নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার মুক্তি আমার আলোয় এই আকাশে আমার মুক্তি ধুলোয় ধুলোয় ঘাসে ঘাসে

বন্ধু শুভ

আনকোরা যত নন্ভায়োলেন্ট নন্-কো’র দলও নন্ খুশী। ‘ভায়োরেন্সের ভায়োলিন্’ নাকি আমি, বিপ্লবী-মন তুষি! গোঁড়া-রাম ভাবে নাস্তিক আমি, পাতি-রাম ভাবে কন্ফুসি! স্বরাজীরা ভাবে নারাজী,নারাজীরা ভাবে তাহাদের আঙ্কুশি! © কাজী নজরুল ইসলাম

বন্ধু শুভ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি, আমার গায়েবি প্রেমিকারা এবং আমার বন্ধুগণ

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:২৪




গায়েবি মামলা, গায়েবি শক্তি, গায়েবি জানাজা, গায়েবি আওয়াজ, গায়েবি আদেশ, গায়েবি দৃষ্টি এরকম হাজারো গায়েবি বিষয়ের সাথে পরিচয় থাকলেও আমার (হয়তো আমার মত আরো অনেকের) "গায়েবি প্রেমিকা" বিষয়টির সাথে পরিচয় ছিল না। কোন এক গায়েবি ইশারায়, আমার দৃশ্যমান বন্ধুগণ আমার "গায়েবি প্রেমিকাগণের" সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সে এক (অথবা অনেক) বিরাট (বিশাল, প্রকান্ড,মহান- টক, ঝাল, মিষ্টি) কাহিনি। এই গায়েবি প্রেমিকাদের সাথে দেখা হওয়ার জন্য আমি আমার বন্ধুদের প্রতি আমৃত্যু কৃতজ্ঞ থাকবো। কৃতজ্ঞতার পরিমান এতই বেশি যে, আমি যদি কোনদিন প্রধানমন্ত্রী হই তবে আমি আমার বন্ধুদিগকে মন্ত্রীত্ব দান করিব। এমনকি এই মন্ত্রীত্ব শেষ হবার নয়। রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের সংজ্ঞার ন্যায় এই মন্ত্রীত্ব শেষ হইয়াও শেষ হইবে না। যারা আমার প্রধানমন্ত্রীত্ব পাইবার কালে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করিয়া পরলোকে গমন করিবে আমি তাহাদিগকে মরণোত্তর মন্ত্রীত্ব দান করিব। পাঠক, বুঝিতেই পারিতেছেন আমি তাহাদের উপর যারপরনাই খুশি তারপরনাই* আনন্দিত। যাক এবার সামনে যাওয়া যাক।

প্রেমিকা থাকা আর্থ-সামাজিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে কতটা জরুরি/প্রয়োজন/দরকার/অ-দরকার তা নিয়ে একটা বিস্তর আলোচনা করা যেতেই পারে। সাথে আরো একটা বিষয় আলোচনার দাবি রাখে এরকম যে, কাউকে দেখে হাসি দিলে অথবা কারোর দিকে তাকাতে দেখলে (যার প্রতি তাকানো হয়েছে তাকে তাকানো ব্যক্তির) প্রেমিকা সাব্যস্ত করা কতটা যুক্তিসংগত, কতটা আইনসিদ্ধ এবং কতটা সামাজিক কর্মকান্ড(?)। এইসব বিষয়বস্তু আলোচনার দাবি রাখলে, আরেকটি বিষয় যথারীতি বিচার্য হওয়ার দাবি রাখে (বিষয়টি এমন যে), কাউকে কোনদিন না দেখা সত্ত্বেও কিভাবে (মেয়ে) লোকটি একজনের প্রেমিকা হয়! প্রথম প্রথম আন্দাজি ঠেকলেও বিষয়টি সত্য জনাব। এও সম্ভব। এবং এই বঙ্গমুলুকেই সম্ভব।

