নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বলে নেয়া ভাল, এই ব্লগের প্রত্যেকটি লেখাই আমার না, প্রয়োজনের তাগিদে কিছু বিশেষ গুরুত্বপূর্ন লিখা আমি লেখকের সোর্স সহ এইখানে কপি করে রাখি।স্রেফ নিজের প্রয়োজনের কথা ভেবে। তাতে যদি আপনার সামান্য উপকার ও কখনো হয়ে যায়,সেটা আমার জন্যে সারপ্লাস।হ্যাপি ব্লগিং !

সাদ বিন

সাদ বিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

লাভ জার্মানী হোয়াটেভার হ্যাপেন্স !

১৫ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭

< প্রতিটা ফুটবল ভক্তের অবশ্য পাঠ্য >

‘গোল’ সিনেমাটা দেখেছেন? বলিউডে বানানো নকলটি না, আসল সিনেমাটি? Goal ! The dream begins নামের এই মুভিতে দেখানো হয় সান্তিয়াগো মুনেজ নামের এক মেক্সিকান তরুণের ফুটবলার হয়ে ওঠার সংগ্রাম। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আর সাধনার বিনিময়ে এক সময় সে ঢুকে পরে ইংল্যান্ডের বিখ্যাত নিউক্যাসল ইউনাইটেড দলে। প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ হয়না তার। বদলি হিসেবে খেলা শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট আগে নামে সে। এমন সুবিশাল আলোকোজ্জ্বল মাঠে খেলতে নামার মুহূর্তটা তার কাছে যেন ছিল স্বপ্ন বাস্তব হয়ে দেখা দেবার মত, অনেকটা স্বর্গে প্রবেশ করার মতো ছিল যেন সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সে ম্যাচে দু'মিনিটের অপূর্ব ড্রিবলিং তাকে জায়গা করে দেয় পরবর্তী খেলার প্রথম একাদশে। খেলার আর মিনিট তিনেক বাকি... জিততে হলে একটি গোল অন্তত করতেই হবে। স্ট্রাইকার গ্যাভিন হ্যারিসকে ফাউল করায় নিউক্যাসল ফ্রি কিক পায় প্রতিপক্ষের ডিবক্সের একটু বাইরে গোলপোস্টের বামদিকে। মুনেজকে দেয়া হয় দায়িত্ব সে ফ্রি-কিক নেয়ার। চারদিকে তাকায় মুনেজ, তার অভিমানী বাবার চিরতরে চলে যাওয়ার কথা মনে পড়ে, দাদির জমানো শেষ কয়েকটা টাকা নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেয়ার কথা মনে পড়ে... চারদিকে দর্শকের তুমুল চিৎকার তার কাছে ফিকে হয়ে আসে... আধো ভেজা চোখ নিয়ে সে গোলপোস্টের দিকে তাকায়, এরপর তাকায় বলটার দিকে...



গল্পের শেষটা কি হয়েছিল সেটা জানতে হলে আপনাকে মুভিটি দেখতে হবে।

তবে কাল রাতে খেলা নিশ্চয়ই দেখেছেন। খেলার ১২০ তম মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনা যখন ১-০ গোলে পিছিয়ে তখন তারা পায় একটি ফ্রি কিক। একটু আগের মুভিটিতে ঠিক যে জায়গা থেকে ফ্রি কিকটি নেয়া হয়েছিল ঠিক একই যায়গায়। মেসি যখন ফ্রি কিক নেয়ার জন্যে বলটি নিয়ে দাঁড়িয়ে একবার গোলপোস্ট আরেকবার মাটির দিকে চাইছিল, আমি ঠিক ফিরে গিয়েছিলাম Goal! The Dream Begins এর সেই মাঠে। মেসির ভিতরেও যেন আমি সান্তিয়াগো মুনেজের মত সেই আবেগের ঢেউগুলো উপচে পড়ার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। মেসির কাঁধে যেন ভর করেছিল পুরো একটি পৃথিবী একটি মুহূর্তের জন্যে। একটাই সুযোগ, কাজে লাগাতেই হবে। নাহলে বিদায়...

মেসি কিক নিলেন। বল গোলবারের বেশ ক’হাত বাইরে দিয়ে উড়ে চলে গেল। নিশ্চিত পরাজয়ের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে মেসি হাসলেন আকাশের পানে চেয়ে। এই হাসি কেবল বিধাতাকে লক্ষ্য করে হাসা, জানিনা তিনি দেখেছেন কিনা। স্বপ্নের এতো কাছে এনেও খালি হাতে ফিরিয়ে দিলেন বলে তাঁর তো অভিমান হতেই পারে বিধাতার উপর।



একজন মেসি যদি ২০১৪ বিশ্বকাপটা ডিজার্ভ করে থাকে তবে এগারোজন জার্মান কি তারচেয়ে কিছু কম করে? নাহ! করেনা। এযাবৎ কালে আমার দেখা নিয়মিত একটানা অসাধারণ খেলে আসা দলটির নাম জার্মানি। তবুও কেন জানি দলটার প্রতি কোনদিন কোন ভাল লাগা বোধ করিনি। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ বোধহয় পাল্টে দিয়ে গেল বেশ কিছু সমীকরণ। যে দল আমার প্রাণের দলকে সাত সাতটি গোল হজম করিয়ে ছাড়ল সেই দলটির প্রতিই কিনা কি একটা ভাল লাগায় ভরে উঠল মন!



