![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন আমরা পরস্পরের প্রতি একটু সহানুভুতিশীল হই।
সে অনেকদিন আগের কথা। স্বপ্নের মতো একটি দেশ ছিলো। সেই দেশে ছিলো গোলা ভরা গরু, গোয়াল ভরা মাছ, গাছ ভরা ধান আর পুকুর ভরা ডাব। কোন কিছুর অভাব ছিলো না সেই দেশে। প্রাণ-প্রাচুর্য্যে ভরা ছিলো চারপাশ। ফসল ঘরে তোলার পর অবসর সময়ে তখনকার মানুষ গান-বাজনা, খেলা-ধুলার আয়োজন করতো। কেউ কেউ আবার অত্যুৎসাহী হয়ে দুই-একটা বিয়েও করে ফেলতো। নতুন বউ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বলতো, "বড় বউ তোমার জন্য আরো একজন কাজের মেয়ে নিয়ে আসলাম। " বড় বউরাও নিঃসঙ্কোচে মেনে নিতো স্বামীর এমন ছোট-খাটো আবদার।
সেই দেশেই সেই প্রাণ-প্রাচুর্য্যের ভেতর জন্ম হয় আমাদের গল্পের নায়ক হীরু খাঁর। হীরু খাঁ তার বাবা-মায়ের ৫ম সন্তান। প্রকৃতির উদার ভালোবাসায় বড় হতে থাকলো আমাদের হীরু খাঁ। তার বয়স এখন ১৭। তার বড় ভাই-বোনেরা তার অগ্রজ বলে দুই-তিন বছরেই সবার বিয়ে হয়ে গেলো। এবার হীরু খাঁর পালা। হীরু খাঁর বিবাহের বয়স হয়ে গিয়েছে। আগামী শীতে হীরু খাঁ ২২ বছরে পদার্পন করবে। তার বড় ভাইদের ১৮-১৯ বছরেই বিয়ের কাজ সারা হয়ে গিয়েছে এবং তাদের ঘরে এখন ছানা-পোনাও হয়ে গিয়েছে। ওইসব ছানা পোনাদের নিয়েই এখন হীরুখাঁর দিন কাটে। এলাকায় হীরু খাঁর বন্ধুও আছে কয়েকজন। তারাও বিয়ে টিয়ে করে পুরোদস্তুর সংসারী হয়ে গিয়েছে। শুধুুমাত্র হীরু খাঁরই বিবাহে যত আপত্তি। মেয়ে পছন্দ হয় না এমন না। আসলে বিবাহের প্রতি হীরু খাঁর কোন আগ্রই নেই। সে কোন প্রকার শারিরিক চাহিদাও অনুভব করে না। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা হীরু খাঁর বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে কিন্তু সে তার কথায় অনড়। সে বিয়ে করবে না। এদিকে তার ছোট ভাইবোনদেরও বিয়ে হয়ে যায়। হীরু খাঁর বয়স বেড়েই চলে। ৩০ যায়, ৩৫ যায়, ৪০ যায়, ৪৫ যায়। হীরু খাঁর বিয়েতে আর কোন আগ্রহ থাকে না। মনে মনে বলে বিয়ে আমি কিভাবে করবো, আমি তো শারিরিকভাবে সক্ষম পুরুষ নই। বিয়ে করে শুধু শুধু একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করবো না। তাই ফাইনালী সে সিদ্ধান্ত নেয় যে জীবনেও আর বিয়ে সে করবে না এবং তার মতো যারা আছে খুজে খুজে তাদের নিয়ে গড়ে তোলে এক সংগঠন "চিরকুমার যুব সংঘ"। হীরু খাঁ হয়ে যায় এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এভাবে একটি সংগঠনে সময় দিয়েও যখন তার সময় কাটে না তখন হীরু খাঁ যোগ দেয় রাজনীতিতে। তারপর সেই দলের কার্য্যক্রম আর চিরকুমার সংঘের কাজ নিয়ে মোটামুটি সুখেই তার দিন কাটতেছিলো।
সে বাড়িতে যতক্ষণ থাকে ততক্ষন সে তার বড় ভাইবোনদের নাতি-নাতনীদের সাথে খেলা-ধুলা আর দুষ্টুমি করে সময় কাটায়। ছোটদের সাথে হীরু খাঁ খুবই বন্ধুবৎসল। তবে তার একটি কড়া নিয়ম আছে। সে ঘুমালে কেউ তাকে ডিস্টার্ব করতে পারবে না। এমনকি তার ঘরেও কেউ আসতে পারবে না। তবে জেগে থাকলে যে কেউই সে ঘরে প্রবশে করতে পারে। যেহেতু হীরু খাঁর বউ নেই সেহেতু হীরু খাঁর ঘরের দরজা লাগানোর কোন প্রশ্নই উঠে না। দিন-রাত হীরু খাঁর ঘরের দরজা খোলা থাকে। দরজা খোলা থাকলেও সে ঘরে না থাকলে সাধারণত কেউ তার ঘরে যায় না।
