![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ধ্যান ও ধান্ধা একই সঙ্গে চালানোতে চেষ্টারত...... কিন্তু ধ্যানে মনোযোগী কম......আর ধান্ধায় পারদর্শী নই...
ছবির উৎস
(শুরুতে নিবেদনঃ ‘ বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৫’ উপলক্ষে এই লেখাটি লিখেছিলাম। বরাবরের মত গত ৫ জুন বিশ্ব ব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। অনিবার্য কারনবশতঃ দিনটিতে 'সামু' বন্ধ থাকায় পরিকল্পনামাফিক লেখাটি পোস্ট করা সম্ভব হয় নাই। সকল পাঠক ব্লগারকে পরিবেশ দিবসের বিলম্ব শুভেচ্ছা)
"শত কোটি জনের অপার স্বপ্ন,একটি বিশ্ব,করি না নিঃস্বঃ"
জুন মাসের ৫ তারিখ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)’। যে ধরণীতলে আমাদের বসবাস, জীবন-জীবিকার আচ্ছাদন তার দেখভাল করার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য একটি ‘প্রতীকী দিন’। ‘জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচী’ আয়োজিত এই দিনটি পরিবেশ সংরক্ষনের প্রয়োজনীয়তার প্রতি আমদের সচেতন করতে প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্ব ব্যাপী পালন করা হয়। এই বছরে এই দিবসের বিষয়বস্তু (Theme) হল ‘শত কোটি জনের অপার স্বপ্ন,একটি বিশ্ব,করি না নিঃস্ব (Seven Billions Dream, One Planet, Consume with Care)’ । ৭০০ কোটির এই মানব বসতি বাসযোগ্য রাখতে আমাদের কে আরও ধৈর্যের সাথে আরও সচেতন ভাবে ও সাবধানতার সাথে সম্পদ ব্যাবহারের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
প্রিয় পাঠক, মানুষ বরাবরই প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্দ অংশ, প্রতিবেশগত (Ecological) ভারসাম্য রক্ষায় এক জরুরী ও শক্তিশালী নিয়ামক। মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে ধরণীর এই সীমিত সম্পদ অপরিকল্পিত ও অস্থিতিশীল ব্যবহারের দরুন আজকে পৃথিবীর পরিবেশ ও প্রতিবেশ অনেকাংশে হুমকির সন্মুখিন, এমতাবস্থায় প্রতিবেশের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রানী হিসাবে মানুষই পারে সীমিত সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উল্লেখিত অবক্ষয়কে প্রশমিত করে ধরণীর প্রতিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে।
আইপিসিসি (Inter-Governmental Panel for Climate Change – IPCC) আশংকা প্রকাশ করছে যে একবিংশ শতকের শেষ দশকের দিকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৮ থেকে ৪.০ ডিগ্রী পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। ১ লক্ষ ৭৪ হাজার বর্গ কিলোমিটারের আমাদের এই ক্ষুদ্র দেশ আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের ৯৪তম হলেও জন সংখ্যার দিক থেকে আমারা বিশ্বের ৮ তম দেশ। বাংলাদেশের অবস্থান ও ভূপ্রকৃতিও অত্যন্ত জটিল, হিমালয়ের পাদদেশের এই দেশের ৮২ ভাগ ভূমিই নদী বিধৌত সক্রিয় প্লাবণভূমি, পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ দুইটি নদীর নিন্ম অববাহিকা আমাদের এই ক্ষুদ্র দেশ। এই জন্য আমাদের প্রতিবেশগত বৈশিষ্ট্য গুলিও বেশ সংবেদনশীল। সেই সাথে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন ধরণের জলবায়ুগত ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচীর সমীক্ষায় বাংলাদেশ বিশ্বের এক নম্বর সাইক্লোন-জলোচ্ছ্বাস ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এবং বন্যার দিক থেকে বিশ্বের ষষ্ঠ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। নিন্ম প্লাবণভূমি হওয়ার কারনে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে হিমবাহ গলন জনিত বন্যা ও সুমদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ভূখণ্ড ডুবে যাওয়ারও যথেষ্ঠ ঝুঁকি রয়েছে।
আমরা যারা এই দেশের বড় নগরী গুলোতে বসবাস করি তারা হয়তো মনে করি যে প্রকৃতি ও পরিবেশ বিষয় থেকে আমরা অনেক অংশে দূরে আছি, আমরা যে প্রকৃতির অংশ অথবা নগরও যে প্রকৃতির এক ধরণের রূপান্তরিত রূপ তা আমরা ভুলে যাই। আমাদের মনে পড়ে যখন তীব্র তাপমাত্রায় আমাদের প্রান ওষ্ঠগত হয় অথবা হঠাত বৃস্টিতে আমদের রাস্তাঘাট তলিয়ে তীব্র যানজট ও জলজট সৃষ্টি হয়ে আমাদের চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমারা প্রকৃতির এই ভারসাম্যহীতা উপলব্ধি করতে পারি। তখন আমাদের মনে পড়ে দিনে দিনে প্রকৃতিকে কিধরণের ভারসাম্যহীন অবস্থায় আমারা নিয়ে যাচ্ছি? তখন হয়তো শুধুই অন্যের উপড়ে দোষ চাপানো ছাড়া কিছুই করার থাকে না । আমাদের নগরায়ণ আরও পরিবেশ সন্মত আর নগরের প্রতিবেশকে বিবেচ্য রেখে হওয়া উচিত। শুধু নগরায়নের জন্য নগরায়ন নয় অধীবাসীদের মানবিক ভাবে বসবাসের জন্য নগরায়ন হওয়া উচিত। একমাত্র প্রকৃতির ভারসাম্য বজায়ের মাধ্যমেই এই ধরণের মানবিক নগর গড়ে তোলা সম্ভব।
আমরা একটু ঢাকার চারদিকে লক্ষ্য করে দেখি, দিনে দিনে চারদিকের অবারিত সবুজ প্রান্তর অথবা নিন্ম জলাশয় ও প্লাবণভূমি গুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতিগত ভাবেই এইগুলো বর্ষাকালের পানি ধরে রাখার আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যার ফলে আমাদের এই নগর প্লাবণ থেকে অনেকাংশেই রক্ষা পেয়েছে। ঢাকাকে ঘিরে চারটি নদী রয়েছে (তুরাগ, বুড়িগঙ্গা, বালু ও শীতলক্ষ্যা), এই নদীগুলোকে আমারা এতোও যথেচ্ছাই ব্যবহার করেছি যে সরকার বাধ্য হয়ে এই নদীগুলোকে “প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (Ecologically Critical Area – ECA)” হিসেবে ঘোষনা করেছে। সেই সাথে আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে (যদি আপনি না জেনে থাকেন) এই চারটি নদীর সীমানা চিহ্নিতকরনের জন্যে সরকার নদীগুলির দুই তী্র বরাবর স্থায়ী পিলার বসিয়ে দিয়েছে। আজকে নদীমাতৃক এই দেশে নদীগুলোকে দখলের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যে পিলার দিয়ে চিহ্নিত রাখতে হচ্ছে যা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা !
প্রিয় পাঠক! এই বিষয়গুলো জেনে আমরা হয়ত বেশ হতাশ হয়ে যাই। জাতিগত ভাবে বিভিন্ন অস্বভাবিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে স্বাভাবিক ভাবে ফিরিয়ে আনার সফলতার ইতিহাস আমাদের আছে। আর আমাদের এই ইতিহাস, জীবনযাপনের ঐতিহ্য ও লড়াকু স্বভাব আমাদেরকে সব সময়ই সাহস যোগায়। আমরা প্রকৃতির সাথে অভিযোজিত হতে হতে আর বংশপরম্পরায় সফল ভাবে বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলা করে এই ভূখন্ডে বসবাস করছি। আমরা চেষ্টা করলে অবশ্যই পরিবেশ, প্রতিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখেই সবধরনের উন্নয়ন পক্রিয়া চালাতে পারব। তাহলে আসুন আমরা এখন থেকেই শুরু করি গোষ্ঠীবদ্ধ ভাবে আর দলগত ভাবে তো করবই সেই সঙ্গে চেষ্টা করি একক ভাবেও এমন কিছু করতে যা এই ধরণীর পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক থাকতে কিছুটা হলেও যেন সাহায্য করে। ধরণীর এই সীমিত সম্পদ আমরা টেকসই ভাবে ব্যাবহার করি, সব সময় মনে রাখি আমাদের স্বপ্ন ও সম্পদ ব্যবহারের ইচ্ছা অসীম কিন্তু আমাদের ধরণীর সম্পদ সীমিত। তাই “শত কোটি জনের অপার স্বপ্ন,একটি বিশ্ব,করি না নিঃস্ব” আজকের এই শ্লোগানই হোক আগামীর পরিবেশ রক্ষার প্রত্যয়।
২৯ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:২৪
মানস চোখ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ 'প্রামানিক' ভাই!!!!!!
আসুন আমার সবাই মিলে আরও সচেতন হই আর সাথে সাথে সবাইকে সচেতন করি !!!!!
২| ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৮
জুন বলেছেন: আমাদের দেশ বিশেষ করে ঢাকার দিকে তাকালে দু:খ হয়। পরিবেশ সচেতনতার দিকে কারো খেয়াল নেই। কিভাবে আর কতভাবে আরো টাকা কামানো যায় সেই চিন্তায় ব্যস্ত সবাই। অপরিকল্পিত নগরায়নের অভিশাপ আমাদের ভোগ করতেই হবে শীঘ্রই।
সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।
২৯ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৩:২২
মানস চোখ বলেছেন: আমাদের প্রত্যেকেই সচেতন হতে হবে, চেষ্টা করতে হবে সুযোগ পেলেই নিজে নিজে এমন কিছু করতে যাতে পরিবেশের জন্য খুবই উপকার হয়।
আবার, সেই সঙ্গে যার যার জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করতে পারি, যখন বেড়াতে যাই চেষ্টা করতে পারি 'আউট দ্য বক্সে' দেখতে। সৌন্দর্যের পাশাপাশি পরিবেশ অবক্ষয়ের বিষয় গুলোও যদি চোখে পড়ে সেই বিষয় গুলো নিয়েও লিখতে পারি। তখন আলোর পাশাপাশি বাতির নিচের অন্ধকার সম্পর্কেও সবাই জানতে পারবে।
ধন্যবাদ 'জুন' আপা আপনার মন্তব্যের জন্য!!!!!!
৩| ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:১৪
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: একক অবস্থান থেকেই জাতিগত সচেতনতার শুরু, এই হল গে আশার কথা।
শুভেচ্ছা রইল।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৬
মানস চোখ বলেছেন: ধন্যবাদ 'প্রফেসর'..... অনেক দেরিতে প্রতিউত্তর করলাম...... আপনার সাথে সহমত.....!!!!!
ভালো থাকবেন সব সময় ..!!!!!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫২
প্রামানিক বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