![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক, দ্বায়ী, এক্টিভিস্ট
১১. দ্বীনদার শ্রেণি, ধর্মীয় রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য মতবিরোধকারীদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি মনে রাখতে হবে, তাদের ভালো কাজের প্রশংসা ও উৎসাহ দেয়া হবে এবং ভুলের সমালোচনা ও নছিহত করা হবে, গোপন ভুলের ক্ষেত্রে গোপনে নছিহত, প্রকাশ্য ভুলের ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে নছিহত। তাদের ভুলভ্রান্তি ও ত্রুটির কারণে তাদের ভালো কাজগুলোকে মোটেও অস্বীকার করা যাবে না। প্রত্যেক জিনিসকে তার আপন জায়গায় রাখা হলো ইনসাফ। মু-জ|/হি"দদের জন্য এই ইনসাফ রক্ষা করা অন্যদের চাইতে বেশি জরুরি। এভাবে কাজ করলে আমরা একদিকে যুলম থেকে বেঁচে গেলাম, অন্যদিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হবে। অন্য দিকে তাদের ভালো কাজের প্রশংসা ও উৎসাহ দেয়ার দ্বারা সে গোড়ামির শিকার হবে না। আর ইনশাআল্লাহ হকের জন্য তার অন্তর খুলে যাবে।
.
১২. দাওয়াতের মধ্যে সর্বদা একথা বোঝানো যে, আমরা হেদায়াতের পথে আহবানকারী একটি দল। মানুষের সফলতা ও কামিয়াবির জন্য আমরা দাঁড়িয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো মানুষকে মানুষের গোলামি থেকে বের করে আল্লাহর আনুগত্যের ছায়ায় নিয়ে আসা। আমরা নিজেদের পরিচয় “কিছু শ|স্তি বাস্তবায়ন চাই” দ্বারা করাবো না। অন্য কেউ করলে তাও গ্রহণ করবো না। এই শ|স্তিগুলো আমরাও বাস্তবায়ন করবো, কারণ এগুলো শ;রী:য়তের গুরত্বপূর্ণ বিষয় এবং এর অনেক বরকত আছে। কিন্তু শ|স্তি বাস্তবায়ন করাই পূর্ণ শ*রি*য়ত নয়। শ;রী:য়তের মধ্যে আল্লাহর ভয় জাগ্রত রাখা, ইনসাফ-ন্যয়বিচার, পবিত্রতা-লজ্জার প্রসার, সাম্য, মানুষের সেবা, ইসলামি সমাজ, জীবনব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করা। ভালো কাজের প্রতি আহবান, সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজে নিষেধ করা। অসহায়-গরিব মানুষের জন্য যাকাতের ব্যবস্থা, আল্লাহর বিধান কার্যকর করাসহ আরও অনেক গুরত্বপূর্ণ বিষয় আছে। শ|স্তি তো শুধু অপরাধীদের দেয়া হয়। আর একটি ইসলামি সমাজ যেখানে ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা চালু আছে সেখানে আর কী পরিমাণ অপরাধ হয়? অন্য দিকে ওই সমাজব্যবস্থা দ্বারা কত মানুষ উপকৃত হয়? স্পষ্টত এই উভয়টির মাঝে কোন তুলনা চলেনা। একটি সমাজের লাখো মানুষের মাঝে কিছু মানুষের নিজেদের ভুলের কারণে যে বিধানের সম্মুখীন হয়, তা দিয়ে কি কোন শ|স"নব্যবস্থার পরিচয় করানো যায়? না, বরং যা অধিক ও প্রবল, তা দিয়ে পরিচয় করানো হয়। দ্বীন প্রতিষ্ঠার অগণিত ফায়দা। সর্বোচ্চ সৌন্দর্য, সীমাহীন বরকত এত ব্যাপক ও বেশি যে, এর দ্বারা সারা দুনিয়ার মানুষ উপকৃত হয়। তাই আমরা এগুলো দ্বারাই আমাদের পরিচয় দেব। ব|তি"ল শ|স"নব্যবস্থায় কি কি শ|স্তি নেই? তা দ্বারা কি তার আহবানকারীরা ব|তি"ল শ|স"নব্যবস্থার পরিচয় করায়? না, বরং কথিত উপকারিতার কথা বর্ণনা করে?
