শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, গুচ্ছ পদ্ধতি ও সিলেটবাসী

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:০৩

খবর / গুজব পড়ে আমার প্রথম পোস্ট এবং ফেইসবূক কথোপকথন ঃ



জাফর ইকবাল স্যার পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু কি জন্যে করেছেন সেটা উনি স্পষ্টই বলে দিয়েছেন উনার পদত্যাগ পত্রে। উনি এটাও উল্যেখ করেছেন যে কিছু বাম পন্থিদের যোগসূত্রে যেখানে শিক্ষামন্ত্রী অর্থমন্ত্রী জড়িত উনার বিশেষ ভর্তি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন হয়নি।

আর আমাদের আরিফ মেয়র একটা বর্ণবাদ আঞ্চলিকতাবাদী সংগঠনের সাথে তাল মিলিয়ে কিভাবে ৫০% কৌটার দাবি করেন তা আমার বোধগম্য নয়। আর এখানেই আমাদের মতো সিলেটীদের আপত্তি । একটা সংঘটনের অযৌক্তিক দাবিকে যদি সিলেটীদের দাবি বলে সমগ্র সিলেটবাসীদের হেয় করা হয় তাহলে আপনারা কিসের গন্ধ পাচ্ছেন?? এটা কি নন সিলেটীদের আমাদের প্রতি আজীবন হিংসার নিমিত্ত বাসনা নয়?? অন্য দিকে আর এক প্রকার ননসিলেটী আছেন যারা সিলেটীরা বায়ু ত্যাগ করলে এটাকেও টর্নেডো বানাতে বদ্ধ পরিকর।



কেন উনাদের এতো হিংসা? সেটা নিয়ে একটু বলা দরকার। সিলেটী / নন সিলেটী। কোথাও কি শুনেছেন নোয়াখালী/ নন নোয়াখালী। ঢাকাইয়া বা নন ঢাকাইয়া?! না নেই... কারন একটাই সিলেটের ঐতিহ্যবাহী প্রাচুর্যে ভরা ইতিহাস। এটাই সিলেটকে আর বাকি বাংলাদেশ থেকে আলাদা করেছে ... চলন বলন আন্তরিকতায় আর ঐশ্বর্যে বলেন সবকিছুতেই। আর এজন্যেই সিলেট বাবার ওই সৎ ছেলের মতো। ১৯৪৭ এ যখন সিলেট ইন্ডিয়ার সাথে না যেয়ে পূর্ব পাকিস্তানেই থেকেছিল তখন থেকেই এই বিমাতা সুলভ আচরন। সিলেটই একমাত্র জাতি বা অঞ্চল যারা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কাদের সাথে যাবে।



আমি ঢাকায় পড়াশুনা করেছি ।আমার স্বভাব চালচলন সবকিছুতেই আভিজাত্য ছিল। এটা আমার দোষ নয়। তাও উনারা দেখতে পারতেননা। আজ লন্ডনে আছি। আমাদের সিলেটীদের দারা উপকৃত হয়ে আবার সিলেটীদের গোয়া মারেন !এসবের মানেটা কি। মানে হল উনারা হিংসিত।



কোথাও দেখেছেন কোন সিলেটী নাট্যকার অন্য কোন জেলার সংস্কৃতি কালচার নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপাত্তক নাটক করেছে?? কিন্তু উনারা করেছেন আর করে যাবেনও। ইতিহাস আর কালের আবহে দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত মানুষেরা কিছুটা হীনমন্যতায় ভুগবেন এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সুনির্দিষ্ট ভাবে একই জনগোসটিকে এত আঘাত কেন???!!



Imtiaz Mirza নামের একজন আছেন। উনার লিখাতে আমি প্রায়ই লাইক দেই কারন উনার মতো আমিও দেশের রাজনীতি নিয়ে অভিন্ন ধারা বা একই মত পোষণ করি । তবে আজ জাতীয়তাবাদী প্রস্নে উনার স্ট্যাটাস দেখে অবাক হলাম। সত্যিই উনার লেঞ্জা দেখা দিল বলে।



উনার স্ট্যাটাস এর কিছু অংশ এবং আমার মন্তব্য ফ্রম Imtiaz Mirza:



‘’একটা জেলায় একটা বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেই সেটার ৫০% কোটা সুবিধা সে জেলার লোক পাবে - এমন হাস্যকর দাবী শুধু সিলেটিদের পক্ষেই করা সম্ভব । বলাবাহুল্য

শিক্ষিত হিসাবে সিলেটিদের খুব সুনাম কোন কালেই ছিলো না । লন্ডনি পয়সায় লাফঝাপ দেয়া - আর মননে শিক্ষিত হওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার ।

(যদিও বাংলাদেশের সবচে প্রগেসিভ অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সিলেটি - তবে তাকে হিসাবের বাইরে রাখতে হবে - কারন মাল মুহিতের মতো ছাগল অর্থমন্ত্রী হয়ে - তাকে ক্যান্সেল করে হিসাব সমান করে ফেলেছে )

এইরকম একটা অযৌক্তিক দাবী করে - তারা দেশেবাসীর সামনে ভাড় হিসাবে নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরলেন’’



Atistic Biplob: @ I like your writings.it does nt mean that everything u write we will follow that... one organisation's demands does nt represents whole sylhets ... and what do you know about sylhety's contribution towards education??..just go and ask the google he will tell u everything...u r demanding urself educated but here u r just saying all bullshits...

