নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই লেখার কী শিরোনাম দিবো জানি না

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:২৬



দুয়েকদিন আগের কথা, রাত আনুমানিক আটটা ন’টা বেজে থাকবে। ঢাকার মালিবাগ রেল গেটের কাঁচাবাজারের সামনে দেখলাম হেলমেট হাতে এক যুবক আরেক যুবককে বেদম প্রহার করছে। স্বাভাবিক কৌতূহলী হয়ে দাঁড়ালাম ভিড়ের মাঝে। হাজার বছরের পুরনো উৎসুক কৌতূহলী বাঙালি দর্শক! হা হা হা। যাকে মারছিল সে হাইমাউ করে কাঁদছিল আর সেখান থেকে সরে যাবার চেষ্টা করছিল। কিন্তু যে ছেলেটা মারছিল, সে তার জামা ভীষণ শক্ত করে মুঠোয় ধরেছিল আর উত্তপ্ত বাক্যবাণ গালিগালাজের সাথে থেকে থেকে হাত পা চালাচ্ছিল নির্দয়ভাবে। এক পর্যায়ে জানতে পারলাম, অপরাধী যুবকটি পথ চলতে চলতে পাশে দাঁড়ানো একটি মেয়ের গা’য়ের ওপর নাকি সমস্ত শরীর দিয়েছে, এখানে সেখানে হাত লাগিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি! পাশে দাঁড়ানো মেয়েটি সবাইকে বলছিল, ছেলেটা তার সাথে সড়কে দারুণ অসভ্যতা করেছে। শুধু তাই নয়, তারপরও তাকে নাকি সে ভদ্রভাবে বলেছিল, গা’য়ে হাত দেবার কারণ কি? এতে নাকি সে উল্টো তাকেই আবার মেজাজ দেখিয়েছে, ‘এই কী হইছে! চলার পথে লাগছে, তো!’ মোটরসাইকেল নিয়ে পাশে দাঁড়ানো মেয়েটির ভাই এসময় উত্যক্তকারী যুবককে ধরে বেদম মারতে শুরু করে। পাশে দাঁড়ানো অনেকেই মারমুখী ছেলেটিকে উৎসাহ দিচ্ছিল, তাকে আরও মারার জন্য। নানাজন নানান কথা বলছিল, নানান মতামত দিচ্ছিল। দেখে মনে হলো, উপস্থিত দর্শক দারুণ উপভোগ করছে এ পরিস্থিতি।
এক পর্যায়ে আমি মেয়েটিকে বললাম, ‘দুর্ঘটনাবশতও শরীরে লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে তার উচিৎ ছিল আপনার কাছে ক্ষমা চাওয়া। তাহলে হয়তো ব্যাপারটা আপনিও উপেক্ষা করতেন। সেটা না করাতেই বোঝা যাচ্ছে, এরকম করা তার অভ্যাস।’
মেয়েটা তখন আমার কথায় কিঞ্চিত বিরক্তি প্রকাশ করে আমাকে বললো, ‘দুর্ঘটনা হলে আমি কী আর বুঝতাম না! ইচ্ছে করেই করেছে সে।’
এসময় মার খাচ্ছিল যে যুবকটি, সে কোনওরকম একটু জায়গা করে নিয়ে আমার হাত ধরে কান্নাকাটি করতে লাগলো করুণসুরে। বললো, ‘ভাই! আমারে বাঁচান। আমারে মাইরা ফালাইবো। আমার কোনও দোষ নাই। আমি যাইতে ছিলাম। আমার সামনে আয়া পড়ছে।’
ত্রিশ সেকেন্ড মাত্র। তারপর আবার অন্ধ ক্রোধে উন্মত্ত মারমুখী মেয়েটির ভাই টেনে হিচড়ে তাকে আরেকদিকে নিয়ে যেয়ে ইচ্ছে মতো চর থাপ্পড় কিল ঘুষি দিতে লাগলো।
এ পর্যায়ে সেখান থেকে শ্লথ পা’য়ে হেটে চলে আসলাম আমি আমার গন্তব্যপথে। তারপর সেখানে কী হয়েছিল জানি না। সেই যুবকটি যদি সত্যিই সেখানে সেদিন মেয়েটির সাথে অসভ্যতা করে থাকে, তবে অবশ্যই তার উপযুক্ত শাস্তি হোক। কিন্তু যদি না হয়... যদি আসলেই এটা নিছকই একটি দুর্ঘটনা হয়! তাহলে? সেদিন রাতে ভিড়ভাট্টার সড়কে মেয়েটির গা’য়ে সামান্য একটু হাত লাগিয়ে কতোটা আনন্দ মজা পেতে পারে যুবকটি! আমি জানি না। সত্যিই জানি না! আমি ঘটনার সাক্ষী নই। তবে আমার মনে হয়েছে মেয়েটি ভদ্র সভ্য শিক্ষিত। সে সত্য কথাই বলছে। কিন্তু তারও বোঝার ভুল হতে পারে! ব্যাপারটা দুর্ঘটনাবশতও হতে পারে!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৭

ইনাম আহমদ বলেছেন: শিরোনাম দেন, 'হুজুগে বাঙালী'
নো ঠান্ডা মাথায় চিন্তাভাবনা, সোজা কাজ।
অ্যাকশন, অ্যাকশন,
ডাইরেক্ট অ্যাকশন

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০০

অর্ক বলেছেন: ভালো বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যের জন্য। পরিস্থিতি দেখে আমি নিজে কেমন বোকা বনে গিয়েছিলাম!

