![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি হাসিমুখে ক্ষুধার কষ্ট সইতে পারি ! পারি নীরবে চিন্তা করতে ! পারি অপেক্ষা করতে ! জানি ভালবাসতে আর পারি নি:স্বার্থ সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিতে ! আমি অনন্য । আমি অজেয় ।
ছোটবেলায় না কৈশোরে আমি খুব স্কুল ফাঁকি দিয়ে পুরো ঢাকা শহর ঘুরে বেড়াতাম। ঢাকা শহরের যত গুলো সর্টকাট রাস্তা , ওলি গল্লি আমার মুখস্ত ছিল । বিশেষ করে এই হাতির ঝিল , বিলপার ,ফার্মগেট, রমনা পার্ক , সার্কিট হাউজ ,শাহাবাগ , মন্ত্রিপারা , কাকরাইল ছিল আমার অভয় অরন্য । মনে হলে এখনো খুব উত্তেজিত বোধ করি । আমার বন্ধুরা প্রায় সকলেই ছিল দুষ্টের শিরোমনি লংকার রাজা । বান্দ্রামিতে কেউ কারো হইতে কম থাকার উপায় ছিল না । গুলাল আর মার্বেলের গুলটি নিয়ে সাইকেলে একঝাক দুর্দান্ত দুষ্ট বালক বেড়িয়ে পরতাম । নানা ধরনের পাখি ,কবুতর ,বক ,ফল , ফুল গাছ শিকার করা ও প্রতিপক্ষের শিকারকে ওদের নাকের ডগা থেকে তুলে নিয়ে আসাই প্রতি দিনের গুরত্বপূর্ণ কাজ ছিল ।
মাঝে মধ্যে সিনামা দেখতে যেতাম সেই শাহিন , গেরিশন সিনামা হলে ব্রুসলির ( এনটার দা ড্রাগন ) একশান ফিল্ম গুলো আমদের দুর্দান্ত জীবন কে আরো একশান ফিল্ম করে দিয়েছিল । ব্রুসলির নান চাকু আমরা ঘরের পর্দার কাঠের রোল দিয়ে নান চাকু বানিয়ে হুবহু ব্রসলি বনে যেতাম ।
চলা ফেরার স্টাইল ছিল নিন্জদের মত ছাদে থেকে ছাদে , ওয়াল থেকে ওয়ালে , কারনিশ বেয়ে বেয়ে বেয়ে সানসেটে । আড্ডার জায়গা গুলো ছিল বিচিত্র কখন বিলের মাঝ খানে বাশের উপর সামিয়ানা টানিয়ে কখন ছাদের পানির টাংকির উপরে কখন রাস্তার বাউন্ডারি ওয়ালের উপরে ।
গলি দিয়ে কলার খাচিঁ নিয়ে ফেরিওয়ালা খাঁচি ভরা কলা নিয়ে ডুকতো গল্লি শেষ পর্যন্ত আসতে আসতে খাঁচি খালি হয়ে যেত । এই কারনে একসময় আমাদের সেই গল্লির নাম হয়ে গেল কাল্পিট গল্লি ।
কৈশোর কেটেছে দুর্দান্ত প্রতাপের সাথে , হেন কোন কর্ম ছিল না যা করতে চিন্তা করতাম । মারামারি , মানজা ( সূতাকে বিশেষ প্রকার মশল্লা কাঁচের গুড়া দিয়ে ) ব্লুবার্ড সুতা মান্জা দিয়ে ঘুড়ি গুলোও নিজারা বানাতাম । ঘুড়ি উড়ানো , কবুতর পালা , অন্যের বাগান থেকে ফুল গাছ এনে নিজের বাগান করা ।
মন্ত্রিপাড়ায় প্রায় ভিভিএইপি দের বাড়ির ফুলগাছ (টব সহ)আমার কালেকশনে ছিল ।
গুলশান বনানী উপর দিয়ে আমাদের সাইকেল বহর গুলো যখন প্রদক্ষিণ করতো সবাই হা হয়ে তাকিয়ে দেখতো ! কি দুষ্ট রে বাবা ।
শবে বরাতের রাতটি ছিল আমাদের যুদ্ধের রাত । আমরা সেই সময় ভয়ংকর সব মোর্ড়া ( মরিচা ) বানাতাম রিতিমত মশল্লা দিয়ে সেই মশল্লা চকবাজার থেকে কিনে আনতাম যা প্রতিপক্ষের জন্য একটা মিছাঈলের চেয়ে কম ছিল না । এ গুলো প্রতিপক্ষের গায়ে ছুঁড়ে দিতাম চিন্তাই করতাম না হতভাগার কি হবে । দুষ্টমি কাহাকে বলে ও কত প্রকার আজ মনে পরে ।
এখন কোন দুষ্টমি আর করা হয় না , কোন দিন আর করতে পারবো বলে আর মনে হয় না । তবু যতটুকু বন্ধুদের সাথে নিজেকে উজার করে পেয়েছি তাও অনেক ।
আজকালকার ছেলপুলেরা যা এখন আর চিন্তা করতে পরে না ।
কৈশোরের সেই সকল বন্ধুদের এজন্যেই কথনো ভোলা যায় না ।
©somewhere in net ltd.