নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিষাদের অবসাদে ক্লান্ত তবু চেতনায় নির্ভর

কলা পাতা

আমি অভিমানি ভীষণ অভিমানিঅজপাড়া গাঁয়ের ছায়া ঢাকা পাখি ঢাকা সবুজ নীড়ে কেঁদে ওঠেছিলাম একদিন । হেসে ওঠেছিল আপনজন । পৃথিবীর পথে চেয়ে স্বপ্নের ঘোরে কেটে গেছে আজ কত বেলা । কত সকাল সাঝে ডাক শুনেছি হলুদ পাখির মিহি সুর । কোকিলের মধুকণ্ঠি তান । প্রকৃতির মায়ায় মদিরতায় আচ্ছন্ন ছিলাম । জড়িয়েছিলাম সাঝ সকালের উম উম রৌদ্দুরে । কত যে সুখের তড়ায় ভেগেছি আলেয়ায় কত দূর । আজ কত ব্যস্ততায় ছুটছি পিছু পিছু পৃথিবীর । তারপরও আমি বুঝি না খুঁজি না কোনো কিছু । শুধু চেয়ে থাকি নির্বাক নির্নিমেষ । কত কিছু ঘটে কত কী যে পরিবর্তনের ঘুর্ণায়নে আবদ্ধ আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি । জীবনের চাঁকা ঘুরছে সময়ের স্রোত বয়ে চলছে নিরবধি । কখনো সুখ কখনো হ্বদয়ে চৈত্রের খরা কখনো শ্রাবণঢল । কখনো একা একা পথচলা কখনো নিঝুম বয়ে চলা । সব আজ কেমন ঘোলাটে মনে হয় । শুধু হ্বদয়ের মাধুরি মিশে থাকে হারানো অতিতে । শৈশব স্মৃতি তড়া করে ফিরে । এখন আমি কবিতার খাতা খুলে উদাস চেয়ে থাকি । জানলায় আটকে থাকে একখণ্ড আকাশ । চোখে প্রেম । ভালোবাসার ঘোরলাগা দুঃস্বপ্ন । পুরানো দিন ভাসে চোখের কোণে । মর্ততায় পিছুহটা কত ক্ষণ । ছন্নছাড়া ছায়া ভাসা মন ।নিঝুম নিস্তব্দ রাতের নিশ্চুপ প্রহরে ।বড় একা মনে হয় নিজেকে । কখনো খুব অচেনা মনে হয় । অথচ তখন আকাশ তাকিয়ে থাকে মায়াভরা চোখে । তারারা হাসে মিটিমিটি । ঝিঝিরা মিতালী করে আনমনে । আমার হ্নদয়ের কোণে ভেসে থাকেজোছনার কোমলতা,মেঘের শীতলতাফুলের শৌরভগাঁয়ের মেঠোপথপৌষের সোনালি বরণ ধাননিস্পাপ ছোটাছুটি দুরন্ত শৌশবজেগে থাকে ।জেগে থাকে স্নীগ্ধ প্রকৃতিবেলীফুলের মিহি ঘ্রাণ,তুলতুলে পাপড়ী আর টলোমলো বর্ষা ।ক্যালেন্ডার থেকে ঝরে যায়দিন,সাপ্তাহ,মাস,তারপর বছর ।জানলায় আটকে থাকে একখণ্ড আকাশহ্নদয়ে ঝুলে থাকে ঝিমধরা কিছু স্মৃতি ।আমি কাউকে জড়াতে চাই হ্বদয়ে । পারি না । কাউকে চাই হ্বদয়ের কাছাকাছি রাখতে । পারি না । তাই অভিমান করি মনের সাথে । ভালোবাসতে চাই মানুষ কে রঙিন করে । উড়তে চাই নীল ফানুসে ভর করে । স্বপ্ন দেখতে চাই বড় করে । হ্বদয়ের কথা লিখতে চাই কবিতায় । তাইতো আমি কবি । আমি একাকি নিঃস্বঙ্গ । ছন্নছাড়া ।খুদিত অরন্যক । সবকিছু ছাপিয়ে ওঠবো আমি জেগে ।পারবো আমি জানিতাইতো আমি অভিমানি ।

