নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য অন্বেষক

আরব বেদুঈন

আমি তো শুধু প্রাচারক মাত্র

আরব বেদুঈন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক বিশ্ব তত্ত্ব: ভবিষ্যত পৃথিবী নিয়ে ইহুদী পরিকল্পনা

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬




(এখানে ইহুদী এবং ইহুদীবাদ বলতে বিশেষ শ্রেনীর রক্ষনশীল ইহুদী সম্প্রদায়কে নির্দেশ করা হয়েছে যারা ‘এক-বিশ্ব’ তত্ত্ব সম্পর্কে অবগত এবং এর বাস্তবায়নে কাজ করাকে ঈশ্বরের পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করেন। তালমূদ, তোরাহ সহ যে সকল পুস্তকের কথা এখানে বলা হয়েছে তার অনেকগুলোই এই সময়ের ইহুদী রাব্বিগন ধর্মগ্রন্থ হিসেবে স্বীকার করেন না, তবে এটা সত্য যে এই তত্ত্ব ইহুদীধর্মের মূল বিশ্বাসের একটি অংশ।এক বিশ্ব তত্ত্ব নিয়ে ইহুদীদের কি ভয়ং কর পরিকল্পনা আছে আর বর্তমান বিশ্ব কত দ্রুত সে দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তা প্রোটোকল পড়লে বুঝবেন।বর্তমানে নারী অধিকার নামে যে নারী উলঙ্গ করণ প্রক্রয়া চলছে সেটাও এই এক বিশ্ব তত্ত্বেরই ফল।আর এই প্রোটোকল বাংলাতে অনুবাদ করে নাম দেওয়া হয়েছে ইহুদী চক্রন্ত)

প্রাচীন ইহুদী ধর্মগ্রন্থে প্রতিশ্রুত ‘এক বিশ্ব’ ধারনার সাথে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত।সারা পৃথিবীতে একটি যুদ্ধ বিদ্বেষ হানাহানি বিহীন রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সেখানে সমস্ত জাতি ধর্ম ও সংস্কৃতি সকল মত আদর্শ মিশে গিয়ে সত্য, সাম্য আর ন্যায়ের বিধান অনুসারে পরিচালিত হবে- এটাই এই তত্ত্বের মূল কথা।



"..The people of Israel will conquer, spiritually, the nations of the earth, so that israel will be made high above all nations in praise, in name & in glory.." (The jewish Utopia by Michael Higger, p31)
‘এক বিশ্ব’ এর অনুরূপ তত্ত্ব আমরা খুঁজে পাই অনেক প্রতিষ্ঠিত ধর্ম ও প্রাচীন দর্শনের বইয়ের পাতায় পাতায়। প্যাগান ধর্মের মিলেনিয়াম পালন, খৃষ্ট ধর্মের যিশুর পুনরাগমন, ইসলাম ধর্মের ইমাম মেহেদী ও খিলাফত ইত্যাদি তত্ত্ব সমূহের ভেতর বিভিন্ন অনৈক্য থাকলেও সকলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একই। সেটি হলো বিশ্বকে একটিমাত্র নেতৃত্ব ও আদর্শের নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা।প্রায় সকল প্রতিষ্ঠিত ধর্মগ্রন্থে এর উল্লেখ যেমন আছে সেরকম ভাবে উদ্দেশ্য সাধনের বিভিন্ন কর্ম পন্থাও নির্দেশ করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় খৃষ্ট ধর্মের ‘জীহোভার সাক্ষ্য’ অনুসারী দের কথা, অথবা ইসলাম ধর্মের ‘শিয়া’ মতাবলম্বী দের কথা, যারা সুনির্দিষ্ট ও প্রকাশ্য ভাবে সারা বিশ্বে নিজেদের আদর্শকে প্রচার করে চলেছে। আবার প্যাগান সম্প্রদায় ক্ষুদ্র এবং প্রচার বিমুখ হওয়ার কারণে তাদের তত্ত্ব রূপক আশ্রয়ী আর বাস্তবতা থেকে ছিটকে ধর্ম গ্রন্থের পাতায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম একমাত্র ইহুদী সম্প্রদায়, তারা নিজেদের ধর্ম পালন ও প্রচারে অনাগ্রহী কিন্তু নিজেদের স্বতন্ত্র রাষ্ট্র অর্থাৎ যাকে কেন্দ্র করে এই তত্ত্ব বাস্তবায়িত হবে তার সুরক্ষার প্রতি রহস্যজনক ভাবে সচেতন।

