নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে লেখার মত এমন স্পেশাল কিছু এখনও অর্জন করতে পারি নি। ভালো থাকুন সবাই,আর ভালো রাখুন চারপাশের সবাইকে।

আদিল ইবনে সোলায়মান

আদিল ইবনে সোলায়মান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কতটা শক্তিশালী চীনের সামরিকবাহিনী?

২৮ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৪



বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশও। চীন তার দ্রুত বর্ধমান অর্থনৈতিক শক্তিকে সামরিক পেশিশক্তিতে পরিণত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। পিপলস লিবারেশন আর্মি নামে পরিচিত চীনের সশস্ত্র বাহিনী এশিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্য রাতারাতি ওলট-পালট করে দিতে পারে। সাড়ে ২২ লাখ সদস্যের এই মহাশক্তিটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি বলে মনে করেন কিছু সামরিক বিশ্লেষক।

তবে এই পরাশক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ পদ্ধতি সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। এ জন্য চীনের প্রতিবেশী অন্য সব দেশ ও আঞ্চলিক সামরিক শক্তিসহ যুক্তরাষ্ট্রও হতাশ। চীনের সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরের খবর জানার ক্ষেত্রে সবার সব ধরনের চেষ্টা অনেকটা হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তবে চীনের সামরিক পত্রপত্রিকাগুলো দেশটির যেসব বড় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা ছাপে তা থেকে চীনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মোটামুটি ভালোভাবেই আঁচ করা যায়। চীনের মিলিটারির প্রধান উদ্দেশ্য কমিউনিস্ট পার্টির কর্তৃত্ব বজায় রাখা ও সিনিয়র জেনারেলদের নিরাপত্তার দিকটা দেখা।

পিএলএ’র সংগঠন


রেড আর্মি নামে ১৯২৭ সালের ১ আগস্ট সমাজতান্ত্রিক চীনের সশস্ত্রবাহিনী প্রতিষ্ঠা করে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না। ১৯৩৭ সালে এর নাম পরিবর্তন করে করা হয় The Chinese People’s Liberation Army (PLA). পাঁচটি মিলিটারি সংস্থার সমন্বয়ে পিএলএ গঠিত। সংস্থাগুলো হচ্ছে PLA Ground Force, PLA Navvy, PLA Air Force, Second Artillery Corps
PLA Reserve Force। বর্তমানে এই বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা ৭০ লাখের ওপরে। সংখ্যার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড়। প্রতি ১ হাজার ৭১০ জন নাগরিকের বিপরীতে সৈন্যসংখ্যা একজন। পিএলএ’র নিয়ন্ত্রণ সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের হাতে। তবে এই কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না। পিএলএ-কে তার কাজের রিপোর্ট চীনের স্টেট কাউন্সিল ছাড়াও আরো দু’টি সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনকে দিতে হয়। এর একটি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অন্যটি কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত। অবশ্য দু’টি কমিশনই প্রায় অভিন্ন সদস্যদের দিয়ে গঠন করা হয়।

প্রতি পাঁচ বছর পর কয়েক মাসের জন্য যখন পার্টির কংগ্রেস বা কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় তখন ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের আগ পর্যন্ত সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের সদস্যদের সামান্য পরিবর্তন হয়। ১৯৮২ সালের পঞ্চম ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে পিএলএ-কে পরিচালনার জন্য স্টেট সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ সময় এই বাহিনীকে পরিচালনার জন্য পরিচালনা বিধি করা হয়।

