নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা সত্য তাহা চিরন্তন সত্য

www.facebook.com/Wahabism.cleaner

বাতিল ক্লিনার

সত্য উম্মোচন করা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব.আর সত্য'র পথে চলার চেষ্টা করা উচিত। আর সত্য'র পথে বাধা আসা স্বাভাবিক তাই বলে কি পিছনে হেটে যাওয়া কি আমাদের ঠিক হবে..?

বাতিল ক্লিনার › বিস্তারিত পোস্টঃ

শবে বরাতকে বিদাত, হারাম ফতোয়াদানকারী কট্টরপন্থী ওহাবীদের গালে দলিলের থাপ্পড়

২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৮:৫৫


পবিত্র শবে বরাত অস্বীকারকারী মাথায় বোরকা এবং গোলায় দড়ি লটকানো সকল জোকার নালায়েক নামকাওয়াস্তে মুসলমান তথা ওহাবী আহলে হাদিস সম্প্রদায়কে প্রকাশে চ্যালেঞ্জ করলাম। যদি তাদের মধ্যে কেউ প্রমান করতে পারে যে শবে বরাত পালন করা বিদাত এটা কুরআন হাদিসে নাই। তাহলে rastar মোড়ে তাদের সেন্ডেল হবে আর আমার গাল থাকবে।

অনেক নামকাওয়াস্তে মুসলমানরুপী কিছু কাফের লোক ইতিহাসে যারা ওহাবী আহলে হাদিস জোকার নালায়েকরা বলে বেড়ায় যে পবিত্র শবে বরাত নাকি বিদাত, কুরআন হাদিসে এটা নাই। যা ডাহা মিথ্যা ছাড়া আর কিছু নাই। যারা বলে শবে বরাত কুরআন/হাদিসে নাই তাদেরকে বলবো কুরআন হাদিসে নামাজ, রোজাও কথাও নাই, দেখাতে পারলে আপনার গোলাম আমি।

আসলে “শবে বরাত” হচ্ছে ফারসী শব্দ যা আরবী “শাবান” থেকে আগত। তাহলে শবে বরাত ফারসী শব্দ হয়ে কি কোরআনে পাওয়া যাবে..? এই হচ্ছে খলনায়কদের ছলচাতুরী। এবার কান ধরে দেখায় কোথায় কোথায় পবিত্র শবে বরাতের আলোচনা করা হয়েছে। শবের বরাতের আলোচনা সিহা সিত্তার সহি মুসলিম, সহি ইবনে দাউদ, সহি নাসাই, শুনানে ইবনে মাজা সহ অন্যান্য অনেক অনেক হাদিস গ্রন্থে পবিত্র শবে বরাতের মহিমা আর এর ফজিলত এসেছে। তাহলে পাঠক একটু ভাবুনতো সিহা সিত্তার সব হাদিসে পবিত্র শবে বরাতের ফজিলত বর্ণনা থাকার পরেও এই নামকাওয়াস্তে মুসলমানরা কেন এর বিরোধীতা করে আর অপপ্রচার চালাই যে শবে বরাত বিদাত, হারাম..?
আসলে ঘরে বসে বরে রিয়াল আর ডোলারে প্রেমে বিভোর এরা কি না করতে পারে রিয়াল আর ডোলারের জন্য।

সম্মানিত পাঠক! মিথ্যার একটু সীমা থাকা দরকার। অথচ এ বিষয়ে অসংখ্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে, যা লেখাটি দীর্ঘায়িত হওয়ার আশংকায় আমি পুরোপুরি উল্লেখ করতে ইচ্ছুক নই। তারপরেও বলে রাখি এখানে আহলে হাদিস সম্প্রদায়ের অপপ্রচার তথা তাদের গালে দলিলের থাপ্পড় মারতে আমি এখানে খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে দলিল পেশ করছি। কারন পুরো দলিল আর রেফারেন্স হয়তো জোকার তথা আহলে হাদিস সম্প্রদায় হার্ট এটাক করতে পারে।

দলিল নং-০১
(তিরমিজি শরিফ,খন্ড:-০২,হাদিস-৭৩৯)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত------এক রাত্রিতে আমি হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)কে না পেযে খুজতে খুজতে জান্নাতুল বাকীতে পেলাম, এবং হুযুর ফরমালেন-আয়েশা তুমি কি জানো.? আজ ১৫ই শাবান এর রাত্রি এবং এই রাত্রিতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি আহবান করতে থাকেন যে, কেউ কি আছো যে আমার থেকে কিছু আশা কর, আমি আজকে তা প্রদান করিব । এবং হুযুর আরো বলিলেন যে এই রাত্রিতে আল্লাহ বানু ক্বাল্ব গোত্রের বকরির লোম এর চেয়ে বেশি পরিমান গুনাহগার লোক কে ক্ষমা করে থাকেন.......
(তিরমিজি শরিফ,খন্ড:-০২,হাদিস-৭৩৯)

দলিল নং-০২
(সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭৩৬, দারুল ফিক্‌র, বৈরুত)
উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা বর্ণনা করেন: হুযুর আকরাম, নূরে মুজাস্‌সম, শাহে বনী আদম, রাসুলে মুহতাশাম, শফিয়ে উমাম কে আমি শাবান মাসের চেয়ে বেশী রোযা অন্য কোন মাসে রাখতে দেখিনি। তিনি কিছু দিন ব্যতীত সম্পূর্ণ মাসই রোযা রাখতেন।
(সুনানে তিরমিযী, ২য় খন্ড, ১৮২ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৭৩৬, দারুল ফিক্‌র, বৈরুত)

দলিল নং-০৩—
(সুনানে আবু দাউদ, খন্ড-০২, হাদিস-২৪৩১)
হযরত সাইয়েদনা আব্দুল্লাহ বিন আবু কাইস হতে বর্নিত- আমি হযরত আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহা)থেকে শুনেছি যে, হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম)এর সবচেয়ে পছন্দময় মাস ছিল শাবান মাস। কারন এই মাসে তিনি সব চেয়ে বেশি রোজা রাখতেন এবং এই মাসকে তিনি রমজানের সাথে মিলিয়ে দিতেন....
(সুনানে আবু দাউদ, খন্ড-০২, হাদিস-২৪৩১, ২৪৩১, পৃষ্ঠা-৪৭৬)

দালিল নং-০৪-
(সুনান-ই-ইবনে মাজাহ, খন্ড-০২,পৃষ্ঠা-১৬০, হাদিস-১৩৮৮ এবং মিশকাত শরিফ-১১৫)
হযরত আলী হে বর্ণিত - হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- যখন তোমাদের সামনে শাবান মাসের ১৫ই রাত্রির আগমন হয়, তাহলে তোমরা এই মাসে অনেক অনেক ইবাদত কর, রোজা রাখ।কারন আল্লাহ এই রাতে বিশেষ নজর দিয়ে থাকেন এবং বলে থাকেন কেউ কি আছো যে ক্ষমা চাচ্ছো তাকে আমি ক্ষমা করব, যে রিযিক চাও তার রিজিকে বরকত দান করব, কেউ মসিবতে থাকলে তার মুসিবত দুর করব..................
(সুনান-ই-ইবনে মাজাহ, খন্ড-০২,পৃষ্ঠা-১৬০, হাদিস-১৩৮৮ এবং মিশকাত শরিফ-১১৫)

দলিল নং- ০৫
(সুনানে নাসায়ী, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীন নং- ২৩৫৪)
হযরত সায়্যিদুনা ওসামা বিন যায়দ বলেন: আমি আরয করলাম: হে আল্লাহর রাসুল আমি দেখেছি,
যেভাবে আপনি শাবান মাসে রোযা রাখেন সেভাবে অন্য কোন মাসে (রোযা) রাখেন না? তিনি ইরশাদ করলেন: রজব ও রমযান এর মধ্যবর্তী এ মাস রয়েছে। লোকেরা এটার থেকে উদসীন। এ মাসে মানুষের আমল সমূহ আল্লাহ তাআলার কাছে নেয়া হয় আর আমি এটা পছন্দ করি যে,
আমার আমল এ অবস্থাতে উঠানো হোক যখন আমি রোযা অবস্থায় থাকি।
(সুনানে নাসায়ী, ৩৮৭ পৃষ্ঠা, হাদীন নং- ২৩৫৪)

