নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদ্যন্ত গৃহী। বইপোকা। লেখালিখিটা প্যাশন; তেমন বাছবিচার না থাকলেও থ্রিলার আর হরর জনরাতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। অল্প বিস্তর ছবিয়ালও। ইন্সটাতে shajus shot হিসেবে পাবেন। মুভি দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খোলা আকাশ, সাগরের পাড়ে চুপ করে বসে থাকা আর নিস্তব্ধতা। প্রিয়

মন থেকে বলি

জীবনের স্থায়িত্বকাল কত অল্প। কিন্তু কত কিছু যে ইচ্ছে করে করতে। তাই পারি আর না-ই পারি, ইচ্ছেগুলোর ডানা মেলে দিয়ে যাই - এই আমার আকাশের জানালায়।

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নর, তুমিও ছলনাময় হে (পর্ব-১)

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১১


প্রায় বছর দেড়েক পূর্বে আমার হঠাৎ স্বাস্থ্যরক্ষার বাতিক চাগিয়ে উঠেছিল। বিজ্ঞমাত্রই জানেন, চল্লিশ ছুঁই ছুঁই নব্য (বুড়া) ভামগণ স্বাস্থ্যরক্ষার প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে হন্টন পদ্ধতি বেছে নেয়। আমিও সেইটেই করেছিলুম। প্রত্যহ অফিস-ফেরতা হয়ে একটি হাফ-পেন্ট পরে ধেয়ে যেতুম নিকটস্থ পার্কে; গিন্নির বক্র দৃষ্টি উপেক্ষা করেই। ওনার চোখ অবশ্য থাকত আমার উন্মুক্ত পায়ের ভল্লুকসদৃশ কেশরাজির দিকে। একদিন তো বলেই ফেলল - "এই বয়েসে লোম বের করে না হাঁটলেই কি নয়? লজ্জাও নেই রে হতভাগার!"

কিন্তু মেয়েদের কথা শুনে কে কবে প্রতিজ্ঞাভংগ করেছে? সুতরাং....।

পার্কের চারপাশে বৃত্তাকার ইঁট বিছানো পথ আছে। স্বাস্থ্যন্বেষীরা হুম-হাম শব্দে সেই পথে হাঁটত। আমিও তাদের দলে যোগ দিলুম। মিনিমাম দশ চক্কর দোব - এই ছিল পণ। আর সেইটেতেই হোলো বিপত্তি।

দিনকয়েক পরেই লক্ষ্য করলুম, লোকে হয় সংগীসহ হাঁটে, না হয় রকেটের গতিতে হাঁটে। এই দু'এর কোন একটা ছাড়া একা একা হাঁটা বড়ই বোরিং। বউকে বললুম, "চল না, আমরা একসাথে হাঁটি।" আরও বলতে যাচ্ছিলুম, তাহলে তোমার ফিগারটা একটু ঠিক হবে। অগ্নিদৃষ্টি দেখে সামলে গেলুম। বাপ রে! সাধ করে বাঘের মুখে স্বেচ্ছায় মুন্ডু ঢোকানোর আয়োজন করে ফেলেছিলুম আর কি।

সংগীহীন আমি তাই গতি সঞ্চারে মন দিলুম। যত তাড়াতাড়ি দশ চক্কর শেষ করা যায় তত তাড়াতাড়ি ফিরতে পারব। কিন্তু আমি তো আর গাড়ি নই, যে এক্সিলেটর দাবালেই স্পিড বেড়ে যাবে। এক চক্কর জোর কদমে হেঁটে স্টার্টিং পয়েন্টে পৌঁছে কুকুরের মত হ্যাহ - হ্যাহ শব্দ করে জিব ঝুলিয়ে হাঁপাতে থাকি। পেছনের মেয়েরাও শন শন করে ওভারটেক করে যায়। ছেলেদের তো কথাই নেই। আমি করুণ নয়নে তাকিয়ে থাকি। বুঝতেই পারছেন, কাদের দিকে। আফটার অল, আমি পুরুষ তো।

এই তাকিয়ে থাকাই পথ দেখালো। আরে...! কোন একজনকে ফলো করি না কেন? আর যদি করতেই হয়, তাহলে কাকে ফলো করা স্বাভাবিক? নিজেকে শুধালুম। কাতর মন গুনগুনিয়ে উঠল - আরে, তুই ব্যাটাচ্ছেলে একটা মেয়েকে ফলো কর। এই তো স্বাভাবিক। রথ দেখা - কলা বেচা, দুই-ই হবে। নতুন উপায় আবিষ্কারের উল্লাসে উল্লসিত হয়ে উঠলুম। কিন্তু কোথায় আমার সেই 'ইন্সপিরেসন'? যাকে ফলো করে আমি 'দশ-চক্কর' উড়িয়ে দোব? চোখের পলকে? কোথায় সেই কন্যে?

আরে....! ওই তো...!! হাত তিরিশেক সামনে কে ওই তন্বী হেঁটে যাচ্ছে? উফ....কি ফিগার!!! চনমনিয়ে উঠল তনু-মন। সাঁঝের ঝোঁকে আমি দেখলুম তার মেঘকালো কেশরাজি। কোমর ছুঁয়ে নেমে গেছে। সাদা রঙ এর কামিজ পরা। আর নিচে ঘাগরার মত কিছু একটা। খটকা লাগল। ঘাগরা পরে ইভনিং-ওয়ক...? কিন্তু পর মুহূর্তেই তার কোমরের সংকীর্ণতা আমার সমস্ত কল্পনাকে যেন এক ঝাঁক পায়রা করে উড়িয়ে দিল। আহা...! কি ফিগার....!! এই না হলে হেঁটে লাভ কি!!! একে ফলো করে দশ চক্কর তো দু'কদমে মেরে দোব। ইচ্ছে হচ্ছিল, পুরো হাতিরঝিল সারা সন্ধ্যে ধরে পাক মারি এই ফিগার-শ্রেষ্ঠাকে ফলো করে।

শুরু হলো আমার দুর্দান্ত গতিতে হাঁটা। ক্লান্তি যেন এক ফুৎকারে উঁড়ে গেল।

(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.