![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/Iambakerbhai
নববর্ষ-১৪২২,
যে দিন পুর্বের সকল দু:খ কষ্ট ভুলে, আবার নতুন প্রত্যয়ে বাচার জন্য স্বপ্ন দেখিছিলাম আমরা, ঠিক সেদিনই ইতিহাসের আরেক দু:খজনক ঘটনা ঘটে গেল। ৭১এর বীরাঙ্গনাদের কষ্ট আজও মুছে যায়নি, তার সাথে যোগ হলো আরো কিছু কষ্ট। ভেবেছিলাম ঘটনার বিচার হবে, না হলেও কারো বিচার হবে। হয়তো সে আশাও পুর্ণ হবে না।
৭১ টিভির সংবাদে দেখলাম, আমাদের ঢাকা পুলিশ সুপার বলছেন, 'সেদিন কোন বস্ত্র হরণের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ এর প্রমাণ কোন সিসি ফুটেজে পায়নি। কারো কাছে থাকলে তা দিয়ে আমাদের দিয়ে সাহায্য করুন।' এটা ভালো কথা তিনি আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন, আমাদেরও উচিত তাদের জন্য কিছু করা। কিন্তু তার বলার মাঝে যে স্বস্তি দেখলাম তাতে আমার ভয় হলো, কারণ আসলেই যদি নারী বিবস্ত্র করার প্রমাণ না পাওয়া যায় তবে কাউকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হবে না।
ঢাবির প্রশাসনের বলতে দেখলাম, 'ঘটনার কথা আমরাও শুনেছি। যদি বাস্তবেই কোন ঘটনা ঘটে থাকে তবে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।'
বাহ, এই না বিস্বাস। যদি ঘটে থাকে তবে...........। তবে আসেলেই কী কিছু হবে?
আপনাদের কী মনে আছে, ভারতে এক মেডিকেল ছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করা হয়েছিল। আমি বলব সে মেয়েটির ভাগ্য আমাদের মেয়েদের চেয়ে ভাল। কারণ সেদিন তাকে সাহায্যের জন্য একমাত্র পুরুষটিকে ধর্ষণকারীরা বেধে রেখেছিল, পাশে কেউ ছিল না। মেয়েটি ভুল করে খালি বাসে উঠেছিল, কিন্তু আমাদের বোনেরা!
তারা নববর্ষকে উৎযাপন করতে, শাড়ী পড়ে, সুন্দর মনে গিয়েছিল। ভেবেছিল হাজার বাঙ্গালী একসাথে নববর্ষের আনন্দ ভাগ করে নিবে। কিন্তু এরপর সেই মেয়েটি আর কোনদিন নববর্ষ পালনে কোথাও বের হবে না। শুধু সেই মেয়েটি নয়, কতো মেয়ে যে এই দিনে নিজেকে ঘরে আটকে নিবে তা এখনো অজানা।
যে বাঙ্গালী ও যে সভ্যতার জন্য এতো কিছু, ভাবতে পারেন তাদের সামনেই ঘটে গেল এমন ঘটনা। আসুন মেনেই নেই প্রতিটি দলে ৫০ জন করে ছিল, কিন্তু টিএসসিতে সেদিন পা ফেলার জায়গা ছিল না। সে হিসাবে তারা ছাড়াও আরো লাখো মানুষ ছিল, তারা কী কারণে এগিয়ে আসলনা তা ভেবে পেলাম না। চোখের সামনে একটি মেয়ের শরীরে যে যেখানে হাত দিয়ে মজা নিচ্ছে আর অন্যরা চেয়ে দেখল!
মানবতা কী এর চেয়ে আরও নিচে যেতে পারে?
কিছু মানুষ সর্বদা সবকিছুতেই মৌলবাদ খুজে ফিরে, কিন্তু আমি বলব, দেশের মৌলবাদীরা আজ পর্যন্ত যা করতে পারেনি এবার তাই ঘটে গেল। আমাদের নারীরা হয়তো নববর্ষ পালনে আড় ভিড় জমাবে না।
একবার ভেবে দেখেছেন, কিছু নারী যাদের সবাই ঘিরে ধরে শকুনের মতো ঘাবলে খাচ্ছে। তার শরীরে দাগ পড়লে হয়তো তা বৈশাখ পরুবার আগেই চলে যাবে, কিন্তু মনের মাঝের যে অংশটুকু খাবলে ক্ষতবিক্ষত করেছে হায়নারা তার কি হবে। এই মেয়েটি মা হবে, নানী বা দাদী হবে তবুও কি সেই ক্ষত মুছে যাবে?
দেখলাম একটি মেয়েকে রিক্সা থেকে নামিয়ে নেওয়া হলো, পাশে তার অবিভাবক, ভাবতে পারেন, সেই বাবার কথা? এখবার শুধু তার জায়গায় নিজেকে বসিয়ে ঘটনা মনে করবার চেষ্ট করুনতো........। আর কি কোন পিতা তার মেয়েকে বাঙ্গালী দেখাতে কোন উৎসবে নিয়ে যাবে?
জনাব, পুলিশ সুপার
আমরাও চাই যেন সেদিন কোন নারীর বস্ত্র হরণের ঘটনার সত্যতা না মিলে। কারণ যে নারীর সসাথে ঘটেছে, তিনি যে কি অবস্থার মাঝে আছেন তা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। তবে ফুটেজে যাদের শকুন বা হায়নার মতো নারীদের উপর নির্যাতন চালাতে দেখলাম, তাদের বিচার হবেতো?
দয়া করে বলবেন না তারা ঢাকার বাইরের, ঢাবির নয়। হতে পারে সবাই ঢাবির নয়, তবে ঢাবির ছাত্রছাড়া এমন ঘটনা কেউ ঘটানোর সাহস রাখে না। বিচারের জন্য এতো মানুষের কথা না শুনে একবার আপনার মেয়েকে সেদিনের জায়গার কল্পনা করুন, দেখবেন আসমাীরা ৪৮ঘন্টার আগেই হাজতে।