নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদ্যন্ত গৃহী। বইপোকা। লেখালিখিটা প্যাশন; তেমন বাছবিচার না থাকলেও থ্রিলার আর হরর জনরাতে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। অল্প বিস্তর ছবিয়ালও। ইন্সটাতে shajus shot হিসেবে পাবেন। মুভি দেখতে ভালো লাগে, ভালো লাগে খোলা আকাশ, সাগরের পাড়ে চুপ করে বসে থাকা আর নিস্তব্ধতা। প্রিয়

মন থেকে বলি

জীবনের স্থায়িত্বকাল কত অল্প। কিন্তু কত কিছু যে ইচ্ছে করে করতে। তাই পারি আর না-ই পারি, ইচ্ছেগুলোর ডানা মেলে দিয়ে যাই - এই আমার আকাশের জানালায়।

মন থেকে বলি › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য (সত্য) গল্পঃ ফার্মগেট

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৩৩



ঢাকায় আসলে একটা জায়গায়ই আছে। আর সেটা হলো ফার্মগেট। আর এই ফার্মগেট একদা এই লেখকের জান এবং মান বাঁচিয়েছিল।

বলেই ফেলি ঘটনাটা তাহলে।

এই ফার্মগেট ম্যানিয়ার উৎপত্তি আমার হার ম্যাজেস্টির মাধ্যমে। গাড়িতে হোক বা বাসে, সিএনজি অথবা রিকশা - যেটাতেই তিনি চলমান থাকেন আর পাশে যদি আমি থাকি, প্রশ্নটা এরকম হবেই - "এটা কোথায়? ফার্মগেট?" উত্তরা হলেও ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ি হলেও ফার্মগেট, পল্লবী হলেও ফার্মগেট। আর ফার্মগেট হলে....!!!

কিন্তু তার আগে জানতে হবে 'ফার্মগেট সিন্ড্রোমের' উৎপত্তি বা বুৎপত্তি - যা-ই বলেন।

দূর অতীতে কোন এক সান্ধ্যকালীন ভ্রমনে ম্যাডাম গভীর নিদ্রায় ছিলেন। মাথা আমারই কাঁধে। যখন ফার্মগেট পার হচ্ছি, কোন কারনে সেই সময় ধড়মড় করে তিনি উঠে পড়েছিলেন। সবাই জানেন, আচমকা ঘুম ভাঙলে নিউরনে সামান্য শর্ট-সার্কিট হয়ে যায়। বাড়িকে মনে হয় সিনেমাহল আর স্বামীকে দুলাভাই। আমার হার ম্যাজেস্টিরও তাই হয়ে গেল। আর তখন থেকেই এই ফার্মগেট রোগের শুরু। যেখানেই যায়, আচমকা প্রশ্ন - "এটা কোথায়? ফার্মগেট?"

যাই হোক, গত সপ্তাহের ঘটনা বলি।

দুপুরে অফিসে ব্যাপক ব্যস্ত। মানে ব্যস্ততার ভাব নিতে ব্যস্ত। এমন সময় ফোন। কলার নেম - LOVE। হার হাইনেসের নাম এভাবেই সেভ করা।

প্রশ্ন ছিটকে এলো - "তুমি কোথায়?" আমি শুনলাম যেন হুমকিঃ "এই শালা, তুই কই রে?"

"কোথায় মানে? এই সময় আমি কোথায় থাকি? অফিসে!" - কড়া গলায় উত্তর দিলাম। আসলে ঝাড়ির জোশে ছিলাম তো, সেইটাই বেরিয়ে গেছে। অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স।

"জলদি নিচে নামো। আমি তোমার অফিসের সামনে।" আবার হুমকির সুর। যেন বলছেঃ নিচে আয় বজ্জাত। তোকে দেখাচ্ছি।

আমি ফাপরে পড়লাম। কারন এইখানে একটু প্যাঁচ আছে।

বর্তমানে আমার কর্মক্ষেত্র তিনটা বিল্ডিং ছড়ানো। যেটাতেই থাকি না কেন, টেকনিক্যালি আমি অফিসেই থাকি। কিন্তু উনি চেনেন শুধু আমার হেড অফিস। এইতো ভ্যাজালে পড়লাম। এখন মিনিমাম ১৫ মিনিট লাগবে হেড অফিসে পৌঁছাতে। এই টাইম গ্যাপ ক্যামনে সামলাই?

হঠাৎ মনে পড়ল 'ফার্মগেট-সিন্ড্রোমের' কথা। ইউরেকা...!!!

গলাটা যথাসম্ভব মিহি করে জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি এই মুহূর্তে ঠিক কোথায়, বলতো?"

"আমি ওই যে, একটা বড় রাস্তায়। এখন কি ইউটার্ন নেব না কি, বুঝতে পারছি না।" - ওপাশের উত্তর।

ইউরেকা..! আবার ইউরেকা...!!

আমি জানতাম, এই 'ফার্মগেট'ই একদিন আমার প্রাণ বাঁচাবে। বুঝলাম, এইবার ওর সাথে 'ফার্মগেট' (পড়ুন পথনির্দেশনা) চেনাবার কেউ নেই। তাই ফার্মগেটও নেই।

গলার স্বর হালকা চড়ালাম। "কিসের ইউটার্ন? তুমি না বললে আমার অফিসের সামনে। তাহলে ডান দিকে বায়তুল মোকাররম দেখতে পাচ্ছ?"

এইবার উদ্বিঘ্ন স্বরঃ "কই যে আছি, বুঝতেছি না তো। আমি প্রেসক্লাবের গলিতে। এখন কি শাপলা চত্ত্বর থেকে ইউটার্ন নেব?"