দলিল নং-০৬
(সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, ৬৪৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯৭০)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত------ হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) শাবান মাস থেকে বেশি রোজা আর কোন মাসে রাখতেন না, তাছাড়া হুযুর পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন এবং বলতেন নিজের নিজের যোগ্যতানুসারে এই মাসে আমল কর। কারন আল্লাহ ঔ সময় পর্যন্ত নিজের রহমত বন্দ করেন না যখন পর্যন্ত তোমরা নিজে থেকে ক্লান্ত না হয়ে যাও।.....
(সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, ৬৪৮ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৯৭০)

দলিল নং-০৭
(মুসনাদে আবু ইয়ালা, খন্ড-০৪, হাদিস-৪৮৯০)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত--হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি কি পছন্দ কি শাবান মাসের রোজা..? হুযুর ফামালেন আল্লাহ এই মাসে বছরে মারা যাওয়া ব্যক্তির রুহ এর নাম লিখে থাকেন এবং আমি পছন্দ করি যে, আমি যেন ওফাতের সময় রোজা অবস্থায় থাকি.........
(মুসনাদে আবু ইয়ালা, খন্ড-০৪, হাদিস-৪৮৯০)

দলিল নং- ০৮
(শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৩০, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)
হযরত সায়্যিদুনা কাছির বিন মুররাহ্‌ থেকে বর্ণিত; নবীকুল সুলতান, সরদারে দোজাহান, মাহবুবে রহমান ইরশাদ করেছেন: “আল্লাহ তাআলা শাবানের ১৫তম রাতে সমগ্র যমীনের অধিবাসীদেরকে ক্ষমা করে দেন, (শুধু মাত্র) কাফির ও শত্রুতা পোষণকারীদের ছাড়া।
(শুয়াবুল ঈমান, ৩য় খন্ড, ৩৮১ পৃষ্ঠা, হাদীস নং- ৩৮৩০, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত)

দলিল নং-০৯
(মুসনাদে ইমাম আহমাদ, খন্ড-০২, পৃষ্ঠা-৫৮৯, হাদিস-৬৬৫৬,/ শুবুল ইমান, খন্ড-০৩, পৃষ্ঠা-৩৮৩)
হযরত আয়েশা(রাদ্বিয়াল্লাহ আনহা) হতে বর্ণিত- হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন-আমার কাছে জিবরাইল এসে ফরমালেন শাবান মাসের ১৫ রাতে আল্লাহ বানু কাল্ব এর বকরির লোম এর চেয়ে বেশি মানুষকে জাহান্নাম থেকে শিফা দান করে থাকেন...............
(মুসনাদে ইমাম আহমাদ, খন্ড-০২, পৃষ্ঠা-৫৮৯, হাদিস-৬৬৫৬,/ শুবুল ইমান, খন্ড-০৩, পৃষ্ঠা-৩৮৩)

দলিল নং- ১০
(মুকাশাফাতুল কুলুব, ৩০৩ পৃষ্ঠা)
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ গাযালী বলেন: উল্লেখিত হাদীস শরীফে সম্পূর্ণ শাবানুল মুয়ায্‌যম মাসের রোযা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, শাবানুল
মুয়ায্‌যম মাসের অধিকাংশ রোযা (অর্থাৎ মাসের অর্ধেক থেকে বেশী দিন)।
(মুকাশাফাতুল কুলুব, ৩০৩ পৃষ্ঠা)


দলিল নং-১১
(আল মুতাজ্জুর রিবাহ, পৃষ্ঠা-৩৭৬, হাদিস-৭৬৯)
হযরত মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহ হতে বর্নিত----- হুযুর(সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) ফরমালেন- আল্লাহ ফরমায়েছেন যে, শাবান মাসের ১৫তারিখের রাতে জমিনে থাকা মানুষদের ক্ষমা করে থাকেন কিন্তু কাফির এবং হিংসাপোসনকারীকে ক্ষমা করেন না.....
(আল মুতাজ্জুর রিবাহ, পৃষ্ঠা-৩৭৬, হাদিস-৭৬৯)

দলিল নং-১২
(তাফসীরে দূররে মানসুর, ৭ম খন্ড, ৪০২ পৃষ্ঠা)
উম্মুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদাতুনা আয়িশা সিদ্দিকা বলেন: আমি রাসুলে করীম, রউফুর রহীম, হুযুর পুরনূর কে ইরশাদ করতে শুনেছি, আলস্নাহ তাআলা (বিশেষত) চারটি রাতে কল্যাণের দরজা খুলে দেন। (১) কুরবানীর ঈদের রাত, (২) ঈদুল ফিতরের রাত, (৩) শাবানের ১৫তম রাত। এই রাতে মৃত্যুবরণকারীদের নাম ও মানুষের রিয্‌ক (জীবিকা) এবং (এ বৎসর) হজ্ব পালনকারীদের নাম লিখা
হয়, (৪) আরাফাহ (অর্থাৎ যিলহজ্জের ৮ ও ৯ তারিখে) এর রাত (ফজরের) আযান পর্যন্ত।
(তাফসীরে দূররে মানসুর, ৭ম খন্ড, ৪০২ পৃষ্ঠা)

দলিল-১৩
‘ইমাম রাফে’ হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু উল্লেখ করেন, হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে যে, এ মাসের নাম ‘শা’বান’ এ জন্য রাখা হয়েছে যে, এ মাসে রোযা পালনকারীর সাওয়াব, মঙ্গল ও সৌন্দর্য শাখা-প্রশাখার ন্যায় বিস্তার লাভ করে যাতে রোযাদার জান্নাতে প্রবেশ করতে পারে। আল্লাহর সৃষ্টি জগতের মাঝে সকল সৃষ্টির একটি বড় আশা-আকাক্সক্ষা ও আরজু থাকে মহানবী হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয় হওয়া। মাহে শা’বান এমন এক মর্যাদামণ্ডিত মাস যে মাসকে আল্লাহর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজের মাস বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেছেন ‘‘শা’বান আমার মাস, রমযান আমার উম্মতের মাস।’’
[ফিরদাউসূল আখবার]

দলিল নং-১৪
খোদ শবে বরাত অস্বীকার কারীদের বাপ ওহাবী মতবাদের অন্যতম প্রবর্তক ইবনে তাইমিয়ার মতে-
وقد سئل ابن تيمية عن صلاة ليلة النصف من شعبان فأجاب: اذا صلى الا نسان ليلة النصف وحده اوفى جماعة خاصة كما كان يفعل طوائف من السلف فهو حسن- وقال موضع اخر: واما ليله النصف فقد روى فى
فضلها احاديث واثار ونقل عن طائفة من السلف انهم كانوا يصلون فيها فصلاة الرجل فيها وحده قد تقدمة فيه سلف وله فيه حجة فلا ينكر مثل هذا انتهى-
অর্থাৎ- ‘‘ইবনে তাইমিয়াকে শবে বরাতের রাতে নফল নামায আদায় বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যদি মানুষ শবে বরাত রাতে একাকী অথবা বিশেষ জামাত সহকারে নফল নামায আদায় করে, মেযনিভাবে সালফে সালেহীনগণের অনেকেই করতেন, তাহলে তা খুবই ভাল কাজ।’’ তিনি অন্যত্র বলেন, শবে বরাতের ফযিলতে অনেক হাদীস ও রিওয়ায়েত বিদ্যমান এবং এটাও প্রমাণিত যে, সালফে সালেহীনগণ এ রাতে বিশেষ নফল নামায আদায় করতেন। সুতরাং একাকীভাবে এরাতে ইবাদতের ক্ষেত্রে সালফে সালেহীনগণ অগ্রগামী এবং এতে নির্ভরযোগ্য প্রমাণও মিলে। সুতরাং এ ধরনের বিষয়ে অস্বীকার করা যায় না।

