নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতই আসুক, দুঃখ আঘাত,অন্ধ দু\'চোখ যতই বাধার সামনে দাড়াকবন্ধু তোমার স্বপ্ন দেখার, মনটা ধরে রেখো।

টি এম মাজাহর

Bangladesh

টি এম মাজাহর › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমকামিতা ও নাস্তিকতা চর্চা এবং তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের মুক্তবুদ্ধি চর্চা

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:০০

রংধনু ফ্ল্যাগ নিয়ে পুরো এক সপ্তাহ তোলপাড়। বুদ্ধিজীবি টাইপ ফেসবুক ফ্রেন্ড থেকে এলাকার ছোটভাই ফেসবুক ফ্রেন্ড পর্যন্ত, খবরের কাগজ থেকে নিউজ চ্যানেল পর্যন্ত। উইকিপিডিয়া বলছে, " gay pride flag and LGBT pride flag"। প্রতিটি রংয়ের নিখুত বর্ণনাসহ উৎপত্তিস্থল কারণ ইত্যাদি ইত্যাদি প্রচুর ইনফরমেশন। বিষয়বস্তু জানবার পর যে চোখ এড়িয়ে যাবেন, উপায় নেই। আড্ডায় একজন মানবতাপ্রেমিক পাওয়া যাবে, গলার রগ ফুলিয়ে ভাষণ দিচ্ছেন, যার সারমর্ম এই যে, " আমি গে না তো কি হইছে, ওদের মানবাধিকারের সাথে একমত, ওদের পছন্দ কেন দাম দিবো না?" অনলাইনে চুপ করে বসবেন, তারও উপায় নেই। চার পাচটা মানবাধিকার বিষয়ক পোস্ট শেয়ার দিচ্ছে আপনারই পরিচিত কেউ, বিষয়বস্তুটাও এরকমই- " ওরা তো কাউকে কামড়াচ্ছেনা, ওরা তো কাওকে সমস্যা তৈরী করছেনা" সেই সাথে যন্ত্রনাদায়ক কিছু তথ্য- " সমকামী পরিবারে সন্তানের পরিচয় কে ধারণ করবে?, সমাজে সমকামীদের অবদান, বিখ্যাত এবং আলোচিত ব্যাক্তিদের মধ্যে কে কে সমকামী, এই বিশাল বৈপ্লবিক পরিবর্তনে কার অবদান বেশী " ইত্যাদি ইত্যাদি। খুব ভালো, এমনটাই দেখেছিলাম নাস্তিকদের প্রতি সহানুভুতি ও সমর্থন জানানোর প্রক্রিয়ায়ই। মজার ব্যপার হলো দুইটা ক্ষেত্রেই একই প্রক্রিয়া, একই ধরনের প্রতিক্রিয়া। মোটামুটি দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবি মহল একটা জায়গায় সবাইকে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে, সেটা হলো, মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা এবং কর্মের উপর সম্মান প্রদর্শন। তবে সবার জন্য নয়, মোল্লাদের জন্য আবার উল্টা থিউরী, এককালের স্বঘোষিত নাস্তিকরা আজকাল কোরান হাদিস থেকে উদ্ধৃতি দেয়, মোল্লাদের সাথে এক টেবিলে টক শো করে মোল্লাদের গাইড করে, মোল্লাদের ক্ষেত্রে মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা প্রযোজ্য নয়। শুধু মোল্লাই নয়, ধর্মের কিছু বলতে হলেও ওনাদের পছন্দটা আগে দেখতে হবে, পছন্দ নাহলে জঙ্গীবাদ, রাজাকারবাদ আর পাকিস্তানে পাঠানোর হুমকি তো আছেই।
সমকামীতা আর নাস্তিকতার বিরুদ্ধে ধর্মের স্পষ্টবাদিতা এই গ্রুপটাকে আরও উগ্র করে তুলছে। মূল টার্গেট ধর্মকে আক্রমণ করা, কিন্তু এসব ইস্যুতে সরাসরি ধর্মের বিরদ্ধে না গিয়ে ধর্ম নিষিদ্ধ কাজগুলোকে "মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা" ট্যাগ লাগালেই কম্মো সাবাড়। এবার আসুক দেখি কে " মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা" র বিরুদ্ধে কথা বলে?
