নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/allen.saiful

অ্যালেন সাইফুল

An inhuman never explain himself.

অ্যালেন সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন নাটকের কিছু নির্মম গল্প!

০১ লা মে, ২০১৬ রাত ১০:৩৬



(১)
-মা, আমাকে একটা নতুন সালোয়ার বানিয়ে দেবে?
-টাকা নাই। তোর বাবা এখনও বেতন পায়নি।
-বেতন পায়নি কেন মা? বাবা তো কতদিন থেকেই কাজ করছে।
-আর বলিস না, মা। এবারের মহাজন একটু অন্যরকম। টাকা-পয়সা ঠিকমত দিতে চায়না।
-তাহলে আমি কিভাবে বাহিরে যাবো? আমার সালোয়ার টা তো ছিড়ে গেছে।
-যতদিন তোর বাবা বেতন না পায় ততদিন বাহিরে যেতে হবেনা।
-কিভাবে সম্ভব! আমার যে পরশু দিন পরীক্ষা।
-কী আর করবি! আমার সালোয়ার টা পরে যাস।
-আমি তোমার সালোয়ার পরে কিভাবে যাবো? সবাই আমাকে দেখে হাসবে।
-তাহলে আর কিছুই করার নেই। পরীক্ষার চিন্তা বাদ দিয়ে রান্নাঘরে যা।
.
মেয়েকে রান্নাঘরে যেতে বলে মা মুঠোফোন টা হাতে নিয়ে দূরে
আড়ালে চলে যায়। এরপর মেয়ের বাবাকে ফোন দিয়ে বলে,
-রুবিনার সালোয়ার নেই। পরশু ওর পরীক্ষা। সালোয়ার বানিয়ে দিতে না পারলে
মেয়েটা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
-মহাজন তো টাকা পয়সা দেয়নি। এ মাসে দেবে বলেও মনে হচ্ছেনা। আমি এখন
কী করব! কারো কাছ থেকে ধার নেবার মত উপায়ও নেই। মহাজন কাউকেই টাকা
দেয়নি।
.
মেয়েটার মা মন খারাপ করে কান্নাটাকে মাটি চাপা দিয়ে রান্নাঘরে চলে যায়। ওদিকে বাবা নতুন করে কাজে মন দেয়ার ভান করে। আর মেয়েটা বাবার প্রতি অভিমান করে পড়াশোনা ছেড়ে দেবে বলে পন করে বসে।
এরপর সত্যি সত্যি মেয়েটা একটামাত্র সালোয়ারের জন্য তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়! :-(
.
(২)
বরকত তার পছন্দের মেয়েটাকে বিয়ে করেছে নয় মাস হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে মেয়েটাকে কিছুই দিতে পারেনি। বরকতের খুব ইচ্ছা সামনের ঈদে মেয়েটাকে নীল রংয়ের খুব সুন্দর একটা শাড়ি উপহার দিয়ে চমকে দেবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য ঈদের ঠিক পনের দিন আগে থেকে বরকত টাইফয়েড দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কাজে যেতে পারেনা। ফলে মাস শেষে মাত্র ৮০০ টাকা বেতন পায়।
.
এবার বরকত চিন্তায় ঘুমাতে পারেনা। দুদিন বাদে ঈদ কিন্তু তার হাতে মাত্র ৮০০ টাকা।
বরকত খুব করে চাচ্ছিলো তার লাল টুকটুকে বউটাকে একটা নীল শাড়ি কিনে দেবে। কিন্তু ভাগ্যের কষাঘাতে তাকে কিনতে হয় ৪০০ টাকা দামের অতি সস্তা এক কাপড়। যে কাপড় শুধু লজ্জা নিবারনের কাজই করে, অন্য কিছু নয়।
প্রশ্ন জাগতে পারে যে, বরকত আর ৪০০ টাকা দিয়ে কি করেছে? বরকত এটা দিয়ে তার মায়ের জন্যও একটা সস্তা শাড়ি কিনেছে।
.
বরকত নিজের স্বাদ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েও ভাগ্যের কষাঘাতে পরে একমাত্র বউ আর মা'কে নিজের পছন্দমত সাজাতে পারেনি। যার কষ্টে বরকত ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিল টাকা রোজগার করতে। কিন্তু সেই বরকত এখনও ফেরেনি।
.
এছাড়া আরো কিছু গল্প আছে যেখানে এক বাবা গরু চুরি করেছিলেন মেয়েকে লাল জামা কিনে দেবে বলে!
এক মা নিজের রক্ত বিক্রি করেছিল তার ছেলের পরীক্ষার ফি টাকা দেবে বলে!
.
উপরের গল্পগুলো জীবন নাটকে থেকে নেয়া! যেখানে অভিনয় করেছে কিছু শ্রমজীবী মানুষ। কতই না নির্মম এইসব মানুষের জীবন। আসুন আজ থেকে এদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই। একজন না পারি, নিজেকে দশজনে পরিনত করি। দেখবেন, আর কোন মেয়েকে সালোয়ারের জন্য পড়াশোনা বাদ দিতে হবেনা! কোন বরকতকে ঘর ছাড়া হতে হবেনা! কোন বাবাকে গরুচোর হতে হবেনা! কোন মা'কে রক্ত বিক্রি করতে হবেনা! :'(
.
সবাইকে আরেকবার,
"মে দিবস ২০১৬" - এর শুভেচ্ছা। :-)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১০:২৩

ফেরদৌস প্রামানিক বলেছেন: আরো কিছু অসাধারণ গল্পের অপেক্ষায় রইলাম ছোট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.