কলা পাতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের দৃষ্টিতে বন্ধুর মর্যাদা; ইঁদুর ও চড়ুইয়ের বন্ধুত্ব

০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৮




বন্ধুরা, নিশ্চয়ই জানো যে, ইসলামের দৃষ্টিতে বন্ধুর মর্যাদা অনেক উপরে। এজন্যই মহান আল্লাহ, নবী করিম (সা.) এবং তাঁর বংশের মহান ইমামগণ বন্ধু নির্বাচন করার ব্যাপারে মূল্যবান কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, "মুমিনগণ যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোনো কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এমনটি করবে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখবেন না।"

আর হাদিসে বলা হয়েছে, "মানুষ তার বন্ধুর আদর্শে গড়ে ওঠে। সুতরাং বন্ধু নির্বাচনের সময় খেয়াল করা উচিত সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে।" রাসূল (সা.) বলেছেন, "দুনিয়াতে যার সঙ্গে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রয়েছে, পরকালে তার সঙ্গেই হাশর হবে। এজন্য বন্ধু নির্বাচনের আগে তাকে পরীক্ষা করে নেয়া জরুরি।" অন্যদিকে আমিরুল মুমেনিন হযরত আলী (আ.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি চিন্তাভাবনা করে যথাযথ বিচার বিশ্লেষণ করে বন্ধু নির্বাচন করবে, তাদের বন্ধুত্ব বজায় থাকবে এবং তাদের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর হবে।"

বন্ধুরা, বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো নিয়ে এতক্ষণ আলোচনা করলাম তা তোমাদের জীবনে কাজে লাগবে বলে আমাদের বিশ্বাস। তো আজকের আসরে আমরা ইঁদুর ও চড়ুই পাখির বন্ধুত্ব নিয়ে একটি গল্প শোনাব। ভারতের রাজস্থানে প্রচলিত গল্পটির লেখক অঞ্জলি ভার্মা। আর ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন মিলন আশরাফ। এরপর থাকবে চড়ুই পাখি সম্পর্কে কিছু জানা-অজানা তথ্য এবং কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি কবিতা। আর সবশেষে থাকবে একটি গান। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানটিও তৈরি করেছেন আশরাফুর রহমান। তাহলে প্রথমেই গল্পটি শোনা যাক।


অনেক দিন আগে এক ইঁদুর ও চড়ুইয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। চড়ুইটি ছিল ছোট্ট ধূসর রঙের। একদিন সে পাখায় আঘাত পেলো। ভাঙা পাখায় খুব বেশিদূর উড়ে যেতে পারতো না চড়ুইটি।

ইঁদুরটির গায়ের রঙও ছিল ধূসর। দেহের আকার ছিল খুব ছোট। তবে সে ছিল বড় হৃদয়ের অধিকারি। চড়ুইটির কাছে ইঁদুরটি আসতে কোনো ভয় পেত না। কারণ পাখিটি কখনো তাকে ঠোকর কিংবা বিরক্ত করতো না। তাছাড়া পাখিটির এমন আহত অবস্থা দেখে হৃদয় কেঁদে উঠল ইঁদুটির। সে সিদ্ধান্ত নিল চড়ুইটিকে সাহায্য করবে।

এমন একদিন এল অবশেষে। সেদিন চড়ুইটি মাটিতে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা ঠুকরিয়ে খাচ্ছিল। এমন সময় ইঁদুরটি তার কাছে গিয়ে বলল, ‘ওহে ছোট্ট গানের পাখি, তুমি আহত হয়েছো জেনে আমার দুঃখ হচ্ছে। আমি কি তোমাকে সাহায্য করতে পারি?’ চড়ুইটি মাথা তুলে ইঁদুরটির দিকে তাকাল। এরকম এক চুলভর্তি লম্বা লেজওয়ালা প্রাণীকে দেখে কিছুটা ভড়কে গেল সে। এই ধরনের প্রাণীকে সে আগে কখনো দেখেনি।

