নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলি আশরাফ

আলি আশরাফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাহবাগ ঘোষণা

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬

শাহবাগ ঘোষণায় দেখা যাচ্ছে যে, মুক্তিযুদ্ধ = খুন + ধর্ষণ।



৯ মাস ধরে হয়েছে শুধু খুন আর ধর্ষণ! কী মজার আমদের সময় ছিল "মুক্তিযুদ্ধ"। জন্ম না হবার জন্য ম্যালা খুন-ধর্ষণের মৌজ থেকে বঞ্চিত হবার বেদনায় কাতর শাহবাগের গাজারু Sadist-রা।



আমি নিশ্চিত এই গাজারুদের পেটে বোমা মারলেও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ইতিবাচক কোন কথা বের হবে না। এদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ মানে শুধু খুনাখুনি আর করাকরি!

*******



শাহবাগ ঘোষণা



যেহেতু ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতি ও রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি এবং যেহেতু মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং দুই লক্ষ নির্যাতিত নারীর জীবনের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে এবং যেহেতু এই মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগী হিসেবে গণহত্যা ও ধর্ষণ সহ সকল মানবতাবিরোধী অপরাধে জামাতে ইসলামী এবং তৎকালীন ইসলামী ছাত্র সংঘ (বর্তমানে ইসলামী ছাত্র শিবির) সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছে এবং যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক বহুবছর এই মানবতা বিরোধী অপরাধের ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত থেকেছে এবং যেহেতু বর্তমান মহাজোট সরকার এই মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার করবে এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিরংকুশ সংখ্যগরিষ্ঠতা পেয়েছে এবং যেহেতু মিরপুরের কসাই খ্যাত কাদের মোল্লার যাবজ্জীনের রায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রত্যাশিত ন্যায় বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জাতির স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে; সেহেতু শাহবাগে জমায়েত মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় প্রজন্ম নিম্নোক্ত ঘোষণা সর্বসম্মতভাবে প্রকাশ করছে।



কাদের মোল্লার বিচারের রায়ে মর্মাহত, হতাশ ও ক্রুদ্ধ মানুষের কাতার থেকে উঠে এসেছে এই আন্দোলন, গঠিত হয়েছে এই জনজাগরণ মঞ্চ। আমরা জনগণের অংশ, একাত্তত্তেরে মুক্তিচেতনার উত্তরাধিকার, জাহানারা ইমাম আমাদের পথপ্রদর্শক।



স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছর পর এই প্রথম যুদ্ধাপরাধী ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকারীদেও বিচার শুরু হ্ওয়ায় আমরা যেমন আশাবাদী, তেমন পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরেও কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেওয়া দুটো যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ আমাদের আশাহত করেছে। চার শতাধিক মানুষকে হত্যা করা একজন মানবতাবিরোধী অপরাধীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড বিচারের নামে প্রহসন। এই ঘটনায় জাতি যতটাই বিষ্মিত, ততটাই ন্যায়বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। একাত্তর সালে যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এর জনগণের বিরুদ্ধে শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যা, নির্যাতন ও নাশকতা করেছে, আজক্ওে সেই অপশক্তি একই কায়দায় জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধে লিপ্ত আছে। এই বিচার তাই হতে হবে মানবতার স্বার্থে, আইনের শাসনের স্বার্থে, মানবতাকে আমাদের সমাজে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার স্বার্থে।



শাহবাগের এই জনজাগরণ প্রমাণ করেছে, আপসের কোনো সুযোগ বা পথ আর খোলা নাই। যে করবে সে জনতার কাতার থেকে, একাত্তরের চেতনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। যে আইনের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত প্রয়োজনে সেই আইনকে ন্যুনতম সময়ের মধ্যে সংশোধন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তার জন্য এই মুহুর্তেই সংশোধনী এনে কাদের মোল্লার রায় পুন:পর্যালোচনা করতে হবে। এই বিচারকার্যের সাথে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষিত, বিশেষজ্ঞ আইনজ্ঞ এবং শহীদ পরিবারদের অংশগ্রহণে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করতে হবে।



