নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ

সোনালী ঈগল২৭৪

সোনালী ঈগল২৭৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভেনিজুয়েলার বর্তমান অর্থনৈতিক দৈন্যদশা ও আমাদের করণীয়

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১০


আজ থেকে ৭ বছর পূর্বের কথা! তখন ভেনিজুয়েলার জিডিপি ছিল ৫.৬৩%। জনসংখ্যার মাত্র ২০% দারিদ্র‍‍্য সীমার নিচে। সৌদি আরবের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি তেল মজুদ দেশটির! চীন তখন দেশটির খুব কাছের বন্ধু। শক্তিশালী অর্থনীতি! এত তেলের মজুদ! আমেরিকাও ওকে ঘাটাতে চাইতো না! এখন ২০১৯ সাল। মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে দেশটির অর্থনীতি ভেঙে গোরস্থান হয়ে গেছে। কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগ কিংবা যুদ্ধ ছাড়াই দেশটি এখন বিশাল অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। যার পরবর্তী ধাপটির নাম দূর্ভিক্ষ!
মূদ্রাস্ফীতি ৮০,০০০% অতিক্রম করেছে এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০১৯ শেষে তা ১০০,০০০% অতিক্রম করবে।

এই সংকটের প্রধান কারণ বলা হচ্ছে দুটি-
১. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থের হিসাবে প্রতিনিয়ত গরমিল।
২. ডাচ ডিজিজ।

ডাচ ডিজিজ রোগটা যেকোনো দেশের জন্য বেশ ভয়ঙ্কর। এই রোগের লক্ষণ ৩টি-

১. দেশের রপ্তানি আয়ের ৮০% আসবে কোনো একটা নির্দিষ্ট সেক্টর থেকে।

২. জিডিপি বাড়তে থাকবে খুবই দ্রুত। মানুষ তার জীবনযাত্রার মান বাড়াবে। শ্রমিক তার বেতন বাড়াবে আরো সুখে থাকার আশায়। তাদের জীবনযাত্রার সাথে তাল মেলাতে আমদানি নির্ভর অর্থনীতি গড়ে উঠতে থাকবে।

৩. সমাজের ক্ষুদ্র একটা অংশ বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে আর সিংহভাগ মানুষের সম্পদ, উপার্জন কমতে থাকবে।

এই সুখের সংসার ততদিনই টিকে থাকবে, যতদিন একটি নির্দিষ্ট সেক্টর দেশকে ৮০% আর্থিক সাপোর্ট দিতে থাকবে।ভেনিজুয়েলার ৮০%-ই আসতো তাদের তেল রপ্তানি থেকে। ২০১৪ সালে আরব বসন্তের ঝাকুনিতে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম কমার সাথে সাথেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে তাদের এত দিনের শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত্তি! বাংলাদেশের জিডিপি গ্রোথ রেট এখন ৮% এর উপরে (সরকারি হিসেব)। রপ্তানি আয়ের ৮১%-ই আসে গার্মেন্টস থেকে। আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধিও অন্য যেকোনো দেশের চাইতে বেশি! এদেশেও ধনীরা আরো ধনী হচ্ছে। ব্যাংকের টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে। বিনিয়োগও হচ্ছে বাইরের দেশে। আবার ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধির তালিকাতেও ১ নম্বরে বাংলাদেশ! সবচেয়ে বেশি আয় বৈষম্যের দেশের তালিকাতেও বাংলাদেশ উপরের দিকে!অর্থাৎ আমরা অলরেডি ডাচ ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে গেছি! এখন দরকার সামান্য একটা ধাক্কা, তাতেই...
এই ধাক্কাটা নানাভাবেই আসতে পারে। নিম্নতর মজুরিতে চীনও এখন আর বাংলাদেশের সাথে পেরে উঠছে না। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেও পারছে না। তার উপর চলছে আমেরিকার সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ। যেকারণে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে অর্ডার আসছে। আগামী বছরগুলোতে এর পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। ফলে আয় বাড়বে। মানুষের লাইফস্টাইল আরো উন্নত হবে।

কতদিন চলবে এমন সুদিন? আমাদের এই সেক্টরের ভবিষ্যত কী সুরক্ষিত?

অবশ্যই না। এই সেক্টরটা বেদুইনদের মত একদেশ থেকে আরেক দেশে ঘুরে বেড়ায় এর বেঁচে থাকা নির্ভর করছে ২টি বিষয়ের উপর-