দলিল নং- ১৫
(গুনইয়াতুত্ব ত্বালিবীন, ১ম খন্ড, ৩৪১ পৃষ্ঠা, বড় পীর আব্দুল কাদির জীলানী রহ:)
হযরত সয়্যিদুনা আনাস বিন মালিক বলেন: শাবান মাসের চাঁদ দৃষ্টি গোচর হতেই সাহাবায়ে কিরাম কুরআনে পাকের তিলাওয়াতের প্রতি খুব বেশী মনোযোগী হতেন, নিজেদের ধন-সম্পদের যাকাত বের করে নিতেন (আদায় করতেন) যাতে অক্ষম ও মিসকীন লোকেরা রমযান মাসে রোযা রাখার জন্য
প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারে। শাসকগণ বন্দীদের তলব করে যার উপর শাস্তি কার্যকর করা প্রয়োজন তার উপর শাস্তি কার্যকর করতেন আর অন্যান্যদেরকে মুক্তি দিয়ে দিতেন। ব্যবসায়ীগণ তাদের কর্জ পরিশোধ
করতেন, অন্যান্যদের থেকে বকেয়া টাকা আদায় করে নিতেন (এভাবে রমযান মাসের চাঁদ উদিত হবার পূর্বেই নিজেকে অবসর করে নিতেন) আর রমযান এর চাঁদ দৃষ্টিগোচর হতেই গোসল করে (অনেকে) ইতিকাফে বসে যেতেন।
(গুনইয়াতুত্ব ত্বালিবীন, ১ম খন্ড, ৩৪১ পৃষ্ঠা, বড় পীর আব্দুল কাদির জীলানী রহ:)

এছাড়া পবিত্র শবে বরাত সম্পর্কিত হাদীসটি যেসব গ্রন্থে এসেছে।
- ইমাম বায়হাকী ‘শুবুল ইমান,৩য়খন্ড, পৃ-৩৮০, ৩৮২, ৩৭৯, হাদিস-৩৮২২, ৩৮২৭)
- মুসনাদে আহমাদ, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৮তম খন্ড-, পৃস্ঠা- ২৩৮, ১১৪, হাদিস-২৫৯৬, ১৬৮২ (২১টি হাদিস রয়েছে)
- ‘ফাজায়েলুল আওকাত পৃষ্ঠা-১৩৩, হাদিস- ২৫
- ‘মিসবাহুজ জুজযাহ, ১ম খন্ড, পৃ-৪৪২, হাদিস-৪৮৭, ৪৮৬
- ‘আত তারগীব ওয়াত তারহীব’ তৃতীয় খন্ড, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা-২৪০ হাদিস-২৭১৮, ২৪, ২৭৬৯
- আহলে হাদিসদের গুরু নাসির উদ্দিন আলবানীর ‘সিলসিলাতুল আহাদিছে ছহিহা’ ৩য় খন্ড, পৃ-১৩১, ১৩৫
- মাছাবাতাবিচ্ছুন্নাহ, পৃ-৩৫৪
- মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৬৫
- মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা- ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা- ৪৩৮, হাদিস- ৯৯০৭।
- শরহুসসুন্নাহ ৪র্থ খন্ড- পৃষ্ঠা-১২৬, হাদিস- ৯৯২,
- আল মুনতাখাব মিনাল
- ইবনে হিব্বান, খন্ড-১৩, পৃস্ঠা-৩৫৫, হাদিস-১৯৮০
- শুয়াবুল ঈমান- ৩য় খন্ড, পৃ-৩৭৯, ৩৮০ হাদিস- ৩৮২২, ৩৮২৭

এছাড়া রয়েছে আরো অনেক অনেক হাদিস- যেখনে পবিত্র শবে বরাতের মহিমা প্রকাশ পেয়েছে। তাহলে আজকের যুগে যুব্বা পড়া এরা কারা, মাথায় ওড়ানা আর গলায় দড়ি ঝুলানো এসব মুসলমানের উদ্দেশ্যবা কি যে তারা এতগুলো অসংখ্য হাদিস থাকার পরেও আজ বিভিন্ন ওয়াজে, টিভিতে বসে কথা উড়াচ্ছে যে ইসলামে শবে বরাত বলে কিছু নাই, শবে বরাত পালন একটি বিদাত, হারাম ইত্যাদি..?
যারা এরুপ বলে সেইসব কাপুরুষ নামকাওয়াস্তে মুসলমানদের প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করলাম। তোরা আয়, প্রমাণ করে দেখা যে শবে বরাত বিদাত। তবে হ্যা প্রকাশ্যে বলতে হবে কারন পিঠ পিছে মানুষদের গোমরাহ করা আপনাদের মত ওহাবী সম্প্রদায় শুদু পিঠ পিছেই ঘেউ ঘেউ করতে যানেন।
পাঠক দেখলেনতো পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে কতগুলো গ্রন্থে, হাদিসে বর্ণিত হয়েছে..! আমি আগেও বলেছি এখানে লেখা দির্ঘায়ূ করার ইচ্ছা না থাকায় আমি সংক্ষিপ্ত আকারে ওহাবীদের আসল চেহরা আপনাদের সামনের তুলে ধরলাম.....

তবে শবে বরাত উপলক্ষে আমাদের মাঝে কিছু আজব রীতি দেখা যায়, যেমন পটকা, আতশবাজী ইত্যাদি, এটা নিসন্ধে এই পবিত্র রাতে ইবাদতে এই আতশবাজী ইবাদতে মারাত্বক বিঘ্ন সৃষ্টি করে। তাই যারা পটকা বাজী করে তাদের মাঝে সচেনতা প্রচার প্রয়োজনে আইনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী। কারন পবিত্র দিনের সাথে এই বানানো আতশবাজীর কোন সম্পর্ক নেই। পবিত্র দিনে আমাদের যেসব করণীয়.....
* শা’বান মাসকে রাসূল (দ.) নিজের মাস বলেছেন; তাই উম্মতের উচিত এ মাসে বেশী করে দরূদ শরীফ পড়া।
* অসংখ্য হাদীস শরীফে এ মাসে রোযার ফযিলত বর্ণিত হয়েছে, তাই বেশী করে রোযা পালন করা যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর অধিক প্রিয় আমল ছিল।
* বেশী করে দান সদকা করা যা সাহাবা ও বুযুর্গানেদ্বীন (রহ.)-এর আমল ছিল। হাদীস শরীফেও এ ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
* ‘‘লায়লাতুল মোবারাকা’’ বলতে যেহেতু শবে বরাতকে বুঝানো হযেছে তাই এরাতে অধিক ক্বোরআন তিলাওয়াত করা।
* সূরা ইয়াসিন তিন বার পাঠ করলে রিযিক বৃদ্ধি পায় বলে অভিমত রয়েছে।
* হাদীস শরীফে রাত্রি জাগরণ থেকে ইবাদতের কথা বলা হয়েছে, তাই সারা রাত নফল নামাযের মাধ্যমে রাত্রি যাপন করা।
*সহীহ হাদীস দ্বারা শবে বরাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে যিয়ারত করার দলিল রয়েছে বিধায় এরাতে কবর যিয়ারত করা।
* সন্ধ্যায় সওয়াবের নিয়তে গোসল করা।
* রোযা রেখে ইফতারের সময় নবীর (দ.) উপর ৩ বার দরূদ শরীফ পড়া।

সবশেষে সবার কাছে দোয়া কামনা করে, নবীর প্রতি অসংখ্য দরুদ সালাম এর মাধ্যমে ইতি টানলাম।
..................