সমকামীতা নিয়ে প্রায় সব ধর্মেই নিষিদ্ধ করবার কথা আছে, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে সরাসরি এর ভয়ঙ্কর পরিনাম, ভয়ঙ্কর ইতিহাস আর ভয়ঙ্কর অভিশাপের কথা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে, অনেকবার অনেক জায়গায় প্রচন্ড শক্তভাবে বলা আছে। বিশ্বমানবতা ধ্বংসের প্রক্রিয়ার অন্যতম ভয়ঙ্কর অংশের চিত্রায়ন এখন চলছে বিশ্বব্যাপি। "ইসলাম" কে প্রায় সার্বজনিনভাবে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসেবে স্থান দেয়ার প্রক্রিয়ায় ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমা অংশ যতটা না এগিয়েছে, তার চেয়েও দুই কদম এগিয়েছে মুসলমান নামধারী একদল লোক। তাদের একটা অংশ জেনে, শুনে, বুঝে এবং ভবিষ্যত না বুঝেই শর্টকার্টে "হিরো" হতে চাওয়া অন্যদল। দুই দলের পরিচয়টা এভাবেও দেয়া যায়,নাস্তিকতা ও সমকামীতা সাপোর্ট (ঘুরায়া প‌্যাচায়া, যুক্তি/তথ্য দিয়া ) নিয়ে প্রথম দল কোন একটা স্ট্যাটাস দিলে, দ্বিতীয় দল হুমড়ি খেয়ে পড়ে ওটা শেয়ার করবার জন্য (যদ্যপি আমার গুরু .... বাড়ি যায়, তদ্যপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়)। এবার প্রস্তুতি নাও, যে বা যাহারা এটার বিরুদ্ধে একটা কমেন্ট করবে, কথার ঝাড়ি দিয়া হয় পাকিস্তান পাঠাবে, নয়তো নিদেনপক্ষে নব্য তালেবান/নব্য রাজাকার আখ্যাতো রেডিমেড।
কোনঠাসা ধর্মপ্রাণ মধ্যবিত্ত ঝামেলামুক্ত জীবনের আশায় মুখবুজে বসে আছেন। বেশ ভালো, থাকুন, কিন্তু মনে রাখবেন, দাউদাউ করে এগিয়ে আসা আগুন ছড়াতে দিলে আপনিও ছাড়া পাবেন না।
আপনি ধর্মের কথা বাদই দিন, একটাবার সমাজের কথা চিন্তা করুন। নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করুন। যারা ওই বুদ্ধিজীবিদের
"মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা" স্ট্যাটাস মুখস্ত করে আর শেয়ার করে আলোচনায় থাকতে চান, তাদেরই বলছি (ওই বুদ্ধিজীবিদের বলে তো কোন লাভ নেই, তারা সেই পথেই থাকবে), আপনার ভালোমানুষি চিন্তার ভবিষ্যতটা কি একবারও বুঝতে পারেন। আজকে নাস্তিক আর সমকামীদের "মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা" র সাপোর্ট নিলেন, দুইদিন পর যদি দেখেন আপনার ঘর থেকে আপনার ছেলে/মেয়ে সেই রাজীবের মতোই অশ্লীল ভাষায় ধর্মগ্রন্হের বিকৃতি ঘটাচ্ছে, কিংবা আপনারই ছেলে/মেয়ে সমকামী পার্টনার নিয়ে আপনার সামনে বুক ফুলিয়ে ঘুরছে, তখন আপনারই বলা "মানবাধিকার, স্বঅধিকার, আর ব্যাক্তির ইচ্ছা" আপনার উপরই পড়বে। আপনিই তো বলেছিলেন, " আমি গে না তো কি হইছে, ওদের মানবাধিকারের সাথে একমত, ওদের পছন্দ কেন দাম দিবো না?" এবার ওদের জায়গায় নিজের ছেলেমেয়েদের নাম বসিয়ে ভাবুন! "ওরা তো কাউকে কামড়াচ্ছেনা, ওরা তো কাওকে সমস্যা তৈরী করছেনা" - আপনার কেন সেদিন মাথা গরম হবে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.