![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অতি সাধারন একজন মানুষ যার জীবনের লক্ষ্য গরীব মানুষের জন্য সাধ্যমত কিছু করা। রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে পড়ে আজ গরীবেরা আরও গরীব হচ্ছে, সম্পদশালীরা আরও সম্পদশালী আর আমার মতো মধ্যবিত্তরা মধ্যবিত্ত থেকা যাচ্ছে। এই মধ্যবিত্ততাকে সম্বল করে দেখি সেই গরীবদের জন্য কিছু করা যায় কি না।
১৮৮৬। সালটি অনেকেরই মনে আছে। কেননা নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে May Day এর উপর প্যাসেজ ছিল। তাই আমার মত দুএকজন অগত্যা পড়লেও অনেকে তা প্রয়োজনে পড়েছিল। আমারই বরং তেমন মনে নেই। তবে আমি গরীব শ্রেণীয়, তাই গরীবদের প্রতি আমার টান আছে বৈকি। আর তাই আমি কিঞ্চিৎ জানার চেষ্টা করেছিলাম এই বেপারে। আপনারা সবাই নিশ্চয় আমার চায়তে ভাল জানেন।
ছোট্ট করে বলি, যুগে যুগে শাসক শ্রেণির লোকেরা শ্রমিকের উপর অত্যাচার আর জুলুম করে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় অতিস্ট হয়ে শ্রমিকদের আন্দোলন শুরু হয় ১৮৮৬'র ও শতাধিক বছর পূর্বে। তাদের আন্দোলন ছিল কর্মঘণ্টা কমানো ও ন্যায্য বেতন ভাতার প্রাপ্তির জন্য। কিন্তু লোভী ঐ শ্রেণির অমানুষদের ভেতর মানবিকতা ছিল না। তাই ৮৬ তে শ্রমিকদের আন্দোলন সভায় গুলিবর্ষণ করে অনেক শ্রমিকের রক্তে হলি খেলে। তবুও দমাতে না পেরে শেষে ৮ ঘণ্টা সময় বেধে দেয় শ্রমিকদের জন্য। তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে শ্রমিক ইউনিয়নগুলি। আর সেই থেকে ৮ ঘণ্টার কাজের সময়সীমা শুরু হয় সারা বিশ্বে। এ বেপারে আইনও পাশ করা হয়।
হ্যাঁ, ৮ ঘণ্টা তো করাই যায়। এটাকে বেশি বলতে পারছি না।
এবার আসি আমাদের দেশে। আমাদের দেশটি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরা। কিন্তু প্রকৃতির সম্পদ প্রকৃতিতেই থেকে যায় দক্ষ কারিগর, যন্ত্রপাতি ও সরকারের অবহেলায়। আর বিদেশীদের দিয়ে উত্তোলন করলে যে যৎসামান্য সম্পদ আমরা ভাগে পাই তা কেবলই গরীবের ছোট্ট বাচ্চাটিকে অভাবের তাড়নায় আটা দিয়ে সাদা আর চিনি দিয়ে স্বাদ করা কাচের পুরনো বোতলে ভরে দুধ বলে খাইয়ে সান্ত্বনা দেয়ার মতই।
তাছাড়া আমাদের এমন কিছুর প্রয়োজন পড়ে যা আমাদের দেশে নেই, আমদানি করতে হয়। এখন কেবল দেশীয় সম্পদ দিয়ে সব ঘাটতি পুরন কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই বিদেশে পণ্য বা সেবা দিয়ে অর্জিত আয় থেকে নিজ দেশের উন্নয়ন করা হয়। বাংলাদেশে এমন একটি দিক হল গার্মেন্টস। গার্মেন্টস শিল্পে শুরুটা বাংলাদেশে খুব বেশি আগে নয়। এই পঁচিশ-ছাব্বিশ বছর আগের ঘটনা। কয়েকজন মিলে এই শিল্পের সূত্রপাত করে। তখন হয়ত তাদের কেউই ভাবেনি যে আজ সে শিল্প এই পর্যায়ে এসে দাঁড়াবে। কিন্তু এটিই সত্য যে বাংলাদেশ এখনও টিকে থাকার পেছনে এই শিল্পের অবদান অনস্বীকার্য। তানাহলে বাংলাদেশে রাজনীতিবিদরা থাকতো ভারত, পাকিস্তান আর অ্যামেরিকায়। আর সাধারণদের অবস্থা হত সোমালিয়ানদের মত।
এখন একটু খোঁজ নিলেই পাবেন যে এই শিল্পকে যারা বাঁচিয়ে রেখেছেন সেই শ্রমিকরা কোন অবস্থানে আছেন!