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:০৬

প্রামানিক বলেছেন: অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ

২| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:১৭

প্রভাষ প্রদৌত বলেছেন: পোস্ট +++++++++++

৩| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবার কাছে দোয়া কামনা করে, নবীর প্রতি অসংখ্য দরুদ সালাম এর মাধ্যমে এই শাবান মাসের ফজিলত ও বরকত যেন সকলের নসীব হয়, সেই দোয়া রইল এবং প্রার্থী।

৪| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৯

ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: আপনার যুক্তি হয়ত সত্য, হয়ত নয়, কিন্তু যে ভাষা শুরুতে ব্যবহার করেছেন তাতেই ক্ষান্ত দিয়েছি। একজন ভাল মুসলমান কখনও থাপড়া-থাপড়ি করে কিছু অন্যকে শেখাতে আসে না। বাকি পড়ার রুচি হয়নি, স্যরি।

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:১৫

বাতিল ক্লিনার বলেছেন: যারা যেরুপ ভাষা বুঝে তাদের সাথে সেই ভাষাতেই কথা বলতে হয়।

৫| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:০৫

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: পোস্টে ধন্যবাদ । সবাইকে ১৪ ই শাবান এর তাৎপর্য বুঝার এবং এরাত কে ইবাদতের মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট হাজির থাকার তৌফীক হোক । আল্লাহ এ রাতের বরকতে আমাদের সবাইকে ক্ষমা দিন , আমিন ।

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:১২

বাতিল ক্লিনার বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেউ

৬| ২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৫২

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
দেশের সকল সেক্টরে জামাত শিবির ওহাবি ঢুকে তাদের নিজস্য মতবাদ চালু করছে।
এদের তান্ডবে আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত "খোদা হাফেজ" লাপাত্তা হয়ে আল্লাহাফেজ হয়ে গেছে।
এখন মিলাদুন্নবি যাওয়ার পথে
বিশ্বএজতেমার উপর আঘাত এসেছে,
এরা হজ এরও বিরোধী, খেয়াল করবেন কোন জামাতি নেতার গায়ে হাজি টাইটেল নেই।
আরো অনেক কিছুই বন্ধ হবে

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:১১

বাতিল ক্লিনার বলেছেন: জামাত শিবির বুঝি না। যারা কুরআন হাদিসের পরিপন্থি কাজ করবে তাদের মুখেোশ উম্মোচন করেই যাবো। কারন শান্তির ধর্ম ইসলামের বিকৃতি আমাদের কাম্য হতে পারে না।

৭| ২৭ শে মে, ২০১৫ রাত ১:১৫

বাংলাদেশী দালাল বলেছেন: @ হাসান কালবৈশাখী আপনাকে যথেষ্ট বিচক্ষণ বলেই মনে করি।
১। "খোদা হাফেজ" লাপাত্তা হয়ে আল্লাহাফেজ হয়ে যাওয়ায় আপনি ব্যথিত কেন বুজলাম না।
২। অনুরোধ রইল শুনে নয়। অন্যের যুক্তিতে নয় । সত্যকে নিজে খুজে বের করার চেষ্টা করুন।
৩। অথবা তাদের কথা শুনুন জারা ইসলামের উপর সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।
নিচের এই নাম গুল জানেন না জানলে এদের জানার চেস্টা করুন উনারা কি বলে বোঝার চেস্টা করুন।
✔ড. জাকির আব্দুল করিম নায়েক
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ তৌসিফুর রহমান রাশেদী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ মেরাজ রাব্বানী মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ মতিউর রহমান মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ সাইফুদ্দীন বেলাল মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ প্রফেসর কাজী মুহাম্মদ ইবরাহীম
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ কামালুদ্দীন জাফরী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ শহীদুল্লাহ খান মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ মুহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ্
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ মুযাফ্ফর বিন মুহসিন
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ আব্দুল হামীদ ফাইযী মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ আব্দুর রাকীব বুখারী মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ হারুন হোসেইন (হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ মুহাম্মাদ আক্তার মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ আব্দুল্লাহিল কাফি মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ মুখলেসুর রহমান মাদানী (হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ্ মাদানী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. মুহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. মোসলেহ্ উদ্দীন
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. আসাদুল্লাহ আল গালিব
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. আ ব ম যাকারিয়া
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. আবুল কালাম আজাদ
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. মুহাম্মাদ মতিউল ইসলাম
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. আহমাদুল্লাহ ত্রিশালী
(হাফিজাহুল্লাহ)
✔ শাইখ ড. মুহাম্মদ লোকমান হোসেইন
(হাফিজাহুল্লাহ)
.
এই সকল বিশ্ববিখ্যাত কুরআন-সুন্নাহর অনুসারী আলেমে-দ্বীনগন মানুষকে ডাকছে সুধু মাত্র আল-কুরআন ও রাসূল(সঃ) এর সহীহ সুন্নহর দিকে। তার ভন্ড মোল্লাদের মত পীর-ফকিরী আর কবর-মাজার পূজার দিকে ডাকে নাহ।
তার শির্ক-বিদা'আতের বিরুদ্ধে এক-একজন এক-একটি খোলা তলোয়ার, আলহামদুলিল্লাহ!
তাদের লেকাচারগুলো দয়াকরে খুব মনোযোগ দিয়ে শুনুন, বুঝুন তারপর সিদ্ধান্ত নিন ।

আশা করি তাদের ইসলামের প্রতি ডেডিকেশন না জেনে , তাদের যোগ্যতা সম্পর্কে না জেনে তাদের নিয়ে কোন মন্তব্য করবেন না।

আর @ লেখক আপনার জন্য "ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: আপনার যুক্তি হয়ত সত্য, হয়ত নয়, কিন্তু যে ভাষা শুরুতে ব্যবহার করেছেন তাতেই ক্ষান্ত দিয়েছি। একজন ভাল মুসলমান কখনও থাপড়া-থাপড়ি করে কিছু অন্যকে শেখাতে আসে না। বাকি পড়ার রুচি হয়নি, স্যরি।"

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:১০

বাতিল ক্লিনার বলেছেন: কি করবো ভাই ভাল ভাষা আপনাদের মত মানুষকে যে ভাল লাগে না। তাই মাঝে মাঝে এরুপ ভাষা প্রয়োগ করতেই হয়। আর যাদের নাম আপনি নিয়েছেণ তারা যদি সত্যি কুরআন হাদিসের অনুসারী হয়ে থাকতো তাহলে শবে বরাতকে বিদাত, হারাম বলতো না। পারলে যুক্তি খন্ডন করে দেখাবেন।

৮| ২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:০০

মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেছেন: মুখের ভাষা একজন মানুষের চরিত্রের অনেক কিছু প্রকাশ করে। ভাষা ঠিক করুন আর পারলে লিখাটাকে সুন্দর ভাষায় এডিট করে লিখুন।

২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:০৭

বাতিল ক্লিনার বলেছেন: কি করবো ভাই, কিছু কিছু মানুষ আছে যারা ভদ্র ভাষা বুঝে না....। তাই এরুপ ভাষা প্রয়োগ করতেই হয়

৯| ২৭ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৩

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন:
আপনি এত উত্তেজিত কেন? বেশি উত্তেজনা যে কোন ভালো ও মহৎ উদ্দেশ্যকে ব্যহত করতে পারে। আপনার পোস্টের শিরোনাম আপত্তিজনক, পোস্টের ভাষা বেশ কিছু স্থানে আপত্তিজনক। আপনার বক্তব্য সঠিক ও সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করুন। অন্য কারো নামকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা যে কোন ধর্ম ও সমাজের রীতি নয়।

১০| ২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১২

হানিফঢাকা বলেছেন: "আসলে “শবে বরাত” হচ্ছে ফারসী শব্দ যা আরবী “শাবান” থেকে আগ"- This is 100% false. Prove it if its true.
So far my knowledge, The persian word "Shab"- means night, in Arabic it is Lyle. And the Persian Word "Barat" means luck/fate etc. So, the persian word shab-e barat literally means the night of luck/fate.
Since you mention that it is Persian word and therefore it is not found in Quran, then find an equivalent Arabic Word in Quran for it. For example Salat in Arabic is translated as Namaz in Persian.

If it were so important night, God must have mentioned it in Quran. Do you think God forgot to mention it such an event?

Do you know the origin of Shabe e barat?

১১| ২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

হানিফঢাকা বলেছেন: You said "যদি তাদের মধ্যে কেউ প্রমান করতে পারে যে শবে বরাত পালন করা বিদাত এটা কুরআন হাদিসে নাই। তাহলে rastar মোড়ে তাদের সেন্ডেল হবে আর আমার গাল থাকবে।"- Since I follow Quran, I accept your challenge that it is in anyway not mentioned in Quran (I am not interested in hadith and man made tradition)Prove it -it is mention in Quran anyway.

১২| ২৭ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৩

বাংলাদেশী দালাল বলেছেন: @ লেখক আপনার প্রফাইলে দেয়া লোগো সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা হচ্ছে, যেহেতু আসল লোগোটা নিম্ন রুপ:

"TREEQULHAQ (international) is organisation to block blasphemous websites and advocate Intense Ishq e Rasool (ﷺ) and work on footsteps of Ghazi Ilm Deen Shaheed."

