নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওয়াসি আহমেদ

ওয়াসি আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্য অ্যাবসেন্স অফ এমিলি

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৪

কাজটা শুরু করার পাঁচ মিনিটও হয়নি, এমন সময়ে একটা চিৎকার শুনতে পেলাম আমি। হঠাৎ করেই চারপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ আমাকে ঘিরে ফেলেছে ….
………….
এমিলিকে (আমার দ্বিতীয় স্ত্রী) বিয়ে করার পর, আমি নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় ওর বাড়িতেই উঠে পড়ি। বাড়িটা বেশ বড়, চারপাশ ঘিরে অনেক জমিজমা। আমাদের পাশের বাড়িটা প্রায় হুবহু একই রকম দেখতে। ওই বাড়িটা এমিলির বোন মিলিসেন্টের।
মিলিসেন্ট আর এমিলি সম্পর্কে দুই বোন। কিন্ত চেহারা-চরিত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন ওরা। মিলিসেন্ট লম্বা আর হ্যাংলা পাতলা, বেশ দৃঢ় মানসিকতাসম্পন্ন। এমিলি থেকে শুরু করে আশেপাশের সবাইকে নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে চায় ও। আমি এসে পড়ায় যখন এমিলি ওর নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেল, স্বাভাবিকভাবেই তখন ওর জন্য এটা কোনও সুখকর ঘটনা ছিল না।
এমিলিকে বেঁটেই বলা চলে, আর-হ্যা, মোটাও। নিজের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে এগারো-বারো কিলো বেশি বলে মনে করে ও। নিজেকে চালাক দাবি করে না এমিলি, আর সাধারনত আশেপাশের মানুষের চাহিদামাফিক কাজ করে থাকে। সবসময় অবশ্য সেটা সত্য নয়!
আজকে নিয়ে তিন সপ্তাহ হতে চললো, এমিলি বাসায় নেই। আর এদিকে মিলিসেন্ট আমাকে চোখে চোখে রাখতে শুরু করেছে। ড্রয়িংরুমে বসে কফি পান করছিলাম দু’জন। এমন সময় ফোন বেজে উঠল। ফোনটা ধরলাম,
- হ্যালো ।
- হ্যালো, জান। এমিলি বলছি।
- এমিলি??? ইয়ে… আপনার ভালো নাম কি?
- আহা, কি যে বল! আমি এমিলি, তোমার বউ!
- দুঃখিত। আপনি ভুল নম্বরে ফোন করেছেন।
ফোনটা নামিয়ে রাখলাম আমি। পুরোটা সময় মিলিসেন্ট আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।
“তোমাকে একদম সাদা কাগজের মত ফ্যাকাশে দেখাচ্ছে। এত ভয় পেলে কেন, কে ফোন করেছিল?”
“রং নম্বর।”
মিলিসেন্ট কফির কাপে চুমুক দিল। “ওহ, অ্যালবার্ট, আমি সম্ভবত গতকাল এমিলিকে দেখেছি। তোমাকে বলতে ভুলে গিয়েছিলাম।”
“অসম্ভব। এমিলি সান ফ্র্যান্সিসকো তে।”
“আচ্ছা। কিন্ত সান ফ্র্যান্সিসকোর কোথায়?”
“সেটা তো আমাকে বলেনি। বন্ধুদের সাথে নাকি দেখা করবে বলেছিল।”
“সান ফ্র্যান্সিস্কোতে এমিলির কোন বন্ধু নেই! আমি ওর সব বন্ধুকে চিনি। ফিরবে কবে মেয়েটা?”
