নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কখনও আমি অথবা আমার মন অথবা আমরা দুজন মিলে অনুসন্ধান করে বেড়াই সত্য ও সুন্দরের; যা শুধু গুটিকয় মানুষের স্বার্থের জন্য নয়, বরঞ্চ এই সমগ্র মানবতার জন্য।

আবীরের ঘোড়া

আবীরের ঘোড়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যবিত্তের বাজেট

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৪৮

রমজান সাহেব একজন সরকারি কর্মকর্তা। এই বিষয়ে তার গর্বের অন্ত নাই। দেশের বাছাই করা সেরাদের মধ্য থেকে তিনি একজন বি.সি.এস ক্যাডার। যদিও তিনি ক্যাডার শব্দটার ঘোর বিরোধী তবুও তিনি ক্যাডার শব্দটাই ব্যবহার করেন নতুন কারো সাথে পরিচিত হতে। তার শ্বশুর বিরাট ব্যবসায়ী, ঐ ক্যাডার শুনেই পাড়ার ছিঁচকে মাস্তানদের হাত থেকে রেহাই পেতে একমাত্র সুন্দরী মেয়ে ইরা´কে বিয়ে দিলেন তার সাথে। গর্ব করে শ্বশুর মশাই বলে বেরান জামাই আমার মস্ত বড় ক্যাডার।

রমজান সাহেবঃ দেখ ইরা সরকার রাষ্ট্রের সবচে বড় প্রতিষ্ঠান। তারও বাজেট ঘাটতি হয়, হতেই পারে। আর আমরা তো নিতান্তই ক্ষুদ্র প্রাণী আমাদের ঘাটতি হওয়া তো অবশ্যম্ভাবী।
ইরাঃ শোন, ওইসব বুঝাইয়ো না, প্রতি বছর খরচ বৃদ্ধি সরকারের সামর্থ্যের পরিচয় বহন করে। তেমনি প্রতি স্বতি নারীই চায় তার স্বামীর ক্ষমতা বছর বছর বৃদ্ধি পাক। তাই স্ত্রীরা স্বামীর ভালোর জন্যই প্রতি বছর খরচের খাতটা বাড়ায়, এতে ব্যক্তি ও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে।

যুক্তি অখণ্ডনীয়। তাই দেশ ও ঘরের উন্নতির কথা ভেবে, বাড়তি আয়ের ক্ষেত্রগুলোকে আরেকটু বাড়ানোর কথা চিন্তা করলেন। যেই ভাবা সেই কাজ। ফ্লাই ওভারের নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে এ যাত্রায় রক্ষা, আশা করা যায় আগামীতেও রক্ষা হবে।

রমজানঃ শোন বন্ধু, আর যাই হোক দুর্নীতি দেশের জি ডি পি বাড়ায় জান তো? দেশের টাকা দেশেই খরচ হচ্ছে। অর্থনীতি সচল থাকছে।
মোনায়েম (বন্ধু)ঃ তোমার বউয়ের প্রসাধনী কি দেশী?
রমজানঃ না, জানই তো দেশী জিনিসের কোয়ালিটি ভালো না। তাই বিদেশী জিনিসই আমরা ব্যবহার করি।
মোনায়েমঃ তা বিদেশী জিনিস কিনলে টাকা দেশে থাকে না বিদেশে যায়?
এবার কিছুটা অপ্রস্তুত রমজান সাহেব। মোনায়েম কখনই তার চাইতে ভালো ছাত্র ছিল না। কিন্তু যুক্তির ভারে আজ তাকেই হার মানতে হচ্ছে। তাই কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে
রমজানঃ তোমরা সাংবাদিকরা কি দুর্নীতি মুক্ত? সাংবাদিকদের মাসিক আয় আর মাসিক খরচের ঘাটতিটা কিভাবে সারপ্লাস হয় ওইসব আমাদের জানা আছে। খালি অন্যের কথা বলতে তোমরা ওস্তাদ, নিজেদের সরষের ভূতটা তো দিব্যি আড়াল করে যাচ্ছ।

সত্যিই তো ভূতটাকে বের করতেই কিছুদিন আগে সাগর মারা পড়লো। আর মোনায়েমের চাকরি গিয়ে মাস দুয়েক হলো বেকার আছে ও। রমজানের মিথ্যে অহংকারকে ভাঙ্গতে ইচ্ছে করলেও, ব্যগটা কাঁধে নিয়ে উঠে পড়লো সে। বলল, আসি রে - ভালো থাকিস।

রমজান সাহেবের এহেন আঘাতে মোনায়েম পরাস্থ হয়েছে ভেবে রমজান সাহেব তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতে বাড়ি পৌঁছে দেখেন- ইরা কারো একজনের সাথে ফিসফিস করে কথা বলছে আর হাসছে। আগামী বছরের সম্ভাব্য বাজেট ঘাটতি নিয়ে চিন্তা করতে ঘরে না ঢুকেই বেরিয়ে পড়লেন আবার।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.