যাই হোক মুল বিষয়ে যাওয়া যাক, আশা করি পুরাটা পরবেন। শুধু "শব্দ" তে থেমে যাবেন না :

লেখক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

পিএইচডি (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা), সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান- ফেকাহ্ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

শবে বরাত (বারাত) আভিধানিক অর্থ অনুসন্ধান

‘শব’ ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত শব্দটিও মূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দু’শব্দের একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটি আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন। কারণ ‘বরাত’ বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই।

যদি বরাত শব্দটি আরবি বারা’আত শব্দের অপভ্রংশ ধরা হয় তবে তার অর্থ হবে— সম্পর্কচ্ছেদ বা বিমুক্তিকরণ। কিন্তু কয়েকটি কারণে এ অর্থটি এখানে অগ্রাহ্য, মেনে নেয়া যায় না-

১. আগের শব্দটি ফারসি হওয়ায় ‘বরাত’ শব্দটিও ফারসি হবে, এটাই স্বাভাবিক
২. শা’বানের মধ্যরজনীকে আরবি ভাষার দীর্ঘ পরম্পরায় কেউই বারা’আতের রাত্রি হিসাবে আখ্যা দেননি।
৩. রমযান মাসের লাইলাতুল ক্বাদরকে কেউ-কেউ লাইলাতুল বারা’আত হিসাবে নামকরণ করেছেন, শা‘বানের মধ্য রাত্রিকে নয়।

আরবি ভাষায় এ রাতটিকে কি বলা হয়?

আরবি ভাষায় এ রাতটিকে ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শা‘বান’ — শাবান মাসের মধ্য রজনী — হিসাবে অভিহিত করা হয়।
শাবানের মধ্যরাত্রির কি কোন ফযীলত বর্ণিত হয়েছে?

শাবান মাসের মধ্য রাত্রির ফযীলত সম্পর্কে কিছু হাদীস বর্ণিত হয়েছে:

১. আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন: এক রাতে আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে খুঁজে না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে বের হলাম, আমি তাকে বাকী গোরস্তানে পেলাম। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন: ‘তুমি কি মনে কর, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার উপর জুলুম করবেন?’ আমি বললাম: ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি ধারণা করেছিলাম যে আপনি আপনার অপর কোন স্ত্রীর নিকট চলে গিয়েছেন। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: ‘মহান আল্লাহ তা’লা শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন এবং কালব গোত্রের ছাগলের পালের পশমের চেয়ে বেশী লোকদের ক্ষমা করেন।

হাদীসটি ইমাম আহমাদ তার মুসনাদে বর্ণনা করেন (৬/২৩৮), তিরমিযি তার সুনানে (২/১২১,১২২) বর্ণনা করে বলেন, এ হাদীসটিকে ইমাম বুখারী দুর্বল বলতে শুনেছি। অনুরূপভাবে হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৯) বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির সনদ দুর্বল বলে সমস্ত মুহাদ্দিসগণ একমত।

২. আবু মূসা আল আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আল্লাহ তা‘আলা শাবানের মধ্যরাত্রিতে আগমণ করে, মুশরিক ও ঝগড়ায় লিপ্ত ব্যক্তিদের ব্যতীত, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ক্ষমা করে দেন। হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৫৫, হাদীস নং ১৩৯০),এবং তাবরানী তার মু’জামুল কাবীর (২০/১০৭,১০৮) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।

আল্লামা বূছীরি বলেন: ইবনে মাজাহ বর্ণিত হাদীসটির সনদ দুর্বল। তাবরানী বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে আল্লামা হাইসামী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মাজমা‘ আয যাওয়ায়েদ (৮/৬৫) গ্রন্থে বলেনঃ ত্বাবরানী বর্ণিত হাদীসটির সনদের সমস্ত বর্ণনাকারী শক্তিশালী। হাদীসটি ইবনে হিব্বানও তার সহীহতে বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে দেখুন, মাওয়ারেদুজ জাম‘আন, হাদীস নং (১৯৮০), পৃঃ (৪৮৬)।

৩. আলী ইবনে আবী তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যখন শা‘বানের মধ্যরাত্রি আসবে তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভর নামায পড়বে, আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সে দিন সুর্যাস্তের সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি ক্ষমা করব। রিযিক চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্ত কেউ কি আছে যে আমার কাছে পরিত্রাণ কামনা করবে আর আমি তাকে উদ্ধার করব। এমন এমন কেউ কি আছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত তিনি এভাবে বলতে থাকেন”।

হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন। আল্লামা বূছীরি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার যাওয়ায়েদে ইবনে মাজাহ (২/১০) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যে ইবনে আবি সুবরাহ রয়েছেন যিনি হাদীস বানাতেন। তাই হাদীসটি বানোয়াট।

উল্লিখিত আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে, শা‘বানের মধ্যরাত্রির ফযীলত বিষয়ে যে সব হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার সবগুলোই দুর্বল অথবা বানোয়াট, আর তাই গ্রাহ্যতারহিত।
প্রাজ্ঞ আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, দুর্বল হাদীস দ্বারা কোন আহকাম- বিধান প্রমাণ করা যায় না। দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার জন্য কয়েকটি শর্ত লাগিয়েছেন তারা। শর্তগুলো নিম্নরূপ –

১. হাদীসটির মূল বক্তব্য অন্য কোন সহীহ হাদীসের বিরোধীতা করবেনা, বরং কোন শুদ্ধ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
২. হাদীসটি একেবারেই দুর্বল অথবা বানোয়াট হলে চলবে না।
৩. হাদীসটির উপর আমল করার সময় এটা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত বলে বিশ্বাস করা যাবে না। কারণ রাসূল থেকে প্রমাণিত বলে বিশ্বাস করলে রাসূলের উপর মিথ্যাচারিতার পাপ হবে, ফলে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে পড়বে।
৪. হাদীসটি ফাদায়িল তথা কোন আমলের ফযীলত বর্ণনা সংক্রান্ত হতে হবে। আহকাম (ওয়াজিব, মুস্তাহাব, হারাম, মাকরূহ) ইত্যাদি সাব্যস্তকারী না হতে হবে।
৫. বান্দা ও তার প্রভুর মাঝে একান্ত ব্যক্তিগত কোন আমলের ক্ষেত্রে হাদীসটির নির্ভরতা নেয়া যাবে। তবে এ হাদীসের উপর আমল করার জন্য একে অপরকে আহবান করতে পারবে না।

এই শর্তাবলীর আলোকে যদি উপরোক্ত হাদীসগুলো পরীক্ষা করে দেখি তাহলে দেখতে পাই যে, উপরোক্ত হাদীসসমূহের মধ্যে শেষোক্ত _ আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু)বর্ণিত — হাদীসটি বানোয়াট। সুতরাং তার উপর আমল করা উম্মাতের আলেমদের ঐক্যমতে জায়েয হবে না।

প্রথম হাদীসটি দুর্বল, দ্বিতীয় হাদীসটিও অধিকাংশ আলেমের মতে দুর্বল, যদিও কোন-কোন আলেম এর বর্ণনাকারীগণকে শক্তিশালী বলে মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কেবলমাত্র বর্ণনাকারী শক্তিশালী হলেই হাদীস বিশুদ্ধ হওয়া সাব্যস্ত হয়না।

মোট কথাঃ প্রথম ও দ্বিতীয়, এ হাদীস দুটি দুর্বল। খুব দুর্বল বা বানোয়াট নয়। সে হিসেবে যৎকিঞ্চিৎ প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে এ রাত্রির ফযীলত রয়েছে।

এই সূত্রেই অনেক হাদীসবিদ শাবানের মধ্যরাতের ফযীলত রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেনঃ

ইমাম আহমাদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইবনে তাইমিয়া তার ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীমে (২/৬২৬) তা উল্লেখ করেছেন]
ইমাম আওযায়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইমাম ইবনে রাজাব তার ‘লাতায়েফুল মা‘আরিফ’ গ্রন্থে (পৃঃ১৪৪) তার থেকে তা বর্ণনা করেছেন]
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম ২/৬২৬,৬২৭, মাজমু‘ ফাতাওয়া ২৩/১২৩, ১৩১,১৩৩,১৩৪]।
ইমাম ইবনে রাজাব আল হাম্বলী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [তার লাতায়েফুল মা‘আরিফ পৃঃ১৪৪ দ্রষ্টব্য]।
প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ছিলছিলাতুল আহাদীস আস্‌সাহীহা ৩/১৩৫-১৩৯]

