ঠিক তখনি ফোনে 'বালাগাল ঊলা বি কামালিহি' এরকমি একটা রিংটোন বেজে উঠল।

০৮ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০৮

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: হা হা হা। কাকতালীয় বটে।

৭| ০৮ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩

পেট্রল বলেছেন: :) আপনার লেখা বরাবরই সুপাঠ্য এবং ব্রেইনস্টর্মিং +++++++

আমার মনে হয় শ্রোতার সংখ্যাধিক্যের কারনেই রিলিজিয়াস প্রিচিংয়ের মান পড়ে যায়। যেহেতু শ্রোতা প্রচুর এবং তাদের মেজরিটি অর্ডিনারি মানুষজন ( শিক্ষাগত) তাই বয়ানের মূলভাবটা অর্ডিনারি লেভেলে রাখার জন্য মাঝে মাঝে অতিরিক্ত সরলীকরন হয়ে যায়।

সব প্রিচারের যোগ্যতাও সমান না।

এমন ঘটনা বোধহয় সব স্ট্রিমেই হয়, যেমন, একবার এক লেকচারার আমাদের এক ক্লাসে বলে বসলেন, ' পলিটিক্যাল পার্টি হলো চেয়ার-টেবিলের মত অবজেক্ট, এর কোন আইডিওলজি নাই। আইডিওলজি ব্যাপারটা সোলেলি লিডারদের'! --- খুবই ভয়াবহ কথা! :D

নারীদের ব্যাপারটা দুর্ভাগ্যজনক। আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় যে, দায় এড়ানোর জন্য ব্লেম দ্যা ভিক্টিম ব্যাপারটা জেনেটিক নাকি!!!
সেদিন একজন বললো, গত ৬ হাজার বছরে একজনও নারী ফিলোসফার নেই কেন? আসলে মৌলবাদটাই মূল সমস্যা। এটা এমন লেভেলে'র সমস্যা যার সমাধান খুঁজতে বসলে শেষপর্যন্ত 'শয়তান' এর উপস্থিতিতে যেয়ে হতাশ হয়ে ক্ষান্ত হতে হয় :(

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১৬

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: শরমিন্দা হয়ে গেলাম। :#>

শ্রোতার বোধনক্ষমতার কারণে অতি সরলিকরণের ব্যাপারটি চোখে পড়েছে তাবলিগের এ্যাপ্রোচ থেকে। ছাত্র জীবনে এদের সংস্পর্শে আসার সুযোগ হয়েছিল। কিছু কথাবার্তা শুনে রীতিমত মেজাজ খারাপ হয়ে যেত; কিন্তু এটাও বুঝতাম যে এভাবে ছাড়া আপামর মানুষের মন ও মস্তিষ্কে প্রবেশ করা যাবেনা।

ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

৮| ০৯ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৫১

হাসান মাহবুব বলেছেন: ++++

১০ ই জুন, ২০১৩ রাত ২:১৭

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:৩৮

মোস্তাফিজ বলেছেন: লেখাটা অনেকদিন পরে পড়লাম। ভাল বলেছিস। সত্য কথা হল আমাদের অধিকাংশ লোকের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান শুন্যের কোঠায়। প্রচুর বই পড়েন এমন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, একবার কি কুরান অর্থ সহ পুরো পরেছেন কিনা।উত্তর কি পেয়েছিলাম তাই আর না বলি। আমরা সব সময় কুরান কে মাথায় তুলে রাখি তাই কখনো পড়ার সুযোগ পাই না। এত কথা বলার একটাই কারন। প্রতিটা মুসলিম যদি মাত্র একবার কুরান এর অর্থ সহ পড়তেন তাহলে অনেক সহজেই ইসলাম কে বুঝতে পারতেন।

দালানকোঠা সাক্ষী দেবার ব্যাপার টা মনে হয়েছে যে দালানের কথা বলার প্রয়োজন নাই, হয়ত দালানের মাঝে করা সব অপকরমের রেকর্ড থাকবে। আল্লাহ সবকিছু খুব নিপুন ভাবে করেন। উনার নিজের কিসুই করতে হয় না। উনি শুধু মেকানিজম টাই ঠিক করে দেন।বাকি সবকিছু সেই মেকানিজম অনুযায়ী চলে। দালানের কাছে থেকে সাক্ষী নেয়াটা তাই আমার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে।

কুকুর এর ব্যাপারে ইসলামে নিরুতসাহিত করা হয়েছে। কুকুর নাকি শয়তানের বাহন। তুই গুগল এ সার্চ দিলে আরো details pabi. কুকুর পালার শখ আমাকেও বাদ দিতে হয়েছে।

নারীর বেপারটা নিয়ে সরাসরি তোর সাথে কথা বলতে পারলে ভাল লাগত।
মোবাইল এ টাইপ করা খুব কষ্টের। তবে মুল কথা হল ইসলাম নারীকে সম্মানিত করেছে, আমার এমন্টাই মনে হয়।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:০৮

তৌফিক জোয়ার্দার বলেছেন: আমিও অনেক দিন পর সামুতে ঢুকলাম। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.