নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন বৈচিত্রময়। জীবনের বিচিত্র সব গল্প বলতে পারাটা একটা গুন আর সবার সেই গুনটা থাকে না। গল্প বলার অদ্ভুত গুনটা অর্জনের জন্য সাধনার দরকার। যদিও সবার জীবন সাধনার অনুমতি দেয় না, তবুও সুযোগ পেলেই কেউ কেউ সাধনায় বসে যায়। আমিও সেই সব সাধকদের একজন হতে চাই।

আরিফ রুবেল

সময় গেলে সাধন হবে না

আরিফ রুবেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিউ : টু বি কন্টিনিউড

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:১৮

হ্যা লো ব্লগারস !

চলচ্চিত্র সমালোচক বলতে যা বোঝায় আমি আসলে তা না। সাধারণ দর্শকের চোখে একটা সিনেমা কেমন লেগেছে সেই অনুভূতিই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে এসেছি। আজ গিয়েছিলাম বলাকা হলে ইফতেখার আহমেদ ফাহমি পরিচালিত প্রথম সিনেমা 'টু বি কন্টিনিউড' দেখতে। গতকাল শেয়ার দেয়া প্রোমো দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম হলে গিয়ে মুভিটি দেখব। সিদ্ধান্তটি মোটেও ভুল ছিল না। স্পয়লার না দিয়ে যতটুকু সম্ভব আমার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। যেহেতু আমি চলচ্চিত্র সমালোচক নই তাই আপাদমস্তক দর্শকের চোখ দিয়ে আমার অনুভূতিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। যারা মুভিটি দেখেননি এবং হলে গিয়ে দেখবেন বলে ভাবছেন তারা দেখে এসেই এই ব্লগের বাকী অংশটুকু পড়বেন।



এক

সিনেমার গল্পটি মূলত এগিয়ে যায় তিন জিগরি দোস্ত আবির, সাব্বির আর ম্যাককে নিয়ে। তিনজনই আপাদমস্তক বাদর।
প্রথম দৃশ্যে থেকেই তাদের তাদের উপর্যুপরি কমেডিতে হলের দর্শকরা হাসিতে ফেটে পরেন। মজার বিষয় হচ্ছে কমেডি দৃশ্যগুলো কোনটিই আমার কাছে সুরসুরিমূলক মনে হয়নি বরং হিউমার এবং রিয়েলিটির মিশেল পরিলক্ষিত হয়েছে। আবির চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিচালক ফাহমি নিজেই। তিনিই এই চলচ্চিত্রের মূল চরিত্র। সাব্বির চরিত্রে অভিনয় করেছেন রোমেল এবং ধনীর দুলাল একটু বোকাসোকা চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিশু সাব্বির।

পোস্টার

সিনেমার প্রথম অংশ এই তিন বন্ধুর নানান হাস্যকর কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। এই অংশে পরিচালক আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন আবিরের বাবা আবুল হায়াত এবং মা মিতা চৌধুরীর সাথে। তাদের দাম্পত্য জীবনের খুনসুটি আর সন্তানের প্রতি বন্ধুসুলভ আচরণ দর্শকদের নির্ভেজাল বিনোদন দেবে। রিভিউর পরের অংশে যাওয়ার আগে আসুন দেখে নেই সিনেমাটির প্রোমো।



সিনেমার প্রথম অংশ থেকে দ্বিতীয় অংশে যাওয়ার সময় থেকেই পরিচালক ধাক্কা দিতে শুরু করেন দর্শকের মনস্তত্ত্বে। দ্বিতীয় অংশে গিয়ে পরিচালক দেখান সম্পর্কের টানাপোড়েন। এই অংশে এসে হলের দর্শক চুপ হয়ে যায়। সম্ভবত ধাক্কাগুলো হজম করতে গিয়ে। কিন্তু পরিচালক শেষ পর্যন্ত তাদের ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিয়ে যান। এই অংশে এসে আবুল হায়াত, মিতা চৌধুরী কিংবা ফাহমির অভিনয় ছিল দুর্দান্ত। শেষ দৃশ্যে যে ধাক্কা পরিচালক আমাদের দিয়েছেন সেটা এক রকম শূণ্যতা নিয়েই আমাদের হল থেকে বের হতে বাধ্য করেছে। এমন কেন হল? অন্য রকম কি হতে পারত না ?

