নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাজার বছরের পুরনো সেই রাতের পুরনো অনেক কাব্যিক কথা

বাকের ভাই রিটার্ন

আমি মনে করি নিজের সম্পর্কে লেখার মত বয়স,সময় বা যোগ্যতা কোনটাই আমার এখনও হয় নি ।তাই কিছু না লেখাই ভাল নয় কি ।তবে ব্লগে এসে একেবারে কিছু না লিখলে কেমন হয় ।আসলে নামটা দেইভাবে দেয়ার উদ্দেশ্য হল শুধু বাকের ভাই নামে তো অনেকেই আছে তাই শেষে রিটার্ন লাগিয়ে নিজে থেকে একটু ভিন্নতা দেয়ার ট্রাই করলাম ।তেমন ভাল কিছু আমার মাঝে নেই ।মারাত্মক বদরাগী আর ডানপিটে স্বভাবের ছেলে ।সত্যের ক্ষেত্রে নিজের বাপকেও ছাড় নেই ।এই তো অবসর সময়ে আসলে বর্তমানে সারাটা দিনই আমার অবসর বলে বিবেচিত ।সারাদিন ভার্চুয়ালেই কেটে যায় ।আর এটা ছাড়া কাজ বলতে আমার প্রিয় কিছু কবুতর রয়েছে তাদের সাথে দিনে তিনবার সময় কাটানো,খাবার দেয়া কিছুক্ষন খেলা করা ।এই তো ফেবু আর কবুতর এই নিয়েই আমার সারা বেলা ।আপ্তত এইটুকুই থাক ।সময়ে অসময়ে পরিবর্তন হবে বলে আশাবাদি ।

বাকের ভাই রিটার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:২৮

দু'পক্ষের প্রতিরক্ষা অবস্থানের দূরত্ব ১৫০ গজ মত, যেকোন সময় গোলাগুলি আরম্ভ হবার জোর সম্ভাবনা। হৃদপিন্ডের ধুকধুকানি ছাড়া কোথাও কোন শব্দ নেই...!



হঠাৎ এক বিশালদেহী পাকিস্তানি সৈনিক ডানহাতে এসএমজি'র ব্যারেল, কাঠের স্টক বাট বাম হাতে ধরে মাথার ওপর হাত উঁচু করে ধরে দাঁড়িয়ে গেল।



নিস্তব্ধতা ভেঙে চিৎকার দিয়ে উঠলো - ‘হ্যায় কোয়ি মা কি লাল? মা কি দুধ পিয়া হো তো বেগায়ের হাতিয়ারকো সামনে আ যাও’ (আছো কোন মায়ের ছেলে? মা'র দুধ যদি পান করে থাকো তাহলে বিনা অস্ত্রে সামনে এগিয়ে এসো)!



কথা শেষ করেই আধপাগল পাকিস্থানি হাতের এসএমজি টা একদিকে ছুড়ে ফেললো, একটানে খুলে ফেললো ইউনিফর্ম আর ছুড়ে ফেললো অন্যদিকে। খালি গায়ে এক পা দু'পা করে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের দিকে এগিয়ে আসতে থাকলো ঐ সেনা...



লুঙ্গিপরা উদাম দেহের 'তাগড়া' আর সইতে পারলেন না। মায়ের দুধের খোটা তুলে এই বাংলায় হানাদার সেনা ফিরে যাবে বিনা মোকাবেলায়, তা হতে পারে না!!



হঠাৎ দাঁড়িয়ে লুঙ্গির কোঁচা গোছাতে গোছাতে তাগড়া বললেন - ‘মরদো(লোকটা) মনে হরছে কি? বাঙালীগো মইদ্যে কি কেউ নাই যে, ওর লগে বোজদে পারে! মেবাই, তাগড়া'রে আর ধইরা রাখতে পারলেন না; হালার পো হালায় বেজাগায় হাত দেছে’!



‘জয় বাংলা’ হুংকার তুলে খালি হাতে শত্রু সেনার দিকে এগুতে থাকলেন মুক্তিযোদ্ধা ‘তাগড়া’।

কাছাকাছি হতেই ডান হাতের খোলা আঙুলের থাবা বসিয়ে দিলেন শত্রুর বাম বুকে। পিছু হটে পড়তে পড়তে কোনমতে সামলে নিল হানাদার সৈন্যটি... ‘তাগড়া’ও পরবর্তী আক্রমনের জন্যে প্রস্তুত!



হুট করে হানাদার অবস্থান থেকে কয়েক বার্স্ট গুলি এসে ঝাঝরা করে দিলো ‘তাগড়া’কে!

হানাদার সৈন্যটি লাফ দিয়ে ফিরে গেলো নিজেদের প্রতিরক্ষা অবস্থানে।



বাকী মুক্তিযোদ্ধাদের তখন মাথায় রক্ত উঠে গেছে। তড়িৎ সম্মুখ আক্রমণে বেশ সহজেই দখল হলো শত্রুর অবস্থান।



একশ'র বেশী শত্রুসৈন্যের মাঝে মাত্র পাঁচজনকে জীবিত পাওয়া গেলো, বাকীরা মৃত।

দ্বন্দ্বযুদ্ধ আহ্বানকারী সৈন্যটি মরে পড়ে আছে পাঁচটি বুলেটবিদ্ধ হয়ে।



যুদ্ধবন্দী সৈন্যদের থেকে জানা গেলো - ‘তাগড়া’ কে গুলি করার পর ফিরে এসে সেই পাগলাটে সৈন্যটি নিজেদের সৈন্যদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করেছে আর অন্য এক এসএমজি থেকে গুলি করে মেরেছে বাকী সৈন্যদের।



উৎস: বই:: জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা

- মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়া!



১৭ নভেম্বর পিরোজপুরের কোদালধোয়ায় শহীদ হন ‘তাগড়া’!

'খর্বকায়, ভীরু, অযোদ্ধা বাঙালী'র দুর্নাম ঘোচাতে, মায়ের দুধের সম্মান বাঁচাতে.... অকাতরে জীবন দিলেন একজন সাহসী, আত্মমর্যাদাশীল বীরযোদ্ধা!!



স্ফীতবক্ষে স্মরণ করছি মুক্তিযোদ্ধা ‘তাগড়া’কে।

অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা।



জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু!!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৩৮

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: আগে একবার কোথায় পড়েছি। অনেক ইমোশানেল ঘটনা।

আমাদের মুক্তিযু্দ্ধে অনেক ঘটনাই ঘটেছে যা যুদ্ধা চলাকালীন লেখকের অভাবে লেখা হয়নি।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:২১

বাকের ভাই রিটার্ন বলেছেন: এইটা লেখাটা মেজর কামরুল হাসান ভুঁইয়ার
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা থেকে নেয়া হয়তোবা সেখান থেকেই পড়তে পারেন।পড়ার পর আমারও খুব ভাল লাগল।তাই সামুতে শেয়ার করলাম।
সত্যিই সেই সব লেখা গুলো যদি যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে লেখা হত তাহলে হয়তোবা আর যাই হোক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার সাহস পেত না।

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য ।

২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:১৪

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মনটা অনেকখানিই ছুয়ে গেল গেল।।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:২২

বাকের ভাই রিটার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.