“তা-ও জানিনা। এমিলি নিজেই এই বিষয়ে নিশ্চিত ছিলনা অবশ্য।”
“অ্যালবার্ট, আমি শুনেছি তোমার আগের স্ত্রী নাকি নৌকাডুবিতে মারা গিয়েছিল? নৌকা থেকে পানিতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়!”
“হুমম। সাঁতার জানত না বেচারী।”
“আর সেই দুর্ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী তুমিই ছিলে, তাই না?”
“আমার জানামতে তাই। আর কাউকে এগিয়ে আসতে দেখিনি।”
“ও তোমার জন্য অনেক টাকাপয়সা রেখে গিয়েছে, তাই না অ্যালবার্ট?”
“তাতে তোমার কি আসে যায় মিলিসেন্ট?”
সত্যি বলতে কি, সিনথিয়ার নামে পঞ্চাশ হাজার ডলারের জীবন বীমা করা ছিল। ও খুব শখ করে একটা পালতোলা নৌকা কিনেছিল, আহারে বেচারী! একদিন কী মনে করে যেন, একাই নিজের নৌকায় চেপে পানিতে নামে সিনথিয়া। দুর্ঘটনাবশতঃ ও যখন ডুবে যাচ্ছিল, তখন আমি বোটক্লাব থেকে সেটা দেখতে পাই। দেখার সাথে সাথেই অন্য একটা নৌকায় করে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি আমি। কিন্তু….. ততক্ষনে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে।
মিলিসেন্ট ওর কফি শেষ করে বিদায় হল। ও চলে যাবার পর আমি বাড়ির পেছনের জঙ্গলে হাঁটতে বেরোলাম। এখানে অনেক গাছপালার ভিড়ে একটা ছিমছাম ফাঁকা জায়গা আছে, যেখান থেকে ছোটখাট একটা নদী বেরিয়েছে। জায়গাটা খুব নিরিবিলি, শান্তিময়। বিশ্রাম নেয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারেনা। গত কয়েকদিন যাবত আমি প্রায়ই আসছি এখানে।
একটা গাছের গোড়ায় বসে এমিলি আর মিলিসেন্টের কথা ভাবছিলাম আমি। যেহেতু ওদের দুজনের বাড়ির কাঠামো আর জমিজমা প্রায় একইরকম, তাই দুই বোনকে সমান ধনী ধরে নেয়া যায়। যদিও এমিলিকে বিয়ে করার পর আমার কখনোই সেরকম মনে হয়নি। এমিলি এতবড় বাড়ি আর জায়গা জমির মালিক, কিন্ত সেগুলো দেখাশোনা করার জন্য কর্মচারী রাখার মত সামর্থ্য ছিল না ওর!
আর অন্যদিকে মিলিসেন্ট। ওর বাড়িতে চাকরবাকর আর কর্মচারীর অভাব নেই। এমনকি টাকা পয়সার হিসাব রাখার জন্যও একজন আইনজীবী নিযুক্ত। কম করে হলেও, কয়েক মিলিয়ন ডলারের মালিক সে।
মঙ্গলবার বিকেলে সাধারণত আমি শহরের সুপারমার্কেটে ঘোরাঘুরি করি। আজ গাড়ি পার্কিং এর জায়গায়, রাস্তার উল্টোপাশে বেটে মোটাসোটা এক মহিলাকে দেখলাম। পরনে বেগুনি পোশাক আর মাথায় খয়েরী হ্যাট। অবশ্য আজই তার সাথে আমার প্রথম দেখা নয়, গত দশ দিনের ভেতর এই নিয়ে চতুর্থ বার দেখছি আমি এই মহিলাকে। দেখামাত্র আমি ওই রাস্তা বরাবর দ্রুত হাঁটা শুরু করলাম। মোড় ঘুরতে দেখে দিলাম এক দৌড়। আমি পৌছাতে পৌছাতে, ততক্ষনে সে লাপাত্তা!