দুই

সিনেমাটি দেখে কেউ কেউ মন্তব্য করবেন এটা আসলে সিনেমা না টেলিফিল্ম। যারা এটা মনে করেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন থাকবে, টেলিফিল্ম আর ফিল্মের মধ্যে তফাত কি ? কিভাবে আপনারা এই সিদ্ধান্ত নেন জানিয়ে যাবেন।

সিনেমার ব্যাকগ্রাউণ্ড সাউন্ড এবং গানগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছে। কিন্তু একটি দৃশ্যে জাতীয় সংগীত বাজানোর দৃশ্য নিয়ে আমার মনে একটা প্রশ্ন জেগেছে। সচরাচর নিয়ম হচ্ছে জাতীয় সংগীত শুনলে দাড়াতে হবে। আমরা দাড়াইও। কিন্তু মুভির মধ্যে হঠাত করে জাতীয় সংগীত বাজালে কি দাড়াতে হবে ? মুভি শুরুর আগে কিন্তু একবার আমরা দাঁড়িয়েছি। মুভির একদম শেষে একটা গান আছে মাকে নিয়ে। খুব সুন্দর গান। ইউটিউবে খুঁজলাম পেলাম না। কেউ পেলে লিঙ্ক দেবেন।

এর বাইরে সিনেমাটোগ্রাফি নিয়ে বলার কিছু নেই। চমৎকার সব লোকেশন। আর ক্যামেরার কাজটাই দর্শকের মনে কোন বিরক্তির উদ্রেক করেনি। তবে গল্প নিয়ে একটা অবজার্ভেশন হচ্ছে ভিলেন চরিত্রের আগমন প্রস্থান এবং অবস্থান ভাসা ভাসা। এইখানে আরেকটু ডিটেইল কাজ করা যেত। তবে আমার মনে হয় এতে পরিচালক যে মেসেজটা আমাদের কাছে পৌছাতে চেয়েছেন তা বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

আরেকটা জায়গায় খটকা লেগেছে। একটি দৃশ্যে পুর্নিমার মামা ছেলের ছবি নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু গোটা সিনেমার সাথে এই পাত্রের ছবি দেখার ব্যাপারটা অসামাঞ্জস্যপূর্ন মনে হয়েছে আমার কাছে।

তিন

এবার আসা যাক বিতর্ক নিয়ে।

বিতর্ক এক: মুভিটির কাজ চলছে ছয় বছর ধরে। শুরুতে বলা হয়েছিল সিনেমাটির নায়ক নায়িকা তাহসান-পুর্নিমা। কে বলেছিল ? ফাহমি না ইমপ্রেস টেলিফিল্ম তা জানা যায়নি। কিন্তু ছয় বছর শেষে এসে দেখা যায় যাদের নিয়ে এত জল্পনা কল্পনা তাদের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিবেদন অনুযায়ী গল্পের পরিচালক যে গল্প নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন শেষ পর্যন্ত সেটা পরিবর্তন হয়েছে সিনেমাটি শেষ করার স্বার্থে। একই প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৬ সালে প্রচারিত প্রোমোগুলোতেও তাহসান-পুর্নিমা ঘিরেই প্রচারণা চালানো হয়েছিল।

বিতর্ক দুই : এহেন জটিলতা যখন চলছিল তখন ছবিটির প্রযোজক প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্ম মুভিটির অনেকটা তড়িঘরি করেই টিভি প্রিমিয়ার করে গত ঈদ-উল-ফিতরের দ্বিতীয় দিন চ্যানেল আইতে। তাও আবার নিজেদের মত এডিটিং এবং আবহ সংগীত দিয়ে। এটা নিয়ে দর্শকদের মাঝে বেশ ক্ষোভ ছিল। সবাই আগ্রহী ছিলেন ফাহমির করা সিনেমাটি দেখতে। অবশেষে দর্শক চাহিদার কথা মাথায় রেখেই নয়টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তি দেয় প্রযোজক সংস্থা।

চার

সবশেষে যেটা বলতে চাই সেটা হল বাংলা সিনেমার পালে যে নতুন হাওয়া লেগেছে তার প্রাণ কিন্তু এর দর্শকরা। একটা ভালো সিনেমা যদি নীরবে নিভৃতে হল থেকে নেমে যায় তাহলে আখেরে কিন্তু লস দর্শকের। কাজেই আশা করব আপনারা হলে গিয়ে সিনেমাটি উপভোগ করবেন। আর যারা টিভিতে দেখে ফেলছেন তারাও গিয়ে দেখতে পারেন। কারণ বিজ্ঞাপনের ভীড়ে আসলে কি দেখেছেন আপনার হয়ত নিজেরই মনে নেই। সিনেমা উপভোগের জন্যে হলের বিকল্প নেই।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১:১১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: রিভিউ ভাল হইছে।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:০২

আরিফ রুবেল বলেছেন: ধন্যবাদ। সিনেমাটি কি আপনি দেখেছেন? দেখলে আপনার অবজার্ভেশনগুলো জানার আগ্রহ রইল।

২| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:০০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: না দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ দেখে মনে হল ভাল হয়েছে- পরে একসময় হয়তো দেখবো।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১৯

আরিফ রুবেল বলেছেন: দেখে জানাবেন :)

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৫

নীরদ অর্ণব বলেছেন: টিভি চ্যানেলগুলি সিনেমায় অর্থলগ্নি করার নামে চলচ্চিত্রকে শেষ করে দিচ্ছে । তারা শুধু পুরস্কারের কথা চিন্তা করে।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩৪

