বন্ধু তোরা কেমন আছিস।?

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৮

বন্ধুরা ১



অদ্ভুত সুন্দর দিনগুলি । দুপুর গড়িয়ে বিকেল । তারপর স্নিগ্ধ সিনান। মাথায় চিরুনি । পছন্দের সযত্নে লুকিয়ে রাখা জিন্সের প্যান্ট। কাড়াকাড়ি করে জুটানো মেইড ইন ইউকে বুট । কষ্টের জমানো টাকা দিয়ে কেনা পারফিউম । আর জ্যাকেট সেটা তো ছিল বাধ্যতামূলক । সবাই উত্তেজিত । কি যেন কিসের শঙ্কায়। হাউজিইং এস্টেট এর ভাঙ্গা ছাঁদে । সিঁড়ি ভেঙ্গে । হাসাহাসি । লুটোপুটি।টাংকি। অলে অলে । পাশের বিল্ডিং । সুন্দরীদের ভিড় । কার কাছে কে বা যাই কার ফাঁদে কে বা লুকাই, ওহো সুদর্শন খুঁজে সুদর্শনা । মাঝে মাঝে আবার উত্তেজনা।। বিপদের গন্ধ । বারুদের গন্ধ। বন্ধু সে তো বিপদে। জানিনা, বুঝিনা, ভাল করে শুনিওনা।। সবাই শুধু ছুটি । হোন্ডায় ভুতা যান্ত্রিক শব্দ । ভু ভুউ । হুড়াহুড়ি । পুড়িয়ে ছাই করে ফেলব। রক্ত চাই । লাল রক্ত। ভীষণ লাল।



ভো ভো ছুটে যাই । পাশের পাড়ায় । কিছুক্ষন । গুলাগুলি... ছুটোছুটি ... তারপর আবার হাপিত্যেশ । শালাদের শুধু ধরতে পারতাম !... রাত হয়ে যায়। সবাই ব্যস্ত পড়াশুনায়। শুধু... কিছু পুলাপাইন । ভাঙ্গা ছাঁদে । নারকেল গাছের আশেপাশে। প্রচণ্ড রকম চেষ্টায় । কিভাবে ওগুলো যায় খাওয়া । কবির , তুই উঠে পর । অতঃপর আওয়াজ । সবাই পালায় । শুধু একজন থেকে যায় । সেই কবির !! ফাহিয়ান... তওহিদ...জাভেদ...লুকমান...জাকু... মাসুম...নাসিম...খালেদ...জুওেল...গাদ্দাফি...আফসার...।।

এই তোরা শুনছিস ।।তোরা কি এখনও শুনতে পাস সেই হাতছানি?? মনে পড়ে শুধুই ...মনে পড়ে।।



আবারও ছুটোছুটি। আবারও নারকেল গাছের মাথায় উঠি। সেই আওয়াজ।। কে রে। আমার গাছে।? সবাই পালায় । দৌড়ায় । ভীষণ দৌড় । দিকবিদিক দৌড়। অলিম্পিক এর দৌড়। এখন... আর কেউ থাকেনা গাছের আগায়। থেকে যায় হতভাগা সেই সব সৃতি। হারিয়ে যাওয়া সৃতি। এই বন্ধুরা ... তোরা কি আমাকে মনে রেখেছিস?? আমি বলি , কথা তুই সৃতি । সৃতি তুই নিথর হয়ে যা... সৃতি নিথর হয়না। পাথরের মত স্তব্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বলে কথা।। সৃতি থেকে রোমন্থনে ।



বন্ধুরা ২



গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম দুপুর । স্কুল বন্ধ । পিরমহল্লার রাস্তা দিয়ে হাটি। ছায়ার সাথে কথা বলি। পেছনে টুংটাং। রিকশাওালারা ও বদ। একটু মন দিয়ে যে হাঁটবো তার ও উপায় নেই। কুয়ারপারের মোড় । বাক নেই। আর বেশি দূরে নেই। একটু পেরুলেই ওদের দেখা পাব। হাউজিন এস্টেট এর ব্রিজ দেখা যায়। ওদের কেও নেই। বিফল মনরথ।

হিসেব কষা । একটু সামনে যাই। অনেকক্ষণ হাটায় গায়ে অশস্তি। বাসায় কড়া নাড়ি। ভেতর থেকে কারো গলা ...ও বাসায় নেই। সন্দেহ দানা বাধে ও তো বাসায়ই থাকার কথা। শালা মনে হয় ফাঁপরে আছে। ছাত্র খুব ভাল তো ! আরও দু একটার ঘরে যাই। একই দশা। মাথার উপরে সূর্য। কি আর করা । উলটো হাটি। গন্তব্য মজুমদারি। বিকেল হলে আবার জড় হই... দিনের পোস্ট মরটেম করি। শালার সে কি হাসাহাসি। ফাঁপর সমাচার ।

আজ ও তোদের খুঁজি। আড্ডা দিবো। অস্ত্রেলিয়া যাই... বাংলাদেশ যাই...মানচিত্র থেকে গলা আসে,বন্ধু সময় নেই... সুখে আছি তবে আগের সেই ফাঁপর নেই...।



বন্ধুরা ৩



ক্ষুদ্র ভুবন, ঘুম থেকে উঠে সকালের পড়াশুনা শেষ করে বেলা গড়াতেই হাটা দিই , কমলা বাগানের গলিতে ,উদ্দেশ্য প্রিয় বন্ধু জুয়েলের বাসা, ডাকাডকি,নাহ ও তো বাসায় নেই। অগত্যা লম্বা লম্বা পা ফেলে হেটে চলি গন্তব্য hosing estate এ। বিশ পঁচিশ মিনিট তো লেগেই যায়। ব্রিজের অপারে প্রিয় মুখ গুলো দেখা যায়। ফাহিয়ান,তওহিদ,মাসুম,কবির,নাসিম,জাবেদ,লুক্ মান আরও অনেক কেই ।একঝাক ভুবন,এক ঝাঁক আনন্দ, অসংখ্য গপ্লগুচ্ছ ,আড্ডা যেন শেষ ই হতনা।। আজ আমি বন্ধুহীন, কারো বাসায় গিয়ে ও ডাকাডাকি করিনা।।ওঁই প্রিয় বন্ধুরাও আজ নেই। অথচ আজ পরিসর কতই না বড়, আনন্দ ঘন সেই মুহূর্ত গুলো বড় পরিসরে কেবল অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েই খুঁজি। বন্ধুরা তোরা কেমন আছিস?? ভাল তো !!

০ টি +০/-০