3 hours ago • Like • 2



Imtiaz Mirza: Atik Aslam Atistic Biplob আমি আঘাত দেবার জন্যই লিখেছি - কারন হলো আঘাত না পেলে ৫০% কোটার মতো নোংরামীর বিরুদ্ধে আপনারা সিলেটবাসীরা দাড়াবেন না ।

আশাকরি আমার অবস্থানটা বুঝতে পারবেন

2 hours ago • Like • 1



Atistic Biplob :50% er jonnei ki jafor sir shudhu podotyag korechen?? naki onnokichu ?? unar podoteag potre shei kotha (bampontihder) sposhto ullekh kora ache..othocho shobai ei bepartakei eriye jacche...ekhon kichu bolen??!!!

2 hours ago • Like • 1



Imtiaz Mirza: Atistic Biplob না ৫০% এর জন্য করেননি - - আমি তো ষ্ট্যাটাসেই সেইকথা লিখলাম -- ৫০% এর জন্য পদত্যাগ করেন্নি --- কিন্তু ঐ ইস্যুতাকেও আমাদের আলাদা ভাবে এ্যাড্রেস করতে হবে



Atistic Biplob: আপনি আঘাত দিবেন ভালো কথা ...কিন্তু এটা তো অপঘাত। মিথ্যা একটা উদাহরন দেবেন এটা কি মানা যায়?? মানলাম গড় শিক্ষার মান সিলেটীদের অন্যান্য জেলার তুলনায় কম। কিন্তু দেশ বিদেশের সব হাই প্রোফাইল জব গুলো কারা করছে?? এই সিলেটীরাই। সাইন্টিস্ট চিকিৎসক উদ্দ্যক্তা কোন ক্ষেত্রে নাই। বলেন?? আর সাইফুর আবুল মালের উদাহরন দিলেন... ! তাহলে বলবো আপানার কোন আইডিয়াই নেই। এই সিলেট থেকেই বিগত হাসিনা সরকারের আমলে (১৯৯৬-২০০১) ৪/৫ জন মিনিস্টার হয়েছিলেন। প্রশাসনের , আর্মির সর্বচ্চ পর্যায়ে যান দেখবেন সিলেটীরাই বসে আছে। আর মুক্তিযোদ্ধ!! সিলেটীরা কি করেছে সে তো এক কালজয়ী ইতিহাস। যাইহোক উল বনে মুক্ত ছড়ানো আমার কাজ নয়। আপনি যে একজন রেসিসট তার প্রমান দিলেন।@Imtiaz Mirja



এই সংক্রান্ত ধারাবাহিকতায় আমার ২য় পোস্ট্,ঃ



Sylhet Meyor (আরিফুল হক চৌধুরী) এর বক্তব্য



''গত ১০ই মে যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে জাফর ইকবাল সাহেব প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন তিনি এ অঞ্চলের শিক্ষার্থিদের জন্যে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সহজতর করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। এবং যার ফল হিসেবে এই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি। এই পরিক্ষার মাধ্যমে যশোর ও কাছাকাছি অঞ্চল থেকে ছাত্রছাত্রিরা যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে ২৬ বছর পুরনো ঐতিহ্যবাহী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে পরীক্ষা দিতে পারবে। এবং সিলেটের শিক্ষার্থিরা ৬ বছর পুরনো সদ্য প্রতিষ্ঠিত যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে পরীক্ষা দিতে পারবে শাহজালালে বসে (যার সম্ভাবনা একদমই ক্ষিন।) ব্যাপারটি আরও নিশ্চিত হলাম প্রিয় ডট কম কে দেয়া জাফর ইকবাল স্যারের সাক্ষাৎকার পড়ে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যেখানে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহি বা জাহাঙ্গিরনগরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিক্ষা পদ্ধতি একরকম সেখানে ঐতিহ্যবাহী শাহজালাল বিজ্ঞ্যান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে শিশু সম যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিক্ষা এক সাথে বা অন্যরকম কেন হবে? তাছাড়া সিলেটি হিসেবে স্বার্থের মাপকাঠি তে বিচার করলে এ পরিক্ষা পদ্ধতির বিরোধিতা করাটা যথেষ্ট যৌক্তিক বলে মনে হবে। আর ৫০% কোটার ব্যাপারে যা জানলাম তা হল এটি একটি “অন দ্যা স্পট” কথার সাথে বার্তা ছিল। এমন কি এধরনের কোনও দাবী স্মারকলিপিতে পর্যন্ত উল্ল্যেখ নেই। এটি একটি প্রপ্যাগান্ডা ছাড়া আর কিছু নয়। অবশেষে মনে হল যে চিলে নিয়ে যাওয়া কান ফিরে পেলাম। শুধুমাত্র জাফর ইকবাল স্যারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা যোদি একটি পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রধান কারণ হয় এবং একটি অঞ্চলের শিক্ষ্যার্থিদের ক্ষতির কারণ হয়। তবে সেই অঞ্চলে আমার জন্ম হিসেবে আমি অবশ্যই এই পরীক্ষা পদ্ধতির বিরোধিতা করি। ধন্যবাদ জানাই সেই প্রতিনিধি দল কে।''