আরিফ রুবেল বলেছেন: আমাদের দেশে সেই অর্থে চলচ্চিত্র আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। কেউ শিল্পের স্বার্থে চলচ্চিত্র বানায় না, কারণ সেই চলচ্চিত্রের দর্শক আমাদের দেশে নেই। টাকা খরচ করে হলিউডি গার্বেজ হা করে গিলবে, কিন্তু হলে গিয়ে বাংলা সিনেমা গেলে জাত যাবে এমন ধারণা পোষন করা তরুনদের সংখ্যা অনেক। যদিও অবস্থা বদলাতে শুরু করেছে। কিন্তু অনেক ভালো সিনেমা যেগুলো তরুন সমাজ বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেরে পারত সেগুলো বেশি দিন হলে চলতে পারে না দর্শকের অভাবে।

আসলে যারা সিনেমা বানায় এবং দেখে তাদের জোটবদ্ধ হওয়া জরুরী। অসাধু লগ্নীকারকদের দাপট থেকে একমাত্র দর্শকরাই সিনেমাকে বাঁচাতে পারে। লগ্নী না থাকলে প্রচার থাকবে না। যেমন এই ছবিটার ব্যাপারে আমি তেমন কিছুই জানতাম না। প্রযোজকরাও তেমন প্রচার চালায়নি। মাত্র নয়টা হলে মুক্তি পায় এমন সিনেমা বানানোর পেছনে বাণিজ্যিক কি চিন্তা করেছিল কে জানে। তৌকির আহমেদের অজ্ঞাতনামা ইউটিউবে জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে অনেকেই এর নাম পর্যন্ত জানত না। অথচ এমন একটা সিনেমা নাকি তিন দিন পর হল থেকে নামিয়ে ফেলতে হয়েছিল।

৪| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪০

নীরদ অর্ণব বলেছেন: সিনেমার পরিচালকদের কিছু ভুল আছে। সিনেমা মুক্তির আগে তাদের উচিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে প্রচারণা চালানো। বর্তমান যুগে প্রচারণা অনেক বড় বিনিয়োগ । তারা চাইলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারে।
ভালো সিনেমা হলের প্রচুর অভাব রয়েছে । এছাড়া সরকারের উচিত সব ভাষার সিনেমা প্রদশর্নের জন্য সিনেমা হলগুলোকে অনুমতি দেওয়া ।

০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫২

আরিফ রুবেল বলেছেন: না ভাই, তাইলে কলকাতার ছবির বাজার পইড়া যাবে না। আপনি যদি হলে গিয়া ফ্রেঞ্চ, ইটালিয়ান, স্প্যানিশ, কোরিয়ান ইত্যাদি (যে ছবিগুলো আমরা ডাউনলোড দিয়া দেখি) দেখেন তাহলে এই সব বস্তা পচা সিনেমা কে দেখবে ? বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সব ভাষার সিনেমা প্রচারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

৫| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

নীরদ অর্ণব বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ভাষার সিনেমা এমনিতেই দেখেন । তারা বোধহয় আমাদের সিনেমা সংশ্লিষ্ট লোকদের চেয়ে এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে ।

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০৪

আরিফ রুবেল বলেছেন: সহমত

৬| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:৫৬

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: আজকাল আর ছবি দেখা হয় না। সেই ২০১৪ তে অগ্নি দেখছিলাম বলাকা গিয়ে। :D

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০৪

আরিফ রুবেল বলেছেন: আজকে তো শেষ হয়ে গেল মনে হয় শো। আবার কবে হবে জানা নাই। কালকে থেকে ঢাকা এটাক শুরু। সময় করে দেখে ফেলেন।

৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:০৭

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: এসাসিনস ক্রিড নামাইছি। অর্ধেক দেখছি। দেখছেন? আরেকটা মুভিও লিস্টে আছে। নাম হইল গিফটেড। আলসেমি করে কোনটাই দেখা হয় না।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১১

আরিফ রুবেল বলেছেন: না দেখা হয় নাই। কোথা থেকে ডাউনলোড করেন ?

৮| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:১৫

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: site

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৬

আরিফ রুবেল বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৯| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:২৭

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: ছাগুপাল পাইছেন?

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৩০

আরিফ রুবেল বলেছেন: নাহ, সময় হইলে নিজে এসেই ম্যাতকার করে যাবে। এখন পুরোনো ব্লগ ঘুরছি। সেই মজা। হাতে সময় থাকলে আমার শোকেসে রাখা পোস্টগুলোর যেকোন একটা ধরে পড়তে শুরু করেন।

১০| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৪৩

মোহেবুল্লাহ অয়ন বলেছেন: আপনি সেই ২০১১ এর পর আর পোস্ট দেন নাই?

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫০

আরিফ রুবেল বলেছেন: আমার কিছু পোস্ট ড্রাফটে আছে (৫৭টা)। সর্বশেষ পোস্ট ২০১৬ তে। তবে রেগুলার ব্লগে ঢু মারতাম ২০১৩-১৪ পর্যন্ত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.