ওখানেই দাড়িয়ে পড়লাম। হঠাৎ একটা গাড়ি এসে থামল আমার পাশে ।

গাড়ির ভেতরে থেকে মিলিসেন্টের গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম আমি, “কি করছ অ্যালবার্ট? একটু আগে তোমাকে দৌঁড়াতে দেখলাম। রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে কবে থেকে?”
“ও কিছু না! একটু ব্যায়াম করছিলাম আর কি।” লম্বা শ্বাস নিতে নিতে আবারো সুপারমার্কেটের উদ্দ্যেশ্যে হাঁটা দিলাম আমি।

পরদিন সকালের কথা। জঙ্গলে হাঁটা শেষ করে বাসায় ফিরে এসে দেখি মিলিসেন্ট বসার ঘরে নিজের জন্য কফি ঢালছে।

“আমি তোমাদের বেডরুমে ঢুকেছিলাম এমিলির কাপড়চোপড় দেখতে। আমি তো দেখলাম ওর সব পোশাকই আছে এখানে”- মিলিসেন্ট বলল।

“কেন থাকবে না? বাসায় কি চোর ঢুকেছিল নাকি?”

“বাজে বকো না। তুমি নিশ্চয়ই বলবে না যে এমিলি কোন লাগেজ ছাড়াই সান ফ্র্যান্সিস্কো রওনা দিয়েছে?”

“লাগেজ ছিল তো ওর সাথে। যদিও বেশি জিনিসপত্র ছিলনা ওতে।”

“যাবার সময় কি পরেছিল এমিলি?”

“এত কিছু মনে নেই” – আমার স্পষ্ট জবাব।

সেদিন সন্ধ্যায় যখন আমি বিছানায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন একবার এমিলির আলমারির ভিতরে উঁকি দিলাম। ওর জামাকাপড় গুলোর কি গতি করা যায়? বিলিয়ে দেয়াই শুরু করে দেই নাকি!

তখন ঘড়িতে রাত দুটোর মত বাজে, হঠাৎ আমার ঘুম ভাঙ্গল, । চাঁদের উজ্জল আলো জানালা দিয়ে আমার মুখে এসে পড়ছিল। দ্রুত পোশাক পাল্টিয়ে বাগানের দিকে হাঁটা দিলাম। গর্ত খোঁড়ার জন্য কিছু একটা দরকার আমার।
একটা লম্বা হাতলওয়ালা কোদাল ঘাড়ে তুলে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরকার নদীর দিকে হাঁটা শুরু করলাম আমি। কাছাকাছি পোঁছে থমকে দাঁড়ালাম। আনমনে মাথা ঝাকিয়ে আবার বাগানের দিকে ঘুরে গেলাম পরক্ষনেই। তারপর ওখানে কোদালটা রেখে দিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম নিজের বিছানায়।

পরদিন সকালে আমি যখন নাস্তা করতে বসেছি, তখন মিলিসেন্ট আমার ঘরে ঢুকল। ওর হাতে একটা নীল রঙের খাম, প্রাপকের জায়গায় আমার নাম লেখা। হাতের লেখা বেশ পরিচিত মনে হচ্ছিল, পোস্টমার্কটাও আমাদের শহরেরই। খামের কোণা ছিড়ে আমি ভেতর থেকে এক টুকরো কাগজ বের করলাম-

“প্রিয় অ্যালবার্ট,

তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। আমার শীঘ্রই ফিরে আসা দরকার,অ্যালবার্ট। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।
-এমিলি


আমি চিঠিটা খামে ভরে আমার পকেটে চালান করে দিলাম।

“তারপর?” – মিলিসেন্ট প্রশ্ন করল আমাকে। “আমার মনে হয়, খামের ওপর এমিলির লেখা দেখতে পেলাম। ও কবে ফিরবে কিছু লিখেছে?”

“ওটা এমিলির হাতের লেখা নয়। শিকাগো থেকে আমার খালা চিঠি পাঠিয়েছে।”

“শিকাগোতে তোমার খালা থাকেন নাকি? জানতাম না তো!”

“চিন্তার কিছু নেই মিলিসেন্ট। শিকাগোতে আমার খালা আছেন একজন।”

রাতে আমি বিছানায় শুয়ে ছিলাম। বিছানার পাশে রাখা ফোনটা বেজে উঠল হঠাৎ,
- হ্যালো, সোনামণি। এমিলি বলছি।
- তুমি এমিলি নও। তুমি অন্য কেউ।
- বোকার মত কথা বলনা অ্যালবার্ট, অবশ্যই এটা আমি, এমিলি!
- তুমি এমিলি হতে পারনা। আমি জানি এমিলি কোথায় আছে, আর সেখান থেকে এত রাতে ফোন করা সম্ভব না।”

বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম আমি। নিচে নেমে পড়ার ঘরে ঢুকে কড়া এক কাপ চা বানিয়ে বসলাম। আস্তেধীরে চা শেষ করে যখন রাত প্রায় একটার মতো বাজে, তখন আমি আবার বাগানের দিকে রওনা হলাম। ওখান থেকে কোদালটা নিয়ে এবার আমি আর দেরি করলামনা। একটানে হেঁটে গেলাম জঙ্গলের ঐ গাছের আড়ালে লুকানো ফাঁকা জায়গাটায়। সবচেয়ে উচু গাছটার পাশে গিয়ে দাড়ালাম আমি।

বড় বড় ধাপে পা ফেলে সামনের দিকে এগোচ্ছি আর মুখে মুখে পায়ের ধাপ গুনছি। “এক,দুই,তিন,চার……..” এভাবে ষোল পর্যন্ত গুণে থেমে গেলাম।

এরপর মাটি খোঁড়ার কাজটা শুরু করে দিলাম!