এই কারণেই ইহুদী ধর্মের ‘এক বিশ্ব’ তত্ত্বটিকে আমি মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখছি, কারণ সব যুগেই ইহুদী ধর্ম নিজের উপর রহস্যের একটা চাদর জড়িয়ে রেখেছে। তাদের পবিত্র গ্রন্থসমূহ দুষ্প্রাপ্য এবং ধর্ম চর্চার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ অ-ইহুদীদের দৃষ্টি সীমার বাইরে পালিত হয়। একই কারণে তালমূদ, তোরাহ ও নাম না জানা যে সব গ্রন্থ এই তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা করেছে সেগুলো অনেক ইহুদীর কাছেও অপাঠেয়। তাই এই বিষয়ে যে সামান্য উল্লেখ বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া যায় এবং এর লক্ষ্যে তাদের পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করেই আমাদের অনুমান করে নিতে হবে এই তত্ত্বের খুঁটিনাটি অনেক বিষয়।

এক বিশ্ব তত্ত্বের মূল লক্ষ্য ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠা, আধ্যাত্মিক বা নিছক ধর্মীয় উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে নয়, বরং সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে। আর সেই রাষ্ট্রের সীমারেখা হবে পৃথিবীর সীমারেখার সমান অর্থাৎ সেখানে আর কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র থাকবে না। এমনকি থাকবেনা অন্য কোনও ধর্ম-মতাদর্শ বা জাতি। সমস্ত পৃথিবী মহাবিশ্বের ইতিহাসে প্রথমবারের মত একত্রিত হবে এবং তারা এক মহান নেতার অনুগত হয়ে ‘সত্য’ এবং ‘ন্যায়ের পথে’ নিজেদের পরিচালিত করবে।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে ‘সত্য’ এবং ‘ন্যায়’ এই শব্দ দুইটিকে এক বিশ্ব তত্ত্বে কি অর্থে নেয়া হয়েছে। প্রতিটি ধর্মেই এই শব্দ দুইটিকে নিজেদের আদর্শের প্রতি অনুগামিতা অর্থে নেয়া হয়েছে, একজন মুসলিম নিজের ধর্ম পালনের মাধ্যমে নিজেকে সত্যের অনুগামী মনে করে, অপর পক্ষে একজন খৃষ্টান সে তার নিজের ধর্মে প্রদর্শিত পথকেই সত্য ও ন্যায়ের পথ মনে করে। এখন এখানে সত্য ও ন্যায়ের পথ বলতে কি ইহুদীবাদ কে বুঝানো হয়েছে?

রাব্বিগন এর ব্যাখ্যায় বলেছেন ‘একটি পবিত্র হাত’ বিশ্বের সমস্ত জনপদে পৌঁছে যাবে এবং তাদেরকে সত্য ও মিথ্যা, ন্যায় এবং অন্যায়ে ভাগ করে দেবে। যারা এর পক্ষে যাবে তারা পবিত্র রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হবে আর যারা এর বিপক্ষে যাবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। এর পরও সন্দেহ থেকে যায় সেই পবিত্র হাতটি ইহুদীবাদ নয় তো? লক্ষণীয় যে, সমস্ত ধর্মই কিন্তু শুধু নিজেদের অনুসারীদেরকেই প্রতিশ্রুত রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিশেষ করে যেখানে ইউটোপিয়া বিষয়ে সবচেয়ে বেশী বলা হয়েছে সেই তালমূদ এতোই রক্ষণশীল যে, মোজেস প্রতিবেশীদের প্রতি সদাচারের যে আদেশ দিয়েছেন তালমূদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী তা শুধুমাত্র ইহুদী প্রতিবেশীদের জন্যই প্রযোজ্য।