পিএলএ-তে স্থল, বিমান ও নৌবাহিনী তিনটিই রয়েছে। স্থলবাহিনী পরিচালনার জন্য পুরো দেশকে সাতটি মিলিটারি রিজিওনে ভাগ করা হয়েছে। এসব রিজিওনের নিয়মিত ফোর্সকে করা হয়েছে ১৮টি গ্রুপে বিভক্ত। প্রতিটি গ্রুপে ৩০ হাজার থেকে ৬৫ হাজার সৈন্য রয়েছে। সশস্ত্রবাহিনীর ৭০ ভাগ সৈন্য রয়েছে স্থলবাহিনীতে। দেশের অভ্যন্তরীণ কাজে অংশগ্রহণ চীনের স্থলবাহিনীর মৌলিক দায়িত্ব। ‘প্যারামিলিটারি পিপলস আর্মড পুলিশ’ দেশের আভ্যন্তরীণ শান্তিশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করে।

যুদ্ধে অংশগ্রহণ

আয়তনের দিক দিয়ে চীন এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর বৃহৎ। এর আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ১৪ ভাগের এক ভাগ। অন্য দেশের সাথে এর সীমানাও অনেক বড়। মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, ভিয়েতনাম, লাওস, মিয়ানমার, ভারত, ভুটান, নেপাল, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরঘিজিস্তান ও কাজাখস্তান এই ১৪টি দেশের সাথে চীনের সীমান্ত থাকায় চীনের সেনাদের প্রায়ই যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয়েছে। এসব যুদ্ধে সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতা ছাড়াও আছে অনেক অপরাধমূলক কাজে সেনাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ।

উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের মধ্যে ১৯২৭ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত দেশটি কুয়োমিনটাংয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এই যুদ্ধ চায়নিজ সিভিল ওয়ার নামে পরিচিত। ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের বিরুদ্ধে চীন ন্যাশনাল রেভ্যলুশনারি আর্মির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়। ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত অংশ নেয় কোরিয়ান যুদ্ধে। তবে এই যুদ্ধে চায়নিজ পিপলস ভলান্টিয়ার্স ব্যানার ব্যবহার করা হয়। ১৯৫০ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত অংশ নেয় তিব্বতের স্বাধীনতা যুদ্ধে। ১৯৫৪ সাল থেকে ১৯৫৫ সালে তাইওয়ান প্রণালীর সঙ্কটকালে দেশটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। একই কারণে ১৯৫৮ সালেও দেশটি যুদ্ধে জড়ায়। ১৯৬২ সালের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চৈনিক-ভারতীয় যুদ্ধ করে চীন। ১৯৬৭ সালে ভারতের সাথে সীমানা নিয়ে খন্ড যুদ্ধ হয় দেশটির। সীমান্ত দ্বন্দ্বে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে যুদ্ধ হয় ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত। ১৯৭৪ সালে ব্যাটেল অব হোয়াংয়ে অংশ নেয় চীন। চীন-ভিয়েতনাম যুদ্ধ হয় ১৯৭৯ সালে। ভিয়েতনামের সাথে সীমান্ত বিরোধের কারণে যুদ্ধ হয় ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত। ১৯৮৯ সালে সংঘটিত হয় তিয়েনানমেন স্কয়ার প্রোটেস্ট। তাইওয়ানের সাথে সীমান্ত বিরোধের কারণে তৃতীয়বারের মতো ১৯৯৫ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যুদ্ধ করে চীন।

এ ছাড়াও দেশটি ১৯৯১ সালে গালফ ওয়ার, ২০০১ সালে আফগান যুদ্ধ, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধে অংশ নেয়। তবে এসব যুদ্ধে দেশটি যৌথ বাহিনীকে সহায়তা করেছে বা করছে মাত্র। নেতৃত্ব দেয়নি।

চীনের সংবিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও কয়েকজন সদস্য নিয়ে সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন গঠন করা হয়। সাধারণত কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয় দেশটির প্রেসিডেন্টকে। পিএলএ’র সার্বিক দায় কমিশনের চেয়ারম্যানের। বর্তমান চেয়ারম্যান হচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি শি জিংপিং। একজন এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যানসহ রয়েছেন দু’জন ভাইস চেয়ারম্যান। সদস্য রয়েছেন আটজন। এরা হচ্ছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, চিফ অব জেনারেল স্টাফ অব দ্য পিএলএ, ডিরেক্টর অব দ্য জেনারেল পলিটিক্যাল ডিপার্টমেন্ট, ডিরেক্টর অব দ্য জেনারেল লজিস্টিকস ডিপার্টমেন্ট, ডিরেক্টর অব দ্য জেনারেল আর্মামেন্ট ডিপার্টমেন্ট, কমান্ডার অব দ্য সেকেন্ড আর্টিলারি কর্পস, কমান্ডার অব দ্য পিএলএ নেভি ও কমান্ডার অব দ্য পিএলএ এয়ার ফোর্স। সব মিলে ১১ সদস্য বর্তমানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।


