নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আগুন পাখী

আমি ভাই শান্তি মানুষ, শান্তি নিয়ে পড়ালেখা করি। ঝামেলায় যাইতে চাইনা কিন্ত ঝামেলা আমার পিছু ছাড়েনা।

আগুন পাখী১৩

আমি ভাই শান্তি মানুষ, শান্তি নিয়ে পড়ালেখা করি। ঝামেলায় যাইতে চাইনা কিন্ত ঝামেলা আমার পিছু ছাড়েনা।

আগুন পাখী১৩ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হরতাল ও ভয়ঙ্কর কিছু কল্পনা

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৯

হরতাল কিংবা অবরোধ নিয়ে আমার তেমন কোন মাথাব্যাথা নেই। কারণ আমার খাওয়া, ঘুরাঘুরি, আড্ডা, পরীক্ষা ও একখানা খণ্ডকালীন চাকরি সবই স্বাভাবিক নিয়মে চলছে। কোনো কিছুতেই কোনো ব্যতয় ঘটছে না। বরঞ্চ হরতালকে অন্যান্য দিনের চেয়ে সুবিধাজনক মনে হচ্ছে। কারণ রাস্তায় জ্যাম নেই, জনসমাগম কম। সুতরাং সব মিলিয়ে হরতাল জিন্দাবাদ।



কিন্তু নিজের সব চিন্তা আজ মুহুর্তের মধ্যে অন্য দিকে মোড় নিল। অফিসে আসার জন্য বাসে উঠলাম। হঠাৎ মস্তকের ভিতর ভয়ঙ্কর এক খেলা শুরু হয়ে গেল। প্রথমে নিজেকে ঘিরে, তারপর বাসের সব যাত্রীদের ঘিরে। আমার মুখ জ্বালাপোড়া করতে লাগল, আগুনে পুড়ে ছাই হওয়ার মতো। তারপর পুরো শরীর। ইচ্ছে করছে বরফে ঢেকে রাখি নিজেকে। আস্তে আস্তে জ্বালাটা কমলো। কিন্তু শুরু হলো নতুন এক খেলা।



আমার সামনেই বসে ছিল একটা মেয়ে। তার চেহারা অতি মায়াবী, গায়ের রং অনেকটা হলুদ। তার হাতে কিছু খেলনা, সম্ভবত বাচ্চাশিশুর জন্য কেনা। আমার মাথায় হাসির শব্দ হতে লাগল। মায়ের ঝলসানো দেহকে নির্মম এক খেলনা ভেবে খিল খিল করে হাসছে অবুঝ শিশু।



স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠান করে বাসায় ফিরছিল দুই বালক। তাদের শার্টে সাইনপেনে লেখা অদ্ভূত সব মন্তব্য। একে অপরের দিকে তাকিয়ে তারা হাসিঠাট্টায় মশগুল। আমার নষ্ট-মাথা তাদের নিয়ে বিশ্রী কিছু ভাবছে। দুইটা কঙ্কাল জড়াজড়ি করে রাস্তায় শুয়ে আছে। তাদের শার্টের এককোনা এখনও অক্ষত, ওখানে লেখা বেঁচে থাকলে একসাথে বাঁচব, মরলে একসাথে মরব। দুই বন্ধু একসাথে কঙ্কাল হয়ে গেছে। তাদের দেখছে আশপাশের উৎসুক মানুষজন।



আবার স্পষ্ট কিছু অদ্ভূতুড়ে কল্পনা জাগ্রত হয়। দশ বারোটা কুকুর একসাথে তেড়ে আসছে। মানুষের মতো তাদেরও হাত আছে, পা আছে, মাথা আছে। সবার কাছে একটা করে লোহার পাইপ। ড্রাইভারকে পিটিয়ে প্রথমে রক্তাক্ত করা হলো। তারপর যাকেই হাতের নাগালে পেল, তাকেই বেধড়ক মার দিল। অবশ্য আমাকে আমি রক্ষা করেছি, হাতের নিচ দিয়ে কিভাবে যেন উদ্ধার পেয়ে গেলাম। কিন্তু উদ্ধার পায়নি পাশে বসা আমার প্রিয় বন্ধু। আমি নিরাপদ দূরত্ব থেকে রক্তপাতের দৃশ্য দেখছি, আমার বন্ধু আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। হয়তো ভাবছে ‘বন্ধু’ শব্দটিকে আমি দারুণভাবে কলঙ্কিত করেছি।



এরমধ্যে কয়েকবার সুপারভাইজার ভাড়া চাইতে আসলো, আমি খেয়াল করিনি। যে গন্তব্যে আমার যাওয়ার কথা ছিল, তা অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। তাড়াহুড়ো করে বাস থেকে নামলাম। কল্পনা থেকে এবার বাস্তবে নেমে আসলাম। ভাবছি, সত্যই যদি বাসে কেউ আগুন ধরিয়ে দিত? কিংবা পাইপ নিয়ে ভাংচুর চালাত? আসলেই কি আমি রক্ষা পেতাম? নাকি পুড়ে ছাই হয়ে যেত আমার আদরের শরীর?



অফিসের কাজ শেষ। আমি যেখানে থাকি, আবার সেখানে ফেরত যেতে হবে। কিন্তু আমি যেন অবশ হয়ে আছি, কিছুতেই বাসে উঠতে পারছি না। একটার পর একটা বাস চলে যাচ্ছে। আমার লোমগুলো কাঁটার মতো দাঁড়িয়ে আছে। মধ্যরাতে অলৌকিক কোন ঘটনা দেখলে যেমনটা হয়। একটার পর একটা চিন্তা আবার আমাকে আঘাত করতে লাগল। তবে কি আমি এই একই স্থানে থেকে যাব?



আমার এতসব কল্পনা কি অবাস্তব কিছু? আমি মনে করি না। এ ভাবনাগুলোর জন্য আমাদের চারপাশে খুব স্বাভাবিকভাবে ঘটে যাওয়া অশ্লীল ঘটনাগুলো দায়ী। রাস্তায় যারা যাতায়াত করে আমি নিশ্চিত নিজের মৃত চেহারাটা তাদের চোখের সামনে বার বার ভেসে আসে। নিজেকে মৃত কল্পনা করেও তাদের পথ চলতে হয়, এর চেয়ে নির্মম আর কি হতে পারে? আমরা এ থেকে নিরাময় চাই। সুস্থ ভাবনার মাঝে নিজেকে বিস্তৃত করতে চাই। সুন্দর একটা দেশ চাই।

........................মেহেদী...............................

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৭

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:
গায়ে কাটা দিয়ে উঠে...

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

আগুন পাখী১৩ বলেছেন: আরো কতকিছু।

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩২

সুমন কর বলেছেন: নিজেকে মৃত কল্পনা করেও তাদের পথ চলতে হয়, এর চেয়ে নির্মম আর কি হতে পারে? আমরা এ থেকে নিরাময় চাই।

ভাল বলেছেন।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৬

আগুন পাখী১৩ বলেছেন: সেটাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.