Dr Michael Higger এর লেখা ‘The Jewish Utopia’ বইতে আমরা এই বিষয়ক কিছু ভবিষ্যতবাণী দেখতে পাই। সেখানে বলা হয়েছে সেই সময় ইজরাইল এবং এর অনুগত জাতি সমূহের সাথে গগ ও মাগাগ এর নেতৃত্বে বিরুদ্ধবাদীদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। জেরুজালেমের আশেপাশেই কোথাও সংঘটিত এই যুদ্ধে গগ ও মাগাগ সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হবে এবং সেখান থেকেই সেই স্বর্গরাজ্য পত্তনের কাজ শুরু হবে।

কারা হবে সেই স্বর্গরাজ্যের অধিবাসী? বলা হয়েছে যারা এই তত্ত্বের প্রতি নিজেদের আনুগত্য দেখাতে সক্ষম হবে শুধুমাত্র তারাই সেখানে প্রবেশাধিকার পাবে। স্বাভাবিক ভাবেই তাই অ-ইহুদী কারও পক্ষে সেখানে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র অ-ইহুদী না, ইহুদী দের মধ্যেও যারা সত্য ও ন্যায়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তাদেরকেও দমন করা হবে সেই যুদ্ধে। এছাড়াও এই দলে ফেলা হয়েছে অসৎ শিল্পপতি এবং মুনাফাখোরদের, সোজা ভাষায় আমরা বুর্জোয়া বলতে যাদেরকে বুঝি তাদের এবং তারা যারা এই তত্ত্ব বাস্তবায়নে সামর্থ্য কিন্তু অনাগ্রহী।

বিরুদ্ধবাদীদের নেতা হিসেবে গগ এবং মাগগের কথা বলা হলেও স্বর্গরাজ্যের অধিপতি হিসেবে যিনি অভিষিক্ত হবেন তার নাম উল্লেখ করা হয়নি কোথাও, তবে কিং ডেভিডের মত একজন রাজার কথা বলা হয়েছে স্পষ্টভাবেই। সেই রাজা যুদ্ধের পর অবশিষ্ট জাতিসমূহকে পদানত করবেন এবং সমগ্র পৃথিবীজুড়ে একক রাজ্য প্রতিষ্ঠা করবেন।


"I consider that the United Nations ideal is a Jewish ideal." (Ben Gurion, 1948)
এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে বিশ্বের জাতি সমূহকে একত্র করা। ইহুদী গবেষক দের মতে, জাতি সমূহ প্রথমে একত্ববাদ ও বিভিন্ন মানবিক উদ্দেশ্যে একত্রিত হবে। স্বাভাবিক ভাবেই রাব্বীগন জাতিসংঘকে জায়নবাদী সংগঠন হিসেবে দাবী করে থাকেন। এর সাক্ষ্য আমরা পাই বিভিন্ন সময় ইহুদী নেতা দের বানী বা বিবৃতিতে। ১৯৪৮ সালের ১৬ই অগাস্ট টাইম ম্যাগাজিনের সাংবাদিককে এক প্রশ্নের উত্তরে বেন গরিওন জাতিসংঘকে ইহুদী উদ্ভাবন এবং এর কর্ম প্রনালীকে ইহুদী বান্ধব বলে দাবী করেন। আর ইজরাঈল রাষ্ট্রের পত্তনেও এই সংগঠনের ছিলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা।

এছাড়া সার্বজনীন মানবাধিকার সনদ এবং জেনেভা কনভেনশন সহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সনদ ও জাতিসংঘের বিভিন্ন দলিল প্রস্তুতিতে ইহুদীরাই অগ্রগণ্য অবদান রেখে আসছে যাকে আমরা ‘এক বিশ্ব’ তত্ত্ব বাস্তবায়নের প্রাথমিক পরিকল্পনা হিসেবে ধরে নিতে পারি।বিশ্বের জাতিসমূহকে এক-টেবিলে আনার পদক্ষেপ নেয়া হলো, এবার আসা যাক তাদের এক পতাকার নিচে আনার প্রক্রিয়াকে।