............

কাজটা শুরু করার পাঁচ মিনিটও হয়নি, এমন সময়ে একটা চিৎকার শুনতে পেলাম আমি।হঠাৎ করেই চারপাশ থেকে অসংখ্য মানুষ আমাকে ঘিরে ফেলেছে। তাদের হাতে ধরে থাকা টর্চের আলোতে যেন আমার মুখ ঝলসে যাচ্ছে। আমি কয়েকজনকে চিনতে পারলাম, এরা সবাই মিলিসেন্টের কর্মচারী। এমনকি ঐ উকিলটাও এসে জুটেছে!
এবার মিলিসেন্ট সামনে এগিয়ে এল। “তুমি তাহলে নিশ্চিত হতে এসেছ এমিলি সত্যিই মরেছে কিনা, তাই না অ্যালবার্ট?” আর সেজন্যই তুমি ঠিক সেজায়গাতেই ফিরে এসেছ, যেখানে ওকে পুঁতে রেখেছিলে।”
“আমি একটা পুরানো ইন্ডিয়ান ছুরি খুঁজতে এসেছি” – আমার কাঠখোট্টা জবাব। “অনেকে বিশ্বাস করে পূর্ণিমার রাতে তুমি যদি এই জিনিস মাটির নীচে খুঁজে পাও, তবে সৌভাগ্য সুনিশ্চিত।”
মিলিসেন্ট একদম পাত্তাই দিল না। ও দুইজন অপরিচিত লোকের দিকে আঙ্গুল তুলে আমাকে বলল, “ওনারা প্রাইভেট ডিটেকটিভ। গত কয়েকদিন যাবত তোমাকে চব্বিশ ঘণ্টা নজরে রাখছিলেন এই দুজন, মানে যখন আমি বুঝে ফেললাম যে আসলে এমিলির কি হয়েছে!”
এরপর এক মোটাসোটা খাটোমতন মহিলাকে দেখিয়ে বলল ও, “ইনি হচ্ছেন মিসেস ম্যাকমিলান। তোমার দেখা ঐ বেগুনি পোশাকের মহিলা আর কি! ইনিই এমিলির হাতের লেখা নকল করে তোমাকে চিঠি লিখেছিলেন। আর এইযে হচ্ছেন মিসেস পিটারস। উনি খুব ভালোভাবে অন্যের কণ্ঠ অনুকরণ করতে পারেন। আর ওনার কণ্ঠেই তুমি টেলিফোনে এমিলির গলা শুনেছ।”
আরও দু’জন ডিটেকটিভ কে দেখতে পেলাম। এরা আবার সাথে করে কোদাল নিয়ে এসেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী মাটি খুঁড়তে শুরু করে দিল তারা।
“আমরা জানতাম, তুমি দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবে। গতকাল রাতে তো প্রায় কাজটা করেই ফেলেছিলে! পরে কি মনে করে যেন আবার মত পাল্টিয়ে ফেলেছ। অবশ্য সেটা আমাদের জন্যই ভাল হয়েছে। কাল রাতে তোমাকে দেখার জন্য এত লোকজন ছিলনা। আজকে আমরা আটসাট বেঁধে অপেক্ষা করছিলাম।”
ডিটেকটিভ দুইজন প্রায় পনের মিনিট যাবত একটানা মাটি খুঁড়ে যাচ্ছে। একটু বিশ্রাম নিতে কাজ থামাল তারা, “ কি শক্ত মাটি এখানে”, একজনের গলায় আক্ষেপের সুর।
দুই মিটার গভীর গর্ত হবার আগ পর্যন্ত তারা খুড়তেই থাকল।
“এখানে কোন মানুষ কে কবর দেয়া হয়নি,” আরেকজনের গলা শুনতে পেলাম। “আমরা শুধু একটি পুরানো ইন্ডিয়ান ছুরি খুঁজে পেয়েছি।”
মিলিসেন্টের দিকে তাকিয়ে আমি হাসলাম, “কিসব যে ভাবো না তুমি! কিভাবে ভাবলে যে আমি এমিলিকে...হাহা।”
ওদেরকে পিছে রেখে আমি বাড়ি ফিরে এলাম।