১) Low making cost
২) Low shipment cost

চীন আফ্রিকার সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলাকে দখল করে নিচ্ছে। এ বছরেও ৫০ বিলিয়ন ডলার লোন দিয়েছে শুধু আফ্রিকার দেশগুলোর অবকাঠামো ঠিক করার জন্য। সেসব কাজের ঠিকাদারি করছে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোই। বেশ জোরেশোরেই চলছে নির্মাণ যজ্ঞ। বড় বড় ব্রীজ, বিরাট সব পাওয়ার প্লান্টের কাজ চলছে। টাকা দিচ্ছে চায়না, কাজ করছে চায়না, শুধু লোনটুকু ফিরিয়ে দেবে আফ্রিকা! বাজি ধরেই বলা যায়, আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে চীন বিশ্বে নতুন ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে।চীন জানে আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলো তাদের টাকা ফিরিয়ে দিতে পারবে না, যেমনটা পারেনি শ্রীলঙ্কা। লোনের দায়ে হাম্বানটোটা বন্দরকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিতে বাধ্য হয়েছে লঙ্কানরা। আফ্রিকার সমুদ্র বন্দর এবং সস্তা শ্রমের দিকেই নজর চীনের।এইসব সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলো পুরোপুরিভাবে তৈরি করার পরপরই চীন যা করবে তা আমাদের জন্য ভয়ংকর দুঃসংবাদই বয়ে আনবে।শিল্প বিপ্লবের প্রথম ধাপে ঘটে বস্ত্রশিল্প বিপ্লব। সুতরাং আবারো গার্মেন্টস সেক্টর চলে যাবে চীনের বলয়ে। ইতিমধ্যে ইথিওপিয়ার মত দেশও আমেরিকার কাছ থেকে বড়সড় অর্ডার নিচ্ছে। ওদের মজুরিও আমাদের চেয়ে কম। আফ্রিকা থেকে আমেরিকা-ইউরোপ বেশ কাছাকাছি। সুতরাং কমে যাবে শিপিং কস্ট। ওদের শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়লে এবং এই খাতটা একটু ম্যাচিউরড হলেই ইউরোপ আমেরিকার বায়াররা বাংলাদেশের মতো দূরবর্তী দেশে আসবে না- একথা বলাই বাহুল্য।এভাবে যদি এই সেক্টরটা ধসে পড়ে তাহলে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা কী? ভিয়েতনাম ইতিমধ্যে হেভি ইন্ডাস্ট্রিতে কনভার্ট হয়ে গেছে। ইন্ডিয়া তথ্য প্রযুক্তিতে খুবই স্ট্রং জায়গায় চলে গেছে। ওরা ব্যাকআপ তৈরি করেছে। আমরা কী করেছি?এখন প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, আয় বাড়ছে বলে কি সবসময় বাড়বে? একসময় এটা স্থির এবং মাইনাস হবেই। ভেনিজুয়েলা ২০১২-তে বেশ সুখে ছিল। এখন? দেশের মানুষগুলো কোনোরকম যুদ্ধ বিদ্রোহ ছাড়াই দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে, উদ্বাস্তু হয়ে অন্য দেশে ঢুকে মার খাচ্ছে। ভেনিজুয়েলা মধ্যপ্রাচ্যের আরব বসন্তের পরোক্ষ শিকার। কোন দেশের কোন ঢেউ এসে এখানে আঘাত হানবে কে জানে! যাতে এখনই আমাদের সাবধানতা প্রয়োজন এবং কেবলমাত্র একটি খাতের নির্ভরতা এড়ানো উচিত আমাদের অন্যান্য খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম। তবে মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলাম। কারন এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:





২য় বাক্য: "তখন ভেনেজুয়েলার জিডিপি ছিল ৫.৬৩% "

-ইহাকে ঠিক করার চেষ্টা করেন।

৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৭

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ভয়াবহ তথ্য দিলেন !!

৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:০৭

ঢাকার লোক বলেছেন: এখনই সময়, পালানোর !
মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম বা টরোন্টোর বেগম পাড়ায়!!

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার সমস্যা দেখছি ভেনিজুয়েলার সমস্যার কাছাকাছি

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৩৯

বলেছেন: আমাদের করণীয় কি ?

৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:১৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: বাংলাদেশের অবস্থা ভেনিজুয়েলার মত ভয়াবহ নয় , বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফিতি এখন ৬% এর নীচে এবং এখানে কোন হাইপার ইনফ্লেশন নেই । তবে একটি বিশেষ পণ্যের রপ্তানী খাতের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন ও কমপারেটিভ এডভানটেজ আছে এমন খাত বিশেষ করে কৃষি ভিত্তিক নিজস্ব উপকরণ নির্ভরশীল ভারী শিল্পখাতে এখন হতেই মনযোগী হতে হবে বাংলাদেশকে । শ্রমিক শোষনকারী অতি নিন্ম মজুরী , প্রায় শতভাগ বিদেশি কাঁচামাল তথা উপকরণ ও উন্নত বিশ্বের হাতে গুনা গুটিকয়েক ধনবান দেশের বাজারের উপর নির্ভরশীল তৈরী পোষাক শিল্পজাত পণ্য রপ্তানীর উপর নির্ভরশীলতাকে ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনতে হবে যে কোন মুল্যে । এটা শ্রমিক শোষনের হাতিয়ার ব্যতিত কিছু নয় ।

৮| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১২:৫৮

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: বাংলাদেশের কৃষিখাতকে হত্যা করে সম্ভবত পরনির্ভশীলতা হতে হচ্ছে এ ব্যাপারে আমি ডঃ এম এ আলী ভাইয়ের সাথে একমত।

৯| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৩৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: এই লেখাটি কি আপনার নিজের লেখা?

১০| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১:১৪

বলেছেন: যে যুদ্ধে পরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।।।। কপিড লেখা।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.