নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানিনা কোথায় আছো, কেমন আছো;
শুধু জানি, হয়তো তুমি ভালো নেই, অথবা আছো
যে ভাবে তোমার থাকার কথা ছিলনা।
আজ এই অবেলাতে যদি তোমায় একটি প্রশ্ন করি,
খুব, খুব ভুল হবে কি প্রিয়...
কে তোমায় দুঃখ দিলো, কেন তুমি এমন হলে_
যা তুমি কখনো-কোনোদিন হতে চাওনি; নারী না!
তুমি চেয়েছিলে একটি সবুজ শান্ত-সুখের ঘর
যেখানে, থাকবে না কোন দ্বন্দ্ব স্বার্থের হানাহানি,
কথা কাটাকাটি, থাকবে শুধুই ভালো বাসাবাসি।
চেয়েছিলে, লক্ষ্মীমন্ত একটি বউ, যে থাকবে সর্বদা তোমার পাশাপাশি,
কখন কি লাগে তোমার, এই যেমন ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পরে
তোমার ব্রাশ তাওয়াল এগিয়ে দিয়ে, অফিসের জিনিসপত্র গুলি গুছিয়ে দেয়া,
টেবিলের পাশে বসে যত্ন করে নাস্তা খাইয়ে দেয়া, সাথে এককাপ চা হলে মন্দ নয়।
কর্মক্ষেত্রে যাবার বেলেয়, দুয়ার অবদি এগিয়ে দেয়া, কপলে একটি আলতো করে
চুমু এঁকে দেয়া আর নেয়া, হাত নেড়ে যতদূর চোখ যায় হাসিমুখে হাত নাড়া।
দুপুরে ফেরার পরে, ব্যাগটা তোমার হাত থেকে নিয়ে, শার্টটা টাইটা খুলে দেয়া,
জুতো টা খুলে যথা স্থানে রেখে, হাত ধরে টেনে নিয়ে বাচ্চা শিশুর মত করে
পা ডলে, পিঠ ডলে সুন্দর মত করে গোসল করিয়ে দিয়ে, মাথাটা মুছে দেয়া
চুল গুলো বা সিঁথি করে আঁচরে দেয়া, পছন্দের শাক ঝোল ভেজা ভাত
দুজন মিলে খেয়ে, শীত, গ্রীষ্ম, বরষা সব ঋতুতে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে
একটা ভাত ঘুম দেয়া, কখনো বা দুষ্টুমি খুনসুটিতে মেতে ওঠা।
চশমাটা, বইটা এগিয়ে দিয়ে এককাপ লেবু, আদা, এলাচ পাতা, কিংবা
কাঁচা মরিচের চা য়ের সাথে পাকোড়া, ডালের বড়া, অথবা দুটো মুড়ির মোয়া
এনে, পাশে বসে দুজনেই বই কিংবা টেলিভিশনের কোন সাদা-কালো
ছবির মাঝে হারিয়ে গিয়ে দুজনেই নায়ক কিংবা নায়িকা বনে যাওয়া।
হাত ধরে নেচে গেয়ে, ওসব ছবির নায়ক-নায়িকা দের কেও হার মানিয়ে দেয়া।
চাঁদনী রাতে দুজনে গাঁয়ের মেঠো পথে, নদীর তীরে গুন গুন গানের সুর তুলে
জোনাক জলা লাইটিংয়ের মাঝে, একান্ত নিজেদের আপন গহীন বনে হারিয়ে যাওয়া।
ছুটির দিনে, ধানক্ষেত, হলুদ সরষে ক্ষেত, জারুল, হিজল, আমলকী বনে বাদারে
ইচ্ছে মত ছুটোছুটি, মাতামাতি, পাট কিংবা ছন বনে লুকোছুপি খেলা,
পাটখড়ির মাথায় কাঁঠাল অথবা গাছের কস মেখে, ফড়িং, প্রজাপতি ধরা,
কাঠবিড়ালির পিছু ধেয়ে ক্লান্ত শরীরের, লাজুক রাঙা বউয়ের শরিরের,গাছের সাথে
হেলান দিয়ে দাড় করিয়ে, আলতো করে ঘোমটা তুলে কিছু একটা একে দিয়ে
হো হো করে হেসে উঠা, যেন খ্যাপাটে আলাভোলা এক পাগলা ঘোড়া...
গোধূলি লগণে ধবধবে সাদা বক, মাছরাঙ্গা, শালিক,চড়ুই, শ্যামা, কোকিল
ঘুঘু, সোনালী ডানার চিলদের স্থির উড়ে চলা দেখে, সন্ধ্যেবেলা
আঁজলাতে কলমিলতা, মালঞ্চা, হেলঞ্চা, ঘি কাঞ্চন, ঢেঁকিশাক তুলে ঘরে ফেরা।
দু'চারটে মুরগী, ছাগল পোষা, গাঁয়ের খাঁটি গরুর দুধের পিঠা-পুলি, পায়েস রাধা।
কনকনে শীতের কুয়াশা ভেজা ভোরে খড়কুটো জ্বালিয়ে উম নেয়া আর
খেজুর রসে ভেজা চিতই, ভাপা পিঠে ফুঁকে ফুঁকে তৃপ্তি করে খেয়ে ঢেকর তোলা।
হায়; কত স্বপ্নই না ছিল আমার ওই শিশুর মত, নরম মনের গেদা আলাভোলা মানুষটার;
কারা যেন কেড়ে নিলো সব তার স্বপ্ন- স্বাদ, নিংড়ে চিপরে খেল, তারপর... ছুড়ে ফেলে দিলো;
কংক্রিট, ইট পাথরের শহর ওকে কেমন জানি করে দিল, ভুলে গেল, ভুলে গেল বুঝি
ও ওর সকল চাওয়া পাওয়া আবেগ অনুভূতি আর প্রেম ভালবাসায় মাখামাখি করে
জীবন কাটিয়ে দেয়ার সপ্নগুলো। মিলিয়ে গেলো অন্ধকারে আলো আঁধারীর আশা গুলো।
আজ কি ও মাতাল, উম্মাদ, যেখানে যা পায়, তাইই কি খায়! দেশি-বিদেশী এঁটো- ঝুটা সব কি!
