![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘটনাটা আমার এক আঙ্কেলের কাছে শোনা,
উনার নাম মফিজুর রহমান । উনি ১৯৭১-এ
যুদ্ধ করেছেন । যুদ্ধ শেষ হবে এমন সময় কোন
একটা অপারেশনে উনাদের একজন
যোদ্ধা সাথী মারা যান কপালে গুলি খেয়ে,
যার নাম সফি উল্লাহ্ । কয়েকদিন বাদেই
যুদ্ধ শেষ হলো । আঙ্কেল ঠিক করলেন
সফি উল্লাহ্র বাড়িতে যাবেন উনার মৃত্যুর
খবর দিতে । সফি উল্লাহ্র কিছু ব্যক্তিগত
চিঠি থেকে উনার স্ত্রীর ঠিকানা জোগাড়
করা হলো । জায়গাটা বাগেরহাটের খান
জাহান আলীর ষাট গম্বুজ মসজিদের
আশেপাশে কোন একটা গ্রাম ।
কোন একদিন আঙ্কেল রওনা দিলেন,
একে তো রাস্তার অবস্থা খারাপ তারপর যুদ্ধ
পরবর্তী অবস্থা । অনেক কষ্টে সন্ধ্যায়
গিয়ে পৌঁছালেন ওই গ্রামে, মানুষ
জনকে জিজ্ঞেস করে সফি উল্লাহ্র বাড়িও
খুঁজে পেলেন । ছনের কুঁড়ে ঘরের মত ছোট্ট ঘর,
বাইরে থেকেই দেখলেন ভিতরে কুপির
আলো জ্বলছে । উনি সফি উল্লাহ্র স্ত্রী ও
মেয়ের সাথে দেখা করলেন আর তাদের
জানালেন মৃত্যুর খবরটা । খবরটা শুনে ওদের
মধ্যে কোন ভাবান্তর হলো না । সফি উল্লাহ্র
স্ত্রী বলল হঠাৎ “আপনি অপেক্ষা করেন
উনি আইসে পরবিনে ।” আঙ্কেল বুঝতে পারলেন
না, ভাবলেন ওদের কোন আত্মীয়র কথা বলছে ।
রাতের খাবার তিনি ওখানেই খেলেন,
পরে বাইরে উঠানে সিগারেট ধরালেন আর
সারাদিনের কথা চিন্তা করলেন । কেন সফির
স্ত্রী আর মেয়ে কোন রকম কান্নাকাটি করল
না, কেনই বা এরকম ভাব করল । তখনই হঠাৎ
একটা কণ্ঠস্বর বলল আরে মফিজ ভাই কেমন
আছেন ? কণ্ঠস্বর শুনেই আঙ্কেল বুঝেছিলেন
এটা সফির গলা । অন্ধকারে সফির অবয়বটাও
ভালোই বোঝা যাচ্ছে । তিনি আর
অপেক্ষা না করে পিছনের মাঠ
দিয়ে দৌড়াতে লাগলেন । পালানোর সময়
পিছন দিক দিয়ে বিকট আর অদ্ভুত আওয়াজ
পাচ্ছিলেন, এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান
হয়ে যান । সকালের দিকে জ্ঞান
ফিরলে তিনি দেখেন তিনি খান জাহান আলীর
দীঘির পাশে পড়ে আছেন । আশেপাশে লোকজন,
তিনি সবাইকে ঘটনা খুলে বলেন ।
ওরা জানায় কিছুদিন আগে পাকিস্তানিরা ওই
বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় আর মা ও
মেয়ে মারা যায় ।
উনি পরে গিয়ে ওখানে কোন
বাড়ি দেখতে পাননি । যেই লোক বাড়ির পথ
দেখিয়েছিল তাকেও পাননি খুঁজে ।
পড়ে তিনি ফিরে আসেন ।
** সফি উল্লাহ্ একটা অপারেশনে মারা যান,
উনার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি ।*
©somewhere in net ltd.