মালিকরা শ্রমিকদের প্রতি মাসে ছুটি দেয় ৪ দিন চার শুক্রবারে। বাড়তি একদিন ছুটি পেলে শ্রমিকদের ঈদের আনন্দ অনুভূত হয়। কিন্তু সেই অনুভুতি বছরে দু-একবারই হয়ে থাকে। আর ঈদের ছুটি হয়ত একটিতে পায়, তাও ঈদের দিন আর তার পরের দিন। তা যাক।
এখন আসি কর্মঘণ্টায়। দৈনিক কাজ করতে হয় ১০-১২ ঘণ্টা! তাহলে বলুন সেই মে ডে বা আন্তর্জাতিক শ্রমিক আইন বা দিবসের ফলাফল কী? তাও বাদ দিলাম।
এখন আসি বেতনে। সরকার নিয়মিতই ভোট ধরে রাখার জন্য এই শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য তোলপাড় শুরু করে। কেননা ৩০ লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ করে এই শিল্পে। আর প্রত্যেকের সংসারে থাকে আরও ৩০ লক্ষাধিক লোক থাকে। তাদের ভোট পেলে আর কি লাগে। কিন্তু সেই তোলপাড় শেষ হয় কারখানা মালিকদের দেয়া টাকায়।
তার উপর নেই কারও জীবনের নিরাপত্তা। আজ এই কারখানা ধসে পড়ছে, কাল আরেকটাতে আগুনে পুড়ে মরছে হাজারো শ্রমিক! এদের প্রত্যেকের জীবনের অবসানের সাথে সাথে একটু একটু করে এদেশের অবসান হচ্ছে।
তাহলে কোথায় শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী পুরন হয়েছে? এটি মাত্র একটির উদাহরণ দিলাম। বাংলাদেশের প্রত্যেক সেক্টরে শ্রমিকরা আজও নির্যাতিত, নিপীড়িত। আমরা এখনও নতুন, এখনও আমাদের সেই বয়সটা হয়নি। আমরা কোন মালিক নই। তবু আমরাও নিয়মিত শ্রমিক নির্যাতন করছি। রিক্সাওয়ালার ন্যায্য ভারাটা পর্যন্ত আমরা দেই না।
অনেক আক্ষেপ হচ্ছে মানুষ হিসেবে জন্ম নেয়ায়। মানুষের যে মুল বৈশিষ্ট্য তা আজ খুব কম সংখ্যক মানুষের ভেতর আছে। আল্লাহ্ আমাদের জ্ঞান দিন। দেশ রক্ষা করুন। শ্রমিকদের রক্ষা করুন। আমীন।
২| ০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০
আদিত্য মুহাম্মাদ বলেছেন: আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের ভেতর দেশপ্রেম জাগাতে হবে, জাগাতে হবে মানব প্রেম, তবেই হয়ত দেশের কিছু হবে। তার আগে আমাদের আল্লাহ্র দয়া একান্ত জরুরী।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪২
নাসীমুল বারী বলেছেন: ধন্যবাদ।
'মৌলবাদী ইসলাম'এর শিক্ষা ' শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগে মুজুরি শোধ কর।' আজ আমরা প্রগতিশীল হওয়ার জন্য ইসলামের মৌলবাদকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে কত কি মঞ্চ করে আন্দোলন করছি। গণস্বাক্ষরও নিচ্ছি, ইত্যাদি সব ধরনের কাজই করছি।ন আসলে এর কারণ ইসলামের মৌলবাদী শিক্ষা সমাজে প্রচলন থাকলে তো আর মানুষ ঠকিয়ে ঠ্যাং-এর উপর ঠ্যাং তুলে আয়েশ করতে পারব না। ৪-৫ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়তে পারব না। আমাদের দেশেই সম্ভব জন্মনিয়ন্ত্রহীন সম্পদের অফুরন্ত জন্মলাভ!!
আর তাই মানবতার প্রকৃত অধিকার সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে না।
শুভ কামনা।