ও তো কখনো এঁটো-ঝুটা খেতে চায়নি, মাতাল উম্মাদ কিংবা অপরিছন্ন এলোমেলো জীবন বইতে চায়নি;
তবে কে বানালো ওই সহজ সরল, মেধাবী চরিত্রবান পুরুষটিকে এমন??
বলো ঘরের স্ত্রী? বলো শহুরে নারী, ডানা কাটা পরী? বলো আজন্ম প্রেমিকা ঘুঁটোকুড়োনী কৃষাণী বধু?
বুড়ো হয়ে গেল কি ও, চুলে কি পাঁক ধরেছে, চোখ কি তার আগের মত দেখে, নাকি পাওয়ার কোন চশমা পরে!!
নাকি !! ইচ্ছে জাগে খুব করে, পৃথিবীর সকল দেয়াল, সকল নিয়ম ভেঙ্গে ছুটে গিয়ে জিজ্ঞেস করি...
ওগো প্রিয়, তুমি ভালো আছো তো... কেউ তোমায় দুঃখ কষ্ট দেয়নি তো, বকুনি দেয়নি তো,
ঠিকমত খেয়েছিলে, নেয়ে ছিলে তো, ফুলবাবুটির মত করে হেলেদুলে চলে ছিলে তো,
আমায় তোমার মনে পড়েনি তো, অনেক ঘৃণা ও বুকে জমিয়ে দিয়েছি যে সেই কবে দূরে সরিয়ে;
চেয়েছি নিজ শেকড়ের মাঝে শক্ত করে আগলে ধরে বাঁচো, বাঁচার মত করে বাঁচো...
কোন সাহস সাধ্য ছিল কি এই গেঁয়ো, ঘুঁটোকুড়োনি কৃষাণীর...তোমার মত
ওত বড় সাহেব বাবু কে ধরে রাখার বলো; কিংবা সমুখে গিয়ে সেই ...
পরিচিত সু ঘ্রানি শরীরের ঘাম, চশমার ঝাপসা ঘোলাটে কাঁচ আঁচল দিয়ে মুছে,
পড়িয়ে দিয়ে কপোলে একটি ছোট্ট চুম এঁকে দিয়ে ফিরে আসার;
যেমনটা মা তার সন্তান কে এঁকে দেয় ...পরম মমতায় ;
..................................................................
আমি যে কৃষাণী, তোমার চাওয়ার যতটুকু ছিল, জানিনা তা কতটুকু দিতে পেড়েছি,
তবু আরও কিছুটা দিতে, বড় লাঞ্চনা ঘৃণা সয়ে, আজো আমি এ গাঁয়ে কামলা খাঁটি;
যদি ইকটু ক্ষণের তরেও ভালো থাকো ...
______________ঁ
২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৩৯
অনু-সকল বলেছেন: ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন অশ্রু ! কারিগর!
ফুলফোটে না, ভাবুক ভাবে না, আমি শুধু ভেবে যাই,
কে কোথায়, জীবন এমনই বুঝি হায়;
২| ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:০৪
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: অবেলাতে
এই কথা নিয়ে তাকে লেখা আমার একটি কবিতা আছে।
মনে পড়ে গেল।
ভালো থাকুন
২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩৮
অনু-সকল বলেছেন: কোথায় লিখেছেন, আপনার ব্লগে। ভালো থাকবেন।
৩| ২৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৪২
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ফেবু লিখেছিলাম
৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৭
অনু-সকল বলেছেন: ফেবু তে লিখলে আমরা দেখবো কি করে, এখানে দিন, আর আপনার ফেবু কি এ নামেই।
৪| ৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১:২২
অশ্রুকারিগর বলেছেন: ফুলফোটে না, ভাবুক ভাবে না, আমি শুধু ভেবে যাই,
কে কোথায়, জীবন এমনই বুঝি হায়;
তা যা বলেছেন। আমি কবি নই তাই কাব্যিক প্রতিউত্তর দিতে পারলাম না।
আপনার লেখাই আপনাকে দিলাম।
আজ এই অবেলাতে যদি তোমায় একটি প্রশ্ন করি,
খুব, খুব ভুল হবে কি প্রিয়...
কে তোমায় দুঃখ দিলো, কেন তুমি এমন হলে?
৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:৫৭
অনু-সকল বলেছেন: কেউ দুঃখ দেয় ইচ্ছায়, আর কেউ অনিচ্ছায়। ভালো থাকুন, দোয়া অনেক... যদি পারেন, আমার জন্য একটু দোয়া করবেন।
৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১:০৮
অশ্রুকারিগর বলেছেন: জগতের সকল প্রাণী সুখে থাকুক। সৃষ্টিকর্তা সবার মনের ইচ্ছা পূরন করুক।
৬| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৪৭
অনু-সকল বলেছেন: আমার এখানে উত্তর পাঠানোর সবুজ এরো টা নেই, শুধু ক্রস দেয়া, তাই উত্তর দিতে পারছিনা, তবুও দিলাম এভাবেই। ভালো থাকুন, আর হ্যাঁ, জগতের সকল প্রাণী ভালো থাকুক, সবার আগে মানুষ নামক প্রান।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০
অশ্রুকারিগর বলেছেন: এ তো মহাকাব্য!
বেশ চমতকার লিখেছেন।