নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরমান অরণ্য লিংকন

আরমান অরণ্য লিংকন

আমি স্বপ্নে বিশ্বাসী নই...আমি বিশ্বাস করি লক্ষে, বিশ্বাস করি দৃঢ়তায়।প্রতিবাদ আমায় আকৃষ্ট করে, মনোরঞ্জন নয়।আমার ফেসবুকঃ https://www.facebook.com/arman.aronno.lingkon

আরমান অরণ্য লিংকন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভেতরের সূক্ষ্মকোণে দীর্ঘশ্বাস....

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪

কৃষ্ণচূড়ার একটা অদ্ভুদ নেশা ধরানোর ক্ষমতা আছে।



আমার নানার বাড়ির পাশ দিয়েই যমুনার এক নাম না জানা শাখা চলে গেছে, পাড়েই ছিল মাঝারী সাইজের একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ। ছোটবেলায় আমি একা একা সেই কৃষ্ণচূড়ার নিচে যেয়ে বসে থাকতাম। পাশের পাটক্ষেতের ওপর ছুটোছুটি করা বাতাসের ফিসফিস কথা বলা, নদীর ব্যাস্ত হয়ে বয়ে চলার কলকল শব্দ, ভাত শালিকের লম্ফঝম্ফগুলো আজও খুব মনে পড়ে। প্রকৃতিকে মনে হত খুব কাছের ভালোবাসার কেউ। মাটির গন্ধ মেখে উড়ে আসা উদ্ভ্রান্ত বাতাসকে বুক ভরা নিশ্বাসে শরীরের প্রত্যেক কোষে মিশিয়ে দেয়াকে আর কি দিয়েই বা তুলনা করা যায় ?



কৃষ্ণচূড়াটি এখন নেই, নদীটিও শুকিয়ে গেছে, পাটক্ষেতটা থেকে এখন ভেসে আসে টিএসপি, ইউরিয়ার আর কীটনাশকের তীব্র গন্ধ। ঢাকায় অনেকদিন ভাতশালিক দেখি না। গ্রামে আজও দেখা যায়, কিন্তু আগের চেয়ে ওরা অনেক ভীতু হয়ে গেছে। আকাশটাকে এখন বড় ধূসর মনে হয়, নীলটাকে বাঁচিয়ে রাখতে এখন আমি ফটোশপ ব্যবহার করি। প্রকৃতিকে আলিঙ্গন করতে বড় ইচ্ছে হয়, কিন্তু প্রকৃতি এখন যে আমায় ঘৃণা করে ! থুতু ছিটিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় আমায়। আমার ঘরের জানালা দিয়ে ভেসে আসা মাইক, হর্ন আর কার্বন মনোক্সাইডকে বুকে জড়িয়ে বেঁচে আছি নর্দমার কীটের মত।



অনেকদিন রাতের বেলায় নদীর পাড়ে শুয়ে খোলা আকাশে ধুমকেতু খুঁজি না, হয়তো সেই যোগ্যতা এখন আর নেই।



হয়তো ছোটবেলার সেই সৃতিগুলো পুঁজি করে একদিন প্রকৃতিকে নিয়ে একটা উপন্যাস লিখব আমি, কিন্তু আমার সন্তান কাকে নিয়ে লিখবে? আইফোন বা মার্সিডিজের কারখানা তৈরির ইটের ভাঁটা আর ন্যাড়া বনের পাশের স'মিল অথবা ট্যানারির গন্ধে নাকে রুমাল পেঁচিয়ে শীতলক্ষ্যার পাশে দাঁড়িয়ে ওর হাতের কলম থেকে উপন্যাসের শব্দ বেরুবে তো ? প্যানাসনিকের এসি পারবে তো ওকে একটিবার বুকভরা নিঃশ্বাস এনে দিতে ?



আমার বারান্দার শীর্ণ টবে একটা অর্কিড ফুটেছে, মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখছি......

আহ, কতদিন শিউলি ফুলের ঘ্রাণ পাই না !!!

একটা টবে শিউলি ফুলের গাছ আঁটবে তো ? নাকি আমার সন্তানকে একটা শিউলির সুবাসযুক্ত এয়ার ফ্রেশনার কিনে দেব ?



কৃষ্ণচূড়ার চারা লাগিয়ে আর কি হবে? একটা ফটোগ্রাফ কিনে ড্রয়িং রুমে লাগালেই বরং ঘরের শোভাবর্ধন হবে বোধকরি....

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কথাগুলো ছুঁয়ে গেল ভ্রাতা +++
ঈদের শুভেচ্ছা রইলো :)

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

আরমান অরণ্য লিংকন বলেছেন: ধন্যবাদ, ঈদ মুবারাক

২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৪২

মামুন রশিদ বলেছেন: সবুজ বেঁচে থাক আমাদের জীবন আর মননে । সুন্দর লেখা ।

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:১২

আরমান অরণ্য লিংকন বলেছেন: ধন্যবাদ, ঈদ মুবারাক

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৫৮

কিছুটা অসামাজিক বলেছেন: একটা ফটোগ্রাফ কিনে ড্রয়িং রুমে লাগালেই বরং ঘরের শোভাবর্ধন হবে বোধকরি.... .।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।

৪| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: মনুষগুলোও একদিন যন্ত্রিক হয়ে যাবে । তখন তারা যন্ত্র নিয়ে উপন্যাস কবিতা লিখবে । :( :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.