উপরোক্ত মুহাদ্দিসগনসহ আরো অনেকে এ রাত্রিকে ফযীলতের রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু আমরা যদি উপরে উল্লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয় হাদীসটি পাঠ করে দেখি তাহলে দেখতে পাব —আল্লাহ তা‘আলা নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানাতে থাকেন — হাদীসদ্বয়ে এ বক্তব্যই উপস্থাপিত হয়েছে। মুলত সহীহ হাদীসে সুস্পষ্ট এসেছে যে, “আল্লাহ তা‘আলা প্রতি রাতের শেষাংশে – শেষ তৃতীয়াংশে- নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে আহবান জানাতে থাকেন ‘এমন কেউ কি আছে যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দেব? এমন কেউ কি আছে যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে দেব? আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করে দেব?” [বুখারী, হাদীস নং ১১৪৫, মুসলিম হাদীস নং ৭৫৮]

সুতরাং আমরা এ হাদীসদ্বয়ে অতিরিক্ত কোন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। সুতরাং এ রাত্রির বিশেষ কোন বিশেষত্ব আমাদের নজরে পড়ছে না। এজন্যই শাইখ আব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) সহ আরো অনেকে এ রাত্রির অতিরিক্ত ফযীলত অস্বীকার করেছেন।

এ রাত্রি উদযাপন ও এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর
প্রথম প্রশ্নঃ এ রাত্রি কি ভাগ্য রজনী?

উত্তরঃ না, এ রাত্রি ভাগ্য রজনী নয়, মূলতঃ এ রাত্রিকে ভাগ্য রজনী বলার পেছনে কাজ করছে সূরা আদ-দুখানের ৩ ও ৪ আয়াত দু’টির ভূল ব্যাখ্যা। তা হলোঃ

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ* فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ – سورة الدخان:3ـ4

আয়াতদ্বয়ের অর্থ হলোঃ “অবশ্যই আমরা তা (কোরআন) এক মুবারক রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি, অবশ্যই আমরা সতর্ককারী, এ রাত্রিতে যাবতীয় প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়”।

এ আয়াতদ্বয়ের তাফসীরে অধিকাংশ মুফাসসির বলেনঃ এ আয়াত দ্বারা রমযানের লাইলাতুল ক্বাদরকেই বুঝানো হয়েছে। যে লাইলাতুল কাদরের চারটি নাম রয়েছে: ১. লাইলাতুল কাদর, ২. লাইলাতুল বারা’আত, ৩. লাইলাতুচ্ছফ, ৪.লাইলাতুল মুবারাকাহ। শুধুমাত্র ইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, এ আয়াত দ্বারা শা’বানের মধ্যরাত্রিকে বুঝানো হয়েছে। এটা একটি অগ্রহণযোগ্য বর্ণনা।

আল্লামা ইবনে কাসীর (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আলোচ্য আয়াতে ‘মুবারক রাত্রি’ বলতে ‘লাইলাতুল ক্বাদর বুঝানো হয়েছে, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ

إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ – سورةالقدر:1

আমরা এ কোরআনকে ক্বাদরের রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি। (সূরা আল-কাদরঃ১)।

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেনঃ

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ- سورة البقرة:185

রমযান এমন একটি মাস যাতে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। (সূরা আলবাকারাহঃ১৮৫)।

যিনি এ রাত্রিকে শা‘বানের মধ্যবর্তী রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন, যেমনটি ইকরিমা থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি অনেক দূরবর্তী মত গ্রহণ করেছেন; কেননা কোরআনের সুস্পষ্ট বাণী তা রমযান মাসে বলে ঘোষণা দিয়েছে’। (তাফসীরে ইবনে কাসীর (৪/১৩৭)।

অনুরূপভাবে আল্লামা শাওকানীও এ মত প্রকাশ করেছেন। (তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর (৪/৭০৯)।

সুতরাং ভাগ্য রজনী হলো লাইলাতুল ক্বাদর যা রমযানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাত্রিগুলো।

আর এতে করে এও সাব্যস্ত হলো যে, এ আয়াতের তাফসীরে ইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মতভেদ করলেও তিনি শা’বানের মধ্য তারিখের রাত্রিকে লাইলাতুল বারা’আত নামকরণ করেননি।
দ্বিতীয় প্রশ্নঃ শা’বানের মধ্যরাত্রি উদযাপন করা যাবে কিনা?

উত্তরঃ শা’বানের মধ্যরাত্রি পালন করার কি হুকুম এ নিয়ে আলেমদের মধ্যে তিনটি মত রয়েছে:

এক. শা‘বানের মধ্য রাত্রিতে মাসজিদে জামাতের সাথে নামায ও অন্যান্য ইবাদত করা জায়েয । প্রসিদ্ধ তাবেয়ী খালেদ ইবনে মি‘দান, লুকমান ইবনে আমের সুন্দর পোশাক পরে, আতর খোশবু, শুরমা মেখে মাসজিদে গিয়ে মানুষদের নিয়ে এ রাত্রিতে নামায আদায় করতেন। এ মতটি ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়ীয়াহ থেকেও বর্ণিত হয়েছে। (লাতায়েফুল মা‘আরেফ পৃঃ১৪৪)। তারা তাদের মতের পক্ষে কোন দলীল পেশ করেননি। আল্লামা ইবনে রাজাব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাদের মতের পক্ষে দলীল হিসাবে বলেনঃ তাদের কাছে এ ব্যাপারে ইসরাইলি তথা পূর্ববর্তী উম্মাতদের থেকে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছিল, সে অনুসারে তারা আমল করেছিলেন। তবে পূর্বে বর্ণিত বিভিন্ন দুর্বল হাদীস তাদের দলীল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকবে।
দুই. শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে ব্যক্তিগতভাবে ইবাদত বন্দেগী করা জায়েয। ইমাম আওযা‘য়ী, শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া, এবং আল্লামা ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম) এ মত পোষণ করেন। তাদের মতের পক্ষে তারা যে সমস্ত হাদীস দ্বারা এ রাত্রির ফযীলত বর্ণিত হয়েছে সে সমস্ত সাধারণ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতভাবে ইবাদত করাকে জায়েয মনে করেন।
তিন: এ ধরণের ইবাদত সম্পূর্ণরূপে বিদ’আত — চাই তা ব্যক্তিগতভাবে হোক বা সামষ্টিকভাবে। ইমাম ‘আতা ইবনে আবি রাবাহ, ইবনে আবি মুলাইকা, মদীনার ফুকাহাগণ, ইমাম মালেকের ছাত্রগণ, ও অন্যান্য আরো অনেকেই এ মত পোষণ করেছেন। এমনকি ইমাম আওযায়ী যিনি শাম তথা সিরিয়াবাসীদের ইমাম বলে প্রসিদ্ধ তিনিও এ ধরনের ঘটা করে মাসজিদে ইবাদত পালন করাকে বিদ‘আত বলে ঘোষণা করেছেন।

তাদের মতের পক্ষে যুক্তি হলো :

