নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল

আরাফাত শাহরিয়র

আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস, মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস! আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর, আমি দুর্বার, আমি ভেঙে করি সব চুরমার! আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল! আমি মানি না কো কোন আইন, আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!

আরাফাত শাহরিয়র › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা থেকে কোলকাতা আর বাংলাদেশী এয়ারলাইন!

১০ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪২

ইউনাইটেড এয়ারে চেপে কোলকাতা নেমে দিল্লী যাবো। কয়েক ঘণ্টা রীতিমত অনড় অবস্থায় দাঁড়িয়ে থেকে পা বাদ দিয়ে যখন হাতে ভর করে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা শুরু করলাম, ঠিক তখন ইমিগ্রেশন পার হলাম।



এবার এ্যায়ার লাইনের লবিতে ঢোকার মুখে সিকিউরিটি চেকিং’এ আমার হাতের ল্যাপটপের ব্যাগটা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেখানে অবশ্য বড়সড় লাইন টাইন নাই। পরীক্ষা করছে হাসপাতালের আয়ার মত দেখতে একজন মোটা মহিলা আর একটা চেংড়া পোলা!



দুজনের চেহারাতেই চোর চোর ভাব প্রবল! দুজনেরই একই সাথে গাল গুলো ভোতা ভোতা আর চোয়ালের দিকটা চোখা চোখা! এরা ভাইবোন নাকি?



খেয়াল করলাম অন্যান্য ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন গুলোর মত নয়, এরা স্ক্রু ড্রাইভার, লাইটার ইত্যাদি, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনিরাপদ, জিনিসগুলো বেমালুম উপেক্ষা করে ব্যাগের ভেতরের কাগজ পত্র নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। এমন ভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছে যেন কাগজ নয়, চাল বেছে খুদ বের করছে। বাছাবাছি হয়ে গেলেই পানি দিয়ে রান্না বসিয়ে দেবে আর খুদ ভরে রাখবে পটে।



পরে শুনলাম নিরাপত্তার ধার এই নিরাপত্তা কর্মীরা ধারে না। ওরা দেখছিল লুকিয়ে ডলার-টলার নিচ্ছি কিনা। কাজটা তাদের না হলেও, যদি ডলার পায়, তবে টাকা খেয়ে ছেড়ে দেবে।



যাহোক, লবিতে বসে বিমান উঠা-নামা দেখার চেষ্টা করছি। বোর্ডিং’এর জন্য লোকজন ঢুকছে। এসময় ঠিক ঐ সিকিউরিটি চেকিং’পয়েন্টে দেখি গোলমাল!



কি হয়েছে?



দাদারা এসেছে গাঁটটি-বোচকা নিয়ে! বড় বড় সুটকেস, কাপড়ের বস্তা, পলিথিনের ব্যাগ, হাতের বিভিন্ন আঙ্গুলে বিভিন্ন সাইজের পোটলা ঝুলানো! বোর্ডিং পাস দেওয়ার সময় লাগেজে দেয় নাই ঐসব। হাতে বহন করছে!



কারণ কি?



কারণ হল, লাগেজেও গেছে অনেক। হাতে যেসব নিয়ে এসেছে তা লাগেজে দিতে পারেনি। এই কোলকাতার দাদারা সুটকেস ভর্তি করে জিনিসপত্র ভারত নিয়ে ওখানে নাকি বিক্রি টিক্রি করে। এদের নাকি বলে লাগেজ পার্টি!



তা গোলযোগ কি নিয়ে?



চোর চোর চেহারার নিরাপত্তা কর্মীরা নাকি ব্যাগ খুলে দেখতে চায় ভেতরে কি আছে। উল্লেখ্য ব্যাগ কিন্তু আগেই কয়েকটা নিরাপত্তা পয়েন্ট পার হয়ে এসেছে।



যার ব্যাগ সেও যেমন জানে এরা পয়সা খেতে চায়, যারা ব্যাগ খুলে দেখতে চায় তারাও পয়সা খেতে চেয়ে লুকাছাপা করছে না। বুঝিয়েই দিচ্ছে।



আমরা সবাই যে দেখছি, তাতেও তাদের কিছু এসে যাচ্ছিল বলে মনে হচ্ছিল না। কারণ যখন লাগেজ পার্টি দাদা কইল “তবে খোল, আগেই বলে দিচ্চি কয়েকটা বোতল আচে! কিন্তু পয়সা পাবে না”



কে খোলে? চোর চোর চেহারা নিরাপত্তা কর্মীরা উত্তরে বলল, “তাইলে ব্যাগ পাইবা না”!