আমার একেবারে শুরু থেকেই সন্দেহ হচ্ছিল, আমার সাথে “নকল এমিলি” দের যোগাযোগের পেছনে মিলিসেন্টের হাত আছে। এগুলো সবই ওর সাজানো পরিকল্পনা। ওর উদ্দেশ্য কি ছিল? হুমম, ও ধরে নিয়েছিল আমি ওর বোনকে খুন করেছি। তাই মিলিসেণ্ট আমাকে ভয় দেখাচ্ছিল যাতে করে আমি ভেঙে পড়ি আর নিজেই স্বীকার করে ফেলি, “হ্যাঁ ! হ্যাঁ, ওকে আমিই খুন করেছি।”
আর আমিও ভাবলাম একটু মজা করা যাক। ওকে বরং ভাবাই, যে আমি ভয় পেয়েছি। আমি চাচ্ছিলাম মিলিসেন্ট ভাবুক, এমিলিকে খুন করে জঙ্গলের ওখানে পুঁতে রেখেছি আমি!
এখন বলতে গেলে আমার অবস্থান বেশ শক্তপোক্ত। এতগুলো মানুষের সামনে ও আমাকে খুনী বলে দোষ চাপিয়েছে। ওর বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করাই যায়, একটা মোটা অঙ্কের জরিমানা পাওয়া যাবে আর কি। অবশ্য আমার মনে হয়না, মিলিসেন্ট সেটা হতে দেবে। নিজের এই বোকামিটা ও কখনোই কাউকে জানাতে চাইবে না। আর তাই সেদিনের সমস্ত সাক্ষিকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য সে বড়সড় ঘুষ দেবে। কিন্ত এভাবে মুখ বন্ধ করা কি আসলেই সম্ভব?
হ্যাঁ, সম্ভব। যদি আমি নিজেই ওকে সমর্থন করে বলি যে এরকম কিছু ঘটেনি, তাহলে তো কথাই নেই !!
আর সেরকম কিছু করতে আমার কোন আপত্তি নেই, যদি ও আমাকে টাকা দেয়। বেশ বড় অঙ্কের টাকা।

সপ্তাহের শেষ দিন আমার টেলিফোন বেজে উঠল।
- এমিলি বলছি। বাড়ি ফিরছি আমি, জান।
- দারুণ খবর।
- আমার কথা কেউ মনে করেছে?
- তা আর বলতে !
- আমি এই চার সপ্তাহ কোথায় ছিলাম, তা তো তুমি ওদের কাউকে বলনি? তাই না অ্যালবার্ট? আর মিলিসেন্ট কে তো বলারই কথা না !
- ওকে বলেছি তুমি সান ফ্র্যান্সিস্কো তে তোমার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গিয়েছ।
- ওহহো। আমি সান ফ্র্যান্সিস্কো তে কাউকে চিনিই না। ও এই কথা বিশ্বাস করল?
- আমার মনে হয় না।
- যাই হোক, আমি ওজন কমাতে হেলথ ফার্মে যাচ্ছি, এটা তো আর ওকে বলতে পারিনা। আমার লজ্জা লাগত। আর আদৌ কাজটা পারব নাকি তাও জানতাম না। আমি কিন্ত পেরেছি অ্যালবার্ট, আমি পেরেছি। পুরো চৌদ্দ কেজি ঝরিয়েছি। এখন আমার শরীর সিনথিয়ার মতই সুন্দর।
- সাবাস এমিলি। দারুণ ব্যপার।
কেন যে এমিলি আমার প্রথম স্ত্রীকে হিংসা করে? আমার হৃদয়ে ওদের দুজনেরই সমান স্থান!

- আর হ্যাঁ, আমার গায়ে কিন্তু এখন আর আগের কোন জামাই লাগবে না। প্রচুর নতুন কাপড়চোপড় কিনতে হবে আমার। আমরা কি পোষাতে পারব, অ্যালবার্ট?

হ্যাঁ... পারব। সাহায্য করার জন্য মিলিসেন্ট তো আছেই।

# মূলঃ জ্যাক রিচি
# রুপান্তরঃ ওয়াসি আহমেদ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.