PLA General Head Quarters

চারটি শাখা নিয়ে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির হেড কোয়ার্টার্স গঠন করা হয়েছে। শাখাগুলো হচ্ছে General Staff Departments (GSD), General Political Department (GPD), General Logistics Departments (GLD) & General Armaments Departments (GAD)। জিএডিকে জেনারেল ইকুইপমেন্ট বিভাগও বলা হয়। জিপিডি দেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বেসামরিক প্রশাসনের আনুগত্য দেখভাল করে। মিলিটারি রিজিওন দেখভাল করে সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন। এই রিজিওনের অধীন হচ্ছে নেভি, এয়ার ফোর্স ও সেকেন্ড আর্টিলারি ফোর্স। এই তিন বাহিনী যুদ্ধে সমন্বিত অপারেশন করে।

এক নজরে চীনের সমর শক্তি

নাম : পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)

প্রতিষ্ঠা : ১ আগস্ট ১৯২৭

শাখা : ১. পিএলএ গ্রাউন্ড ফোর্স, ২. পিএলএ নেভি, ৩. পিএলএ এয়ারফোর্র্স, ৪. সেকেন্ড আর্টিলারি কর্পস ও ৫. পিএলএ রিজার্ভ ফোর্স

কমান্ডার অন চিফ : হু জিনতাও

চিফ অব স্টাফ : চেন বিনজডে

মিলিটারি বয়স : ১৮-৪৯

মোট সৈন্য : ১৬-৪৯ বছরের মধ্যে পুরুষ- ৩৭,৫০,০৯,৩৪৫ জন ও মহিলা- ৩৫,৪৩,১৪,৩২৮ জন

মিলিটারি সার্ভিসের উপযুক্ত : ১৬-৪৯ বছরের মধ্যে পুরুষ- ৩১,৩৩,২১,৬৩৯ জন ও মহিলা- ২৯,৫৯,৫১,৪৩৮ জন

অ্যাকটিভ পার্সোনেল : ২২,৫০,০০০ জন

রিজার্ভ ফোর্স : ৮,০০,০০০ জন

প্যারামিলিটারি : ৩৯,৬৯,০০০ জন

মোট সৈন্য : ৭০,২৪,০০০ জন

জিডিপি’র হার : ১.৭ ভাগ (২০০৭)

অস্ত্র সরবরাহ : অভ্যন্তরীণ- ডিফেন্স কোম্পানিজ অব চায়না; বিদেশ- রাশিয়া, ইসরাইল, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইউক্রেন।

সামরিক বাজেট : ৫৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০০৮)

