![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জনাব শুভংকর বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত পরিচিত একজন ব্যাক্তিত্ব। কেউ যদি অপর কাউকে বুঝে উঠার আগেই ফাকি দিয়ে, ভাওতা দিয়ে, পরের স্বার্থহানি করে নিজের স্বার্থ অন্যায়ভাবে আদায় করে নেয়, তখনি আমরা জনাব শুভংকরের কথা স্মরণ করি। তবে সেই শুভংকরের ফাঁকিটা ছিলো এনালগ ফাঁকি, আজকাল ইলেক্ট্রনিক ভোটিং ম্যাশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে যে নির্বাচন তা আমাদের ডিজিটাল ফাঁকির সুযোগ করে দেয়।
চার সিটি নির্বাচনে কিছু ইভিএম মেশিন বসানো হয়েছিলো পরীক্ষামূলকভাবে এবং জনগণ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে সহজেই ভোট দিতে পেরে আনন্দে আপ্লুত। এখানে একটি ধারণা সুক্ষভাবে জাতির মগজে প্রবেশ করানো হচ্ছে, ভবিষ্যতের এক জটিল পরিকল্পনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে। ইভিএম যদি সিটি নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী হতে সাহায্য করতে পারে তবে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম মেশিন কেন ব্যবহৃত হবে না? হাঁ, এখানেই সম্ভাবনা শুভংকরের ডিজিটাল চিটিং (ফাঁকি)।
ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীর বোতাম চাপ দিলেই তার ভোট দেওয়া হয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ ভোটার এর পরিচয়, কোন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হলো, পূর্বে সে প্রার্থী কতগুলো ভোট পেয়েছে, সর্বশেষ ভোট যোগ হয়ে সে মোট কত ভোট পেল, সব তৎক্ষণাৎ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ হয়ে যায়। কি অপূর্ব যুগান্তকারী পদ্ধতি! তবে সমস্যা হচ্ছে জনৈক ভোটার ভোট দেওয়ার সাথে সাথে জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়বে যে সে কোথায় ভোট দিলো, তাই ব্যাক্তি নিরাপত্তার স্বার্থে ভোটগণনা হতে হবে পর্দার আড়ালে নিরপেক্ষ (????) সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা।
আর তখন যদি সরকার প্রধান হন কোন রাজনৈতিক দলের নেতা, তখন ভোটে কারচুপি হবার সম্ভাবনা থাকে শতকরা একশত ভাগ।
ইভিএম এ প্রোগ্রাম করে দেওয়া যেতে পারে সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যে বোতামেই চাপ দেওয়া হোক না কেন সকল ভোট যোগ (কাউন্ট) হবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর ভোট হিসেবে। ঐ সময়টুকু বাদে বাকি সময় ইভিএম নিরপেক্ষ আচরণ করবে।
সবশেষে সরকারী লোকজন ঘোষণা করবে কে বিজয়ী, সেই সময় সরকার প্রধান যদি হয় শেখ হাসিনা তবে ঐ নির্বাচনে কে জয়ী হবে? চরম ইসলাম বিদ্বেষী জর্জ বুশ দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছিলো ঐ ইভিএম এর ডিজিটাল কারচুপির মাধ্যমে।
জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় বলে বি এন পির প্রার্থীদের সিটি কর্পোরশনের নির্বাচনে ভোট দিয়েছে এবং আপনার তত্তাবধানে নির্বাচন চায়না বলে আওয়ামী প্রার্থীদের প্রত্যাখান করেছে। এই সামান্য বাস্তব সত্যটিকে স্বীকার কিংবা উপলব্ধি না করে চাটুকার আর বিদেশী গোয়েন্দাদের পরামর্শে গায়ের জোরে নিজের ইচ্ছামতো নির্বাচন করার চেষ্টা করে গৃহযুদ্ধ বাধালে, জনগণ সেই ক্ষেত্রে নিজের থেকেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবে। সেনাবাহিনী, পুলিশ,বিজিবি সকলেই ভিন্ন ভিন্ন সরকারী পোষাক পরিধান করে, তবে তারা কেউই জনগণের বাইরে থেকে আসেনি, ক্ষমতায় থেকে তা ভুলে গেলে চলবে না।
ওদেরকে বেতনভোগী কিনা গোলাম ভাবলে ভূল করবেন। দেশের স্বার্থকে দয়া করে ব্যাক্তি স্বার্থের উর্দ্ধে রাখুন, সেটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এদেশের কোন রাজনৈতিক দলই আপনার অধীনে ইভিএম নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। এখন আপনার দ্বায়িত্ব জনগণের চাহিদা অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করবেন না সুরঞ্জিত সেন তথা ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী “র” এর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত করবেন? গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ইতিহাস স্বাক্ষী থাকবে যে একমাত্র আপনার একগুঁয়েমির কারণেই বাংলাদেশের কোটি কোটি নিরীহ মানুষ অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে, লক্ষ-কোটি মা-বোনের সম্ভ্রমহানী হয়েছে।
আপনার যদি জনগণের প্রতি আস্থা থাকে, নিরপেক্ষ তত্তাবধায়ক সরকারে আপনার সমস্যা কোথায়? আপনি তো ক্ষমতায় এসেছেন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক পরিচালিত নির্বাচনের মাধ্যমেই। আপনি বাংলাদেশকে ডিজিটাল করেছেন, বাংলাদেশীরা এখন শুভংকরের ফাঁকি ছাড়াও বুঝতে পারে ডিজিটাল চিটিং (কারচুপি) কি জিনিস। মহান আল্লাহ পাক দেশ ও জাতির স্বার্থে আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনে সাহায্য করুন।
©somewhere in net ltd.