১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সম্পূর্ণ সময়টাতে কাদের মোল্লা শুধু ৬টি অপরাধ করেছেন এমন না, স্বার্থবাদী মানুষেরা এই অমানবিক পরিস্থিতিতে অনেক ধরণের অপরাধে লিপ্ত ছিলেন, তার মধ্যে ছয়টি আদালতে উপস্থাপন করে সেসবের বিচার দাবী করা হয়েছিলো। অপরাপর অপরাধের ঠিকুজিও খুঁজে বের করা সম্ভব। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের সাথে আছে আমাদের ১৬ কোটি মানুষ, তারা কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করলে এই ট্রাইব্যুনালেই কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।



কাদের মোল্লা কিংবা অপরাপর যুদ্ধাপরাধের দায়ে আটক ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত সিদ্ধাস্তে এমন অমানবিক বর্বরতায় জড়িত হন নি, দলীয় ভাবে দলগত সিদ্ধান্তে তারা এই মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হয়েছেন। আমাদের দাবী যুদ্ধাপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নির্মম বাঙালি নিষ্পেষণের সাথে জড়িত সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।



আপনারা স্বতঃস্ফুর্ত এখানে এসেছেন, আপনারাই সিদ্ধান্ত জানাবেন আমরা এ আন্দোলন অব্যহত রাখবো কি না। আপনারা যদি চান তাহলে আমরা আপনাদের সাথেই থাকবো, আপনাদের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সহযোদ্ধা হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে পারলে নিজেদের সম্মানিত মনে করবো।



আপনারা যদি সিদ্ধাস্ত জানান আমাদের ক্ষোভ প্রকাশ করাই যথেষ্ট, সরকারই আমাদের প্রত্যাশাগুলো পুরণের ভার নিবে, আমরা আপনাদের সিদ্ধান্তে শ্রদ্ধা জানিয়ে এখান থেকে চলে যাবো। আপনাদের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এখানে আমাদের সমেবেত হওয়াটা আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহনেই সম্ভব হয়েছে। আপনারা আছেন, সমর্থন দিয়েছেন বলে আমরা একেবারে সাধারণ হয়েও আপনাদের জন্যেই অসাধারণ একটি মুহুর্তে বেঁচে আছি।



আমাদের স্পষ্টদাবী



১। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মিরপুরের জল্লাদ খ্যাত কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ গণহত্যার সহযোগী হিসেবে নয়, হোতা হিসেবে অভিযোগ গঠন করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।



২। যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠাকারী আইনকে ন্যুনতম সময়ের মধ্যে সংশোধন করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তার জন্য এই মুহুর্তেই সংশোধনী এনে কাদের মোল্লার রায় পুনপর্যালোচনা করতে হবে। এই বিচারকার্যের সাথে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষিত, বিশেষজ্ঞ আইনজ্ঞ এবং শহীদ পরিবারদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করতে হবে।



৩। ট্রাইবুনালকে স্থায়ী রুপ দিতে হবে এবং সকলদলের যুদ্ধাপরাধীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করে সবাইকে পর্যায়ক্রমে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একাত্তরে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের সকল ঘটনা নথিবদ্ধকরণের লক্ষ্যে সত্যানুসন্ধান কমিটি হঠন করতে হবে।



৪। অবিলম্বে সংবিধান সংশোধন করে রাষ্ট্রপতির ক্ষমাবিষয়ক অনুচ্ছেদ ৪৯ এ একটি নতুন উপধারা যুক্ত করতে হবে, যেন যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে দন্ডিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা ঘোষণার সুযোগ না থাকে।



৫। মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতাকারী দল এবং ব্যক্তিদের রাজনৈতিক অধিকার নিষিদ্ধ করতে হবে।



৬। জামাত নিয়ন্ত্রিত সকল আর্থিক এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অর্থায়নের অভিযোগ তদন্তের জন্যে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারী প্রশাসক নিয়োগ দিতে হবে। এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করতে হবে।



৭। যুদ্ধাপরাধের বিচারে পাকিস্তানকে অর্ন্তভুক্ত করার জন্যে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে ট্রাইবুনালের অধীনে আনতে হবে।

ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা: নেসার আহমেদ

Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.