![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গভীর রাত। মাথায় ভয়ংকর ভূতের কাহিনী এসে তোলপাড় করছে।
জানালার পাশে টেবিল, তার ওপর টেবিল ল্যাম্প। একখন্ড সাদা কাগজ নিয়ে লিখা শুরু করলাম। একচোটে লিখে ফেললাম গল্পটি। তারপর যখন পড়তে শুরু করলাম তখন ভয় ভয় লাগছিল আমারই। গল্পটা অসম্ভব ভয়ংকর হয়ে গেছে।
মনে মনে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে গল্পটা সাইজ করতে লাগলাম।
হঠাৎ জানালার ধারে হিস্ হিস্ শব্দ! মনোযোগ দিলাম না। কিন্তু শরীরটা কেমন ঝাড়া দিয়ে উঠল। একে তো ভয়ংকর ভূতের গল্প লিখে ভয় ভয় করছিল তার ওপর আবার হিস্ হিস্? তাকাতে ইচ্ছে করল না।
একটু পরে মোটা গলায় প্রশ্ন- ’কী লিখছিস?’
চট করে মাথা তুলে জানালার দিকে তাকাতে চেয়েও আর তাকাইনি, গল্পের দিকে চোখ রাখলাম।
আবার ধমকের সুরে বলল, ’কী, কথা বলছিস না যে! কী লিখছিস, বল।’
আপন মনে জবাব দিলাম, গল্প লিখলাম, একটা ভয়ংকর ভূতের গল্প।
ভয়ংকর ভূতের গল্প? ভূত দেখেছিস?
মাথা নেড়ে বললাম, নাহ্, ভূত দেখিনি, আর ভূত দেখতে যাবো কোন দুঃখে। ভূত কি কোনো দেখার জিনিস!
গল্প লিখছিস ক্যামনে?
আরে বাবা, দেখিনি বলেই তো লিখতে পারছি। হাজার রকমের ভূত! হাজার রকমের রং-রূপ, হাজার রকমের কাহিনী! মহা ভয়ংকর, মহা পাজী ভূতের গল্প!
যদি দেখতিস?
সেদিনই লেখার ইতি টানতে হতো।
কেন?
আহ্হা রে কিচ্ছু বুঝে না। আমার কল্পনাগুলো শুধু দেখা ভূতের মধ্যেই খালি হাবুডুবু খেতো, এর বাইরে যাওয়াটা খুব কঠিন হয়ে যেতো না আমার?
আমি ভূত, আমি কি তোর সামনে আসবো?
আমি একটু থতমত করে বললাম, না, না, না, ভুল করেও না। কোনোদিন না।
কেন?
কেন আবার, তুমি কি চাও না আমি ভয়ংকর ভূতের গল্প লিখে নামকরা ’ভূত-লেখক’ হই? তুমি কখনও আমার সামনে এসো না ভাই, প্লিজ, এুনি চলে যাও এখান থেকে।
ঠিক আছে। তবে তোরা মানে ভূতলেখকেরা ভূত না দেখে, ভূত সম্পর্কে না জেনে যেভাবে আমাদের ভয়ঙ্কররূপে তুলে ধরছিস, এতে আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। তোদের কারণেই সবাই আমাদের খারাপ জানে, ভয় পায়। নাম শুনলে বুকে থুতু মারে, ভয়ে টাশকি খেয়ে পড়ে যায়। তারপর ওঝা-বৈদ্য এসে আমাদের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করে। তোরা আমাদের গোটা মানবজাতির শক্রুতে পরিণত করে ফেলেছিস। আমরা কি সবাই খারাপ? তোদের মধ্যে যেমন ভালো-মন্দ মানুষ আছে আমাদের মধ্যেও তেমন ভালো-মন্দ ভূত আছে। আর আমাদের মধ্যে ভালো ভূতের সংখ্যাই বেশি। কই, তোরা ক‘জন ভালো ভূতের কথা লিখেছিস? তোরাই আমাদের মানবসমাজে অসভ্য আর বিপজ্জনক করে তুলেছিস। আমরা বিপদে পড়েও মানুষের কাছে এসে ঘেষতে পারি না। সুযোগ পেলে মানুষেরা আমাদের বদনাবন্দী করে গরম পানি ঢেলে সেদ্ধ করে ফেলে। অথচ আমরাও চাই মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে। কিন্তু পারি না। এতে তোদের ওপর আমরা কতটা নাখোস তা অচিরেই টের পাবি।
একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বললাম, আরে বেটা আমরা হলাম গিয়ে লেখক। আমরাই তোদেরকে এ জগৎসংসারে ভয়ঙ্কর করে তুলেছি। তোদের নাম শুনলে ধনী-গরিব, শিশু-বুড়ো, রাজা-প্রজা, দুর্বল-পালোয়ান ভয়ে অস্থির হয়ে যায়, এটা বুজি যুৎ লাগছে না; বাড়াবাড়ি করলে তোদের এমন দুর্বলসেন বানিয়ে ছেড়ে দেবো যে, যেখানে যাবি সেখানেই খাবি মাইর। মাইর খেতে খেতে ছাতু হয়ে যাবি। তারপর বুঝবি লেখক কী জিনিস।
ভূতটা রেগে-মেগে ফুঃ ফাং, ফুঃ ফুঃ শব্দ করে আমাকে বলল, তোর ঠিক পেছন দিক থেকে একটা লেজ গজাবে। লোকেরা তোকে দেখে ভুত, বানর, হনুমান বলে ছুটে পালাবে। কোথাও ঠাঁই পাবি না তুই। তখন বুঝবি ভূতের গল্প লেখার আসল মজা! কথাটা মনে রাখবি। গেলাম।
ক’দিন যাবৎ আমার শরীরটা মোটেও ভালো যাচেছ না। আমার পেছন দিকটায় টনটন ব্যথা করছে। হাত দিয়ে দেখি বাঁশের কোরলের মতো কী যেন একটা ঠেলে উঠছে। ভয়ে আমার জ্বর এসে গেল। এটা যে কীশের আলামত আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না!
২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৯
মানুষ তবে কী ? বলেছেন: হা হা হা, আসলেই লেখকরা খুব ডেনজারাস জীব
৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০০
কলমের কালি শেষ বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪২
নিলু বলেছেন: ভাবতে হবে