নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মা ও মাটির প্রতি মনের টান বুঝার জন্য অন্তত একবার বিদেশ ভ্রমন করুন

এপোলো

একটি বাংলা ব্লগ পেয়ে আমি খুব খুশি।আমি সকলের সাথে বাংলায় ভাব করতে পারব।

এপোলো › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিকুয়েন্স একটি খেলার নাম

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৫



বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সময় কাটানোর জন্য মানুষ কত কিছু করে! চায়ের দোকানে আড্ডা, পুকুরপাড়ে বসে তাস খেলা অথবা জিইসি'র মোড়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাতাস খাওয়া, এসব করতে করতেই বন্ধুদের সময় চলে যায়। এসবে যাদের ভাল লাগে না, তারা সিনেমা দেখে, ক্রিকেট খেলে; অনেকে আবার মারামারিও করে। মারামারি করে পরে চা খেয়ে মিটমাট করে আড্ডা দেয়। আজকে সেই আড্ডাকে আরও প্রানবন্ত করতে একটা নতুন খেলার কথা বলতে এসেছি। খেলার নাম সিকুয়েন্স। এইটা একটা বোর্ড গেম।
সিকুয়েন্স খেলার উৎপত্তি, প্রচার-প্রসার, কিংবা জনপ্রিয় হয়ে উঠার ইতিহাস আমি জানি না। তবে কেমনে এই খেলা খেলতে হয় সেটা আমার জানা আছে। খুবই সহজ একটা খেলা, দেখতে অনেকটা দাবা স্টাইলে খেলতে হয়, তবে দাবা'র মত অত মাথা ঘামাতে হয় না। তাহলে শুরু করা যাক।

প্রথমেই আসি বোর্ড পরিচিতিতে। যেকোন খেলা খেলতে গেলে খেলার মাঠ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা থাকা আবশ্যক। সিকুয়েন্স খেলার মাঠে মোট ১০০ টা ঘর আছে। ১০x১০ গ্রিডে ১০০ টা কার্ড সাজানো আছে। সাধারন তাস খেলার ৪৮ টা কার্ড ২ বার করে ব্যবহার করে ৯৬ টা ঘর বানানো, আর ৪ কোনায় ৪ টা সরকারি ঘর। মোট ১০০ টা। এইগুলোর মধ্যে জ্যাক এর জন্য কোন ঘর নাই। জ্যাক এর ব্যাপারটা এখানে স্পেশাল, একটু পরে আলোচনা করছি। ১০০ টা ঘরে বসানোর জন্য ১০০ টা গুটি আর ২ সেট তাস ব্যবহার করা হয়।

এখন আসি খেলোয়াড় সংখ্যা নিয়ে। একটা বোর্ডে ২, ৩, ৪, ৬, ৮, ৯, ১০ অথবা ১২ জন খেলোয়াড় একসাথে খেলতে পারে। ২ অথবা ৩ দলে বিভক্ত হয়ে খেলোয়াড়েরা তাদের দলের জন্য লাল, নীল অথবা সবুজ রঙ এর গুটি নিয়ে বৃত্তাকারে বসে, মাঝখানে বোর্ডটা থাকে। বসার সময় একই দলের কোন খেলোয়াড় যেন পাশাপাশি বসতে না পারে, সে ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখা উচিত। শুরুতেই একজন ডিলার শাফল করা কার্ড থেকে সবার হাতে ক্রমানুসারে একটা করে কার্ড দিতে থাকবে। ক্ষেত্রবিশেষে একেক জনের হাতে ৩ থেকে ৭ টি কার্ড থাকে। দুইজনে খেললে ৭ টা করে কার্ড নেয়া হয়, আর ১২ জনে খেললে ৩ টা করে।

আসেন খেলা শুরু করি। প্রত্যেক খেলোয়াড় তার হাতে থাকা কার্ডগুলো থেকে একটা করে কার্ড বাছাই করবে আর বোর্ডের সংশ্লিষ্ট ঘরে তার দলের একটা গুটি বসাবে। যে কার্ডটা খেলা হয়ে গেছে, সেটা ফেলে দিয়ে সে শাফল করা কার্ডের স্তুপ থেকে আরেকটা কার্ড নিয়ে নেবে। এরপর পরের জন একই উপায়ে একটা গুটি খেলবে। এই খেলার চুড়ান্ত লক্ষ্য হল এক লাইনে ৫ টা গুটি বসানো। কোন একটা দল যেকোন দিকে ৫ টা গুটি মিলাতে পারলে সেটাকে একটা সিকুয়েন্স হিসেবে ধরে নেয়া হবে। ৩ দলে মিলে খেলা হলে ১ টা সিকুয়েন্স যারা আগে মিলাতে পারবে তারা জয়ী, আর ২ দলের খেলায় ২ টা সিকুয়েন্স মিলাতে হবে জয়ী হওয়ার জন্য। খেলতে খেলতে কারও হাতে জ্যাক চলে আসলে সে আলাদা ক্ষমতা দেখাতে পারে এই খেলায়। সর্বমোট ৮ টা জ্যাক আছে এখানে। কিন্তু সেগুলোর নামে কোন ঘর নাই। কারও হাতে একচোখা জ্যাক থাকলে সে বোর্ডের যেকোন যায়গা থেকে বিরোধী দলের যেকোন একটা গুটি তুলে দিতে পারে। আর দুই চোখা জ্যাক থাকলে যেকোন ঘরে নিজ দলের একটা গুটি বসাতে পারে। অন্য দলের সিকুয়েন্স মিলানো আটকানোর জন্য, কিংবা নিজদলের সিকুয়েন্সের শেষ গুটি খেলার জন্য এই জ্যাকগুলো বেশি ব্যবহৃত হয়। সব খেলোয়াড়ের লক্ষ্য থাকে নিজের আখের গোছানো, অথবা অন্যের পাকা ধানে মই দেয়া। একারণে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে এই খেলাকে কুচক্রী খেলা হিসেবেও অনেকে ডেকে থাকে।

বর্ণনা শুনে খেলাটা কেমন লাগলো জানি না, তবে খেলতে বসলে মজা হয় অনেক বেশি সেটা বলতে পারি। সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, অনেকগুলো বন্ধু-বান্ধব মিলে একসাথে সময় কাটানো যায়। খেলার মাঝে আড্ডা হয় নন-স্টপ, মারামারি হওয়ার কোন চান্স নাই। এই খেলার জন্য বয়সের হিসাব করা লাগে না, যেটা বিশাল বড় একটা সুবিধা। দেশে এই বোর্ড পাওয়া যায় কিনা আমি জানিনা। তবে অনলাইন কেনাকাটার যুগে সেটা তেমন কোন বিষয় বলে মনে হয় না। সময় সুযোগ পেলে একবার খেলে দেখুন এই খেলা, মজা পাবেন তাতে কোন সন্দেহ নাই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: আড্ডার মজা আলাদা আবার এই খেলার মজা আলাদা।

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫৩

এপোলো বলেছেন: চিন্তা করেন দুইটা মজা একসাথে করলে কেমন লাগবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.