"Within the ranks of communism is a group of this party, but it does not stop there. To its leaders communism is an incident.." (Chicago Daily Tribune, June 19, 1920, p-1)
জার্মান ইহুদী কবি হেনরিখ হেইন ছিলেন কার্ল মার্ক্সের বন্ধু এবং সহকর্মী, পরবর্তীকালে গঠিত কমিউনিস্ট পার্টির এই যুব-নেতাকে যখনি ইহুদীবাদ এবং সমাজতন্ত্র বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হতো তিনি বলতেন এই মতাদর্শিক বিভেদ সাময়িক, খুব শীঘ্রই সমাজতন্ত্র নতুন রূপে এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পৃথিবীর বুকে পুনরায় আবির্ভূত হবে। সেই পরিবর্তনের জন্য সমাজতন্ত্র একটি ধাপ মাত্র। দেশে দেশে সমাজতান্ত্রিক বিভিন্ন বিপ্লবের পরিকল্পনায় ইহুদী লবি যেমন অবদান রেখেছে তেমনি এর পতনের জন্যও তারা সমানভাবেই অবদান রেখে গেছেন। কারণ ইহুদী নেতাদের কাছে শুধু সমাজতন্ত্র কেন, সকল মত ও পথের শেষ গন্তব্য হলো ইজরায়েলী জাতির নেতৃত্বে সেই ‘ঈশ্বরের রাজ্য’ প্রতিষ্ঠা করা। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে যা যা করা দরকার তা-ই করে চলেছে জায়নবাদী সংগঠন সমূহ এবং ইজরায়েলী সরকার।

১৯২০ সালে শিকাগো ট্রিবিউন গোয়েন্দা রিপোর্টের বরাত দিয়ে একটি ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ফাঁস করে। সেখানে বলা হয় সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা জায়নবাদী গ্রুপের কথা, যারা সমাজতন্ত্রের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে নিজেদের বিকশিত করে চলেছে।

এক বিশ্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় ধাপ শেষ হবে ইজরাইল জাতিকে অন্য জাতিসমূহের উপর আধিপত্য অর্জন করানোর মাধ্যমে। আগেই বলা হয়েছে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হবে যার মাধ্যমে ইহুদী-পন্থী জাতি সমূহ বিজয়ী হবে, কিন্তু অবশিষ্ট সকল জাতির উপর মনস্তাত্ত্বিক প্রাধান্য অর্জনের জন্য একটি যুদ্ধজয়ই যথেষ্ট নয়।

নিজেদের আধিপত্য নিশ্চিত করতে ইজরাঈলীদের কে ছয়টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছেঃ

প্রথমত ইজরাইলী জাতির ভেতর ইহুদী ধর্মের সত্য ও ন্যায়ের মূলনীতি গুলো সম্পূর্নভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। লক্ষনীয় যে তালমূদে শুধুমাত্র ইহুদীদের আভ্যন্তরীন সদাচার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে, অর্থাৎ সদাচার বা শান্তির বানীসমূহ অইহুদীদের প্রতি অবশ্য পালনীয় নয়।
প্রত্যেক ইহুদী নাগরিককে কঠোর ধর্মীয় অনুশাসনের ভেতরে নিয়ে আসতে হবে এবং এমনভাবে যে তা যেন অন্তত সমাজে দৃশ্যমান হয়।
সমগ্র ইহুদী জাতিকে মোজেসের অনুসারী হিসেবে এক বিন্দুতে নিয়ে আসতে হবে, এটা করা সম্ভব হলে তারা মোজেসের সময়েরর মত হেটে হেটে নীলনদ পাড়ি দিতেও সক্ষম হবে।
ইজরাইলকে সারা বিজ্ঞান আর শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু তে পরিনত করতে হবে। বিজ্ঞান, শিল্পকলা, সঙ্গীত ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে ইহুদীদের অবদান রাখতে হবে।
ইজরাঈলের একক শক্তি হিসেবে তাদের ভেতরের অন্তদ্বন্দ লোপ করতে হবে এবং সমস্ত ইজরায়েলী নেতাকে একত্রিত হয়ে পরবর্তী সকল সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখানে তাদের আভ্যন্তরীর রাজনৈতিক ঐক্যে অর্জন করতে বলা হয়েছে যেন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনও বিরোধীপক্ষ ইহুদীদের ভেতরে না থাকে।
ইজরাঈলই একমাত্র ধর্ম হিসেবে একত্ববাদ এবং পবিত্র গ্রন্থের কথা বলবে, অর্থাৎ এই পর্যায়ে এসে সমস্ত প্রতিষ্ঠিত ধর্মের মূল কাঠামো ভেঙ্গে দিতে হবে।আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন।
যখন ইজরাইল জাতি এই সকল নির্দেশনা মেনে বিরুদ্ধবাদীদের যুদ্ধে পরাজিত করতে সমর্থ হবে তখন পৃথিবীর বুকে অন্য কোনও রাষ্ট্রের পতাকা থাকবে না, থাকবে না কোনও ধর্ম বা মতাদর্শ, শুধুমাত্র কিছু সাংস্কৃতিক সংঘ ছাড়া।বলা হয়েছে যে জাতিটি এই যুদ্ধপরবর্তী স।ময়ে নেতৃত্ব দেবে তারা হবে শক্ত, দীর্ঘদেহী, লম্বা এবং সুদর্শন একটি জাতি।যে সমস্ত জাতির বিরুদ্ধে ইজরায়েলী যুদ্ধে নামবে তারা হলো পুঁজিবাদী রাষ্ট্র, ইজরাইলের শত্রু এবং যারা বিশ্ব ভাতৃত্বের মাঝে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করতে অনাগ্রহী।

এই সকল রাষ্ট্র সমূহকে অবশ্যই যুদ্ধের আগেই ইহুদীবাদের পতাকার নিচে আসতে হবে, নাহলে পরবর্তীতে তাদেরকে ঐশী বানী অনুযায়ী বিচারের মুখোমুখি করা হবে। আর যে সকল মানুষ এই ভয়াবহ যুদ্ধ-লীলার পর বেঁচে থাকবে তারা বেশীরভাগই হবে কৃষক বা দিনমজুর শ্রেণীর খেটে খাওয়া মানুষ। রাষ্ট্রের ধরন হবে অর্থনৈতিক সাম্যবাদ, মানে কিছুটা সংশোধিত সমাজতন্ত্র। সম্পদ আহরণের সীমা বেধে দেয়া হবে এবং থাকবেনা সম্পত্তির উত্তরাধিকার।

সব শেষের প্রশ্ন হলো, কখন ঘটবে এই সব ঘটনা? এই ইউরোপিয়ান রাজ্য প্রতিষ্ঠার পথে কতটুকু এগিয়েছে ইজরায়েলী? তাদের এই কাজের রোডম্যাপ টাই বা কেমন?প্রথম ধাপ অনুসারে জাতিসংঘ গঠিত হয়েছে, তাদের বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে জাতীয়তার বাইরে এসে মানুষ নিজেদের বিশ্ব নাগরিক হিসেবে ভাবার সুযোগ পাচ্ছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী মানবিক কিছু উদ্দেশ্য নিয়েই জাতিসমূহ একত্রিত হয়েছে যেটা পরবর্তীকালে ‘ঈশ্বরের রাজ্য’ প্রতিষ্ঠায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে।