হীরু খাঁর আর একটা বাতিক আছে। সে লিভার ব্রাদার্সের ফ্যান বিশেষ করে পন্ডস ব্রান্ডের ফ্যান। তার ঘরে পন্ডসের একসেট নতুন আনকোরা প্রসাধনী এবং একসেট ইউজিং প্রসাধনী থাকেই। এটাই তার প্যাশন। হীরু খাঁর বয়স ৪৫ যায়, ৫০ যায়, ৫৫ যায়, ৬০ যায়। চিরকুমার বলে শরীর এখনো বেশ মজবুত আছে। হীরু খাঁকে দেখলে মনে বয়স ৪০-৪২ এর বেশী হবে না। এভাবেই ৬২ পেরোয়। রাজনীতিতে এখন তার দাপট ভালো।
হীরু খাঁর ভাইয়ের ঘরের নাতিদের মধ্যে একজন আছে খুবই ইতর প্রজাতির। নাম তার পটল। পটল হীরু মিয়ার অলক্ষ্যে বিশেষ করে তার ঘুমের সময় তার ঘরে যায়। সে প্রসাধনিগুলি খুলে খুলে দেখে কোনটাতে কি আছে। বড় হলে সেও দাদার মতো পন্ডসের প্রসাধনী ব্যবহার করবে বলে ভেবে রেখেছে।
সেই দেশের কোন এক নির্বাচনে (সেটা ভোটার বিহীনই হউক বা দলীয় ক্যাডারদের জাল ভোটেই হউক) হীরু খাঁ নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে একেবারে মুকুট পেয়ে যায়। মুকুটধারীরা বেশি ক্ষমতাশালী হয়। সেকালে ওই দেশের সংসদে মোট ৩০০টি সাধারণ আসন আর ৫০ টি সংরক্ষিত মহিলা আসন থাকতো। এই ৩০০ আসনের মাঝে থেকে বেছে বেছে ৪০ থেকে ৬০ জন মুকুটধারী বানানো হতো।
তো হিরু খাঁ মুকুট পেয়ে ক্ষমতার স্বাদ পেতে পেতে কাটিয়ে দিলেন আরো ১টি বছর। এখন তার বয়স ৬৩। চেহারায় চাকচিক্য বেড়েছে। চেকনাই রোশনী ঝিকমিক করে এখন তার বদনে। ক্ষমতার পা্ওয়ার কত এখন হীরু খাঁর দিকে তাকালে বোঝা যায়। আগের মতো নাতি-নাতনীদের সাথে আড্ডা্ও হয়, তবে কম। পটল আরো কিছুটা বড় হয়েছে। দাদা হীরু খাঁ এখন সব বিদেশী ব্রান্ডের প্রসাধণী ব্যবহার করে। পন্ডসের প্রসাধনীগুলি শোকেসের ভিতর থেকে অম্লান বদনে তাকিয়ে থাকে হীরুখাঁর দিকে। এমনি কোন এক বিকেলে হীরু খাঁ ঘুমাচ্ছিলেন তার ঘরে। পরনে ছিলো ইজের। দরজা তো বরাবরের মতোই খোলাই ছিলো। পটল এখন শেভ নিয়মিত শেভ করে দাদার শেভিং ফোম দিয়ে। আজকেও তাই ঢুকলো ঘরে; ঢুকেই মনে হলো দেখি তো পন্ডসের কোন শেভিং ফোম দাদার কালেকশানে আছে কিনা? দাদার পন্ডসের প্রসাধনীগুলো তো শোকেসেই আছে। সেগুলি খুঁজতে খুঁজতে পটল একটি নতুন পন্ডস ফেস ওয়াশের টিউব খুজে পেলো। ফেসওয়াশটা ভালো আছে কিনা দেখার জন্য মুখটা খুলে একটু চাপ দিতেই কিছুটা ফেসওয়াশ লাফ দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে পড়লো হীরুখাঁর ইজেরে। তাও আাবার একবোরে সামনের দিকে। সামনের দিকে পড়ার কারণ হীরুখাঁ তখন চিৎ হয়ে ঘুমাচ্ছিলো। এই ঘটনার পর পটল দ্রুত সরে পড়লো কারণ দাদা যদি জানতে পারেন যে তার ঘুমের সময় পটল ঘরে এসেছিলো তাহলে পটলের খবর আছে।