১.এ রাত্রির ফযীলত সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন দলীল নেই। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রাত্রিতে কোন সুনির্দিষ্ট ইবাদত করেছেন বলে সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়নি। অনুরূপভাবে তার কোন সাহাবী থেকেও কিছু বর্ণিত হয়নি। তাবেয়ীনদের মধ্যে তিনজন ব্যতীত আর কারো থেকে বর্ণিত হয়নি। আল্লামা ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ শা‘বানের রাত্রিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা তার সাহাবাদের থেকে কোন নামায পড়া প্রমাণিত হয়নি। যদিও শামদেশীয় সুনির্দিষ্ট কোন কোন তাবেয়ীন থেকে তা বর্ণিত হয়েছে। (লাতায়েফুল মা‘আরিফঃ১৪৫)। শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ ‘এ রাত্রির ফযীলত বর্ণনায় কিছু দুর্বল হাদীস এসেছে যার উপর ভিত্তি করা জায়েয নেই, আর এ রাত্রিতে নামায আদায়ে বর্ণিত যাবতীয় হাদীসই বানোয়াট, আলেমগণ এ ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন’।
২. হাফেজ ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) যিনি কোন কোন তাবেয়ীনদের থেকে এ রাত্রির ফযীলত রয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ ঐ সমস্ত তাবেয়ীনদের কাছে দলীল হলো যে তাদের কাছে এ ব্যাপারে ইসরাইলি কিছু বর্ণনা এসেছে। তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, যারা এ রাত পালন করেছেন তাদের দলীল হলো, যে তাদের কাছে ইসরাইলি বর্ণনা এসেছে, আমাদের প্রশ্নঃ ইসরাইলি বর্ণনা এ উম্মাতের জন্য কিভাবে দলীল হতে পারে?
৩. যে সমস্ত তাবেয়ীনগণ থেকে এ রাত উদযাপনের সংবাদ এসেছে তাদের সমসাময়িক প্রখ্যাত ফুকাহা ও মুহাদ্দিসীনগণ তাদের এ সব কর্মকান্ডের নিন্দা করেছেন। যারা তাদের নিন্দা করেছেন তাদের মধ্যে প্রখ্যাত হলেনঃ ইমাম আতা ইবনে আবি রাবাহ, যিনি তার যুগের সর্বশ্রেষ্ট মুফতি ছিলেন, আর যার সম্পর্কে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেছিলেনঃ তোমরা আমার কাছে প্রশ্নের জন্য একত্রিত হও, অথচ তোমাদের কাছে ইবনে আবি রাবাহ রয়েছে। সুতরাং যদি ঐ রাত্রি উদযাপনকারীদের পক্ষে কোন দলীল থাকত, তাহলে তারা ‘আতা ইবনে আবি রাবাহর বিপক্ষে তা অবশ্যই পেশ করে তাদের কর্মকাণ্ডের যথার্থতা প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন, অথচ এরকম করেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি।
৪. পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, যে সমস্ত দুর্বল হাদীসে ঐ রাত্রির ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তাতে শুধুমাত্র সে রাত্রিতে আল্লাহর অবতীর্ণ হওয়া এবং ক্ষমা করা প্রমাণিত হয়েছে, এর বাইরে কিছুই বর্ণিত হয়নি। মুলতঃ এ অবতীর্ণ হওয়া ও ক্ষমা চাওয়ার আহবান প্রতি রাতেই আল্লাহ তা’আলা করে থাকেন। যা সুনির্দিষ্ট কোন রাত বা রাতসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এর বাইরে দুর্বল হাদীসেও অতিরিক্ত কোন ইবাদত করার নির্দেশ নেই।
৫. আর যারা এ রাত্রিতে ব্যক্তিগতভাবে আমল করা জায়েয বলে মন্তব্য করেছেন তাদের মতের পক্ষে কোন দলীল নেই, কেননা এ রাত্রিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বা তার সাহাবা কারো থেকেই ব্যক্তিগত কিংবা সামষ্টিক কোন ভাবেই কোন প্রকার ইবাদত করেছেন বলে বর্ণিত হয়নি। এর বিপরীতে শরীয়তের সাধারণ অনেক দলীল এ রাত্রিকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে, তম্মধ্যে রয়েছেঃআল্লাহ বলেনঃ“আজকের দিনে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম”। (সূরা আল-মায়েদাহঃ ৩)।রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন নতুন কিছুর উদ্ভব ঘটাবে যা এর মধ্যে নেই, তা তার উপর নিক্ষিপ্ত হবে)। (বুখারী, হাদীস নং ২৬৯৭)।তিনি আরো বলেছেনঃ (যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করবে যার উপর আমাদের দ্বীনের মধ্যে কোন নির্দেশ নেই তা অগ্রহণযোগ্য)। (মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৮)।শাইখ আব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ আর ইমাম আওযা‘য়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) যে, এ রাতে ব্যক্তিগত ইবাদত করা ভাল মনে করেছেন, আর যা হাফেয ইবনে রাজাব পছন্দ করেছেন, তাদের এ মত অত্যন্ত আশ্চার্যজনক বরং দুর্বল; কেননা কোন কিছু যতক্ষন পর্যন্ত না শরীয়তের দলীলের মাধ্যমে জায়েয বলে সাব্যস্ত হবে ততক্ষন পর্যন্ত কোন মুসলিমের পক্ষেই দ্বীনের মধ্যে তার অনুপ্রবেশ ঘটাতে বৈধ হবে না। চাই তা ব্যক্তিগতভাবে করুক বা সামষ্টিক- দলবদ্ধভাবে। চাই গোপনে করুক বা প্রকাশ্য। কারণ বিদ‘আতকর্ম অস্বীকার করে এবং তা থেকে সাবধান করে যে সমস্ত প্রমাণাদি এসেছে সেগুলো সাধারণভাবে তার বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। (আত্‌তাহযীর মিনাল বিদ‘আঃ১৩)।
৬. শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) আরো বলেনঃ সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তোমরা জুম‘আর রাত্রিকে অন্যান্য রাত থেকে ক্বিয়াম/ নামাযের জন্য সুনির্দিষ্ট করে নিও না, আর জুম‘আর দিনকেও অন্যান্য দিনের থেকে আলাদা করে রোযার জন্য সুনির্দিষ্ট করে নিও না, তবে যদি কারো রোযার দিনে সে দিন ঘটনাচক্রে এসে যায় সেটা ভিন্ন কথা”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪৪, ১৪৮)।যদি কোন রাতকে ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট করা জায়েয হতো তবে অবশ্যই জুম‘আর রাতকে ইবাদতের জন্য বিশেষভাবে সুনির্দিষ্ট করা জায়েয হতো; কেননা জুম‘আর দিনের ফযীলত সম্পর্কে হাদীসে এসেছে যে, “সুর্য যে দিনগুলোতে উদিত হয় তম্মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ট দিন, জুম‘আর দিন”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৮৪)।সুতরাং যেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুম‘আর দিনকে বিশেষভাবে ক্বিয়াম/নামাযের জন্য সুনির্দিষ্ট করা থেকে নিষেধ করেছেন সেহেতু অন্যান্য রাতগুলোতে অবশ্যই ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট করে নেয়া জায়েয হবে না। তবে যদি কোন রাত্রের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন দলীল এসে যায় তবে সেটা ভিন্ন কথা। আর যেহেতু লাইলাতুল ক্বাদর এবং রমযানের রাতের ক্বিয়াম/নামায পড়া জায়েয সেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ রাতগুলোর ব্যাপারে স্পষ্ট হাদীস এসেছে।

তৃতীয় প্রশ্নঃ শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে হাজারী নামায পড়ার কী হুকুম?

উত্তরঃ শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে একশত রাকাত নামাযের প্রতি রাকাতে দশবার সূরা কুল হুওয়াল্লাহ (সূরা ইখলাস) দিয়ে নামাজ পড়ার যে নিয়ম প্রচলিত হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে বিদ‘আত।

এ নামাযের প্রথম প্রচলন

এ নামাযের প্রথম প্রচলন হয় হিজরী ৪৪৮ সনে। ফিলিস্তিনের নাবলুস শহরের ইবনে আবিল হামরা নামীয় একলোক বায়তুল মুকাদ্দাস আসেন। তার তিলাওয়াত ছিল সুমধুর। তিনি শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে নামাযে দাঁড়ালে তার পিছনে এক লোক এসে দাঁড়ায়, তারপর তার সাথে তৃতীয় জন এসে যোগ দেয়, তারপর চতুর্থ জন। তিনি নামায শেষ করার আগেই বিরাট একদল লোক এসে তার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে।

পরবর্তী বছর এলে, তার সাথে অনেকেই যোগ দেয় ও নামায আদায় করে। এতে করে মাসজিদুল আক্‌সাতে এ নামাযের প্রথা চালু হয়। কালক্রমে এ নামায এমনভাবে আদায় হতে লাগে যে অনেকেই তা সুন্নাত মনে করতে শুরু করে। (ত্বারতুসীঃ হাওয়াদেস ও বিদ‘আ পৃঃ১২১, ১২২, ইবনে কাসীরঃ বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৪/২৪৭, ইবনুল কাইয়েমঃ আল-মানারুল মুনিফ পৃঃ৯৯)।

