নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

বিএম বরকতউল্লাহ

জানতে চাই।

বিএম বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাক ও লাল কাঁকড়া

২৭ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৪


লাল কাঁকড়া দেখেই কাকের জিভে পানি এসে গেল।
কাঁকড়ার শরীর জবা ফুলের মতো টকটকে লাল। সামনের পা দুটো লম্বা ও শক্ত।
সাগরপাড়ে ভেজা বালুতে লাল কাঁকড়ারা গর্তের আশপাশে ছুটে বেড়ায়। কারো কোনো আভাস পেলেই ওরা পটাপট গর্তে ঢুকে পড়ে।
কাকটি লোভ সামলাতে পারল না। সে বলল, কাঁকড়াটি দেখতে যেমন সুন্দর-খেতেও হবে খাসা। আমি যাই না কেন তার কাছে!
যেই কথা সেই কাজ। সে উড়ে গিয়ে কাঁকড়াকে ঠোকর দিয়ে ধরল। ওমনি কাঁকড়া তার সামনের দুই পায়ে চিমটি দিয়ে ধরল কাকের মুখে। কাক হা করতে পারছে না। ভারি মুশকিল! কাক একবার পেছনে যায় আবার সামনের দিকে যায়। মাটিতে ঠোঁট ঘষায় কিন্তু কাঁকড়া তার চিপ ছাড়ে না।
উপায়হীন কাক কাঁকড়াসহ সোজা চলে গেল নিজের বাসায়। সেখানে কাকের দুটো ছানা খাবারের অপেক্ষায় হা-করে বসে আছে। কাক বাসায় গিয়ে বসতেই ছানারা হা-করা মুখ বন্ধ করল। ওরা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল লাল কাঁকড়ার দিকে। কাকড়া চিপ ছেড়ে দিয়ে বাসার এক কোনে বসে রইল।
কাকের ছানারা লাল কাঁকড়া দেখে বেজায় খুশি। ওরা বলে, মা, আমরা এটাকে খাব না; ও আমাদের সঙ্গেই থাক।
কাক বলল, হয় ওকে খেয়ে ফেলতে হবে, নয় ওকে তাড়িয়ে দিতে হবে। এই দেখ, ওর চিমটিতে আমার মুখ ফুলে গেছে।
এ কথা শুনে ছানারা খলখলিয়ে হেসে উঠল।
এমন সময় একটি পাখি উড়ে এসে বলল, এত সুন্দর মেহমান তোমার ঘরে। সত্যিই তুমি বড় ভাগ্যবান ।
ভাগ্য আমার চলে গেছে এই সুন্দর মেহমানের চিমটি খেয়ে, বলল কাক।
পাখিটি বলল, তবুও এমন সুন্দর অতিথি পাওয়া বড় ভাগ্যের ব্যাপার।
কাক বলল, তোমার ভাগ্য খুব দূরে নয়। ইচ্ছে করলে তুমি এখনই ওকে পেতে পারো। যদি সে তোমার সঙ্গে যেতে রাজি হয়।
পাখিটি আরেকটু কাছে গিয়ে কাঁকড়াকে বলল, সত্যি তুমি অনেক সুন্দর। তোমাকে অতিথি হিসেবে পেলে আমি ধন্য হই।
কাঁকড়া রাজি হয়ে গেল। সে কাকের ছানাদের আদর দিয়ে পাখিটির গলায় মালার মতো ঝুলে পড়ল। পাখিটি লাল কাঁকড়াকে নিয়ে উড়াল দিল।
সে তার পরিপাটি ও সুন্দর বাসায় গিয়ে উঠল। পাখিটি কাঁকড়াকে মজার মজার খাবার দিল খেতে। পেট ভরে খেল কাঁকড়াটি। আশপাশ থেকে ছুটে এল আরো কত পাখি। কাঁকড়াকে দেখে সবাই খুব খুশি। কাঁকড়ার সমাদরের শেষ নেই।
কাঁকড়া বলল, আমি তোমাদের আদর-আপ্যায়নে খুব খুশি। এবার আমাকে নিয়ে চলো সেই সমুদ্র সৈকতে যেখানে আমি থাকি।
পাখিটি কাঁকড়াকে নিয়ে চলে গেল সমুদ্রসৈকতে।
পাখিটি ফিরে যাওয়ার সময় অনেক পাখির সাথে দেখা হলো। তারা বলল, বাহ চমৎকার। তোমার গলায় এমন দুটি রঙিন দাগ আছে যা দেখতে অবিকল মালার মতো।
তারপর দেখা হলো সেই কাকের সঙ্গে। কাক পাখিটির গলায় রঙিন দাগ দেখে বলল, মনে হচ্ছে তুমি অলংকার পরে আছ। তোমাকে দেখতে বেশ লাগছে। আমি কাঁকড়ার রঙ-টঙ কিছুই পাই নি-মাগনা চিমটি খেলাম।
পাখিটি বলল, তুমি ঠকেছ তোমার কারণেই। তুমি এটাকে খাবারের জিনিস ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পার নি। লাল কাঁকড়ার যে রঙ ও রূপ তুমি তার মূল্য বুঝতে পার নি।
সেই থেকে সাদামাটা পাখিটির গলায় মালার মতো দাগ দেখা যায়। আর এই দাগের জন্যে এদেরকে সুন্দর দেখায়।
মাথা খাটিয়ে সেই পাখির নাম বলতে হবে তোমাদের।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:৩১

পদ্মপুকুর বলেছেন: ঈশপের গল্প সিরিজ ২?

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:১২

রাজীব নুর বলেছেন: কাক এবং কাঁকড়া দুটাই উপকারী।

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৩:০৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: খুবই সুন্দর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.