উপরোক্ত বিষয়ের ইশারা সত্য। আমি হলফ করিয়া তিনবার বলিতে পারি "ইহা সত্য, ইহা সত্য, ইহা সত্য"। এবং আপনার অনুমান সত্য। আপনি ঠিকই ধরেছেন। আমার বন্ধুগণ আমাকে আমার গায়েবি প্রেমিকাগণের সাথে দেখা করিয়ে দিয়েছেন। গায়েবি মামলা যেমন প্রথম গায়েবি থাকে, তারপর দেখা যায় ব্যক্তির নাম অমুক-তমুক। তিনি উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত নয় এবং বিষয়ের সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক কাটাকাটি (যদিও আগেও ছিল না), তেমনি আমার অবস্থা একই। যেমন, আচমকা একদিন জানলাম আমার প্রেমিকা আছে এবং গায়েবি প্রেমের সকল ক্রাইটেরিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে প্রমাণ হলো তিনি আমার প্রেমিকা নন, এমনকি (কোনকোন ক্ষেত্রে) আমি তাকে চিনিও না এবং সর্বশেষ আমি "মামলা থেকে খালাস"। তারপর শুরু আমার শুকরিয়া আদায় পর্ব। কিছু ঘটনার বর্ণনা দেয়া যাক।

অন্য সব দিনের ন্যায় সকালে ঘুম থেকে ওঠে যথারীতি প্রাতঃকালের কার্যাদি সম্পাদন করে লাল রঙের বিআরটিসি বাসে চড়ে ভার্সিটিতে গেলাম। সেদিন ভার্সিটির পাশে বেচাবিক্রির পারপাসে গজিয়ে ওঠা মামাদের দোকানের চা গিলেছি-কি-গিলি-নাই তা মনে নাই, হয়তো পরবর্তী ঘটনার তাৎপর্যে (পড়ুন আকস্মিকতায়) আজ ভুলিয়া গেছি। পরবর্তী ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এমন- বাস থেকে নেমে সমতল ধূলার সাগর পাড়ি দিয়ে ঘামতে ঘামতে আর্টস ফ্যাকাল্টির ৫ তলায় উঠে যখন একটু নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ খুঁজছি, ঠিক তখনই এক বন্ধু দৌড়ে এসে ঝাপটে ধরে বলছে "কনগ্রাচুলেশনস বন্ধু"! এমন কাজ যে প্রথমবারের মত হয়েছে তা কিন্তু নয়। যাহোক, ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে ওঠে শ্বাস নিতে চেষ্টা করার পাশাপাশি অভিনন্দন পাওয়ার কারণ জানার চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু এমন "গোপন" বিষয়ে কি আর সরাসরি আলাপ করা যায়! সুতরাং ইশারা ইঙ্গিতে নানা শব্দ ও বাক্যের প্রয়োগ চলতে থাকে কিছু সময়। কখনো কখনো ঘটনার ভয়াবহতার উপর নির্ভর করে এইসব ইঙ্গিতপূর্ণ শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার চলে ঘন্টারও বেশি সময়। তারপরও ঘটনার বিশেষ কারণ উদ্ধার করা হয়ে থাকে কষ্টসাধ্য। গোয়েন্দা পুলিশের মত নানা ইঙ্গিত ধরে এগিয়ে গিয়েও যখন জানতে পারি আমি ভুল ধারণা পোষণ করছি তখন বাধ্য হয়ে ঠাকুরের কাছে নিজেকে সমর্পণ করার ন্যায় বন্ধুর কাছে নতমস্তকে জানতে চাই "বন্ধু আসল কাহিনীটা বল না, প্লিজ"।

অতঃপর বিনামূল্যে (কখনোবা ট্রিট/নাস্তা/খাওয়ার বিনিময়ে) জানতে পারি আমি কারো সাথে প্রেম করছি। অর্থাৎ কোন ললনার সাথে আমি মানসিকভাবে সংসার করছি। অবশ্য আজকালের উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা এটাকে বলে "ইন অ্যা রিলেশনশিপ"। যাহোক, শেষতক আমার বন্ধুগণ আমার প্রতি "দয়া" দৃষ্টি" নিক্ষেপ করে। তারা নাম বলতে রাজি হয়। বন্ধুদের মুখে আমার গায়েবি প্রেমিকার নাম শুনে আমার মূর্ছা যাওয়ার দশা তৈরি হয়। আমি যাকে চিনি না জানি না, সে কিভাবে আমার প্রেমিকা হয়(!)? তারপর আমার পদক্ষেপ হয় বন্ধুদের (ওই মেয়েটা আমাকে দেখাস না প্লিজ বলে) রিকোয়েস্ট করা। বন্ধুরা আমার কথা পুরোপুরি বিশ্বাস করে না, আমিও আমার গায়েবি প্রেমিকাকে দেখার (পড়ুন চেনার) জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকি। ফলত বিরাট ক্লান্তির পর ঠান্ডা মাথায় আমার আর শ্বাস নেয়া হয়ে ওঠে না।