.
১৩. দাওয়াতের মধ্যে ‘ধীরে চল’ এবং ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে কর’ নীতির অনুসরণ করা উচিৎ। বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রেখে তার থেকে কম গুরত্বপূর্ণ বিষয়কে প্রাধান্য দেয়ার দ্বারা দাওয়াতের প্রভাব কমে যায়। অথবা সম্বোধিত ব্যক্তি ভুল বোঝে। যেমন সেনাবাহিনীর কারো সাথে আমাদের শঃত্রুতার কথা বললে প্রথমে তাদের বড় অপরাধ হিসেবে কু%ফু"রি শ|স"ন ব্যবস্থা ও কু%ফু"রির লিডারদের রক্ষা করা উল্লেখ করা উচিৎ। আল্লাহকে ছেড়ে টাকা পয়সার গোলামি, সব ধরনের জুলমকে উল্লেখ করা উচিৎ। কিন্তু যদি সৈনিকদের বাদ্যের তালে নাচাকে প্রথম অপরাধ বলা হয়, তাহলে শ্রোতা মু-জ|/হি"দদের জি@হা/দের উদ্দেশ্য সৈনিকদের নাচাকেই মনে করবে। নাচ-গান সৈনিকদের দাড়ি কাটতে বাধ্য করার মতো গুনাহের আলোচনাও হওয়া উচিৎ তবে তার আপন জায়গায়। তেমনিভাবে একজন ব্যক্তি নামাজও পড়ে না, জি@হা/দও করে না, এক্ষেত্রে তাকে কোন বিষয় বলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? স্পষ্টত নামাজের কথা বলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্যও তো কবর, আখেরাতের জীবনের ফিকির তৈরি করা আরও বেশি জরুরি। কিন্তু যদি সব কিছু বাদ দিয়ে জি@হা/দের ফরযিয়ত ও জি@হা/দে বের না হলে কি ধমকি এসেছে, তার আলোচনা করলে ওই লোকের ওপর কি প্রভাব পড়বে?
.
১৪. আলোচনার সূচনা মতবিরোধপূর্ণ বিষয় দ্বারা করা যাবে না। জরুরি হলো একমতের বিষয় দ্বারা আলোচনা শুরু করা। সম্বোধিত ব্যক্তি যে বিষয়কে হক ও কল্যাণকর মনে করে, বিশেষ করে সে যে বিষয়ের প্রবক্তা, সে বিষয়ে তার সাথে একমত পোষণ করা এবং তাকে উৎসাহ দেয়া। সেই ঐক্যের বিষয়কে মূল বানিয়ে তারপর যে বিষয়ের দাওয়াত দিতে চায় তা পেশ করা। যদি প্রথমেই মতবিরোধের আলোচনা করা হয় বিশেষ করে নিজেদের লোকের কাছে, তাহলে সম্বোধিত ব্যক্তির জন্য কথা শোনা কষ্টকর হয়ে যাবে। তেমনিভাবে সব সংবেদনশীল বিষয় একই মজলিসে আলোচনা করবে না। মাদউকে আস্তে আস্তে দাওয়াত দেয়া হবে এবং তার মন মানসিকতা, হজম শক্তি অনুযায়ী তাকে বোঝাবে।
১৫. সম্বোধিত ব্যক্তির রূঢ় ব্যবহারে ধৈর্য ধারণ করবে এবং শরয়ী সীমারেখা রক্ষা করবে। তার খারাপ ব্যবহারের পর তার সাথে ভাল ব্যবহার করা তার সাথে ইহসান। যেই পরিমাণ দয়া ও তাকওয়ার সাথে তাকে দাওয়াত দেয়া হবে ওই পরিমাণ দাওয়াতের প্রভাব তার ওপর পড়বে। অন্যভাবে বললে, আপনার দাওয়াত ওই পরিমাণ দলিলের ময়দানে কার্যকর প্রমাণিত হবে।
.