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৬

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ঘটনা পরিষ্কার নয়। তবুও যুবকটিকে রক্ষা করার দরকার ছিল। আমি হলে অন্তত তাই করতাম।।

মেয়েটির ভাইকে থাপড়াইতে ইচ্ছে করছে। আইন কি তার বাপের? যে অপরাধ প্রমান না হতেই একজনকে ধরে মারবে??X(

আর দর্শকদের আমার বরাবরই অপছন্দ।X( যত্তোসব ফাউল লোক।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬

অর্ক বলেছেন: না, সে সুযোগ ছিল না। সবাই ধরে নিয়েছিল সে অপরাধী। একজন তো আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেবার কথা বলছিল।

মেয়েটির ভাইয়ের দোষ নেই। আপনার বোনকে এভাবে প্রকাশ্যে অপমান করলে, আপনিও ছেড়ে কথা বলবেন না! ভুল হলে একমাত্র মেয়েটার বোঝার ভুল হতে পারে। কিন্তু এরকম হয়েছিল নিঃসন্দেহে। খুব সম্ভবত যুবকটি এরকম করেওছিল। আমি বিস্মিত হই, মানুষ এরকম বিকৃতরুচি’র কী করে হতে পারে!

অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

শামচুল হক বলেছেন: ঘটনা না দেখে সত্য মিথ্যা বোঝা মুশকিল

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৪

অর্ক বলেছেন: ঠিক তাই।

৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৪৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: হুম, এরকম অনেক ঘটনাই সামনে পড়ে মাঝেমধ্যে। খুব খারাপই লাগে এখন এইসব ঘটনা।

শিরোনাম দেবার মতো নাম আমিও ঠিক করতে পারছিনা ভাই।

আসলে ভাই, একটা সময় থাকে ছেলেদের মনে মেয়েদের গায়ে স্পর্শ করাটা অনেক কাঙ্ক্ষিত বিষয় হয়ে থাকে। মেয়েদের সামান্য ছোঁতে পারলেই তখন দারুণ আনন্দিত হয়। চলতি পথে কোনভাবে মেয়েদের গায়ের সাথে গা লাগাতে চেষ্টা করে। অনেক মেয়েই ব্যাপারটা বুঝে, বেশিকিছু খারাপ না করলে অনেক মেয়েরাই কিছু বলে না। আপনার এখানে মেয়েটি কতটুকু খারাপি পেয়েছে কে জানে! তবে শিক্ষা দেয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে গেছে মনে হল।


আপনার এমন দৈনিন্দন বর্ণনা গুলো ভালোই লাগে আমার কাছে, এতে অনেক বাস্তবতা সম্পর্কে বুঝতে পারি।
শুভকামনা আপনার জন্য

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৩৪

অর্ক বলেছেন: আরে ভাই, আমি কি ভাবি, কি কামনা করি, স্বপ্ন দেখি তার জন্য আমি কারও কাছে দায়বদ্ধ নই! আমি ইয়েলেনা ইসেনবায়েভা, সেরেনা উইলিয়াম, প্রিয়াঙ্কা চোপরা ইত্যাদি অনেককে নিয়ে অনেককিছু ভাবি! তাতে কার কি আসে যায়! একটা সময় দুইটা সময় বলে কিছু নেই, নারী পুরুষের পরস্পরের প্রতি এই আকাঙ্ক্ষা অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। এটা নির্দোষ প্রাকৃতিক ব্যাপার। কিন্তু এর মানে তো এই নয় যে রাস্তাঘাটে যাকে খুশি তাকে স্পর্শ করে বেড়াবো! এরকম করলে অপরাধী’র কঠিন শাস্তিই কাম্য।

ব্যাপারটা যে ঠিক কী ঘটেছিল, তা কেবল ঈশ্বরই জানেন! অনেক সময় ব্যক্তিগতজীবনে হতাশা উদ্বিগ্নতা থেকে মানুষ সড়কে চলতে চলতে অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে। এরকম কিছু হলেও হতে পারে! মেয়েটি তো দাবি করছে, এরকম করার কারণ জিজ্ঞেস করার পর যুবকটি নাকি উল্টো তার সাথেই দুর্ব্যবহার করেছে। সম্ভবত পাশে যে ভাই ছিল তা সে দেখেনি! যাই হোক ব্যাপারটা দুর্ঘটনা হলে সেই যুবকের জন্য অসীম সমবেদনা আর না হলে ঠিকই আছে। এমনিতেই নারীর প্রতি সহিংসতা অনেক বেড়ে গেছে দেশজুড়ে। এভাবে জনবহুল পাবলিক প্লেসে একটা মেয়েকে অসম্মানিত করা অবশ্যই ভীষণরকম শাস্তিযোগ্য অপরাধ!

আপনার ভালো লাগায় প্রীত হলাম। অজস্র ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.