ক্লাস শেষে ফেরার পথে সিড়িতে, বাসের জন্য অপেক্ষারত মাঠে, লাল বাসে, লাইব্রেরিতে অথবা ফটোকপি করা মামার দোকানে বন্ধু যখন একটা মেয়েকে দেখিয়ে বলে এটাই তো তোর প্রেমিকা অথচ এখন আমাদেরকে দেখে না দেখার ভাব করতাছস! তখন আমার আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়ার অবস্থা। যাকে একবার দেখেছি, বা পূর্বপরিচিত হওয়ার কারণে একবার হাই হ্যালো করেছি, বা প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় বিষয়ে কথা বলেছি (কথা বলতে বন্ধুরা দেখেছে), কিংবা তাকে আমি চিনিই না! এমন একজনকে কি-না ওরা আমার প্রেমিকা বানিয়ে দিল! তখন মনে মনে জপতে থাকি- "হায় আল্লাহ, এখন আমার কী হবে? ওরা যে আমার 'প্রেমের সতীত্ব' কেড়ে নিল! আমি মানুষকে আর আমার প্রেম দেখাবো কেমন করে! ও খোদা! এ তুমি কী শাস্তি দিলে মাবুদ!"

এভাবে সতীত্ব একবার যায় নি, গিয়েছে বারবার। আমি বারবার তাদের কাছে নিষ্কৃতি চেয়েছি এইসব গায়েবি প্রেমিকার খপ্পর থেকে। কিন্তু তারা তা মানে নি। প্রতিনিয়ত আমাকে নতুন নতুন গায়েবি প্রেমিকার সাথে এটেস্ট করেই যাচ্ছে তো করেই যাচ্ছে। যেন থামবার নামটি পর্যন্ত নেই। আমি চেষ্টা করেই যাচ্ছি। উদ্ভুত এহেন পরিস্থিতিতে আল্লাহর নাম নিয়ে কসম করার পাশাপাশি দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বলতে ইচ্ছে হয় পৃথিবী বড়ই বৈচিত্র্যময়!

*'তারপরনাই' বলে কোন শব্দ আছে কি-না তা আমার জান নাই। বর্তমান লেখায় শব্দটি আবেগে ঠেলায় লিখে ফেলছি।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: গায়েবী হাটে গায়েবি মাঠে
গায়েবী ভোটে গায়েবী ঠাটে
যদি সরকার হইবার পারে- আপনার প্রেমিকা হইবেনা কেনু কেনু কেনু!!!! :P

নিগ্গাত আপিন প্রম কিরিছিেলন -ইবার ব্লগার ভাইবেরাদারদের ট্রিট দিয়া প্রেমের সুস্ঠুতার সনদ সংগ্রহ করুন :-B
=p~

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৪৯

বন্ধু শুভ বলেছেন: হা হা হা।
ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য।

তবে আপনার দিব্যি দিয়ে বলছি দাদা, আমি তখনও প্রেম করতাম না, এখনও না।

২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: Time will say, Time is Money...

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৫০

বন্ধু শুভ বলেছেন: & time is everything

৩| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৫

স্যার উইলিয়াম শুভক্সপিয়ার বলেছেন:
এই গায়েবি প্রেমিকাদের সাথে দেখা হওয়ার জন্য আমি আমার বন্ধুদের প্রতি আমৃত্যু কৃতজ্ঞ থাকবো। কৃতজ্ঞতার পরিমান এতই বেশি যে, আমি যদি কোনদিন প্রধানমন্ত্রী হই তবে আমি আমার বন্ধুদিগকে মন্ত্রীত্ব দান করিব। এমনকি এই মন্ত্রীত্ব শেষ হবার নয়। রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের সংজ্ঞার ন্যায় এই মন্ত্রীত্ব শেষ হইয়াও শেষ হইবে না। যারা আমার প্রধানমন্ত্রীত্ব পাইবার কালে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করিয়া পরলোকে গমন করিবে আমি তাহাদিগকে মরণোত্তর মন্ত্রীত্ব দান করিব।[/sb

হা হা হা

৪| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৩২

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ট্রিট চাই B-))

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:২৪

বন্ধু শুভ বলেছেন: ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদায় হউক আগে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.