সন্ধ্যার একটু আগে হীরুখাঁর ঘুম ভাঙলো এবং সে দেখলো তার ইজেরের সামনের দিকে ছোপ ছোপ ভেজা ভেজা, ধুসর সাদা, চিটচিটে কিছু পদার্থ লেগে আছে। হীরু মিয়া ভাবতে লাগলো এটা কিভাবে হলো! এই ৬৩ বছরের জীবনে ইতিপূর্বে কখনো এমন ঘটনা ঘটে নাই। এখন যখন ঘটেছে তখন সুখবরই নিয়ে এসেছে। সুখ যখন আসে তখন চারদিক ছাপিয়ে আসে। এবার বিয়ে করা যায়। ক্ষমতার সুখ, বিয়ে করার সুখ। পরের দিনই রাষ্ট্রীয় খবরে প্রকাশ হয় "৬৩ বছর বয়সে মুকুটধারী হীরুখাঁ বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন। " তার কিছুদিন পরই হীরুখাঁ বিয়ে করে নতুন বউ ঘরে নিয়ে এসে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকেন।
[এই কাল্পনিক গল্পের কাল্পনিক চরিত্রের সাথে যদি বাস্তবের কোন চরিত্র মিলে যায় তবে তা হবে কাকতালীয়। তার জন্য লেখক, প্রকাশক কেউ দায়ী থাকবে না। বিষয়টা জাষ্ট ফান হিসেবে বিবেচিত হবে। ]
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:৩৯
ব্রক্ষ্মপূত্র বলেছেন: জানানো যাবে কোন সমস্যা না। তবে খবরটা মনে হয় আমার আগে আপনার কানেই পেীঁছাবে। কারণ আপনাদের এলাকা তো হীরু খাঁর এলাকারই পাশে। [বাস্তবের সাথে মিলে গেলে কাকতাল মাত্র]
অ.ট. রেফারেন্স চায় নাই, তাই দিই নাই। এবার আমাকে মনে হয় চিনতে পেরেছেন, তাই না?
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৫২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আয় হায় হিরুখা ভাগ্যিস ব্লগার নয়
থুরি ছিলনা!
নইলে ব্লগে এই ঘটনা পড়ে নিগ্ঘাত সেই কোন এক কালেই
আপনাকে ৫৭র ধার দেখিয়ে দিত!
দারুন দিয়েছেন! এক্কবারে বারহাত কাকুরের তেরহাত বিচির মতো! সেইরাম!
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ ভোর ৬:৪১
ব্রক্ষ্মপূত্র বলেছেন: ধন্যবাদ বিদ্রোহী দাদা। এত কষ্ট করে একটা লিখা লিখলাম আর দেখেন মাত্র কয়জন এ পড়েছে আর আপনারা দুইজনে মাত্র কমেন্ট করেছেন। ভাল্লাগেনা। হীরুখাঁর ভয়েই তো আসল নিক রেখে নকল নিকে এই পোষ্ট দিলাম।
৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: না, আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:০২
ব্রক্ষ্মপূত্র বলেছেন: এটি একটি "ভিটামিন সি" প্রকাশনা। এইবার আর সমস্যা হওয়ার কথা নয় চিনতে। তাই না?
৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ৯১ জন পাঠক! মন্তব্য ২ জন!
আসলেই ভাল্লাগবে কি করে!
বলি ঘটনাটা কি? সবাই রসস্বাদনে ব্যার্থ মানতে পারিনা! বুঝতে পারে নাই তাও সম্ভব না! তবে কি হিরুখার ভয়েই সবাই চুপে চুপে খিক খিক করে আপন মনে হেসেই মজা নিল
কে জানে নইলে টেরেন যদি ব্রেক ফেল করায় কয়- ইহা তাহাদেরই কাজ - ফাকে সবার জীবন যাবে আজ
সেইরাম ভুই পাইছে সবাই খেক খেক খেক
১৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৮:০৬
ব্রক্ষ্মপূত্র বলেছেন: দাদা আমারও তাই মনে হয়। কারণ হীরু খাঁ বিয়ের খুশিতে যদি কয়, ওই ডেরাইবার টেরেন থামা, লেডিস মু**" তাইলেই তো কমেন্টকারীর খবর আছে । ভাগ্যিস এই পোষ্ট হীরু খাঁদের নজরে পড়ে নাই। পড়লে আমি তো আমি, কমেন্টকারীদেরও খবর বানায়া ছাড়ত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১৫
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: হীরুখাঁ র সন্তান হলে আমাদের জানাইয়েন