খ) কিন্তু ইঁদুরটির চোখে দয়া দেখে তার হৃদয় গলে গেল। ইঁদুরটি তার লম্বা চুলভর্তি লেজ দিয়ে ভাঙা পাখাগুলো ঢেকে ওম দিতে লাগল। ক্ষতস্থানে ওম পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠল চড়ুইটি। খুব শিগগির পাখিটি উড়তে শুরু করল।

চড়ুইটি মিষ্টি করে ইঁদুরটিকে ধন্যবাদ দিয়ে বেড়াতে বের হলো। বহুদূর গিয়েও সে কখনো ইঁদুরটিকে ভুলল না। যেখানে যেখানে গেল, সব জায়গা থেকে কিছু কিছু খাবার নিল ইঁদুরটির জন্য। কৃষকের পাকা সরিষাক্ষেত দেখে সেখানে বসে খেতে লাগল সে। তার বন্ধুর জন্যও কিছু শস্য সংগ্রহ করছিল।

বন্ধু ইঁদুরটি কৃষকের সরিষাক্ষেতে যাবার বিষয়ে আগেই সাবধান করেছিল। সে বলেছিল, একবার এই কৃষকের ঘরে ঢুকে বেশ মুশকিলে পড়েছিল সে। এমনকি প্রায় মরতে বসেছিল। কিন্তু পাখিটি এই মজাদার খাবারগুলো ইঁদুরের জন্য নিতে আগ্রহী। সেই মুহূর্তে ইঁদুরের সতর্কবার্তা সম্পর্কে কোনো চিন্তা-ভাবনা মাথায় এলো না তার।

এরপর একদিন কৃষক জাল পেতে রাখল পাখিটিকে ধরার জন্য। এই ফাঁদ বিষয়ে কোনো ধারণা ছিল না চড়ুইটির। সে শস্য সংগ্রহ করার জন্য জমিতে নেমে পড়ল। নেমেই তার পা জালে আটকে গেল। কৃষক তাকে দেখে ফেলল এবং পা দুটি বাঁধল গাছের সঙ্গে। আর কৃষক পাশের সরিষাক্ষেতের নিকট বসে রইল।

বিকেলে ঘরে ফেরার জন্য ছটফট করতে শুরু করল চড়ুইটি। বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য চিন্তায় পড়ে গেল। কৃষকের সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করেও কোনো উপকার পেল না। কৃষক তাড়াতাড়ি তার কথা বলা বন্ধ করে দিলো। চড়ুইটি হতাশ হয়ে পাশ দিয়ে যাওয়া এক রাখালকে ডাকল। রাখাল গরুর পালসহ তাকে অতিক্রম করছিল তখন। চড়ুই অনুরোধের সুরে বলল,

ও গরুর পাল চরানো রাখাল

দেখো নিয়তির কী বেহাল,

বাসায় আমার পাঁচটি নিষ্পাপ বাচ্চা

বাতাসে পড়ে ভাঙবে হাড় মজ্জা

আগুনে পুড়ে হবে ছারখার

বৃষ্টি হলে ভিজে একাকার

কৃষকের মন সেতো বড় শক্ত

সাহায্য করো তুমি হতে মুক্ত।’

পাখিটির আকুতি দেখে তার প্রতি দয়া হল রাখালের। সে কৃষককে তাকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানালো। কৃষক তাকে শোনালো-

'সকাল হতে রাত দিন

শস্য করে চুরি সারাদিন

নিষেধ শোনে না আমার কোনো

ক্ষেতটাকে ভাবে ঘরবাড়ি যেনো

শুনছি না তোমার কোনো কথা আর

মে পর্যন্ত করেছি ব্যবস্থা থাকবার।’

এমনটি শোনার পর রাখালের আর কিছুই বলার থাকে না। সুতরাং সে তার পশুর পাল নিয়ে সামনের দিকে চলে যায়। সে একটি ছাগপালকে অনুসরণ করছিল। বাঁশি বাজিয়ে গাইছিল গান। ছাগলের মাথার উপর লাঠি দোলাচ্ছিল।