ট্যাঙ্ক : ৭,৫৮০

এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার : ১

ক্রুজার : ০

ডেস্ট্রয়ার : ২৬

ফ্রিগেট : ৪৯

করভেট : ৭০

সাবমেরিন : ৫৫

যুদ্ধবিমান : ১,৪৭১

পারমাণবিক বোমা : ৪০০

PLA Ground Force

পিপলস লিবারেশন আর্মির সবচেয়ে বড় বাহিনী হচ্ছে গ্রাউন্ড ফোর্স বা স্থল বাহিনী। চীনের মোট সামরিক সদস্যের ৭০ ভাগ এই বাহিনীর অধীন। এর সৈন্যসংখ্যা ১.৬ মিলিয়ন যেখানে দেশটির মোট সৈন্য ২.৩ মিলিয়ন। জেনারেল স্টাফ হেড কোয়ার্টার্সের অধীন স্থল বাহিনীকে পরিচালনার জন্য দেশটিকে সাতটি রিজিওনে ভাগ করা হয়েছে। রিজিওনগুলো হচ্ছে শেনইয়াং মিলিটারি রিজিওন, বেইজিং মিলিটারি রিজিওন, লানঝু মিলিটারি রিজিওন, জিনান মিলিটারি রিজিওন, নানজিং মিলিটারি রিজিওন, জুয়ানঝু মিলিটারি রিজিওন, চেংদু মিলিটারি রিজিওন। হংকং ও ম্যাকাউয়ে মোতায়েনকৃত সৈন্য জুয়ানঝু রিজিওনের প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করে। এসব রিজিওনের নিয়মিত ফোর্সকে করা হয়েছে ১৮টি গ্রুপে বিভক্ত। প্রতিটি গ্রুপে ৩০ হাজার থেকে ৬৫ হাজার সৈন্য রয়েছে। সঙ্কটকালে স্থল বাহিনীর সাথে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রিজার্ভ ফোর্স ও আধা সামরিক সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হয়। স্থল বাহিনীর মোট সদস্যের ১.১ মিলিয়ন কাজ করে পিপলস আর্মড পুলিশে। এই সংখ্যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সীমান্ত প্রতিরক্ষা বাহিনীও রয়েছে। এই দুই বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে মিনিস্ট্রি অব পাবলিক সিকিউরিটি।

PLA Navvy

১৯৯০ সালের আগ পর্যন্ত পিএলএ স্থল বাহিনীকে সহায়তা করত পিএলএ নেভি। ১৯৯০ সালের পর থেকে এই বাহিনীকে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে আধুনিক করা হয়। ২ লাখ ৫০ হাজার সৈন্যের এই বাহিনী তিনটি নৌবহরের অধীনে কাজ করছে। এগুলো হচ্ছে নর্থ সি ফ্লিট। এর প্রধান কার্যালয় হচ্ছে কিংদাওয়ে । ইস্ট সি ফ্লিট। এর প্রধান কার্যালয় হচ্ছে নিংবোয়ে। শেষটি হচ্ছে সাউথ সি ফ্লিট। এর প্রধান কার্যালয় হচ্ছে ঝানজিয়াংয়ে।

PLA Air Force

সাতটি মিলিটারি রিজিওনে বিভক্ত পিএলএ এয়ার ফোর্সের সৈন্যসংখ্যাও ২ লাখ ৫০ হাজার। বাহিনীটি কাজ করছে ২৪টি এয়ার ডিভিশনে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এয়ার ফোর্স এটি।

পিএলএ’র নেতৃত্বে সন্দেহের তীর

ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউনের ২০০৭ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সশস্ত্র বাহিনীর চেইন অব কমান্ড নিয়ে সন্দেহ তুঙ্গে ওঠে ওই বছরের জানুয়ারিতে। জনুয়ারির কোনো এক দিন পিপলস লিবারেশন আর্মি অ্যান্টিস্যাটেলাইট মিসাইল ছুড়ে মহাশূন্যে ভাসমান নিজেদের একটা ওয়েদার স্যাটেলাইট সাফল্যের সাথে ধ্বংস করে দিলে পশ্চিমা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এর মূল কারণ ছিল চীনের ক্ষমতার দৌড় দেখে তারা স্তম্ভিত হয়েছিল। বিশ্লেষকরা পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন বেসামরিক কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে পুরোপুরি অন্ধকারে ছিলেন। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়া হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিএলএ কাজটি করেছে বলে নিশ্চিত করে। তবে তা পশ্চিমাদের অনেক ঘাম ঝরিয়ে ঘটনার দুই সপ্তাহ পর।