১৬. জি@হা/দি মিডিয়ায় আমাদের দাওয়াত সাধারণ হওয়া উচিৎ। যেহেতু আমাদের সম্বোধিত ব্যক্তিদের অধিকাংশই সাধারণ শ্রেণির মানুষ। এজন্য আমাদের কথাও তাদের বুঝ অনুযায়ী হওয়া উচিৎ। তাদের বুঝের ঊর্ধ্বে যেন মোটেও না হয়। আমার কথার উদ্দেশ্য এটা নয় যে, বিশেষ ব্যক্তিদের দাওয়াত দেয়া হবে না। তাদেরকে উদ্দেশ্য করেও কথা বলা হবে, তাদের রুচি অনুযায়ী বক্তব্য হবে, কিন্তু সাধারণ বক্তব্যে সাধারণ মানুষের প্রতি লক্ষ রাখা জরুরি।
.
১৭. জি@হা/দি মিডিয়া এবং দাওয়াতের মধ্যে কোন অনৈসলামিক মাধ্যম গ্রহণ করা যাবে না। উদ্দেশ্য এবং মাধ্যম উভয়ের মধ্যে যত বেশি শ;রী:য়তের প্রতি লক্ষ রাখা হবে, সে পরিমাণ আল্লাহর রহমত নাযিল হবে এবং দাওয়াত বরকতময় হবে। বিশ্বাস করতে হবে, যে বিষয় শ;রী:য়তে নাজায়েয তা দ্বারা কখনও দাওয়াতের ফায়দা হয় না। সুতরাং মিথ্যা ও ধোঁকা থেকে পরিপূর্ণ দূরে থাকতে হবে। শ;রী:য়ত যে ক্ষেত্রে এর অনুমতি দিয়েছে সে ক্ষেত্র দাওয়াত নয়, জি@হা/দ। তাই আমাদের মিডিয়ায় কোন খবর বাড়িয়ে প্রচার করা যাবে না যার কোন বাস্তবতা নেই। এমন বাড়িয়ে প্রচার করার দ্বারা দাওয়াতের ক্ষ%তি হয় এবং আমাদের সত্যবাদিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
.
১৮. যেই শ্রেণির সাথে কথা বলা হবে, নিজেকে তাদেরই একজন করে কথা বলতে হবে। এর বিপরীতে সম্বোধিত ব্যক্তিদের মানসিকতা, আবেগ উদ্দীপনা ও তাদের অবস্থাদি জানা ব্যতীত যদি তাদেরকে দাওয়াত দেয়া হয় তাহলে তারা কথা বুঝবে না এবং এই দাওয়াতের জন্য তাদের অন্তর খুলবে না। মঙ্গলগ্রহের দিকে তাকিয়ে থাকা ব্যক্তি মঙ্গলগ্রহের অবস্থাদি সম্পর্কে অবগত হয়ে যদি পৃথিবীবাসীর সমস্যার সমাধান করতে শুরু করে, তাহলে কিভাবে পৃথিবীবাসী তার কথা মনযোগ দিয়ে শুনবে? সম্বোধিত ব্যক্তিরা নিজেদের সমস্যাকে যেই দৃষ্টিতে দেখে দ|ঈকেও সেই দৃষ্টিতে দেখতে হবে। সম্বোধিত ব্যক্তিরা যেই সমস্যা ও বাধা দ|ঈর সামনে পেশ করে তা দ|ঈরও অনুভব করতে হবে। এই অনুভবের পরেই ঐ বিষয়ের দাওয়াত দিবে শ*রি*য়ত যা চায় এবং আমলযোগ্য হয়। রোগ সম্মন্ধে জানা ছাড়াই যদি চিকিৎসার পর চিকিৎসা দেয়া হতে থাকে, তাহলে রোগ ভালো হবে কিভাবে? আর এমন ব্যক্তিকে রোগী চিকিৎসক হিসেবে গ্রহণ করবে কেন? দ|ঈ লোকদের মাঝে থেকে একটু সতর্ক থাকলে বুঝতে পারবে, কোন কথা কখন কার ওপর প্রভাব ফেলবে। সম্বোধিত ব্যক্তির চেহারার রং পরিবর্তনই দ|ঈকে অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়। কিন্তু হাজার মাইল দূরে বসে থাকা সম্বোধিত ব্যক্তিকে যখন দেখা যায় না এবং দ|ঈ তাদের অবস্থাদি সম্পর্কে বেপরোয়া হয়ে নিজের জযবার কথা বলতে থাকে, তখন এই দাওয়াতের ফায়দা খুব কমই ইতিবাচক হয়।
.
©somewhere in net ltd.