ব্রাজিলকে যেদিন ওরা ছয় গোলের ব্যবধানে হারালো সেদিন খেলা শেষে তাদের কোন উচ্ছ্বাস চোখে পড়েনি কারও। যেন এভাবে স্বাগতিক দলটাকে লজ্জা দিয়ে নিজেরাই লজ্জিত। যে ডেভিড লুইজের সাথে মাঠের ভিতর আরেকটু হলেই হাতাহাতি লেগে যেতো সেই লুইজের মাথায় হাত দিয়ে মুলার বোকার মত দাঁড়িয়ে রইল খেলা শেষে... কি বলে সান্ত্বনা দিবে তাই যেন ভাবছে। ওজিল টুইট করল- You have a beautiful country, wonderful people and amazing footballers-this match may not destroy your pride! ‪#‎Brasil‬,”



শোয়েনস্টাইগার – এই লোকটার কথা কি বলব? খেলা শেষে সে দৌড়ে দৌড়ে একেকজন ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়ের কাছে যাচ্ছিল আর জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিল। গতকাল দেখলাম একটা ছবি আপলোড করেছে – ‘ব্রাজিলের’ জার্সি পরে অবসরে সে বাস্কেটবল খেলছে। গতকালের ফাইনাল খেলাটার কথাই ধরুন... দেশের জন্যে কি সে চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা! একেকবার আঘাত পেয়ে শুয়ে পড়েছে মাটিতে, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেটে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়েছে তবু আবার ফিরে এসেছে ব্যথানাশক নিয়ে। একপর্যায়ে গাল কেটে রক্ত বের হয়ে গেছে তবু তার গতি কমে যায়নি এক বিন্দুও। নিজেকে উজাড় করে দেয়া বুঝি একেই বলে!



অথচ যেই খেলাটা শেষ হল- বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তকমা যখনই গায়ে উঠে গেল তখনই তার অন্য রূপ। বিনয়ী, নিতান্ত ভদ্র একজন মানুষ। মেসি যখন কান্নার উপচে আসা ঢেউগুলোকে আটকে চলেছে বুকের পাঁজরে তখন এই শোয়েনস্টাইগার সতীর্থদের সাথে উল্লাস করা রেখে এসে জড়িয়ে ধরল মেসিকে। বুকে টেনে যেন কষ্টের ভাগ চেয়ে নিতে এসেছে নিজ থেকে। আর্জেন্টিনা দলের খেলোয়াড়দের যখন মেডেল নেয়ার জন্যে লাইন ধরে এগিয়ে যাবার পালা তখন মুগ্ধ হয়ে দেখলাম এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য... সদ্য বিশ্ববিজয়ী দলের প্রতিটা খেলোয়াড় দুইপাশে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে গেল পরাজিত দলকে গার্ড অফ অনার দেয়ার জন্যে! কি হত এইটুকু না করলে? কি ক্ষতি হত জার্মান দলের? কিন্তু তবুও যে করল এটাই আসলে চিনিয়ে দেয় কারা সর্বসেরাটার সত্যিকার দাবিদার। শুধু মাঠে খেলে চ্যাম্পিয়ন হলেই হয়না, হৃদয় জিততে জানতে হয়। ওরা হৃদয়ও জিতে নিতে জানে।







হ্যাঁ লিওনেল মেসি... একজন ঘোর ব্রাজিল সমর্থক হয়েও যখন তোমাকে নিয়ে মাতামাতি করি তখন অনেক বন্ধুই বাঁকা চোখে তাকায় তবু আমি তোমার হাতে বিশ্বকাপটা দেখতে চেয়েছিলাম। তবে এই কথাটা যদি এইবেলা স্বীকার না করে নিই তবে বোধহয় খুব অন্যায় হবে... এই শোয়েনস্টাইগার, এই মেসুত ওজিল, এই ফিলিপ লাম বা ন্যুয়ারের মত অপ্রতিরোধ্য অথচ অসম্ভব বিনয়ী, অসম্ভব হৃদয়বানদের নিয়ে গড়া দলটাই এবারের শিরোপার সবচেয়ে যোগ্য দাবিদার ছিল। বিধাতার বিচার ভুল হয়না কোনদিন, ভুল হাতে দেননি তিনি স্বপ্নের ঐ আরাধ্য রতন



( প্রিয় দল জার্মানীর জন্যে এই লিখাটা সংরহ করে রাখলাম,এটা আমার লিখা না)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৩

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: who is the writer

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.