একই বছরের অক্টোবরের আর একটি ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার কিটি হক তার বহরের অন্য সব যুদ্ধ জাহাজসহ ওকিনাওয়া উপরকূলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় মহড়ায় ছিল। এ সময় চীনের তৈরি নতুন একটা কনভেনশনাল সাবমেরিন বহরটির খুব কাছে চলে এসেছিল। অথচ কিটি হকের বহরে শত্রু জাহাজ শনাক্ত করার অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকলেও এর অস্তিত্ব একেবারেই ধরা পড়েনি। সাবমেরিনটি ভেসে ওঠার পর সেটাকে দেখতে পেয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের অফিসিয়ালরা এটাকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও কিছু বিশেষজ্ঞ প্রশ্ন তোলেন, চীনের সাবমেরিনের এ ধরনের চরম উসকানিমূলক পদক্ষেপ সে দেশের সিভিল প্রশাসন অনুমোদন করে কি না। বিশেষজ্ঞদের মতে পিএলএ পরিচালক গোষ্ঠী এসব নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামায় না যতটা ঘামায় তাদের বেসামরিক প্রতিপক্ষ।

পিএলএকে প্রফেশনাল বাহিনীতে পরিণত করার দাবি

পিএলএ’র অল্প বয়সী কিছু কর্মকর্তা দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওকে পরামর্শ দিয়েছিলেন চীনের মিলিটারিকে পুরোপুরি প্রফেশনাল সামরিক বাহিনীতে পরিণত করা উচিত। যার আনুগত্য থাকবে শুধু দেশের প্রতি, ক্ষমতাসীন পার্টির প্রতি নয়। অবশ্য হু জিনতাও এ পরামর্শ বাতিল করে দেন। চীনের পার্টি ম্যাগাজিন কিশি’র এপ্রিল ২০০৭ সংখ্যায় ছাপা হওয়া চীনের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির পলিটিক্যাল কমিশনার জেনারেল ঝাও কেমিংয়ের এক প্রবন্ধে এই আহ্বানের প্রতি জোর সমর্থন জানানো হয়। তিনি লিখেছিলেন, মিলিটারিকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার যেকোনো প্রচেষ্টা তাকে রুখতে হবে।

শেষ কথা

সরকারি তথ্য অনুসারে চীনের জনসংখ্যা ১.৩ বিলিয়ন। আর বেসরকারি তথ্য অনুসারে তা ১.৫ বিলিয়ন। চীনে পিপিপি ও জিডিপি এশিয়ার সর্বোচ্চ ও পাঁচ বছর ধরে দেশটির বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধির হার ছয় থেকে নয় শতাংশ। চীনে শ্রমমূল্য আরো কমপক্ষে ৫০ বছর কম থাকবে। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে তা সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তাদের শিল্প কারখানা উৎপাদনশীল। চীন নিজেকে বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু মধ্যরাজ্য বলে অভিহিত করে। বিশ্বে অনেক শক্তির আবির্ভাব ঘটেছে যারা শীর্ষ স্থানে উঠেছে।। এদের মধ্যে পঞ্চদশ শতাব্দীতে পর্তুগাল ও বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবির্ভাব। একবিংশ শতাব্দী কি চীনের? হতেও পারে!!!!!!!!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:০২

রানার ব্লগ বলেছেন: চিনের সামরিক শক্তি দিয়া আপনি কি করবেন? নাকি আত্মতৃপ্তি , B-)

৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪১

আদিল ইবনে সোলায়মান বলেছেন: আত্মতৃপ্তি _________? nOt impOssible

২| ২৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:২৫

মোস্তফা ভাই বলেছেন: চিনা মানুষের কোনো উন্নতি নাই, আমেরিকায় গিয়াও টোয়োটা কোরোলা চালায়।

৩০ শে মে, ২০১৬ সকাল ১১:৪৫

আদিল ইবনে সোলায়মান বলেছেন: তাও তো কাজ করে!!!!
কিন্তু আমরা বাঙ্গালীরা তো দেশের জন্য দূর্ণাম বয়ে আনি বৈকি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.