একেবারে তুমি তোকারি আরকি!

এরা বোধহয় একে অপরকে চেনে! এক পর্যায়ে ঐ লোক ওখানেই ব্যাগ রেখে ভেতরে চলে এসে চিৎকার চ্যাঁচামেচি জুড়ে দিল,



“৫০০ টাকা! পয়সা কি তোর বাপের নাকি? দেব না আমি দেকি তুই কি করতে পারিস! ২০০ টাকা এক টাকাও বেশি দেব না! বললাম পর্যন্ত একটা বোতল আচে!”



এরপর শুরু হল খামচা খামচি! কিছুক্ষণ ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করে, পকেট থেকে বোর্ডিং পাসটা ছোঁ মেরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে...বিশ্রী অবস্থা!



এইসময় অন্যান্য যাত্রীরা এদের নির্লজ্জতায় বিরক্ত হয়ে কথা শোনাল অনেক। কে শুনে কার কথা? এদের চামড়া গণ্ডারের চেয়েও পুরু! ছাল ছাড়িয়ে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিলে লাভ হওয়ার কথা! চামড়া না পারুক, এদের লজ্জা সরম ঠিকই দাদারা ব্যাগে ভরে ভারত নিয়ে যায় প্রতিদিন।



যাইহোক, স্বাভাবিক ভাবেই ফ্লাইট লেট। বসে আছি। দাদারা নিজেদের মধ্যকার বোঝাপড়া, নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে হিসেবনিকেশ শেষ করে তখন শান্ত। মাঝে মাঝে নিজেদের মধ্যে গজগজ, ফিসফাস করছে। এক সময় ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সামনে এসে বসল। আগ বাড়িয়ে নিজ থেকেই বলল, বোতল নাকি ওদের দেশে অনেক সস্তা। এখান থেকে নিয়ে যায় কারণ এখানে কিছু বিদেশী মদ পাওয়া যায় যেগুলো ইন্ডিয়ায় পাওয়া যায় না। কিন্তু লাভ তেমন নাই! সেখানে ওদের ৫০০ টাকা ক্যামনে দিয়ে দেয়?



বোতল ছাড়া আর কি নেয় জিজ্ঞেস করতে বলল, টি-শার্ট জাতীয় কাপড়চোপড় নিয়ে যায় এখান থেকে। এই এডিডাস-নাইকির টি-শার্ট গুলো! ওদের দেশে এধরনের ব্র্যান্ড টি-শার্ট নাকি রাস্তাঘাটে বিক্রি করতে পারে না! আইন আছে। (আমি ভ্রূ উঁচাই! কি কয়?)



তারপরও নাকি লাভ হয় না!



আচ্ছা বুঝলাম লাভ হয় না। কিন্তু প্রশ্ন হল এই, তবে দুই বেলা প্লেন ফেয়ার দিয়ে এক-দুইটা বোতল আর হাবিজাবি নিয়ে গিয়ে ব্যবসা চলে কিভাবে?



অন্য কিছু নেয় নাকি?

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০২

মেকগাইভার বলেছেন: হাসবো নাকি কাদবো?

১০ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:১৪

আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: বিরক্ত হইয়া ভ্রূ কুচকাইয়া থাকেন। :)

২| ১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:১০

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: লাভ হওয়ার মালই নিয়া যায়... সেইটা এয়ারলাইন্সের লোকজনও জানে...

৩| ১০ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

শ্রাবণধারা বলেছেন: "দুজনের চেহারাতেই চোর চোর ভাব প্রবল! দুজনেরই একই সাথে গাল গুলো ভোতা ভোতা আর চোয়ালের দিকটা চোখা চোখা! এরা ভাইবোন নাকি? " বিমানের লোক তাই না?

বেশ মজা পেলুম দাদা। তো ওদেশে কি কি অভিজ্ঞতা হলো লিখলেন না...।

১২ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২২

আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: এখন না হলেও সাপ্লাই ওখানকারই! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.