এ নামাযের পদ্ধতি

প্রথা অনুযায়ী এ নামাযের পদ্ধতি হলো, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস দশবার করে পড়ে মোট একশত রাকাত নামায পড়া। যাতে করে সূরা ইখলাস ১০০০ বার পড়া হয়। (এহইয়ায়ে উলুমুদ্দীন (১/২০৩)।

এ ধরণের নামায সম্পূর্ণ বিদ‘আত। কারণ এ ধরণের নামাযের বর্ণনা কোন হাদীসের কিতাবে আসেনি। কোন কোন বইয়ে এ সম্পর্কে যে সকল হাদীস উল্লেখ করা হয় সেগুলো কোন হাদীসের কিতাবে আসেনি। আর তাই আল্লামা ইবনুল জাওযী (মাওদু‘আত ১/১২৭-১৩০), হাফেয ইরাকী (তাখরীজুল এহইয়া), ইমাম নববী (আল-মাজমু‘ ৪/৫৬), আল্লামা আবু শামাহ (আল-বা‘েয়স পৃঃ৩২-৩৬), শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা, (ইকতিদায়ে ছিরাতুল মুস্তাকীম ২/৬২৮), আল্লামা ইবনে ‘আররাক (তানযীহুশ শরীয়াহ ২/৯২), ইবনে হাজার আল-আসকালানী, আল্লামা সূয়ূতী (আল-আমর বিল ইত্তেবা পৃঃ৮১, আল-লাআলিল মাসনূ‘আ ২/৫৭), আল্লামা শাওকানী (ফাওয়ায়েদুল মাজমু‘আ পৃঃ৫১) সহ আরো অনেকেই এ গুলোকে “বানোয়াট হাদীস” বলে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।

এ ধরণের নামাযের হুকুম

সঠিক জ্ঞানের অধিকারী আলেমগণের মতে এ ধরণের নামায বিদ‘আত; কেননা এ ধরনের নামায আল্লাহর রাসূলও পড়েননি। তার কোন খলীফাও পড়েননি। সাহাবাগণও পড়েননি। হেদায়াতের ইমাম তথা আবু হানিফা, মালেক, শাফেয়ী, আহমাদ, সাওরী, আওযায়ী, লাইস’সহ অন্যান্যগণ কেউই এ ধরণের নামায পড়েননি বা পড়তে বলেননি।

আর এ ধরণের নামাযের বর্ণনায় যে হাদীসসমূহ কেউ কেউ উল্লেখ করে থাকেন তা উম্মাতের আলেমদের ইজমা অনুযায়ী বানোয়াট। (এর জন্য দেখুনঃ ইবনে তাইমিয়ার মাজমুল‘ ফাতাওয়া ২৩/১৩১,১৩৩,১৩৪, ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম ২/৬২৮, আবু শামাহঃ আল-বা‘য়েছ পৃঃ ৩২-৩৬, রশীদ রিদাঃ ফাতাওয়া ১/২৮, আলী মাহফুজ, ইবদা‘ পৃঃ২৮৬,২৮৮, ইবনে বাযঃ আত্‌তাহযীর মিনাল বিদ‘আ পৃঃ১১-১৬)।
চতুর্থ প্রশ্নঃ শা‘বানের মধ্যরাত্রির পরদিন কি রোযা রাখা যাবে?

উত্তরঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বহু সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি শা‘বান মাসে সবচেয়ে বেশী রোযা রাখতেন। (এর জন্য দেখুনঃ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৯, ১৯৭০, মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৬, ১১৬১, মুসনাদে আহমাদ ৬/১৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৩১, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং ২০৭৭, সুনানে তিরমিঝি, হাদীস নং ৬৫৭)।

সে হিসাবে যদি কেউ শা‘বান মাসে রোযা রাখেন তবে তা হবে সুন্নাত। শাবান মাসের শেষ দিন ছাড়া বাকী যে কোন দিন রোযা রাখা জায়েয বা সওয়াবের কাজ। তবে রোজা রাখার সময় মনে করতে হবে যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহেতু শা‘বান মাসে রোজা রেখেছিলেন তাকে অনুসরন করে রোযা রাখা হচ্ছে।

অথবা যদি কারও আইয়ামে বিদের নফল রোযা তথা মাসের ১৩,১৪,১৫ এ তিনদিন রোযা রাখার নিয়ম থাকে তিনিও রোযা রাখতে পারেন। কিন্তু শুধুমাত্র শা‘বানের পনের তারিখ রোযা রাখা বিদ‘আত হবে। কারণ শরীয়তে এ রোযার কোন ভিত্তি নেই।

আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর রাসূলের পরিপূর্ণ পদাঙ্ক অনুসরন করে চলার তৌফিক দিন। আমীন।

টীকা: 7. যদি শা‘বানের মধ্যরাত্রিকে উদযাপন করা বা ঘটা করে পালন করা জায়েয হতো তাহলে অবশ্যই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ব্যাপারে আমাদের জানাতেন। বা তিনি নিজেই তা করতেন। আর এমন কিছু তিনি করে থাকতেন তাহলে সাহাবাগণ অবশ্যই তা উম্মাতের কাছে বর্ণনা করতেন। তারা নবীদের পরে জগতের শ্রেষ্টতম মানুষ, সবচেয়ে বেশী নসীহতকারী, কোন কিছুই তারা গোপন করেননি’। (আত্‌তহযীর মিনাল বিদা‘১৫,১৬)।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমাদের কাছে স্পষ্ট হলো যে, কুরআন, হাদীস ও গ্রহণযোগ্য আলেমদের বাণী থেকে আমরা জানতে পারলাম শা‘বানের মধ্য রাত্রিকে ঘটা করে উদযাপন করা, চাই তা নামাযের মাধ্যমে হোক অথবা অন্য কোন ইবাদতের মাধ্যেমে অধিকাংশ আলেমদের মতে জগন্যতম বিদ‘আত। শরীয়তে যার কোন ভিত্তি নেই। বরং তা’ সাহাবাদের যুগের পরে প্রথম শুরু হয়েছিল। যারা সত্যের অনুসরণ করতে চায় তাদের জন্য দ্বীনের মধ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা করতে বলেছেন তাই যথেষ্ট।

view this link

১৩| ২৭ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:০৩

মাসূদ রানা বলেছেন: মুসলমান নামধারীদের একটা অংশ নিজেদের মুসলমানিত্ব জাহির করতে গিয়ে ইসলামের এমন কিছু নফল ইবাদত নিয়ে তর্ক বিতর্কের উদ্রেক করছেন মহান আল্লাহপাকের কাছে যেগুলোর গুরুত্ব একটা তৃষ্নার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর চেয়েও কম ! মনে রাখা উচিত-সারা জীবন নফল ইবাদত করে জীবন পার করার চেয়ে একজন মুসলিম ভাইয়ের দিকে মুখ করে একবার হাসা আরও বেশি সওয়াবের কাজ ....... অথচ বর্তমান যুগে এসে আমরা নফল ইবাদত নিয়ে একজন আরেকজনকে খুনাখুনি পর্যন্ত করতে দ্বিধা করছি না ।

মুসলমানদের ফরজ ইবাদত পাঁচটি : দৈনন্দিন পাঁচ বার নামাজ পড়া, রমাজান মাসের ৩০ দিন রোজা রাখা, একবার হজ্জ করা[আর্থিক সাবলম্বীদের জন্য/দরিদ্রদের জন্য নয়], নিয়মিত যাকাত প্রদান করা [আর্থিক সহায়তা প্রদান- ধনীদের জন্য দরিদ্রদের জন্য নয়] , মহান আল্লাহ পাক ও নবী-রাসূল-ফিরিস্তা-আসমানী কিতাবসমুহে পূর্ন বিশ্বাস স্থাপন করা ............

এর বাইরে যা কিছু ভালো কাজ করা হয় সব নফল হিসেবে গন্য হবে .......আর নফল ইবাদত নিয়ে যারা ফেতনা সৃষ্টি করবে, তারা কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হিসেবে গন্য হবে।

১৪| ২৭ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:৪৭

মেমননীয় বলেছেন: কোথায় যেন পড়েছিলাম, "ব্যবহারে বংশের পরিচয়"!
ঠিক মনে পড়ছেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.