চড়ুইটি ছাগপালককে দেখে আবারও শুরু করল-

ও ছাগপাল চরানো রাখাল

দেখো নিয়তির কী বেহাল,

বাসায় আমার পাঁচটি নিষ্পাপ বাচ্চা

বাতাসে পড়ে ভাঙবে হাড় মজ্জা

আগুনে পুড়ে হবে ছারখার

বৃষ্টি হলে ভিজে একাকার

কৃষকের মন সেতো বড় শক্ত

সাহায্য করো তুমি হতে মুক্ত।’

ছাগপালক কৃষকের কাছে গিয়ে পাখিটিকে মুক্তির কথা বলল। কৃষক তাকে আগের মতো একই উত্তর দিয়ে ফেরত পাঠাল। ইতোমধ্যে ইঁদুরটি তার বন্ধুকে মিস করতে আরম্ভ করল। এরপর তাকে খুঁজতে বের হলো। অনেক খোঁজাখুঁজির পর দূর থেকে দেখতে পেল চড়ুইটিকে। তখন সে গাছে ঝোলানো অবস্থায় সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছিল।

বন্ধুকে বাঁচানোর জন্য সেই মুহূর্তে সে একটি পরিকল্পনা করল। সে একটি গর্তের মধ্যে ঢুকে একটি হীরার হার নিয়ে বের হয়ে আসলো। হারটি কৃষককে দেখিয়ে বলল, ‘এটি আপনাকে দেবো, যদি চড়ুইটিকে মুক্ত করে দেন।’

হীরার হার দেখে কৃষকের চোখ লোভে চকচক করে উঠল। ভাবল, হারটি নিশ্চিত ঝোলানো পাখিটির চেয়ে মূল্যবান। সে গাছের কাছে গিয়ে দড়ির গিঁট খুলে পাখিটিকে মুক্ত করে দিল। মুক্তি পেয়ে পাখিটি যতদ্রুত সম্ভব উড়ে গেল। ইঁদুরটিও হার নিয়ে গর্তে ঢুকল। গরীব কৃষক ছোট্ট এই প্রাণীর চালাকি দেখে অবাক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে রইল!


বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আমরা আদুরে পাখি চড়ুই সম্পর্কে কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা একটি কবিতা শুনব। আবৃত্তি করছে ঢাকার গ্রিনলিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের স্ট্যান্ডার্ড ফোরের ছাত্র কাজী রাইয়্যান বিন হাসান (জারীফ)।


মস্ত বড় দালান-বাড়ির উই -লাগা ওই কড়ির ফাঁকে

ছোট্ট একটি চড়াই-ছানা কেঁদে কেঁদে ডাকছে মা'কে।

'চুঁ চা' রবে আকুল কাঁদন যাচ্ছিল নে' বসন-বায়ে,

মায়ের পরান ভাবলে-বুঝি দুষ্টু ছেলে নিচ্ছে ছা-য়ে ।

অমনি কাছের মাঠটি হতে ছুটল মাতা ফড়িং মুখে,

স্নেহের আকুল আশিস -জোয়ার উথ্লে ওঠে মা'র সে বুকে ।

আধ- ফুরফুরে ছাটি নীড়ে দেখছে মা তার আসছে উড়ে,

ভাবলে আমি যাইনা ছুটে,বসি গে' মার বক্ষ জুড়ে।

হৃদয়-আবেগ রুধতে নেরে উড়তে গেল অবোধ পাখি,

ঝুপ করে সে গেল পড়ে -ঝরল মায়ের করুণ আঁখি !

হায়রে মায়ের স্নেহের হিয়া বিষম ব্যথায় উঠল কেঁপে,

রাখলে নাকো প্রাণের মায়া,বসল ডানায় ছাটি ঝেঁপে ।

ধরতে ছোটে ছানাটিরে ক্লাসের যত দুষ্টু ছেলে;