এইবার আমার মাথা পুরাই গিট্টু লেগে গেল। কোথায় প্রেসক্লাব, আর কোথায় শাপলা চত্ত্বর..! না কি কদম ফোয়ারাকে ফার্মগেট-শকে শাপলা ফুল দেখছে। হায় হায়..! গেল বুঝি আজ বউ হারিয়ে।

লিফটের তোয়াক্কা না করে ততক্ষনে এক দৌড়ে রাস্তায় নেমে এসেছি। ফোন কানে। জিজ্ঞেস করলাম - "তোমার ডানে কি দেখছ? আর বামে কি, আমাকে বল।"

"দাঁড়াও দেখছি।" কিছুক্ষন গ্যাপ। তারপর কানে এলো - "ডানে হলো ৩৫ তোপখানা। আর বামে বিজেএমই ভবন। আর তো কিছু দেখি না।"

হায় খোদা...!

বিজিএমই ভবন তো সেই বেগুনবাড়ি খালে। আর তোপখানা এখানে। স্পেস-টাইমে মোচড় খেয়ে গেল না কি? না কি ওয়র্ম-হোল?? প্রভু হে...! বউ বোধহয় এইবার প্যারালাল ইউনিভার্সে চলে গেল। যেখানে বিজিএমই ভবন তোপখানায় থাকে। পাশে থাকে প্রেসক্লাব আর গায়ে গায়ে শাপলা চত্ত্বর।

বুঝতে আর বাকি নেই - এ সেই ফার্মগেট সিন্ড্রোম।

এইবার বাজখাঁই গলায় চেঁচিয়ে উঠলাম। "কি বল এই সব? কোত্থেকে রওনা দিয়েছ, সেইটা আগে বল। এইখানে বিজিএমই ভবন পেলে কোথায়?"

যাই হোক, ঘটনা আরও অনেকক্ষন চলেছিল। সেটা বলে আর ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটাবো না।

আসল কথা হলো, হার হাইনেস এতক্ষন আজাদ প্রোডাক্টস আর হাউজ বিল্ডিং এর সামনে ছিলেন। ওইটার নাম কি যেন বিজেইসি টাইপের। শেষ পর্যন্ত তাঁরা যখন আমার আসল অফিসের সামনে, তার অনেক আগেই আমি সেখানে দন্ডায়মান।

'ফার্মগেট' জায়গাটা আসলে খারাপ না, কি বলেন?

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:০৪

দেশী পোলা বলেছেন: এজন্যই মনে হয় আরব দেশে মহিলাদের গাড়ি চালাতে নিষেধ আছে

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৫

মন থেকে বলি বলেছেন: যুক্তি ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না।
তাহলে সব গাড়িই ফার্মগেটে চলে যাবে।

২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:৪৪

ওমেরা বলেছেন: আপনার লিখা পড়ে আমার মাথা এলোমেলো হয়ে গেল !

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৫

মন থেকে বলি বলেছেন: তাহলে আমার অবস্থা চিন্তা করেন যখন ফোনে ডিরেকশন নিচ্ছিলাম।
সুতরাং....
মাথা গুছিয়ে ফেলুন।

৩| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৩:০১

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: অফিসটা যে কেন ফার্মগেটের আশেপাশে হলো না!!!

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬

মন থেকে বলি বলেছেন: আহ হা...! ফার্মগেটের আশেপাশেই তো আছি।
কারন..
পুরো ঢাকাই তো ফার্মগেট।

৪| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:২৯

ধ্রুবক আলো বলেছেন: 'ফার্মগেট' জায়গাটা আসলে খারাপ না, কি বলেন? খারাপ না, আবার খুব ভালোও না সব মিলিয়ে আরকি।
লেখাটায় +++ দারুন লিখেছেন, খুব ভালো লাগলো
পরবর্তী সময়ে সাবধান, বৌ যদি হারিয়ে যায় তাহলে কিন্তু বিপদ ভাই বুঝলেন। হা হা হা,,,,

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৭

মন থেকে বলি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
বৌ হারায় নাই। এইটাই স্বান্তনা।

৫| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৩

মানবী বলেছেন: স্ত্রীর প্রতি আপনার ভালোবাসা দেখে ভালো লাগলো। জরুরী ভিত্তিতে ফার্মগেটে আবাস গড়লে সমস্যার সমাধান হতেও পারে মনে হয়! :-)

মজার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ মন থেকে বলি।

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৮

মন থেকে বলি বলেছেন: ভাই রে....
এইটা ভালবাসা না। বৌ হারাইলে খবর ছিল।
কারন..
বৌ একটাই।

৬| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: হা হা।
ভাল লিখছেন

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৯

মন থেকে বলি বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে বন্ধু।

৭| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:৫৪

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: রাতেই পড়ছিলাম। :) :)

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০

মন থেকে বলি বলেছেন: রাতে পড়ে কি করলেন.... ;)

৮| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭

বাকি বিল্লাহ বলেছেন: আবার হুমকির সুর। যেন বলছেঃ নিচে আয় বজ্জাত। তোকে দেখাচ্ছ....... :p

১৮ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২০

মন থেকে বলি বলেছেন: আপনার এই অভিজ্ঞতা নেই?
সুর তো এরকমই থাকার কথা।

৯| ১৯ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২৯

উম্মে সায়মা বলেছেন: যারা রাস্তা চেনে তারাও গুলিয়ে ফেলবে :P
মজা পেলাম মন থেকে বলি ভাই :)

১৯ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৫:১০

মন থেকে বলি বলেছেন: কথা সত্য। রাস্তা তো গুলিয়ে ফেলবার জন্যই..! নয় কি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.