অন্য একটি পোস্ট..(বহ্নি শিখা)

''শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেটের শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা চাওয়ার বিষয়টি সিলেট বিদ্বেষীদের নিছক একটি প্রপাগান্ডা বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতারা। তারা জানান, কোটা চাওয়ার বিষয়টি সিলেটবাসীর দাবির মধ্যে ছিল না।

তারা বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ত্রুটির বিষয়টি তুলে ধরে তারা এ পদ্ধতিতে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি বৈষম্যমূলক হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও বিষয়টি বাতিলের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল সিলেট বিদ্দেষী মহল শাবিতে সিলেটের শিক্ষার্থীদের জন্য কোটা চাওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে দিয়ে আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

তারা আরো বলেন, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বৈঠক চলাকালে গুচ্ছ পদ্ধতি বাতিল দাবি করা হয় কিন্তু কোন কোটা চাওয়া হয়নি, এটা অপপ্রচার।''



আমার বিশ্লেষণ।।



উপরোক্ত দুটি পোস্ট পড়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। আমরা সিলেটীরা যদি আমাদের নিজ স্বার্থের ব্যাপারে সজাগ না থাকি কেউ কি মুখে তোলে ভাত দিবে??

এই পোস্টগুলির পক্ষে বিপক্ষে দুদিকেই বলার আছে। একজন সিলেটী হিসেবে প্রোপাগান্ডায় নিজেকে না ডুবিয়ে বরঞ্ছ কুচক্রীদের আসল উদ্দেশ্য কি তা খুঁজতে হবে।



গুচ্ছপদ্ধতি এমন এক পদ্ধতি যেখানে দুটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভর্তির সমন্বিত পরীক্ষা। শাহজালালে বসে যশোর এর পরীক্ষা আর যশোরে বসে শাহজালাল এর পরীক্ষা দিতে পারবে।এটাই জাফর স্যার এর পদ্ধতি। জাতীয় স্বার্থে ভালো কথা। কিন্তু আমি যখন সিলেটী তখন আঞ্চলিকতাই আমার কাছে প্রাধান্য পাবে বেশি। সিলেটীরা জাতিগতভাবেই বাইরে যেতে বিমুখ। যশোরে যদি সিট পায় ও তবুও যাবেনা। দোষ বলেন আর গুণ বলেন এটাই বাস্তবতা। আর যশোর এর কথা সম্পূর্ণ উলটো। এখন হয়তোবা মেধা অনুসারে (ধরে নিই ২০%) সিলেটের পুলাপাইন সিলেটেই পড়ছে কিন্তু এই পদ্ধতি বাস্তবায়নের ফলে এটা ১০ % এ চলে আসছে। ক্রস কন্ত্রায় সিলেটীদেরই ক্ষতি হচ্ছে।এই গেল এক ব্যাপার।

একটা স্বায়ত্ত শাসিত পুরনো বিশ্ববিদ্যালয় কেন অন্য একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে মান ,ঐতিহ্যের বিবেচনায় আপোষ করতে যাবে?? যেখানে অন্য বিশ্ব বিদ্যালয় গুলো স্বাধীন।?!



জাফর স্যার। শ্রদ্ধা রেখেই বলছি। উনি কোনদিনই সিলেটের স্বার্থে কথা বলেছেন বা বলবেন এটা আমি বিশ্বাস করিনা। আরিফ ভাইয়ের বিবৃতি যদি সত্যি হয় তাহলে জাফর স্যার এর উদ্যেশ্য বুঝা কঠিন কিছুনা । উনি যশোর বাসীকে কথা দিয়েছেন যেকোনো মুল্যে উনি এই সুযোগ করে দিবেন, এই ''যেকোনো মুল্যে'' কথার মধ্যে আমরা আটকে যাই। ব্যস মামলা খতম। যার ফল উনার পদত্যাগ। উনি ভালো করেই জানেন পদত্যাগের ফল কি হবে?? ফল তো আপানারা পেয়েই গেলেন ইতিমধ্যে। এটা উনার সুদূর পরিকল্পনাপ্রসুত। শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় এর ত্রুটি ধরতে পেরেছেন বলেই বাধা দিয়েছিলেন। কারন উনিও তো সিলেটী।! ঠিক কি না?? কোন সিলেটী তো সিলেটের সর্বনাশ করবে না, কেন আমরা এই সত্যটা ভুলে গেলুম।??



৫০% কোটা নিয়ে যে গুজব এর পিছনে কারা সেটা এখন খুজে বাহির করতে হবে।সেই আদ্যিকাল থেকেই উনাদের ইয়েতে চুলকায়... এটা পরিস্কার।

এই গুজবকে কেন্দ্র পুরো সিলেটবাসীকে হেয় করার প্রতিবাদ জানাই।

০ টি +০/-০