নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/allen.saiful

অ্যালেন সাইফুল

An inhuman never explain himself.

অ্যালেন সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অসুন্দর আমি এবং আমার অসুন্দর লেখা...!!!

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০১



কদিন থেকে ভয় পাবার এক অদ্ভুত রোগ বাসা বেঁধেছে। ইদানীং সবকিছুতে ভয় পাচ্ছি।

মাথার উপরে ঘুরন্ত সিলিং ফ্যান দেখেও ভয় পাচ্ছি। মনে হচ্ছে এই বুঝি ঘুরতে ঘুরতে এসে ফ্যানটা আমার মুখের উপর পড়বে। এরপর বিকৃত হয়ে যাবে আমার চেহারাটা। ভয়ংকর রকমের বিশ্রী দেখাবে আমাকে।

আস্তে আস্তে বাসার সবাই আমাকে আলাদা করে দিতে চাইবে। ছোট যেই বোনটা সারাক্ষন আমাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতো সেই বোনটাও আমাকে দেখে দৌড়ে গিয়ে লুকাবে ওর রুমের মধ্যে। আস্তে করে আয়নার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে খুব যত্ন করে দেখবে নিজেকে। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলবে, "না, ঠিক আছি আমি!"

এদিকে প্রতিদিন যে মেয়েটা আমাকে একটু দেখার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে অপেক্ষা করত, সেই মেয়েটা ফেসবুকে নতুন কোন সুন্দর মুখের খোঁজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। পাশাপাশি প্রতিদিন সকাল বিকাল প্রার্থনা করবে যাতে করে আমার এই অলক্ষুণে মুখটা ওর আর কোনদিন দেখতে না হয়।

বাবা এসে বলবে, "দেখ আজ থেকে তুমি ঘরেই থাকবে। এলাকার লোকজন এসে নালিশ দিয়ে গেছে তোমাকে যাতে বাহিরে বের হতে না দেই।তোমাকে দেখে নাকি ওদের ছেলেমেয়েরা ভয় পায়!" বাবার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েই থাকতে পারবো, অন্য কিছুই নয়।

বাসায় বসে একাকীত্বে ভুগতে ভুগতে যখন সবচেয়ে কাছের বন্ধুটিকে ফোন দিয়ে বলব, "দোস্ত, খুব কষ্ট হচ্ছে রে! আমাকে নিয়ে কাল একটু বের হতে পারবি?" তখন ফোনের ওপাশ থেকে বন্ধুটি বলে উঠবে, "দেখ দোস্ত, কাল আমার সাথে আমার নতুন গার্লফ্রেন্ড থাকবে। এমন অবস্থায় যদি তোকে নিয়ে বের হই তাহলে হয়ত...!" এবারো আমি কান্নাটাকে লুকিয়ে হাসিমাখা কন্ঠে বলব, ঠিক আছে।

একসময় আর সহ্য করতে না পেরে বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে রাস্তায় বের হয়ে যাবো। রাস্তার লোকজন আমাকে দেখে হন্যে হয়ে ছুটতে থাকবে এদিক ওদিক। নিমিষেই ফাঁকা হয়ে যাবে পুরো রাস্তা। তখন আমি চলে যাবো কোন রেস্তোরাঁর সামনে। ভিতরে ঢুকতে গেলেই দারোয়ান হাতে বড় একটা কার্ড নিয়ে আমার সামে এসে দাড়াবে। কার্ডটিতে লেখা থাকবে, "এটা অসুন্দরদের জন্য
নয়।"

আসলেই এই পৃথিবী অসুন্দরদের জন্য নয়! এ পৃথিবী শুধু সুন্দরদের জন্য। আমরা সবাই সুন্দরের পূজারী। মুখে যে যাই বলিনা কেন ভিতরে ভিতরে সবাই সুন্দরটাকেই নিজের করে নিতে চাই। সুন্দর বাবা-মা চাই, সুন্দর ভাই-বোন চাই, সুন্দর প্রেমিক-প্রেমিকা চাই। আমি কিছু ছেলেমেয়েকে চিনি যারা তাদের বাবা-মা দেখতে সুন্দর নয় বলে লজ্জা পায়। এমনকি এরা তাদের বাবা-মায়ের পরিচয় দিতেও লজ্জা পায় শুধুমাত্র দেখতে অসুন্দর বলে।

সত্যি বলতে আজ আমরা একটা নিয়ম বানিয়ে ফেলেছি। যে নিয়মে সবচেয়ে অসুন্দর ছেলেটা সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটাকে ভালবাসতে পারবে না। সবচেয়ে অসুন্দর মেয়েটা সবচেয়ে সুন্দর ছেলেটাকে ভালবাসতে পারবে না। কী ভয়ংকর! কিন্তু কিছুই করার নেই। আমরা যে গায়ের রং দেখে সুন্দর আর অসুন্দরের পার্থক্য করি!

লিখতে লিখতে প্রসঙ্গ রেখে অপ্রাসঙ্গিক দিকে চলে যাওয়া ইদানীং রোগে পরিনত হয়েছে। বেশ ভালো বুঝতে পারছি যে এখানেও অপ্রাসঙ্গিকতা বিদ্যমান। থাকনা এভাবেই! লেখাটাই যখন অসুন্দরকে নিয়ে তখন আর...!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.