"..Nations will come, nations woll go. Ism's have created nation, Ism's will destroy nation. Capitalism has bought happiness woes to mankind, Communism may bring its paradise & hells to mankind. Doctrines have shaped the destinies of peoples, doctrine may bring destruction to peoples.."
এর পর আসে অন্য মতাদর্শ সমূহের কথা। জায়নবাদীদের অনুমান সত্য করে সমাজতন্ত্র ইতোমধ্যেই নিজে বিলুপ্ত হয়েছে কিন্তু এর প্রভাব বলয় থেকে মুক্ত হয়নি বিশ্ব। এখন আর কোথাও উচ্চ স্বরে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের কথা বলা হয় না, তাদের মিছিল মিটিং এ লোক হয় না কিন্তু তারপরও কমিউনিস্ট পার্টি টিকে আছে, নামে বেনামে অসংখ্য দল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বেড়াচ্ছে এই সমাজতন্ত্রেরই নামে। বামপন্থী নামের কতিপয় সুশীল গোষ্ঠী আছে যারা বিভিন্ন দেশের রাজনীতি পর্যালোচনা করছে, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করছে। তারা সমাজতন্ত্রের ধারক বাহক কিন্তু প্রচারক না। এদের মাধ্যমে সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন। তাই এই বিপ্লবী গোষ্ঠীকে বিপ্লব তথা নৈরাজ্যের রসদ যুগিয়ে দেয়া এবং সুশীল বুদ্ধিজীবী শ্রেণী তৈরির মাধ্যমেই ইহুদীবাদী স্বার্থ হাসিল করা হচ্ছে।


"Dividing into groups & misleading islamists are also a part of their plan.."
এছাড়া মুসলিম বিশ্ব খেলাফত এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য এখনো ক্ষুদ্র পরিসরে দেশে দেশে কাজ করে যাচ্ছে। উদার ডানপন্থী দল সমূহের জনপ্রিয়তা ইহুদীবাদের সফলতার পথে অন্তরায়, তাই কমিউনিস্টদের মত এই ক্ষেত্রেও জঙ্গি সংগঠন গুলোকে রসদ যুগিয়ে দিতে হবে আর তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের দায় চাপিয়ে দিতে হবে উদার ডানপন্থী দল সমূহের উপর। ইসলাম বা কমিউনিজম দুইটার প্রতিষ্ঠাই ‘এক বিশ্ব’ তত্ত্ব বাস্তবায়নের অন্তরায় তাই তাদেরকে লক্ষ্যচ্যুত না করতে পারলে কখনোই ইহুদীবাদ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভবপর হবে না। যখন ‘কম্যুনিস্ট’ আর’ ইসলামিস্ট’ শব্দ দুইটি গালিতে পরিণত হবে তারপর শেষ শত্রু হিসেবে অবশিষ্ট থাকবে পুঁজিবাদী বিশ্ব এবং আমেরিকা।

যেহেতু পুঁজিবাদের দৃশ্যমান কোনও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী আপাতত সামনে নেই তাই আপনাআপনিই একদিন এর পতন ঘটবে এবং বিশ্বজুড়ে আদর্শিক শূন্যতা দেখা দেবে। তাই যতদিন পর্যন্ত পুঁজিবাদী বিশ্ব তথা আমেরিকার প্রাধান্য অটুট থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমেরিকা ও ইজরাইলের মিত্রতা, ইজরাইলের গোপন জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা এবং দেশে দেশে গুপ্তচর বৃত্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে ‘এক বিশ্ব’ তত্ত্বের রোডম্যাপ।যখন এই আদর্শিক শূন্যতা দেখা দেবে তখন মানুষ ধর্ম তত্ত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। এর ফলে তারা আশ্রয় নেবে মানবতাবাদ, অইশ্বরবাদ এবং অন্যান্য প্রচ্ছন্ন মতবাদ সমূহে যেগুলোর সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যাখ্যা নেই অর্থাৎ যা নিজের মত করে ব্যাখ্যা দেয়া যায়। একই সাথে পুঁজিবাদের পতনে দেশে দেশে নৈরাজ্য আর হতাশার ফলে সকল রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এই অবস্থায় লক্ষ্য করুন ইজরায়েলীদের ছয়টি নির্দেশনার শেষটিতে, সেখানে বলা হয়েছে, “ইজরায়েলী একমাত্র ধর্ম হিসেবে একত্ববাদ এবং পবিত্র গ্রন্থের কথা বলবে।”

