নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন জেনারেল ব্লগারের নিজের সম্পর্কে বলার কিছু থাকে না ।

আবদুর রব শরীফ

যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!

আবদুর রব শরীফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্পঃ সেদিন কান্না গিলে ফেলেছিলাম !!

২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৪৯

পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টকর একটি দিন এস.এস.সি রেজাল্টের আগের দিন, বড় ভাই গার্ডিয়ানরা বলত রেজাল্ট খারাপ হলে জীবনের গতি নাই,

চরম ফাঁকিবাজ একটা ছেলে নাইন/টেইন কাটিয়ে দিয়েছি হেল্প দি পুয়র ফাউন্ড আর ব্যক্তিগত লাইব্রেরীর জন্য বই চুরি করার কাজে, চারশ বই চুরি করেছি জীবনে, আমার কলোনীকে শিক্ষিত করার তাগিদে,


সুমন ফরিদ স্যার পরীক্ষার আগে আমার সব বই বস্তা বেধে তালা মেরে দিয়েছিল, স্যার এখন আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার, অবাক হয়ে যেতাম এগারো পাঠ্য বই নিয়ে কিভাবে দুই বছর পাড় করে দিল বন্ধুরা, আরো অবাক হলাম যখন ইংলিশে/অংকে আমি ছাড়া কেউ ফেইল করে নি দেখে, যখন রাবেয়া ম্যাডাম বলেছিল, 'তুমি আমার প্রিয় স্টুডেন্ট, তুমি একমাত্র ফেইল করেছ, দুটো নাম্বার কি বাড়িয়ে দিবো ?"

সেদিন চোখের জল গিলে ফেলেছিলাম, চুলোয় যাক রবী/নজরুল/বঙ্কিম/লুৎফর/ইমদাদুল হক মিলন/ডেল কার্নেগী/ তলস্তয়/রকিব হাসান/মারিও পুজো/ম্যাক্সিম গোর্কি/ফেলুদা, তোমারা আমাকে ইংলিশ/অংকে পাশ করাতে পারো নি!! বস্তা বন্ধি বইগুলো, তিন মাস সময় হাতে, সুমন স্যার নির্দয় আচরণ সহ্য করতে না পেরে, পড়ায় মনোযোগী হলাম, দিয়ে দিলাম এক্সাম, এ+মিস হয়ে গেল, আটটা সাবজেক্ট থেকে পাঁচটাতে এ+ পেয়েছি, ইংলিশ অংকের করুণ পরিণতির কারণে ৪.৫০ পেলুম,


সবাই রেজাল্ট দেখে চলে আসছে, তিনটা বাজে, আমি রেজাল্ট দেখতে যায়নি এখনো, আব্বু নয়টা থেকে গিয়ে স্কুলে বসে আছে, আজ ছেলের রেজাল্ট দিবে, মোবাইল ছিল না, রেজাল্ট দেখে আব্বুই সবচেয়ে খুশি হয়ে দাদাকে খবর দিতে গেল, আমি টেনশনে মরি, সাদা শার্ট পড়ে বের হলাম, মেডিকেল পর্যন্ত যাওয়ার পর এমদাদ ভাই বলল রেজাল্ট আমারটা সহ ওনার ভাগনীরটা দেখেছে, আর কে রেজাল্ট দেখতে যায়!!?


সোজা বাসায় এসে আমার পঙ্কিরাজ সাইকেলটি নিয়ে দিলাম অজানার উদ্দেশ্যে যাত্রা, মনে হচ্ছিল একশ মাইল বেগে সাইকেল চালাচ্ছি, আহ!! কি আনন্দ আকাশে! বাতাসে!


এরপর পর একে একে এইচ.এস.সি, অনার্স, মাস্টার্স সব দিয়ে পেললাম, কখনো পড়ায় মনোযোগী হতে পারলাম না, কাল এস.এস.সি রেজাল্ট দিবে ছোট ভাইদের, একটু আগে মাঠে হেটে আসার সময় এক ফলপ্রার্থীকে দেখলাম, আড্ডা ছেড়ে বাসায় চলে যাচ্ছে, তার বন্ধুরা বলল আড্ডা দে, টেনশন রিমুভ হবে, ছেলেটি বলল, খুব টেনশনে আছি, আড্ডা ভালো লাগছে না, বাসায় গিয়ে ফেসবুকে ডুকে একটা স্ট্যাটাস দিবে, রাস্তা ক্রস করার সময় কথাগুলো শুনে ২০০৫ সালে ফিরে গেলুম!!


একদিন বিঞ্চানে ফেইল করে খাতা ওভার ড্রয়ারের নিচের বক্সে একবারের কোনায় লুকিয়ে রাখছিলাম, বিকেলে ঘুরে এসে পড়তে বসতে যাবো এমন সময় দেখলাম, বিঞ্চান খাতা স্যারের সামনে, জীবনে এটাও দেখতে হলো, এটাও সম্ভব!! পরে বুজলাম এটা আমার ভাইয়ের কাজ!



লজিং স্যারের সামনে পবলেম হলো অন্য বই পড়তে পারতাম না রাতে, কৌশলে টেবিল আলাদা করে পেললাম, বইয়ের নিচে বই লুকিয়ে অন্য বই পড়তাম, কবিতা লেখতাম, বালিশের নিচে বই রেখে টর্চলাইটের আলো জ্বালিয়ে উপন্যাস পড়তাম, টেক্সট বুক যখন পড়তাম মন পড়ে থাকতে বড় দিদি/মেজো দিদি/বৈকুন্ঠের উইল/দেবদাস/শ্রীকান্তে, এগুলো পাঠ্য বই হল না কেন!!


কত বোকা ছিলাম আমি, বই সংগ্রহ করে করে সেলুনে/চায়ের দোকানে দিতাম আর এক সপ্তাহ পর গিয়ে দেখি, সেলুনে/চায়ের দোকানে ওগুলো দিয়ে বাংলা টিস্যু বানিয়েছে,


সেই চারশ বইয়ের কথা কি আর বলবো, চোরা বই যে নেই সে আর ফেরত দেয় না, এভাবে একদিন লাইব্রেরীটা চুরি হয়ে গেল...


মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৫৪

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ফেসবুক Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.