ছুটছে পাখি প্রাণের ভয়ে ছোট্ট দু'টি ডানা মেলে ।

বুঝতে নারি কি সে ভাষায় জানায় মা তার হিয়ার বেদন,

বুঝে না কেউ ক্লাসের ছেলে- মায়ের সে যে বুক ভরা ধন ।

পুরছে কেহ ছাতার ভেতর, পকেটে কেউ পুরছে হেসে

একটি ছেলে দেখছে,আঁসু চোখ দু'টি তার যাচ্ছে ভেসে ।

মা মরেছে বহু দিন তার, ভুলে গেছে মায়ের সোহাগ,

তবু গো তা মরম ছিঁড়ে উঠল বেজে করুণ বেহাগ ।

মই এনে সে ছানাটিরে দিল তাহার বাসায় তুলে,

ছানার দু'টি সজল আঁখি করলে আশিস পরান খুলে ।

অবাক নয়ন মা'টি তাহার রইল চেয়ে পাঁচুর পানে,

হৃদয়-ভরা কৃতজ্ঞতা দিল দেখা আঁখির কোণে ।

পাখির মায়ের নীরব আশিস যে ধারাটি দিল ঢেলে,

দিতে কি তার পারে কণা বিশ্বমাতার বিশ্ব মিলে ।


চড়ুই সম্পর্কে জানা-অজানা তথ্য

জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে বলে চড়ুইয়ের ইংরেজি নাম 'হাউস স্প্যারো' অর্থাৎ 'গৃহস্থালির চড়ুই'। কোনো কোনো অঞ্চলে এই পাখিটি 'চড়াই' নামেও পরিচিত। পৃথিবীতে মোট ৪৮ প্রজাতির চড়ুই দেখতে পাওয়া যায়। এদের আদি নিবাস ছিল মূলত ইউরেশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ। তবে বর্তমানে ইউরোপ থেকে গিয়ে জনবসতি স্থাপনের মধ্য দিয়ে এরা উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। খড়কুটো, শুকনো ঘাস পাতা দিয়ে এরা কড়িকাঠে ও কার্নিশে বাসা বাঁধে। সমস্ত দিন এরা লাফিয়ে বেড়িয়ে মাটি থেকে পোকামাকড় শস্য খুঁটে খায়।

চড়ুই ছোট আকারের পাখি। দৈর্ঘ্য ১৫ সেন্টিমিটার। ওজন মাত্র ২৪ গ্রাম। চড়ুইয়ের স্ত্রী-পুরুষে ভিন্নতা রয়েছে। পুরুষ চড়ুই স্ত্রী তুলনায় দেখতে সুন্দর। এদের মাথার চাঁদি ধূসর, ঘাড় ও চোখে তামাটে ডোরা। পিঠ জলপাই-বাদামি। বুক-পেট ও গাল সাদা। গলা কালো। মোটা ঠোঁট দুটো কালচে। অন্যদিকে স্ত্রী চড়ুই হালকা হলদে-বাদামি। বুক ও পেট বাদামি-ধূসর। ঠোঁট গোলাপি। উভয়েরই চোখ বাদামি এবং পা ও পায়ের পাতা গোলাপি-বাদামি। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি দেখতে মায়ের মতো, তবে অপ্রাপ্ত পুরুষ বাচ্চাগুলোর থুতনি কালো ও দেহ উজ্জ্বল বাদামি।

চড়ুই বহুল দৃশ্যমান আবাসিক পাখি। শহর, বন্দর, গ্রাম তথা লোকালয়ে এরা বাস করে। দালান ঘরে, কৃষি জমিতে, ফলের বাগানে, ছোট ঝোপঝাড়ে এরা বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় বা ছোট দলে দেখা যায়। মাটিতে হেঁটে হেঁটে শস্য, ঘাসবিচি, ফুলের কুঁড়ি, ফল, পোকামাকড়, ভাত, খাবারের উচ্ছিষ্টাংশ ইত্যাদি খায়। দলবেঁধে ধূল্লিন করতে বেশ পছন্দ করে।

মার্চ থেকে জুন প্রজননকাল। এসময় খড়, শুকনো ঘাস-লতা, পাটের আঁশ ইত্যাদি দিয়ে মানুষের ঘরবাড়ির ফোকর, ভেন্টিলেটর বা ঘরের চালের নিচে বাসা বানায়। ডিম পাড়ে ৩ থেকে ৭টি। ডিমের রং ফিকে সবুজাভ সাদা, তাতে বাদামি ছিট থাকে। ডিম ফোটে ১৪ দিনে। বাচ্চারা ২০ থেকে ২১ দিনে উড়তে শেখে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.