অর্থাৎ এই সময়ের ভেতরেই ইহুদী রাষ্ট্র উপরের পাঁচটি নির্দেশনা পূরণ করে নিজেদের প্রস্তুত করে তুলবে, রাষ্ট্র-যন্ত্রের ভেতর লুকানো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে খোলস মুক্ত করে ঐশ্বরিক বিধানের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে, শিল্প সাহিত্য ও বিজ্ঞানে উৎকর্ষতা অর্জন করে সেই প্রতিশ্রুত নেতার পেছনে সমস্ত মিত্রদের নিয়ে বিরুদ্ধবাদীদের মোকাবেলায় এক মহা যুদ্ধে লিপ্ত হবে প্রাচীন গ্রন্থের প্রতিশ্রুত সেই ইউটোপিয়া প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তারা যতটা একটিভ মুসলমান নামধারীরা ততটাই অচেতন!

তারা পরিকল্পনা করছে করুক- একজন বিশ্বাসী হিসেবে এইটুকু বিশ্বাস করি- মহান আল্লাহর সেই বাক্য
-তারা ষড়যন্ত্র করছে- আমিও পরিকল্পনা করছি। নিশ্চয়ই আমি মহাপরিকল্পনাকারী! তাদের ষড়যন্ত্র মাকড়শার জালের ন্যায় অথবা তারচেও ঠুনকো!

শুধু নিজেদের জ্ঞানের আর আত্মার শুদ্ধতার দিকে গভীর অভিনিবেশ ঠিক রাখুন। নিশ্চয়ই আল্লাহেদ্রাহীরা ফেরাউনের ন্যায় ভেসে যাবে অথবা তারচে কঠিন কিছুতে।

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


যুদ্ধহীন, দ্বন্দ্বহীন, সবাই সুখে শান্তিতে থাকবে, সেই রকম "এক বিশ্ব তন্ত্র" যদি ইহুদীরা আনতে পারে, বিশ্বে সবার ইহুদী হওয়াই উচিত।

পোষ্টর ভাবনাচিন্তা জ্বিনভুতের উপর বিশ্বাসের মতই আজগুবি

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪৩

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ইহুদি-খ্রিষ্টানরা যেখানে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠ করছে সেখানে আমরা হুজরা খানায় তসবিহ নিয়ে বসে আছি। পদ্মার চরে বোমা গ্রেনেড মজুদ করে পরীক্ষামূল বিস্ফারণ ঘটাচ্ছি

ইহুদিরা যেখানে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করছে সেখানে আমরা দুরুদে 'বিছালীর' তালিম নিচ্ছি। রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠে কখনো কারো কাঁথার নিচে গিয়ে সুঘ্রাণ নিচ্ছি আবার কখনো সেই সুঘ্রাণ নেওয়া শেষ হলে সেখান থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি।

মুসলমমানদের অবস্হা এমন, মানুষে জিগায়না নিজে ষোলআনা ভাব ধরছি। কেউ কাউকে মানছিনা। অর্থাৎ নিজেকে বড় পন্ডিত মনে করছি। তারপর কিছু হলে চিৎকার দিয়ে উঠছি- সব ইহুদি-নাসারাদের ষড়যন্ত্র!

তোদের মধ্যে কেউ যদি কারো পেটে লাথি মারে তখন তার বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে নামিস। তোরা বড় হবি কিভাবে?

এখন কথা হলো, তোরা যদি এত পন্ডিত হছ, তাহলে তোদের উপর ইহুদি নাসারা কিভাবে ষড়যন্ত্র করে। সত্যি কথা বলতে কি তোরা (মুসলমানক পন্ডিতি জাহিরকারীরা) আবাল........ লুল...

৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৪

মোকতার বলেছেন: অত্যান্ত দুশ্চিন্তার বিষয় :(
আমরা আজ তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছি নিজেদের অজান্তে ।। এদের বিষয়ে সকলকে জানানো জরুরী । যতটুকু সম্ভব প্রচার করুন ।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ .।

৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: এই টাইপ লেখা কি ফ্যান্টাসি লেখা বলা যেতে পারে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.